রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর এলাকার সি ব্লকে অবস্থিত একটি ঝুটের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ৭টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়।ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, ৭টার দিকে আগুনের খবর আসে। ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করে ৭টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুরোপুরি নির্বাপণ করতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।মিরপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার শাহজাহান সিরাজ বলেন, আগুন পুরোপুরি নির্বাপণে কাজ চলছে। তবে আগুনের সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে তদন্ত চলছে।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে তাড়াতে একসঙ্গে মাঠে থাকলেও শেখ হাসিনা বিদায়ের পর দুই দলের নেতাদের মধ্যে শুরু হয় কাঁদা ছোড়াছুড়ি। তবে সম্প্রতি লন্ডনে দল দুটির শীর্ষ চার নেতার বৈঠকের পর পাল্টে গেছে মাঠের চিত্র। রাজনীতির মাঠে নানা বক্তব্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন ও রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে কৌশলী বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। মাঠ পর্যায়ে দুই দলের চলমান বিভেদ কমে এসেছে। বৈঠকের পর থেকে বিএনপি ও জামায়াত নেতারা একই সুরে কথা বলছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারা দ্রুত নির্বাচন আদায় প্রশ্নে হাইলার্ডনে বা মাঠ গরম করা বক্তব্য দেওয়া থেকে সরে এসেছেন। ধৈর্য্যরে সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার পথেই হাঁটছে দলটি। যদিও নির্বাচন আদায়ে জনমত তৈরিতে দলটি সমমনাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকও করছে বিএনপি।অপরদিকে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক নীতি বজায় রেখে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন ইস্যুতে দল দুটির নেতারা এখন বিএনপির কাছাকাছি বক্তব্যও দিচ্ছেন। বিএনপি ডিসেম্বরে ভোট চাইছে। আর আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি তুলে বিএনপির দাবির কাছাকাছি সময়ে চলে এসেছে জামায়াত। কূটনীতিক পর্যায়েও দল দুটি নির্বাচন আদায়ে কাজ করছে।বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বলছেন- রাষ্ট্রের সংস্কার দরকার। তবে, সংস্কারের জন্য লম্বা সময় নিলে দেশে যে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে সেটি আরো বাড়তে পারে। যার সুযোগ নিতে পারে পতিত আওয়ামী লীগ। ফ্যাসিস্ট দলটির প্রত্যাবর্তন নিয়ে দুই দলই একমত। গণঅভ্যূত্থানে স্পিরিট বজায় রেখে পতিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যেও জোর দিচ্ছেন তারা। মৌলিক সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইছেন তারা। ঐক্য ধরে না রাখতে না পারলে ফের স্বৈরাচার মাথাচাড়া দেওয়ার পাশাপাশি দেশে ফের ভারতীয় আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ সৃষ্টি বলেও মনে করছেন তারা।বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দৈনিক ভোরের আকাশকে এ বিষয়ে বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারাই মাঠে ছিল তাদেরকে নিয়ে বিএনপি ঐক্য চাইছে। জোটবদ্ধ না থাকলেও কিন্তু আমরা অনেক দল মিলে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি। এখনো আমরা ঐক্য চাইছি। জামায়াতের ইস্যুতেও আমাদের একই অবস্থান। যা আমি জামায়াতের অনুষ্ঠানে গিয়েও বলেছি।জামায়াতের ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামীতেও দেশ ও জাতির স্বার্থে বিএনপি ও জামায়াত এক থাকবে ইনশাআল্লাহ।তিনি বলেন, মাঠের কথাবার্তা যাই হোক না কেন দুই দলের মৌলিক চাওয়া এক।জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছে বিএনপি ও জামায়াত। মাঝে মধ্যে টানাপড়েন সৃষ্টি হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি দল দুটির সম্পর্ক বা জাতীয় কোনো ইস্যুতে অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে। এবারো চুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর কয়েকটি বিষয় নিয়ে দল দুটিতে টানাপড়নের সৃষ্টি হয়।টানাপড়েন সৃষ্টি হওয়া ইস্যুর মধ্যে নির্বাচনের সময় প্রশ্ন, আগে সংস্কার নাকি নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যু এবং জুলাই ঘোষণাপত্র ছিল উল্লেখযোগ্য। এসব ইস্যুতে খোদ বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত দ্বিধাবিভক্ত বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দল দুটির নেতাকর্মীদের বাকযুদ্ধ এখন স্বাভাবিক ব্যাপারে দাঁড়িয়েছে।এছাড়া শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে স্থানীয়ভাবে প্রভাব সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দল দুটির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে নিহতের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিয়েও দল দুটির মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। কেন্দ্র থেকে শুরু করে সর্বত্র যার প্রভাব পড়ে। দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপি ও জামায়াতের এই দ্বন্দ্ব দেশের সচেতন মানুষকে ভাবিয়ে তোলে।আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই নির্বাচনের সময় প্রশ্নে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়ে স্পষ্ট বিভাজনের সূত্রপাত হয়।উদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যেই যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের যার তথ্য গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বাসায় তাদের এ বৈঠক হয়। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এ বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুক কামাল খান সোহেল তার ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন। পরে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান দেশে ফিরে এ বৈঠকের কথা স্বীকার করেন।তিনি বলেন, অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসনকে তিনি দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। ওই বৈঠক নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানা বক্তব্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত দল দুটির নেতারা ফের একই সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সময় প্রশ্নে বিএনপি নেতারা কিছুদিন আগেও যে হার্ড লাইনে কথা বলতেন সেখান থেকে কিছুটা হলেও তারা সরে এসছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রায়ই বলতেন, প্রয়োজনে ডিসেম্বরে ভোটের দাবিতে রাজপথে নামবে বিএনপি। কিন্তু হঠাৎ করেই বিএনপি নেতারা ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করছেন।গত ১৯ এপ্রিল বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের বৈঠক শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। কারণ, এই সরকারকে তো আমরাই সমর্থন দিয়ে বসিয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করবে আমরা সেই আশাই করছি।এছাড়া গত কয়েকদিনে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে দেখা গেছে, তাদের বক্তব্যও বেশ কৌশলী বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদের বক্তব্যে কিছুটা নমনীয় ভাব লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া জামায়াতকে উদ্দেশে করে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতারা নানা বক্তব্য এখন আর সেটি দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিবাদে জড়ালে ভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়ও মাথায় রয়েছে বিএনপির। বেশ ধৈর্য্যরে সঙ্গে নিজেদের দাবির পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করছেন বিএনপি নেতারা। প্রতিদিন সমমনা কোনো না কোনো দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিএনপি নেতারা। এছাড়া কূটনীতির মাঠে কাজ করছে বিএনপি। দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে যে দ্রুত সংসদ নির্বাচন দরকার সেটি তারা সর্বমহলে বোঝানোর কাজে ব্যস্ত। এছাড়া বিএনপির মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠন পুনর্গঠন নিয়েও ব্যস্ত রয়েছে।এদিকে, জামায়াত নেতারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন বলে জোরেসোরে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে দলটির নেতার সরাসরি বিএনপির সঙ্গে বিবাদেও জড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু লন্ডনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে সঙ্গে বৈঠকের পর অবস্থান পরিবর্তন করেছে জামায়াতে ইসলামী।দলটির আমির ওই বৈঠকের মাত্র কয়েকদিন পর গত সপ্তাহে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, নির্বাচন বেশি দেরি করা ঠিক হবে না। আগামী রমজানের আগেই ভোট চাইছে দলটি। বিএনপির দাবির কাছাকাছি সময়ে তিনিও ভোট চান। এছাড়া ভোট প্রশ্নে জামায়াত এই মূহূর্ত কারো সঙ্গে অনৈক্য সৃষ্টি করতে চায় না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেই কাজ করতে মাঠ পর্যায়ে বার্তা রয়েছে জামায়াতের।বিষয়টি নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াতে অনৈক্য সৃষ্টি হলে ফ্যাসিবাদিরা সুযোগ নিতে পারে। তাই আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকার উপরে জোর দিচ্ছি।তিনি বলেন, আগে যাই হোক, এখন তেমন কোনো মনোমানিল্য এখন আর দেখছি না। দুই দলই চাইছে ঐক্য। তিনি আরো বলেন, ঐক্য না থাকলে এখানে আবারো ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্য নতুন করে বিস্তার লাভ করতে পারে।এ বিষয়ে জামায়াতের ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই আমরা ঐক্যবব্ধ আছি। আগামীতেও দেশ ও জাতির স্বার্থে বিএনপি জামায়াত এক থাকবে ইনশাল্লাহ। মাঠের কথাবার্তা যাই হোক না কেন দুই দলের মৌলিক চাওয়া এক।জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলন করে জামায়াত। পরে ক্ষমতায় এসে জামায়াতকে নিধনে নামে আওয়ামী লীগ। পরে ফের আওয়ামী লীগ ঠেকাতে ১৯৯৯ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট হয়। ২০০১ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে সরকার গঠন করে দল দুটি। সম্পর্কে উত্থান-পতন হলেও জোট ভাঙেনি।২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ আন্দোলন করে বিএনপি ও জামায়াত। