কাউখালীতে ব্রিজ নির্মাণকাজ ফেলে রেখে লাপাত্তা ঠিকাদার, জনগণের দুর্ভোগ
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়কুল খালের উপর ব্রিজ নির্মাণকাজ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ঠিকাদার। যার ফলে জয়কুল খাল দিয়ে অভ্যন্তরীণ নৌপথে সাধারণ মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। কাউখালী চিড়াপাড়া নদীর শাখা জয়কুল খাল।স্থানীয়রা জানান, এই খালের দক্ষিণ পাড়ে দুস্থদের জন্য সরকারি আবাসন বা জাপানি ব্রাক অবস্থিত। যেখানে প্রায় দেড় শতাধিক ভূমিহীন পরিবার বসবাস করে। এই আবাসনের সামনের জয়কুল খাল পার হয়ে এখানকার ছোট ছোট শিশু ছাত্রছাত্রীরা ও সাধারণ মানুষকে জয়কুল প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি বিদ্যালয়, কাউখালী কলেজ, কাউখালী মহিলা কলেজ, হাসপাতাল, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ভূমি অফিস এবং বিভিন্ন হাট-বাজারে যেতে হয়।যে কারণে এই জন গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীন খালের উপরে ত্রাণ মন্ত্রণালয় পাকা ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে। জনগুরুত্ব বিবেচনা করে ২০২৩/২৪ অর্থবছরে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি ব্রিজ নির্মাণ করার লক্ষ্যে প্রায় আড়াই কোটি টাকা প্রকল্প মূল্য ধরে দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মঠবাড়িয়া উপজেলার আলো এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিনকে কার্যাদেশ প্রদান করেন। একই প্যাকেজে অন্য ব্রিজটি শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের জোলাগাতির সাউদের খালের উপর নির্মাণ কাজ চলমান আছে।ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজে কাজ না করে অন্য ঠিকাদারের মাধ্যমে ২০২৪ সালে পাঁকা গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ওই প্রভাবশালী ঠিকাদার কাজ করতে এসে প্রথমে খাল বন্ধ করে দেন এবং সামান্য কাজ করে ব্রিজের কাজ শেষ না করেই পালিয়ে যান।যে কারণে সারা বছর ওই গ্রামীন খালের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ ও পারাপারের জন্য ব্রিজ না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ে এলাকাবাসী। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা । আমন ফসলি জমিতে ধানের বীজ পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।কৃষকের উৎপাদিত কৃষি ফসল , ফল, মূল, শাক, পাতা অন্যান্য মালামাল নৌ পথে অল্প খরচে হাটে বাজারে কিংবা শহর বন্দরে পরিবহন করতে পারেননা। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষ ।অপরদিকে ব্রিজ নির্মাণের স্থান থেকে খালের এপার ওপার পারাপারের জন্য স্কুলের ছাত্র -ছাত্রী, শিশু- বৃদ্ধ, কৃষক - শ্রমিক সকলেই ব্রিজের অভাবে সড়ক পথে চলাচলে চরম ভোগান্তির কারণে অনেকেই আবাসন ছেড়ে চলে যাচ্ছে।স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, খাল বন্ধ করে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় পাশ থেকে বিকল্প খালের তৈরি হয়েছে যা এলাকাবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। আবাসনের বাসিন্দা জয়কুল স্কুল ছাত্র মেহেদী ও কাঠালিয়া স্কুল ছাত্রী লুবনা জানান, ব্রিজ না থাকার কারণে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। যে কারণে অনেকেই আবাসন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মফিজুর রহমান বলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ সমাপ্ত করার জন্য ৫ দফায় চিঠি প্রদান করা হয়েছে।এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। জনদুর্ভোগ কমাতে আমরা সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করব।ভোরের আকাশ/মো.আ.
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৩:১৭ পিএম
পাথরঘাটায় নিম্নমানের বীজে কৃষকের সর্বনাশ!
