পানিতে প্লাস্টিক বর্জ্য আর মৃত মাছের দুর্গন্ধে বিপর্যস্ত পরিবেশ
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫ ০১:১৯ পিএম
মৎস্য চাষীদের দখলে থাকা দীঘি নেট দিয়ে ঢাকা।
সীতাকুণ্ড পৌর এলাকার দীঘিগুলোতে প্লাস্টিকের বোতল, নিত্য পণ্যের প্লাস্টিক মোড়ানো বর্জ্য আর মৃত মাছের দুর্গন্ধে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে দীঘির পানি।
উপজেলা সুপার মার্কেট, ন্যাশনাল মার্কেট ও আফরোজা প্লাজাসহ ৩ মার্কেটের মিলনস্থলে থানা সংলগ্ন দীঘির দক্ষিণ পাড়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ডি.টি রোড সংলগ্ন দেওয়ান দীঘির পূর্ব পাড়েও ফেলতে দেখা যায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন বর্জ্য। পৌরসভা ভবনের উত্তর পাশে অবস্থিত দিঘীতে গড়ে উঠেছে ভিন্নরূপে মৎস্য প্রকল্প। মৎস্য চাষীদের দখলে থাকা এ দীঘির সম্পূর্ণ জলীয় অংশ নেট দিয়ে ঢাকা। ব্যবহার অযোগ্য সম্পূর্ণ নেটে ঢাকা এ দীঘির পানি পশু পাখিরদেরও নাগালের বাহিরে। অথচ পাড়ের উত্তরাংশে অবস্থিত সীতাকুণ্ড উন্নয়ন আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সীতাকুণ্ড ব্যবসায়ী কমিটির কার্যালয়। পলিথিনে মোড়ানো ময়লা-আর্বজনায় বর্জ্যগুলো পঁচে-গলে উৎকট দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। প্লাস্টিক কিংবা পলিথিনের বর্জ্য আর মৃত মাছের দুর্গন্ধে বিপর্যস্থ পরিবেশ।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ সাইদুল ইসলাম মানিক বলেন, দীঘিতে নিক্ষেপ করা সর্বনাশা প্লাস্টিক ও পলিথিন অপচনশীল হওয়ায় পরিবেশের উপর দীর্ঘস্থায়ী মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। দূষিত হচ্ছে মাটি-পানি‘সহ সামগ্রিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ। পানিতে মৃত মাছ আর আর্বজনার দুগন্ধে আমার পরিচালনাধিন বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। অভিভাবকদের একজন রুমা আকতার (রুমি) বলেন, শুস্কমৌসুমে আবহাওয়া জলবায়ুর পরিবর্তনে পানির এ দুর্গন্ধ মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে অবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়ে। তখন কোমলমতি অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে।
ব্যবসায়ী মো. আলা উদ্দিন বলেন, আবাসিক এলাকার গৃহস্থালী বর্জ্য, বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরাঁসহ পৌরসদরস্থ বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর প্লাস্টিক মোড়ানো মেডিসিন বর্জ্য থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধে জনসাধারণের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি ছাড়াও মশার প্রজনন আখড়ায় পরিনত হয়েছে। তাতে ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে জনস্বাস্থ্য। যত্রতত্র পলিথিন নিক্ষেপের ফলে মারাত্মক দূষিত হচ্ছে বাতাস, মাটি ও পানি।
পৌরসদরস্থ দক্ষিণ বাইপাস মেসার্স পুষ্প এন্টারপ্রাইজ এর সত্ত্বাধিকারী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, বাজারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাস্টবিন থাকা সত্বেও অসচেতন জনসাধারণের একটি অংশ পৌরসদরস্থ দিঘীগুলোর পাড়ে কিংবা পানিতে প্লাস্টিক‘সহ অন্যান্য বর্জ্যগুলো নিক্ষেপ করছে। তাতে দিন দিন ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে পৌরসদরস্থ দিঘীগুলো।
সীতাকুণ্ড পৌরসদর ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির সদস্য সচিব মাওলানা তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, পৌর এলাকায় চাহিদা মতো ডাস্টবিন রয়েছে। ডাস্টবিনগুলো থেকে নিয়মিত ময়লা-আর্বজনা অপসারণ করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জনসাধারণের একটি অংশ নির্দিষ্ট ডাস্টবিনের বাহিরে যত্রতত্র কিংবা পানিতে ময়লা-আর্বজনা ফেলছে। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আর্বজনা ফেলতে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমসহ পৌরবাসীর সহায়তা কামনা করেন তিনি।
ভোরের আকাশ/আজাসা