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নিবন্ধন হারানো জামায়াতের নেতারা বিএনপির প্রতীকে প্রার্থী হন। ২০২২ সালে দুই দল আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ভেঙে দিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে নামে। প্রথম দিকে জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও মাঝে কিছু সময় নানা অভিযোগ এন জামায়াত সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে ফের ২০২৪ এর নির্বাচনে আগে ও পরে বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করে জামায়াত।গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার গণহত্যা চালায়। বিএনপি ও জামায়াতকে আন্দোলনের জন্য দায়ী করে ঢালাও মামলা এবং গ্রেপ্তার করে। গত বছর ২৬ জুলাই জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয় বিএনপি। ওই আন্দোলনে দল দুটি সর্বোচ্চভাবে মাঠে ছিল।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঢাকার ধামরাইয়ে অটোরিকশা চালক মোহাম্মদ আলী হত্যার রহস্য উৎঘাটন করেছে পুলিশ। সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির শুক্রবার দুপুরে ধামরাই থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যার রহস্য উদঘাটনের কথা জানান।পুলিশ জানায়, ২০ এপ্রিল বিকেলে ধামরাইয়ের বাটুলিয়া পাড়া গ্রামের অটোরিকশা চালক মোহাম্মদ আলীকে ধামরাই উপজেলা পরিষদের নবনির্মিত ভবনের চারতলায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন তার স্ত্রী জয়তুন এবং পরকীয়া প্রেমিক তোফাজ্জল মিয়া। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ওইদিনই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।তদন্ত শেষে পুলিশ স্ত্রী জয়তুন ও তার প্রেমিক তোফাজ্জল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে এবং হত্যার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। দুপুরে আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, পরকিয়ার জের ধরে স্ত্রী ও তার প্রেমিক মোহাম্মদ আলীকে হত্যা করেছে।ভোরের আকাশ/সু
রাজবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী সাংবাদিক সংগঠন গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রেসক্লাবের স্থায়ী কার্যালয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন ইউএনও ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. নাহিদুর রহমান।এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে বৈশাখী টেলিভিশনের রাজবাড়ী প্রতিনিধি এবং দৈনিক সমকালের গোয়ালন্দ প্রতিনিধি আজু শিকদার এবং সাধারণ সম্পাদক পদে দৈনিক জনকণ্ঠের রাজবাড়ী সংবাদদাতা শহিদুল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।কমিটির অন্যান্য পদেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মেহেদুল হাসান আক্কাস (দৈনিক নয়াদিগন্ত), কোষাধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম হালিম (দৈনিক ভোরের আকাশ), দপ্তর সম্পাদক সাইফুর রহমান পারভেজ (দৈনিক গণমুক্তি), প্রচার সম্পাদক লুৎফর রহমান (আজকালের খবর)।সহ-সভাপতি পদে সরাসরি ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৮ ভোটের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৩ ভোট পেয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক ইনকিলাবের রাজবাড়ী প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম। এছাড়া ১২ ভোট পেয়ে ২ নম্বর সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের গোয়ালন্দ প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম রানা।নব নির্বাচিত সভাপতি ও সম্পাদক বলেন, সংগঠনের ঐতিহ্য রক্ষা এবং সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার আদায়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব। এ লক্ষ্যে তারা সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।ভোরের আকাশ/এসআই
মৃত্যুর চার দিন পর আ.লীগ নেতা বাবুল আকতারের নামে থানায় মামলা দায়ের হওয়ার ঘটনায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম।এর আগে গত ১৯ এপ্রিল স্থানীয় এক জামায়াত নেতা গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি রাজনৈতিক মামলায় বাবুল আকতারকে ১৫৫ নম্বর আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন।মৃত বাবুল আকতার গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ডাকুনী গ্রামের আব্দুল জলিল মিয়ার ছেলে। তিনি বরিশাল ইউনিয়ন আ.লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল অসুস্থতার কারণে তিনি মারা যান। দলমত নির্বিশেষে সব ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দরবস্ত ইউনিয়নের বেড়ামালঞ্চা গ্রামের জামায়াত নেতা আজাদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৯ এপ্রিল বিস্ফোরক আইনে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে ২২১ জনকে আসামি করা হয়।এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, শুনেছি তিনি মারা গেছেন। তবে এখনো নিশ্চিত না। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসআই
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুশৃঙ্খলভাবে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক ও মাভাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।জিএসটি ভর্তি পরীক্ষা ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সি’ (বাণিজ্য) ইউনিটে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৩,০৬৪ জন। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫৯২ জন।জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় আগামী ২ মে ‘বি’ (মানবিক) ইউনিটে ৭২,০৬২ জন এবং ৯ মে ‘এ’ (বিজ্ঞান) ইউনিটে ১,৪২,৭১৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি’ ইউনিটে ১৮১৯ জন ও ‘এ’ ইউনিটে ৭৩০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে।গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহবায়ক ও মাভাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ জানান, দেশের জিএসটি গুচ্ছভুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস-চ্যান্সেলরদের নেতৃত্বে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশের কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তিনি ভর্তি পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।ভোরের আকাশ/এসআই
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও বটে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা খর্ব করতে তৈরি করা হয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। কাগজপত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন থাকলেও এতে ভাগ বসায় ২০১২ সালে তৈরি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগটি। ফলে একটি দেশের আর্থিক খাতের দুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা দাঁড়িয়ে যায়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত।বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আর্থিক খাতের দুটি বিশ্ব সংস্থা উদ্যোগ নিয়েছে। আর্থিক খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করার শর্ত জুড়ে দিয়েছে আইএমএফ। আইএমএফের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করতে বলেছে বিশ্ব ব্যাংক। নানামুখী চ্যালেঞ্জে জর্জরিত বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল ও টেকসই করতে ১০ দফা সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসনের কথা গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে।বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। এখানে লিজ দেওয়ার পদ্ধতিতে চলেছে লুটপাট ও অর্থপাচার। আর এই পথ সুগম করতে দিন দিন দুর্বল করা হয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংককে। এজন্য তৈরি করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। কাগজপত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন থাকলেও এতে ভাগ বসায় ২০১২ সালে তৈরি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগটি। ফলে একটি দেশের আর্থিক খাতের দুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা দাঁড়িয়ে যায়। এর আগে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেও এমন একটি বিভাগ সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার যা পরে বিএনপি সরকার বাতিল করেছিল।অর্থ মন্ত্রণালয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সৃষ্টি করে সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া হয় এই বিভাগকে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা কার্যক্রমেও হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয় বিভাগটির মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংককে দুর্বল করার পর পরই আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় শুরু হয় ব্যাংক লুটপাট, যার শুরু হয়েছিল সোনালী ব্যাংকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির মধ্য দিয়ে। লুটেরাদের বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও নতুন নতুন লুটেরাদের আকৃষ্ট করে এই খাতে। ক্রমে প্রতাপশালী সকল স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর চাপে কোনঠাসা হয়ে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে চাপে ও লোভে নৈতিক পদস্খলনও ঘটে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তার।শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির হিসাবে, গত সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে লুটপাট সবচেয়ে বেশি হয়েছে ব্যাংক খাতে। তাদের প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য ঋণ কেলেঙ্কারি, প্রতারণা, ভুয়া ঋণ ও ঋণের অপব্যবহারের বিভিন্ন ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতের লুটপাটের টাকা দিয়ে ১৪টি মেট্রোরেল ও ২৪টি পদ্মা সেতু করা যেত। সেই হিসাবে দেশের আর্থিক খাতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লুটের পরিমাণ ৭ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ব্যাংক খাত থেকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ লুট করা হয়েছে, তার বড় অংশই পাচার হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এসব কারণে গত বছর ৫ আগস্ট রক্তক্ষয়ী গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবদিক থেকে জোর দাবি ওঠে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সত্যিকারের পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করার। একই সাথে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করে এটিকে একটি সেল হিসেবে রাখার পরামর্শ আসে।