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে নিম্নমানের বীজের কারণে হাজারো কৃষক চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, বীজতলায় ধান গাছে অকালেই শীষ ধরায় মাঠে রোপণের আগেই শতাধিক মেট্রিক টন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে কয়েক হাজার কৃষক পরিবার উৎপাদন বিপর্যয়ে পড়েছে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে সাউথ এশিয়ান সীডস কোম্পানির ২২ নাম্বার জাতের ধানে বাম্পার ফলন হওয়ায় এবারও কৃষকরা একই কোম্পানির বীজ সংগ্রহ করেন। কিন্তু মাত্র ১৫–২০ দিন পর বীজতলা থেকে চারা তুলতে গিয়ে দেখা যায়, গাছে অকালেই শীষ এসেছে। ফলে মাঠে রোপণের সুযোগ না পেয়েই জমি খালি পড়ে গেছে। নতুন করে বীজতলা তৈরির সময়ও আর হাতে নেই।ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, কিছু অসাধু ডিলার আসল কোম্পানির বস্তায় নিম্নমানের বীজ ভরে বাজারজাত করেছেন। তবে স্থানীয় ডিলার নাসির উদ্দিন সরদার দাবি করেন, তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন। এবছর তিনি কোম্পানির কাছ থেকে ২৫ মেট্রিকটন বীজ কিনেছেন, এর মধ্যে মাত্র ১ মেট্রিক টনে সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।অন্যদিকে সাউথ এশিয়ান সিডস এর ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বলেন, “কৃষকরাই আমাদের প্রাণ। সমস্যার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্ভবত জমি প্রস্তুত করতে দেরি হওয়ায় বীজে ফলন চলে এসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের ক্ষতি পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শুভ্র দাস বলেন, “কৃষকদের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের ক্ষতি সত্যিই অপূরণীয়। ডিলারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। যদি তা না হয় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হবে।”ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, এটি শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং পুরো এলাকার কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে ফেলেছে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।ভোরের আকাশ/মো.আ.
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৩:৫২ পিএম
নাজিরপুরে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ঢেউটিন এবং গৃহনির্মাণ সহায়তার চেক বিতরণ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।বুধবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় উপজেলা চত্বরে এ সহায়তা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজিয়া শাহনাজ তমার সভাপতিত্বে ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কৌশিক আহমেদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মোট ৫৪টি অসহায় পরিবারকে ১ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহনির্মাণ সহায়তা বাবদ সর্বমোট ২,৫৮,০০০/- টাকার চেক প্রদান করা হয়।চেক ও ঢেউটিন বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র দাষ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা, সাংবাদিকবৃন্দ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।উপকারভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেন, এই সহায়তা আমাদের জন্য বড় একটি আশীর্বাদ। ঘর মেরামত করার জন্য এই সহায়তা আমাদের খুবই কাজে আসবে। তারা উপজেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।ভোরের আকাশ/মো.আ.
২৭ আগস্ট ২০২৫ ০৩:০২ পিএম
পিরোজপুরে নতুন ঘর পেলেন দিনমজুর ওমর ফারুক
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাশরী গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্মিত নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ চাবি হস্তান্তর কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত উপকারভোগী ওমর ফারুক বলেন,“আগে ঝড়-বৃষ্টি এলেই ঘর ভেঙে পড়ার ভয়ে আতঙ্কে থাকতে হতো। বাচ্চাদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে হতো। এখন মনে হচ্ছে, আমি সত্যিকারের ঘর পেয়েছি। ঘরে ঠোকা প্রতিটি পেরেক আপনাদের জন্য দোয়া করবে।”অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন,“অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো সরকারের অন্যতম মানবিক উদ্যোগ এটি। এই ঘর শুধু আশ্রয় নয়, বরং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য নিরাপত্তা ও নতুন জীবনের প্রত্যাশা। আমরা চাই, প্রতিটি মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই পাক এবং জীবনের কষ্ট কিছুটা হলেও কমুক।”তিনি আরও বলেন, “কাউখালী উপজেলার দুর্গত ও গৃহহীন পরিবারগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে ঘর প্রদান করা হচ্ছে। এসব ঘর তাদের সামাজিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনবে। এটি শুধু একটি প্রকল্প নয়, বরং মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ ও সহমর্মিতার প্রকাশ।”অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আলাউদ্দীন ভূঞা জনী, কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বজল মোল্লা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা।স্থানীয়দের মতে, নতুন এই ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিরাপদ আশ্রয়ই দেবে না, বরং তাদের সামাজিক অবস্থান সুদৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.