অন্তর্বর্তী সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব দেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মনসুরকে। তিনিও শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার কথা বার বার বলে আসছেন। একই কথা বলছে দুটি বিশ্ব সংস্থা, আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংক। বাংলাদেশের আর্থিক খাত সংস্কারের প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসনের বিষয়টি জোর দিয়ে তুলে ধরেছে বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থা দুটি।সম্প্রতি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করে গেছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল। ওই আলোচনাতেও আর্থিক খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করার শর্ত জুড়ে দিয়েছে আইএমএফ। ব্যাংক খাতের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে আইনগত সংস্কার ও কার্যকর সম্পদ মান যাচাই এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সুশাসন জোরদারের ওপরও গুরুত্বারোপ করে সংস্থাটি।পাশাপাশি অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন মোকাবিলায় জোরালো ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আবার খেলাপি ঋণ কমানোর পাশাপাশি ব্যাংক খাতে দুর্বল তদারকি রোধ এবং নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতার ঘাটতি দূর করার কথাও বলেছে। দুই সপ্তাহের সফর শেষে গত ১৭ এপ্রিল আইএমএফ প্রতিনিধিদল সাংবাদিকদের সামনে যে ব্রিফিং করেছিল সেখানে এই বিষয়গুলো উঠে আসে। আইএমএফের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সায়ত্বশাসন নিশ্চিত করতে বলেছে বিশ্ব ব্যাংক। নানামুখী চ্যালেঞ্জে জর্জরিত বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল ও টেকসই করতে ১০ দফা সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসনের কথা গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে।সংস্থাটির মতে, দীর্ঘদিনের কাঠামোগত দুর্বলতা, সুশাসনের অভাব ও রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে ব্যাংক খাত এখন গুরুতর ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এসব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। বুধবার প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সুপারিশগুলো তুলে ধরেছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি, পরিচালন অদক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রভাবে ঋণ বিতরণসহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থায় ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করতে সুসংগঠিত ও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।বিশ্বব্যাংকের ১০ দফা সুপারিশ হলো: ব্যাংক খাতের নীতি কাঠামো উন্নত করতে অগ্রাধিকার দেওয়া। আমানত সুরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করা। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন আনা। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক পুনর্গঠন করা। খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনায় শক্ত কাঠামো তৈরি। সমন্বিত দেউলিয়া আইন প্রণয়ন করা। ব্যাংকিং আইন ও নীতির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা। জরুরি তারল্য সহায়তার জন্য নীতি কাঠামো তৈরি করা। ব্যাংক তদারকিতে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা অনুসরণ করা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুনের শেষে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের মোট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশের আর্থিক খাতের ৮৮ শতাংশ এবং মোট জিডিপির প্রায় ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ রয়েছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের, ২৫ শতাংশ রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের এবং ৪ শতাংশ বিদেশি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে।বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎ, পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ প্রদান এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার মতো ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চলমান। ২০২৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে এক পরিবারের সদস্যদের পর্ষদে থাকার মেয়াদ ১২ বছরে উন্নীত করায় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির তথ্য উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে আটটি ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে পারস্পরিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭০ কোটি মার্কিন ডলার, যা প্রমাণ করে ব্যাংক খাতে কীভাবে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম ইনস্টিটিউশনালাইজড হয়ে উঠেছে।বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে বলেছে, ব্যাংক খাতের অস্থিরতা কেবল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করে না, বরং বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস করে এবং জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ পর্যন্ত বার্ষিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৭০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বিশ্বের ১৫১টি ব্যাংকিং সংকট বিশ্লেষণ করে এমনটাই উঠে এসেছে। সংস্থাটি মনে করে, অন্তর্র্বতী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু দুর্বলতা চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এই উদ্যোগকে কার্যকর করতে হলে বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কার্যকর নীতিনির্ধারণ প্রয়োজন।বিশ্বব্যাংক জোর দিয়ে বলেছে, ব্যাংকিং খাতের সংকট মোকাবিলায় যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে, অর্থনৈতিক ক্ষতির মাত্রা ততই হ্রাস করা সম্ভব হবে। এ জন্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সহ দশ দফা সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই তৈরি হচ্ছে আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট। পাশাপাশি অর্থনীতি চাঙ্গা করার বিষয়টিও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এজন্য টাস্কফোর্সের সুপারিশ অনুসরণ করা হচ্ছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে। জনজীবন সহজ করতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রথম অগ্রাধিকারে রাখছে সরকার। সামাজিক কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়িয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আরও বেশি সুরক্ষার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। লক্ষ্য রয়েছে গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির। এজন্য কৌশল হিসেবে বড় উন্নয়ন প্রকল্প না নিয়ে গ্রামীণ রাস্তাঘাট এবং অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কারে জোর দেওয়া হবে আগামী বাজেটে। পাশাপাশি ছোট করা হচ্ছে বাজেটের আকার। এতে বাড়তি করের বোঝা চাপবে না জনগণের ওপর। ফলে বাজেট ঘোষণার পর খুব বেশি পণ্যের দাম বাড়বে না। বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানা গেছে।তারা জানিয়েছেন, রাজস্ব সংগ্রহের বড় কোনো উৎসের সন্ধান না পাওয়ায় আগামী বাজেট তেমন বড় করা হচ্ছে না। এ কারণেই চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার কমানো হচ্ছে অন্তত সাত হাজার কোটি টাকা। অহেতুক উচ্চাভিলাষী নয়; বরং একটি বাস্তবভিত্তিক বাজেটের দিকেই এগোচ্ছে অন্তর্র্বতী সরকার। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ‘বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্র্নিধারণ’ শীর্ষক একটি টাস্কফোর্স তৈরি করেছিল। প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই টাস্কফোর্সের অন্তত একটি করে সুপারিশ বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর প্রেক্ষিতে টাস্কফোর্সের সুপারিশের আলোকে বাজেট প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। রাজস্ব আদায় ও খরচের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ওই সুপারিশমালার ওপর ভিত্তি করে।গত বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হতে পারে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার থেকে ১৯ হাজার কোটি টাকা বেশি। তবে এ বছরের সংশোধিত লক্ষ্যের তুলনায় ৩৫ হাজার ৫শ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে এনবিআরকে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল। পরে এটি কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫শ কোটি টাকা নির্ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী বাজেটে জনমনে স্বস্তি দিতে দ্রব্যমূল্য কমানোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে যা ৯ থেকে ১০ শতাংশের ঘরে ওঠানামা করছে। নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। তবে শুরুতে এই হার ৭ শতাংশ নির্ধারণ করার পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গেছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থসরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সাফল্য দেখানোয় আত্মবিশ্বাস বেড়েছে সরকারের।বাজেট নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রথম অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট করতে যাচ্ছি। এ ছাড়া নজর থাকবে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, জ্বালানি সাশ্রয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বাজেটে। চাইব মানুষের জীবনযাত্রা যেন সহজ হয়।এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব বাড়বে। তবে মানুষের ওপর অহেতুক করের বোঝা বাড়াব না।জানা গেছে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ২ জুন সোমবার। প্রতি অর্থবছরে জুন মাসের কোনো বৃহস্পতিবারকে বাজেট ঘোষণার জন্য বেছে নেওয়া হলেও এবারই এর ব্যতিক্রম হচ্ছে। তবে বাজেট ঘোষণার পরদিন রেওয়াজ অনুযায়ী অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে নিয়ে বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলন করবেন অর্থ উপদেষ্টা।অর্থ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হতে পারে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে রাখা হবে। আগামী অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কিছুটা কমিয়ে ইতিমধ্যে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে, চলতি অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশের নিচে থাকবে।জানা গেছে, এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হবে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। বরাদ্দের দিক থেকে আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা এবং শ্বেতপত্র কমিটি ও টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনের সুপারিশের প্রতিফলন থাকবে বাজেটে। তবে বাজেটের আকার আরও কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।এ প্রসঙ্গে অর্থনীতি বিশ্লেষক মো. মাজেদুল হক বলেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার হিসাব ধরলে আগামী অর্থবছরের বাজেটও উচ্চাভিলাষী হয়ে যায়। তবে নতুন করের বোঝা না বাড়িয়ে আদায় বাড়িয়ে যদি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারে এনবিআর, সেটা খুবই ভালো হবে। যদি আমরা ধরে নেই রাজস্ব আদায় বাড়বে, এরপরও বাজেটের আকার আরও ছোট হওয়া দরকার। কারণ, আগের সরকার যে বড় বড় বাজেট ঘোষণা করত, তার অনেকটাই অবাস্তবায়িত থাকত। তাই চলতি অর্থবছরের তুলনায় বাজেটের আকার মাত্র ৭ হাজার কোটি টাকা না কমিয়ে আরো বড় পরিসরে কমালে সার্বিকভাবে ভালো হতো।বাজাটে অগ্রাধিকার পাচ্ছে যেসব খাত : আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ উৎপাদন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও ক্ষয়ক্ষতি পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে সবুজ ও জলবায়ুসংক্রান্ত প্রকল্প বিশেষ গুরুত্ব পাবে। একই সঙ্গে নতুন বাজেটে অগ্রাধিকার পাচ্ছে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাত। সমাজে বৈষম্য কমানোর পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও থাকবে। নতুন বাজেটে থাকছে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের বিশেষ করে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগীর সংখ্যা ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ।অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকারের নতুন অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় আসন্ন বাজেটে বৈদেশিক ঋণ কিংবা অনুদানে বাস্তবায়ন হচ্ছে এসব প্রকল্পে এডিপিতে অর্থ বরাদ্দের চাহিদা প্রস্তাব করতে হবে। পাশাপাশি দারিদ্র্য নিরসন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এসব প্রকল্পের জন্য অগ্রাধিকার বিবেচনায় আনতে হবে। এ ছাড়াও মানবসম্পদ উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট এমন সব প্রকল্পে এডিপির আওতায় আনা । তবে এসব প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দের চাহিদা প্রস্তাব করতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে। এছাড়া প্রকল্পভিত্তিক চাহিদা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দের পাশাপাশি আগামী ২০২৬-২৭, ২০২৭-২৮ অর্থবছরের বরাদ্দের প্রক্ষেপণ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রাথমিকভাবে শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা, কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ, স্বাস্থ্য সেক্টরের আওতাধীন ৩৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এসব সেক্টরের মাল্টি ইয়ার পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম তেরি হবে। যে কারণে বেশকিছু বিবেচনায় নিতে হবে বলে সরকারের নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমানো, রাজস্ব ফাঁকি বন্ধের লক্ষ্যে বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে কাজের সুযোগ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কল-কারখানার অপারেটর, টেকনিশিয়ান, মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপক ও প্রকল্পের সাধারণ কর্মীসহ বাংলাদেশের শ্রমবাজারে যেসব কাজের জন্য পর্যাপ্ত জনবল পাওয়া যায়, ওইসব ক্ষেত্রে বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে কাজের অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুধু বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কর্মী নিয়োগে সরকার অনুমোদন দেওয়া হবে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।সূত্র জানায়, ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে যারা সাধারণ কর্মী হিসেবে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করছেন, তাদের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আর নবায়ন করা হবে না। পাশাপাশি কেউ ভিসার শর্ত ভঙ্গ করছে কি না, সেটি দেখার জন্য পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) তিনটি টিম মাঠে নেমেছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কোনো বিদেশির ক্ষেত্রে ভিসার শর্ত ভঙ্গ হলে, অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠানে কাজের জন্য এসেছেন বা যে কাজের জন্য এসেছেন, সেই প্রতিষ্ঠানে বা সেই কাজ না করলে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করে ফেরত পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন বিদেশিকে ভিসার শর্তভঙ্গ ও অপরাধে জড়িয়ে পড়ার কারণে কালো তালিকাভুক্ত করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।এছাড়া যেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে, সেসব দেশের নাগরিকদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হবে। তবে সরকার আয়োজিত প্রোগ্রাম, আন্তর্জাতিক বা দ্বিপক্ষীয় টুর্নামেন্ট এবং প্রতিরক্ষা, জাতিসংঘ ও তাদের অধীনস্থ সংস্থার কর্মী ও কূটনৈতিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া অব্যাহত থাকবে। ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলার সঙ্গে সম্পৃক্তদের, বিশেষ করে ফুটবলারদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেওয়া হবে না। পাশাপাশি বিদেশি কর্মীদের তথ্যভান্ডার তৈরি করতে একটি সফটওয়্যার সিস্টেম চালু করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসার জন্য অ্যাপ চালু করা হয়েছে। অন-অ্যারাইভাল ভিসা, সফটওয়্যার সিস্টেমে বিদেশি নাগরিক তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে শীঘ্রই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করবে বলে জানা গেছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিদেশি নাগরিকদের কর্মানুমতি, সফটওয়্যার বা অনলাইনভিত্তিক তথ্যভান্ডার তৈরি করা এবং অন-অ্যারাইভাল ভিসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে পরিপত্র জারির আগ পর্যন্ত বর্তমান নিয়ম যথাযথভাবে পরিপালন করার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।গত বছরের ৮ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জনের অনুরোধ করে। আরেক বিজ্ঞপ্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধতা অর্জনের আবেদন করার সময় দেয়। এরপর গত ৩ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত সচিব শামীম খানকে প্রধান করে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে ১১ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে সরকার।ওই টাস্কফোর্সের প্রথম সভায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ৩৯ হাজার বিদেশি নাগরিক বৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এর বাইরে প্রায় ৪৬ হাজার বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এই তথ্য গত বছরের ডিসেম্বরে সরকারকে জানানো হয়েছে। তবে অবৈধ বিদেশিদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি জারির পর প্রায় ১৫ হাজার বিদেশি এক্সিট পাস নিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছেন।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, বিভিন্ন উৎস থেকে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের যে হিসাব পাওয়া যায়, তার সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ ডাবল কাউন্টিং হয়, অনেকে অন-অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে এসে অবস্থান করছেন নাকি ফিরে গেছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায় না। এসব কারণে বাংলাদেশে কত সংখ্যক বিদেশি কাজ করছেন তার সুনির্দিষ্ট হিসাব বলা মুশকিল। তবে বাংলাদেশে যেসব বিদেশি রয়েছেন, তাদের ৫০ শতাংশের বেশি সাধারণ কাজের সঙ্গে জড়িত বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক জরিপে জানিয়েছিল বাংলাদেশে বৈধ ও অবৈধভাবে কর্মরত বিদেশি কর্মীর সংখ্যা কমপক্ষে ২ লাখ ৫০ হাজার। এই সংখ্যার হিসাবে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ৩ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স অবৈধভাবে পাচার হয়ে যায়। তাদের কর ফাঁকির ফলে বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়।টিআইবির গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে ৪৪টিরও বেশি দেশের নাগরিক বিভিন্ন খাতে কর্মরত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো হচ্ছে- ভারত, চীন, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনস, নরওয়ে ও নাইজেরিয়া। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বাংলাদেশে রুশ নাগরিকদের উপস্থিতিও বেড়েছে।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বিদেশি কর্মী কাজ করছেন তৈরি পোশাক (আরএমজি) ও টেক্সটাইল খাতে। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, আন্তর্জাতিক এনজিও, চামড়া শিল্প, চিকিৎসা সেবা এবং হোটেল ও রেস্তোরাঁয় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিদেশি কাজ করছেন। শিক্ষার্থী ও খোলোয়াড় রয়েছেন কয়েক হাজার।আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিদেশি নাগরিকদের আয়ের ওপর করহার ৩০ শতাংশ, অর্থাৎ কোনো বিদেশি ১০০ টাকা আয় করলে ৩০ টাকা কর দিতে হবে। যে প্রতিষ্ঠানে ওই বিদেশি চাকরি করেন, প্রতি মাসে বেতন-ভাতা দেওয়ার সময় এই কর কেটে রাখবে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান। বিদেশিদের ওপর কর পুরোটাই উৎসে কেটে রাখতে হবে।যথাসময়ে যথাযথভাবে কর না দিলে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান বা ওই বিদেশি নাগরিককে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। আয়কর আইনে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ বা প্রদেয় করের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান আছে। এছাড়া তিন বছরের জেল দেওয়ার সুযোগ আছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জামালকে গুডবুকে রেখেও যেভাবে কৌশল করে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছিল তা দৃষ্টিকটুই বটে। তাকে জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটা কৌশলও মনে করা হচ্ছে। মানসিক চাপে পড়ে জামাল আর্মব্যান্ড খুলে ফেলবেন, সেটাই অনেকে চাইছেন। কিন্তু জামাল সেই সুযোগ কাউকে দিতে চান না। জামাল বুঝতে পারছেন, তিনি পলিটিক্সের শিকার হতে যাচ্ছেন।শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামানো হয়নি অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে। গত ২৫ মার্চ ম্যাচ শেষ হওয়ার পর রাতে টিম হোটেলে লবিতে বসে কথা বলছিলেন জামাল। অন্য হোটেলে হামজা চৌধুরী তার মা, বাবা এবং স্ত্রী সন্তনদের সঙ্গে দেখা করে টিম হোটেলে ফিরে জামালকে দেখে তার কাছে যান। পরে জানা যায় হামজা জামালকে প্রশ্ন করেছিলেন তুমি খেলনি কেন।ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা ৫ জন ফুটবলার পরিবর্তন করলেও অধিনায়ক জামাল ভুইয়াকে মাঠে নামাননি। কি কারনে অধিনায়ককে এবাবে অবহেলা করলেন তা বুঝা গেল না। জামাল ঢাকায় মালদ্বীপের বিপক্ষেও খেলেছেন। হয়ত পুরো সময় খেলেননি। তার পরও জামালকে কাজে লাগিয়েছিলেন কোচ। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলায় অভিজ্ঞ জামাল ছিলেন অনুপস্থিত। চন্দন রায়কে নামিয়েছেন কোচ। হামজা ভারতের বিপক্ষে গোলের স্পেস বের করে গোলের সুযোগ তৈরি করতে বল চেয়েছিলেন চন্দনের কাছে। কিন্তু চন্দন হামজাকে বল না দিয়ে পাস দিয়েছেন পেছনে বসুন্ধরা কিংসের আরেক ফুটবলারের কাছে।মোরসালিনের মতো বেঞ্চে বসা ফুটবলারকে একাদশে খেলিয়েছেন কোচ, তারপরও আল আমিনকে নামাননি, জামালকে নামাননি। কোচ কাকে নামবেন, আর কাকে নামাবেন না, সেটি পুরোপুরি কোচের সিদ্ধান্ত। এখানে অন্য কারো নাক গলানোর সুযোগ নেই।তবে ৫ জন ফুটবলার পরিবর্তন করলেও জামাল ভূঁইয়া, আল আমিনরা কোচের নজরেই আসবেন না, তা সহজে মেনে নিতে পারেননি ফুটবল অনুরাগীরা। জামাল ভূইয়াকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তার না খেলার বিষয়ে। জামাল ভুইয়া জানালেন হামজা চৌধুরীও একই প্রশ্ন করেছিলেন জামালকে-তুমি খেলনি কেনে।জামাল ভুইয়া নিজেও জানেন না তাকে কেন কোচ মাঠে নামাননি। জামাল বলছিলেন তিনি নাকি জানতেন খেলবেন। ম্যাচের আগের দিন কোচ আমাদেরকে ওভাবেই অনুশীলন করিয়েছে আমি খেলবো। আমি ধরে নিয়েছিলাম একাদশে খেলব। অনুশীলন ডিজাইনটাও সেভাবে হচ্ছিল। কিন্তু পরে দেখলাম আমি নেই।জামালকে প্রশ্ন করা হলো কোচ ৫ জন পরিবর্তন করলেন, আপনাকে কেন নামতে দেখা গেল না, কেন? কথাটা শুনে রিকসায় বসা জামাল হাসছিলেন। আমি এটা বলতে পারব না। আমি শুধু জানি আমাকে মাঠে নামতে হবে খেলতে হবে। কিন্তু কিভাবে সব বদলে গেছে আমি জানি না-বললেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভুইয়া।জামালের কথায় অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। যা প্রকাশ করতে পারছেন না। মনের বিরুদ্ধে অনেক কিছু চাপিয়ে রাখতে হচ্ছে জামালকে। জামালকে মাঠে নামায়নি বলে রাগে অভিমানে সব ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন তিনি। বুঝতে পারছেন তার হাত থেকে আর্মব্যান্ড কেড়ে নেওয়ার একটা কৌশল শুরু হয়েছে। কোচ সেই ফাঁদেই পড়তে যাচ্ছেন।ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জামালকে গুডবুকে রেখেও যেভাবে কৌশল করে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছিল তা দৃষ্টিকটুই বটে। তাকে জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটা কৌশলও মনে করা হচ্ছে। মানসিক চাপে পড়ে জামাল আর্মব্যান্ড খুলে ফেলবেন, সেটাই অনেকে চাইছেন।কিন্তু জামাল সেই সুযোগ কাউকে দিতে চান না। জামাল বুঝতে পারছেন তিনি পলিটিক্সের শিকার হতে যাচ্ছেন। কিন্তু মাথা গরম করে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন না জামাল।হাসতে হাসতে বলছিলেন, আমার মাথা ঠান্ডাই আছে। আমি মাথা গরম করলে অন্যরা সুযোগ নেবে। সেটা করব কেন।ভোরের আকাশ/এসআই
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মাইন উদ্দিন।আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড নামঞ্জুর ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।ঘটনায় শনিবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন– মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০), মো. মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজি (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।গত ২১ এপ্রিল এ মামলায় গ্রেপ্তার আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানির (১৯) সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এদের মধ্যে ২৩ এপ্রিল কামাল আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। একইদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বনানী থানার কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মো. হৃদয় মিয়াজীর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এ মামলায় গ্রেপ্তার একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাহাথির হাসান আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান অভিযানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৮৪ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬৮ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধ্বংস্তূপের নিচে এখনও চাপা পড়ে আছেন অনেকে। উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তাদের। নিহত ও আহতের হিসেব সংক্রান্ত গণনাতেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।এতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর বাহিনীর হামলায় গত দেড় বছরে ৫১ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জনে। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দখলদার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে তারা। জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে আসে ২৫১ জনকে।হত্যার প্রতিশোধ ও জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দুই মাস শেষ হওয়ার আগেই ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলিরা।জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। তাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
১২ ঘণ্টা আগে
দেশে ইন্টারনেটের দাম আরও কমাতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।তিনি বলেন, এরইমধ্যে সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে। মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যার মাধ্যমে উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব।সোমবার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিনের এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বিনিয়োগ সম্মেলনে স্পষ্ট করে বলতে চাই বর্তমান সরকার এক মুহূর্তের জন্যও ইন্টারনেট শাটডাউন করবে না। ভবিষ্যতে ইন্টারনেট যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়াতে দেশীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদকদের সরকার শুল্ক সুবিধা দিচ্ছে বলেও জানান আহমেদ তৈয়্যব।তিনি বলেন, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। আগামী মে মাসের মধ্যে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ব্যাপক ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে। এটি রুখতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ।জানা গেছে, যেসব ইউটিউব চ্যানেলে দর্শক টানার জন্য ভুয়া ভিডিও দেখানো হয়, তাদের এবার ‘ভাতে মারার’ পরিকল্পনা করছে ইউটিউব। এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়বে ২০ লাখের বেশি সাবস্ক্রাইবার থাকা বেশ কয়েকটি চ্যানেলের ওপরেও।ইউটিউব কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জনপ্রিয় সিনেমার যেসব ভুয়া ট্রেলার প্রকাশিত হয়, সেগুলোর আয় বন্ধ করতে হবে। মার্ভেল বা হ্যারি পটারের মতো বিখ্যাত সিরিজ, যার নতুন পর্ব দেখার জন্য আমজনতা মুখিয়ে থাকেন, সাধারণত সেই আবেগকেই হাতিয়ার করে এই ইউটিউব চ্যানেলগুলো। এআই ব্যবহার করে, নানারকম প্রযুক্তির সাহায্যে ওই বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমার ট্রেলার তৈরি করে তারা। সেই ট্রেলারের ভিউ হু হু করে বাড়তে থাকে, বলাই বাহুল্য।দর্শক টেনে আয় বাড়ানোর জন্য বেশকিছু ইউটিউব চ্যানেল হামেশাই এমন ভুয়া ট্রেলার প্রকাশ করে থাকে। এই চ্যানেলগুলো সাবস্ক্রাইবও করেন প্রচুর ইউজাররা। স্ক্রিন কালচার বা কেএইচ স্টুডিওর মতো ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে ২০ লাখেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার আছে। নিজেদের মস্তিষ্কপ্রসূত এমন কিছু সিনেমার ট্রেলার তারা তৈরি করে, যেসব সিনেমা আদতে কোনোদিন তৈরিই হয়নি। কিন্তু আমজনতার আগ্রহ বুঝে যেসব ভিডিও তারা বানায়, সেগুলো প্রচুর দর্শককে টানে।তবে এবার এসব চ্যানেলের আয়ের পথ বন্ধ করে দিচ্ছে ইউটিউব। কর্তৃপক্ষ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনী আয়, দর্শক সংখ্যার নিরিখে আয়- কোনো কিছুই আর পাবে না এই চ্যানেলগুলো। কারণ এই ধরনের কন্টেন্টগুলো ভুয়া, লোকঠকানো।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান অভিযানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৮৪ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬৮ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধ্বংস্তূপের নিচে এখনও চাপা পড়ে আছেন অনেকে। উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তাদের। নিহত ও আহতের হিসেব সংক্রান্ত গণনাতেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।এতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর বাহিনীর হামলায় গত দেড় বছরে ৫১ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জনে। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দখলদার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে তারা। জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে আসে ২৫১ জনকে।হত্যার প্রতিশোধ ও জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দুই মাস শেষ হওয়ার আগেই ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলিরা।জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। তাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব কোনো এজেন্ডা নেই। আমরা বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে ইনসাফভিত্তিক, বৈষম্যহীন ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তেমনি একটি ইনসাফপূর্ণ ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের কাফরুল এলাকার ইব্রাহিমপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের গণসংযোগ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছামত কেড়েও নেন। তিনিই মহান সত্তা, যিনি যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন; আবার বেইজ্জতিও করেন। আমরা তা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।তিনি বলেন, ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালানো হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেলজুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। বিগত সরকার মনে করেছিল, তাদের অপশাসন ও দুঃশাসন কেয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালেমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না। মূলত, আমাদের ওপর আল্লাহর সাহায্য এসেছে।স্বৈরাচারের সাজানো-গোছানো তখতে তাউস বালির বাঁধের মতো তছনছ হয়ে গেছে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, এই বিজয়কে অর্থবহ ও টেকসই করতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশ ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।তিনি বলেন, আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক, ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। মানুষের কল্যাণ ও মুক্তিই জামায়াতের রাজনীতির মূলনীতি। আল্লাহ আমাদের আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আমাদের দায়িত্ব ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সব স্তরে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা।এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বিএনপি`র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক জাতির উদ্দেশ্যে উপস্থাপিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা সম্পর্কে মঠবাড়িয়া উপজেলা সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সাথে মতবিনিময় করেছেন মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপি`র সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন দুলাল। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় সরকারি হাতেম আলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।মতবিনিময় সভায় রুহুল আমিন দুলাল বলেন, বিএনপি সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের ভাই হিসেবে দেখে। বিএনপি বিশ্বাস করে, এই দেশে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সব ধর্মের মানুষ তাদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। স্বাধীনভাবে ধর্ম চর্চা করবে।মতবিনিময় সভায় মঠবাড়িয়া হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কাজল দাস, মঠবাড়িয়া পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রতন কর্মকার ও ১১টি ইউনিয়নের মন্দির কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।অন্যদিকে, বিএনপি নেতাদের মধ্যে মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জসিম ফরাজী, মঠবাড়িয়া পৌর বিএনপি'র আহবায়ক কে এম হুমায়ুন কবির, পৌর বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, মঠবাড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন হাওলাদারসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে তাড়াতে একসঙ্গে মাঠে থাকলেও শেখ হাসিনা বিদায়ের পর দুই দলের নেতাদের মধ্যে শুরু হয় কাঁদা ছোড়াছুড়ি। তবে সম্প্রতি লন্ডনে দল দুটির শীর্ষ চার নেতার বৈঠকের পর পাল্টে গেছে মাঠের চিত্র। রাজনীতির মাঠে নানা বক্তব্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন ও রাষ্ট্র সংস্কার প্রশ্নে কৌশলী বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। মাঠ পর্যায়ে দুই দলের চলমান বিভেদ কমে এসেছে। বৈঠকের পর থেকে বিএনপি ও জামায়াত নেতারা একই সুরে কথা বলছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারা দ্রুত নির্বাচন আদায় প্রশ্নে হাইলার্ডনে বা মাঠ গরম করা বক্তব্য দেওয়া থেকে সরে এসেছেন। ধৈর্য্যরে সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার পথেই হাঁটছে দলটি। যদিও নির্বাচন আদায়ে জনমত তৈরিতে দলটি সমমনাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকও করছে বিএনপি।অপরদিকে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক নীতি বজায় রেখে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন ইস্যুতে দল দুটির নেতারা এখন বিএনপির কাছাকাছি বক্তব্যও দিচ্ছেন। বিএনপি ডিসেম্বরে ভোট চাইছে। আর আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি তুলে বিএনপির দাবির কাছাকাছি সময়ে চলে এসেছে জামায়াত। কূটনীতিক পর্যায়েও দল দুটি নির্বাচন আদায়ে কাজ করছে।বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বলছেন- রাষ্ট্রের সংস্কার দরকার। তবে, সংস্কারের জন্য লম্বা সময় নিলে দেশে যে অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে সেটি আরো বাড়তে পারে। যার সুযোগ নিতে পারে পতিত আওয়ামী লীগ। ফ্যাসিস্ট দলটির প্রত্যাবর্তন নিয়ে দুই দলই একমত। গণঅভ্যূত্থানে স্পিরিট বজায় রেখে পতিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যেও জোর দিচ্ছেন তারা। মৌলিক সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাইছেন তারা। ঐক্য ধরে না রাখতে না পারলে ফের স্বৈরাচার মাথাচাড়া দেওয়ার পাশাপাশি দেশে ফের ভারতীয় আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ সৃষ্টি বলেও মনে করছেন তারা।বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস দৈনিক ভোরের আকাশকে এ বিষয়ে বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারাই মাঠে ছিল তাদেরকে নিয়ে বিএনপি ঐক্য চাইছে। জোটবদ্ধ না থাকলেও কিন্তু আমরা অনেক দল মিলে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করেছি। এখনো আমরা ঐক্য চাইছি। জামায়াতের ইস্যুতেও আমাদের একই অবস্থান। যা আমি জামায়াতের অনুষ্ঠানে গিয়েও বলেছি।জামায়াতের ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামীতেও দেশ ও জাতির স্বার্থে বিএনপি ও জামায়াত এক থাকবে ইনশাআল্লাহ।তিনি বলেন, মাঠের কথাবার্তা যাই হোক না কেন দুই দলের মৌলিক চাওয়া এক।জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছে বিএনপি ও জামায়াত। মাঝে মধ্যে টানাপড়েন সৃষ্টি হলেও তাতে বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি দল দুটির সম্পর্ক বা জাতীয় কোনো ইস্যুতে অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে। এবারো চুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর কয়েকটি বিষয় নিয়ে দল দুটিতে টানাপড়নের সৃষ্টি হয়।টানাপড়েন সৃষ্টি হওয়া ইস্যুর মধ্যে নির্বাচনের সময় প্রশ্ন, আগে সংস্কার নাকি নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যু এবং জুলাই ঘোষণাপত্র ছিল উল্লেখযোগ্য। এসব ইস্যুতে খোদ বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত দ্বিধাবিভক্ত বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দল দুটির নেতাকর্মীদের বাকযুদ্ধ এখন স্বাভাবিক ব্যাপারে দাঁড়িয়েছে।এছাড়া শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে স্থানীয়ভাবে প্রভাব সৃষ্টি করা থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে দল দুটির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে নিহতের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকটি। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ নিয়েও দল দুটির মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। কেন্দ্র থেকে শুরু করে সর্বত্র যার প্রভাব পড়ে। দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা বিএনপি ও জামায়াতের এই দ্বন্দ্ব দেশের সচেতন মানুষকে ভাবিয়ে তোলে।আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই নির্বাচনের সময় প্রশ্নে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়ে স্পষ্ট বিভাজনের সূত্রপাত হয়।উদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যেই যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের যার তথ্য গত ১৩ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বাসায় তাদের এ বৈঠক হয়। বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এ বৈঠকের কথা স্বীকার না করলেও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুক কামাল খান সোহেল তার ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন। পরে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান দেশে ফিরে এ বৈঠকের কথা স্বীকার করেন।তিনি বলেন, অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসনকে তিনি দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। ওই বৈঠক নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানা বক্তব্য থাকলেও শেষ পর্যন্ত দল দুটির নেতারা ফের একই সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সময় প্রশ্নে বিএনপি নেতারা কিছুদিন আগেও যে হার্ড লাইনে কথা বলতেন সেখান থেকে কিছুটা হলেও তারা সরে এসছেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রায়ই বলতেন, প্রয়োজনে ডিসেম্বরে ভোটের দাবিতে রাজপথে নামবে বিএনপি। কিন্তু হঠাৎ করেই বিএনপি নেতারা ধীরে চলো নীতি অনুসরণ করছেন।গত ১৯ এপ্রিল বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের বৈঠক শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। কারণ, এই সরকারকে তো আমরাই সমর্থন দিয়ে বসিয়েছি। অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করবে আমরা সেই আশাই করছি।এছাড়া গত কয়েকদিনে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে দেখা গেছে, তাদের বক্তব্যও বেশ কৌশলী বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদের বক্তব্যে কিছুটা নমনীয় ভাব লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া জামায়াতকে উদ্দেশে করে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতারা নানা বক্তব্য এখন আর সেটি দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচন নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিবাদে জড়ালে ভিন্ন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে এমন বিষয়ও মাথায় রয়েছে বিএনপির। বেশ ধৈর্য্যরে সঙ্গে নিজেদের দাবির পক্ষে জনমত গঠনে কাজ করছেন বিএনপি নেতারা। প্রতিদিন সমমনা কোনো না কোনো দলের সঙ্গে বৈঠক করছেন বিএনপি নেতারা। এছাড়া কূটনীতির মাঠে কাজ করছে বিএনপি। দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে যে দ্রুত সংসদ নির্বাচন দরকার সেটি তারা সর্বমহলে বোঝানোর কাজে ব্যস্ত। এছাড়া বিএনপির মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠন পুনর্গঠন নিয়েও ব্যস্ত রয়েছে।এদিকে, জামায়াত নেতারা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন বলে জোরেসোরে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে দলটির নেতার সরাসরি বিএনপির সঙ্গে বিবাদেও জড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু লন্ডনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে সঙ্গে বৈঠকের পর অবস্থান পরিবর্তন করেছে জামায়াতে ইসলামী।দলটির আমির ওই বৈঠকের মাত্র কয়েকদিন পর গত সপ্তাহে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, নির্বাচন বেশি দেরি করা ঠিক হবে না। আগামী রমজানের আগেই ভোট চাইছে দলটি। বিএনপির দাবির কাছাকাছি সময়ে তিনিও ভোট চান। এছাড়া ভোট প্রশ্নে জামায়াত এই মূহূর্ত কারো সঙ্গে অনৈক্য সৃষ্টি করতে চায় না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখেই কাজ করতে মাঠ পর্যায়ে বার্তা রয়েছে জামায়াতের।বিষয়টি নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াতে অনৈক্য সৃষ্টি হলে ফ্যাসিবাদিরা সুযোগ নিতে পারে। তাই আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকার উপরে জোর দিচ্ছি।তিনি বলেন, আগে যাই হোক, এখন তেমন কোনো মনোমানিল্য এখন আর দেখছি না। দুই দলই চাইছে ঐক্য। তিনি আরো বলেন, ঐক্য না থাকলে এখানে আবারো ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্য নতুন করে বিস্তার লাভ করতে পারে।এ বিষয়ে জামায়াতের ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই আমরা ঐক্যবব্ধ আছি। আগামীতেও দেশ ও জাতির স্বার্থে বিএনপি জামায়াত এক থাকবে ইনশাল্লাহ। মাঠের কথাবার্তা যাই হোক না কেন দুই দলের মৌলিক চাওয়া এক।জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলন করে জামায়াত। পরে ক্ষমতায় এসে জামায়াতকে নিধনে নামে আওয়ামী লীগ। পরে ফের আওয়ামী লীগ ঠেকাতে ১৯৯৯ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট হয়। ২০০১ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে সরকার গঠন করে দল দুটি। সম্পর্কে উত্থান-পতন হলেও জোট ভাঙেনি।২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ আন্দোলন করে বিএনপি ও জামায়াত। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নিবন্ধন হারানো জামায়াতের নেতারা বিএনপির প্রতীকে প্রার্থী হন। ২০২২ সালে দুই দল আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ভেঙে দিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে নামে। প্রথম দিকে জামায়াত যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও মাঝে কিছু সময় নানা অভিযোগ এন জামায়াত সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে ফের ২০২৪ এর নির্বাচনে আগে ও পরে বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করে জামায়াত।গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার গণহত্যা চালায়। বিএনপি ও জামায়াতকে আন্দোলনের জন্য দায়ী করে ঢালাও মামলা এবং গ্রেপ্তার করে। গত বছর ২৬ জুলাই জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয় বিএনপি। ওই আন্দোলনে দল দুটি সর্বোচ্চভাবে মাঠে ছিল।ভোরের আকাশ/এসএইচ
মস্কোতে আয়োজিত হলো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৭তম আসরের সমাপনী অনুষ্ঠান। সেখানে প্রাত্যহিক জীবনের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য ‘স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড (জুরি)’ জিতেছে বাংলাদেশি সিনেমা ‘মাস্তুল’। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে ছবির নির্মাতা নূরুজ্জামানের হাতে এই প্রশংসাপত্র তুলে দেয় ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ। এদিন রাতেই বসে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৭তম আসরের সমাপনী অনুষ্ঠান। এর আগে সকালে ‘ফার্স্ট প্রাইজ’ অনুষ্ঠানে স্পেশাল মেনশন অ্যাওয়ার্ড জেতে ‘মাস্তুল’।মস্কো থেকে এ বিষয়ে নির্মাতা বলেন, ‘মস্কোতে মাস্তুল-এর প্রিমিয়ারে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছি। বিভিন্ন দেশের সাধারণ দর্শক থেকে ফিল্ম ক্রিটিক, সাংবাদিকরা সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। মাস্তুল নিয়ে এতো মানুষের আগ্রহই আমার কাছে বড় প্রাপ্তি বলে মনে হয়েছে। এরমধ্যে ফার্স্ট প্রাইজ সেরেমনিতে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটি কর্তৃক স্পেশাল মেনশন পাওয়া সন্দেহাতীতভাবে মাস্তুল-এর জন্য বিশেষ অর্জন।’জলে ভাসমান জাহাজীদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘মাস্তুল’। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, দীপক সুমন, আমিনুর রহমান মুকুল, আরিফ হাসান, সিফাত বন্যা প্রমুখ। ছবিটির ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন ও প্রমোশনে আছে টঙঘর টকিজ।মাস্তুল ছাড়াও ফার্স্ট প্রাইজ-স্লটে ‘নেটপ্যাক জুরি পুরস্কার’ জিতেছে ভারতীয় খাশিয়া ভাষার ছবি ‘এলেসিয়াম’। এটি পরিচালনা করেছেন প্রদীপ কুর্বা, রুশ চলচ্চিত্র সমালোচকদের জুরি পুরস্কার পেয়েছে আর্জেন্টিনার ছবি ‘নন স্ট্যান্ডার্ড থিংকিং’- এটি পরিচালনা করেছেন মারিয়ানো ওয়াটার। ভোরের আকাশ/এসআই
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জামালকে গুডবুকে রেখেও যেভাবে কৌশল করে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছিল তা দৃষ্টিকটুই বটে। তাকে জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটা কৌশলও মনে করা হচ্ছে। মানসিক চাপে পড়ে জামাল আর্মব্যান্ড খুলে ফেলবেন, সেটাই অনেকে চাইছেন। কিন্তু জামাল সেই সুযোগ কাউকে দিতে চান না। জামাল বুঝতে পারছেন, তিনি পলিটিক্সের শিকার হতে যাচ্ছেন।শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামানো হয়নি অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে। গত ২৫ মার্চ ম্যাচ শেষ হওয়ার পর রাতে টিম হোটেলে লবিতে বসে কথা বলছিলেন জামাল। অন্য হোটেলে হামজা চৌধুরী তার মা, বাবা এবং স্ত্রী সন্তনদের সঙ্গে দেখা করে টিম হোটেলে ফিরে জামালকে দেখে তার কাছে যান। পরে জানা যায় হামজা জামালকে প্রশ্ন করেছিলেন তুমি খেলনি কেন।ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা ৫ জন ফুটবলার পরিবর্তন করলেও অধিনায়ক জামাল ভুইয়াকে মাঠে নামাননি। কি কারনে অধিনায়ককে এবাবে অবহেলা করলেন তা বুঝা গেল না। জামাল ঢাকায় মালদ্বীপের বিপক্ষেও খেলেছেন। হয়ত পুরো সময় খেলেননি। তার পরও জামালকে কাজে লাগিয়েছিলেন কোচ। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলায় অভিজ্ঞ জামাল ছিলেন অনুপস্থিত। চন্দন রায়কে নামিয়েছেন কোচ। হামজা ভারতের বিপক্ষে গোলের স্পেস বের করে গোলের সুযোগ তৈরি করতে বল চেয়েছিলেন চন্দনের কাছে। কিন্তু চন্দন হামজাকে বল না দিয়ে পাস দিয়েছেন পেছনে বসুন্ধরা কিংসের আরেক ফুটবলারের কাছে।মোরসালিনের মতো বেঞ্চে বসা ফুটবলারকে একাদশে খেলিয়েছেন কোচ, তারপরও আল আমিনকে নামাননি, জামালকে নামাননি। কোচ কাকে নামবেন, আর কাকে নামাবেন না, সেটি পুরোপুরি কোচের সিদ্ধান্ত। এখানে অন্য কারো নাক গলানোর সুযোগ নেই।তবে ৫ জন ফুটবলার পরিবর্তন করলেও জামাল ভূঁইয়া, আল আমিনরা কোচের নজরেই আসবেন না, তা সহজে মেনে নিতে পারেননি ফুটবল অনুরাগীরা। জামাল ভূইয়াকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তার না খেলার বিষয়ে। জামাল ভুইয়া জানালেন হামজা চৌধুরীও একই প্রশ্ন করেছিলেন জামালকে-তুমি খেলনি কেনে।জামাল ভুইয়া নিজেও জানেন না তাকে কেন কোচ মাঠে নামাননি। জামাল বলছিলেন তিনি নাকি জানতেন খেলবেন। ম্যাচের আগের দিন কোচ আমাদেরকে ওভাবেই অনুশীলন করিয়েছে আমি খেলবো। আমি ধরে নিয়েছিলাম একাদশে খেলব। অনুশীলন ডিজাইনটাও সেভাবে হচ্ছিল। কিন্তু পরে দেখলাম আমি নেই।জামালকে প্রশ্ন করা হলো কোচ ৫ জন পরিবর্তন করলেন, আপনাকে কেন নামতে দেখা গেল না, কেন? কথাটা শুনে রিকসায় বসা জামাল হাসছিলেন। আমি এটা বলতে পারব না। আমি শুধু জানি আমাকে মাঠে নামতে হবে খেলতে হবে। কিন্তু কিভাবে সব বদলে গেছে আমি জানি না-বললেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভুইয়া।জামালের কথায় অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। যা প্রকাশ করতে পারছেন না। মনের বিরুদ্ধে অনেক কিছু চাপিয়ে রাখতে হচ্ছে জামালকে। জামালকে মাঠে নামায়নি বলে রাগে অভিমানে সব ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন তিনি। বুঝতে পারছেন তার হাত থেকে আর্মব্যান্ড কেড়ে নেওয়ার একটা কৌশল শুরু হয়েছে। কোচ সেই ফাঁদেই পড়তে যাচ্ছেন।ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জামালকে গুডবুকে রেখেও যেভাবে কৌশল করে বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছিল তা দৃষ্টিকটুই বটে। তাকে জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটা কৌশলও মনে করা হচ্ছে। মানসিক চাপে পড়ে জামাল আর্মব্যান্ড খুলে ফেলবেন, সেটাই অনেকে চাইছেন।কিন্তু জামাল সেই সুযোগ কাউকে দিতে চান না। জামাল বুঝতে পারছেন তিনি পলিটিক্সের শিকার হতে যাচ্ছেন। কিন্তু মাথা গরম করে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন না জামাল।হাসতে হাসতে বলছিলেন, আমার মাথা ঠান্ডাই আছে। আমি মাথা গরম করলে অন্যরা সুযোগ নেবে। সেটা করব কেন।ভোরের আকাশ/এসআই
নতুন বছরকে বরণ ও পুরোনো বছরকে বিদায় জানাতে প্রতিবছর ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকেন পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠেী। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে পাহাড়িদের প্রধান এ সামাজিক উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের আনাচে-কানাচে এরই মধ্যে বৈসাবি উৎসবের রং লেগেছে। বর্ণিল সাজে সেজেছে পাহাড়। ঘরে ঘরে আনন্দের ধ্বনি। বসেছে আনন্দ-উল্লাস আর নাচ-গানের আসর।পুরনো বছরের বিদায় ও নতুন বছরের আগমনের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে নতুন সাজে সেজেছে পাহাড়ি জনপদ বান্দরবান। তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলার মধ্য দিয়ে জেলায় জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে এ উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাজধানীতে বসবাসরত পাহাড়ি তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধ, জায়া-জননীরা মিলেমিশে প্রাণের এ উৎসবে অংশ নিতে যাচ্ছে। শনিবার রাজধানীতে বৈসাবি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। বেইলি রোডের পার্বত্য কমপ্লেক্স হতে রমনা পার্কের লেকে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিরা মেতে উঠবে ‘বৈসাবি’ উৎসবে। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ-তরুণীদের রং-বেরঙের সাজ আনন্দ বাড়িয়ে দেবে কয়েকগুণ। জনশ্রুতি রয়েছে, বৈসাবির শিকড় মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৌদ্ধ সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস ও কম্বোডিয়া একই সময়ে নববর্ষ উদযাপিত হয়-যা ‘সংক্রান’ নামে পরিচিত।ধারণা করা হয়, শত শত বছর আগে আরাকান ও বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) থেকে মারমা জনগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে আসার সময় তাদের সাংগ্রাই উৎসব সঙ্গে নিয়ে আসে। একইভাবে চাকমা ও ত্রিপুরাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও উৎসবও ধীরে ধীরে একসঙ্গে মিলিত হয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ হয়েছে।চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা বৃহত্তর মঙ্গোলয়েড জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত। বৈশাখ মাসে তিব্বত থেকে শুরু করে বাংলাদেশ পর্যন্ত নতুন বছর শুরু হয়। পার্বত্য এলাকার জনগোষ্ঠীর সবাই নিজেদের নববর্ষ পালন করে থাকে এ সময়টিতে। বৈসাবি নামটি তিনটি জনগোষ্ঠীর উৎসবের আদ্যক্ষর নিয়ে তৈরি হয়েছে। চাকমাদের ‘বিঝু’, মারমাদের ‘সাংগ্রাই’ ও ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’-এই তিন উৎসব সমন্বয়ে ‘বৈসাবি’। তবে শুধু বৈসাবি পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের নববর্ষ ও চৈত্র সংক্রান্তির অনুষ্ঠানের বহুমাত্রিকতাকে প্রকাশ করে না।বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় উৎসবকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর লোকজন ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে। চাকমারা বিঝু, মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যারা বিসু হিসেবে পালন করে ‘বৈসাবি’ উৎসবকে। বছরের শেষ দুই দিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এই উৎসব পালন করা হয়। বিঝু চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান আনন্দ-উৎসব। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। ১২ এপ্রিল পালন করা হয় ফুলবিঝু।এদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই ছেলেমেয়েরা বেরিয়ে পড়ে ফুল সংগ্রহের জন্য। সংগৃহীত ফুলের একভাগ দিয়ে বুদ্ধকে পূজা করা হয়, আর অন্যভাগ জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। বাকি ফুলগুলো দিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো হয়। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল পালন করা হয় মূল বিঝু। এদিন সকালে বুদ্ধমূর্তি স্নান করিয়ে পূজা করা হয়। ছেলে-মেয়েরা তাদের বৃদ্ধ ঠাকুরদা-ঠাকুরমা এবং দাদু-দিদাকে স্নান করায় এবং আশীর্বাদ নেয়। এদিন ঘরে ঘরে পোলাও, পায়েস, পাচনসহ (বিভিন্ন রকমের সবজির মিশ্রণে তৈরি এক ধরনের তরকারি) অনেক সুস্বাদু খাবার রান্না করা হয়।১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পালন করা হয় গোজ্যেপোজ্যে দিন (অবসর বা বিশ্রাম নেয়ার সময়)। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পাহাড়ে বসবাসকারী জনপদগুলো এ দিনে মেতে ওঠে ভিন্ন এক আনন্দে। বড় কোনো গাছ থাকলে তার নিচে প্রদীপ জ্বালিয়ে তাকে সম্মান জানানো হয় এ দিনে। বিঝু উৎসব চলাকালে কোনো জীবিত প্রাণী হত্যা করা নিষেধ রয়েছে চাকমা সম্প্রদায়ের মধ্যে।চৈত্র মাসের শেষ দুইদিন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিন এই তিন দিনব্যাপী পালিত হয় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব বৈসু। প্রথম দিনকে বলা হয় হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা এবং তৃতীয় বা শেষ দিনটিকে বলা হয় বিসি কতাল। মূলত আগামী দিনের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা হয়ে থাকে এ দিনে। হারি বৈসুতে ভোরবেলায় গাছ থেকে ফুল তোলার হিড়িক পড়ে যায়। সেই ফুল দিয়ে বাড়িঘর সাজানো ও পবিত্র স্থানগুলোতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বৈসাবি উৎসবের জনপ্রিয় খাবার ‘গণত্মক বা পাচন’ রান্না হবে প্রায় সব ত্রিপুরাদের ঘরে। ২৫ থেকে ৩০ ধরনের সবজির মিশ্রণে রান্না করা হয় এ বিশেষ সবজি।এছাড়া পিঠা, সেমাই, মুড়ি-মুড়কি, চানাচুর, বিভিন্ন ধরনের ফল ও ঠাণ্ডা পানীয় তো থাকছেই। ত্রিপুরা ও মারমাদের পানি উৎসব প্রায় কমবেশি অনেকের কাছে জনপ্রিয়। এটি বৈসাবি উৎসবেরই একটি অংশ। এই উৎসবে সবাই পরস্পরের দিকে পানি ছুঁড়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন, যেন গত বছরের সব দুঃখ, গ্লানি ও পাপ ধুয়ে যায়। এর আগে হয় জলপূজা। এর মাধ্যমে পরস্পরের বন্ধন আরো দৃঢ় হয়। মারমা সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের প্রিয় মানুষটির দিকে পানি ছিটানোর মাধ্যমে সবার সামনে ভালোবাসা প্রকাশ করা হয়। ভালোবাসার এমন বর্ণাঢ্য উচ্ছ্বাস ও অনুভূতি ‘গান্ধর্ব্য’ কেবল বৈসাবি উৎসবেই শোভা পায়।বান্দরবানের তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিষু উৎসব পালন করে থাকে। এদিন সাংগু নদীতে কলাপাতায় ভক্তি ও শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর পূজা করে থাকেন তারা। ঘিলা খেলার মাধ্যমে তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর বিষু উৎসব শুরু হয়। সঙ্গে থাকে ২০ থেকে ৩০ পদের সবজি দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পাচন রান্না আর ভোজন। বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় এবার চার দিনব্যাপী সাংগ্রাই উৎসবের আয়োজন করেছে।উৎসবকে ঘিরে দুদিনব্যাপী পানিখেলা, পিঠা তৈরি, বলীখেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন চলবে। সাংগ্রাই উৎসবের মূল আকর্ষণ-মৈত্রী পানিবর্ষণ জলকেলি উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। মারমা তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠবে জলকেলি বা পানি ছিটানো খেলায়। এছাড়া দিনব্যাপী চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বৌদ্ধ বিহারসমূহে (ক্যায়াং) অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন। এই সময় হাজার হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বালনের মাধ্যমে পাহাড়ি নারী-পুরুষরা প্রার্থনায় দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করবেন। অসমের জাতীয় উৎসব হলো বিহু। বিহু সমাজের সবাই এই উৎসব উদযাপন করে থাকে। এর মূল অংশ হলো কৃষি ভিত্তিক উৎসব। বি শব্দটির অর্থ প্রার্থনা এবং শু শব্দের অর্থ শান্তি ও সমৃদ্ধি। বিশু শব্দ থেকে বিবর্তনের ধারায় বিহু শব্দের উৎপত্তি। জনশ্রুতি আছে বিহু মূলত আসামের চুটিয়া উপজাতিদের মধ্যে প্রচলিত।এক্ষেত্রে হু শব্দটি তারা দান অর্থে ব্যবহার করে থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামে অসম জাতি চৈত্র সংক্রান্তিতে বিহু উৎসব উদযাপন করে থাকে। বান্দরবানে ম্রো সম্প্রদায় চৈত্র সংক্রান্তিতে পালন করে চাংক্রান উৎসব। প্রতিবছর বর্ষবরণ উপলক্ষে ম্রো সম্প্রদায়ের পিঠা উৎসব, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও তাদের তৈরি বিশাল আকারের বাঁশের প্লোং বাঁশি বাদ্যযন্ত্র উৎসবের আকর্ষণকে বহুমাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে।এছাড়া উৎসব ঘিরে পানিখেলা, তৈলাক্ত বাঁশে বেয়ে ওঠা, লাঠি দিয়ে শক্তি প্রদর্শন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান অভিযানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৮৪ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬৮ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধ্বংস্তূপের নিচে এখনও চাপা পড়ে আছেন অনেকে। উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তাদের। নিহত ও আহতের হিসেব সংক্রান্ত গণনাতেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।এতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর বাহিনীর হামলায় গত দেড় বছরে ৫১ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জনে। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দখলদার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে তারা। জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে আসে ২৫১ জনকে।হত্যার প্রতিশোধ ও জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দুই মাস শেষ হওয়ার আগেই ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলিরা।জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। তাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পর্দা — একটি শব্দ, যার ভেতর লুকিয়ে রয়েছে মানব সমাজের নৈতিকতা, সৌন্দর্যবোধ, আত্মমর্যাদা এবং শালীনতার নিপুণ পরিচায়ক। ইসলাম এই পর্দা প্রথাকে শুধু একটি আচার বা ঐতিহ্যগত নিয়মের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং এটিকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনের শান্তি ও সুস্থতার অপরিহার্য শর্ত হিসেবে নির্দেশ করেছে। কুরআন ও সুন্নাহয় স্পষ্টভাবে নারীর পর্দা পালনের নির্দেশনা এসেছে, যা কেবল ইহকালীন সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষাই নয়, বরং আত্মশুদ্ধি এবং পরকালীন মুক্তির মাধ্যমও।ইসলামে নারীর মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চ। পবিত্র কুরআনে নারীকে সম্মান, অধিকার এবং মর্যাদার যে আসন প্রদান করা হয়েছে, তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে অনন্য। নারীর শালীনতা ও সম্মান রক্ষায় ইসলাম পর্দা প্রথাকে অপরিহার্য বিধান হিসেবে নির্ধারণ করেছে। পর্দা নারীকে লাঞ্ছনা, অসম্মান এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি, এটি পুরুষের দৃষ্টিশুদ্ধি ও আত্মনিয়ন্ত্রণের চর্চাও নিশ্চিত করে।পবিত্র কুরআনে পর্দা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: “মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। এতে তাদের জন্য রয়েছে পরিশুদ্ধি। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের কর্মসমূহ সম্যক জানেন। এবং মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে এবং তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, যা নিজে থেকেই প্রকাশিত হয়ে পড়ে তা ছাড়া।” (সূরা আন-নূর, ২৪:৩০-৩১)এই আয়াত দ্ব্যর্থহীনভাবে বুঝিয়ে দেয়, পর্দা শুধুমাত্র নারীর জন্য নয়, পুরুষের জন্যও দায়িত্ব। পর্দা মানে কেবল পোশাকের সীমারেখা নয়, বরং দৃষ্টির সংযম, আচরণে শালীনতা, এবং হৃদয়ের পবিত্রতা। পর্দা মানে নিজেকে এমনভাবে সংরক্ষণ করা, যাতে অন্যের কাছে প্ররোচনা বা লোভের বস্তু হয়ে না দাঁড়ায়।ইসলামে পর্দা শুধু নারী-পুরুষের শারীরিক সৌন্দর্য আড়াল করার মাধ্যম নয়, বরং এটি চরিত্রের পবিত্রতা রক্ষার প্রতীক। পোশাকের মধ্যে লুকিয়ে থাকে ব্যক্তির পরিচয়, মনস্তত্ত্ব এবং জীবনদর্শন। একজন নারীর পর্দাশীল জীবনাচার তার ব্যক্তিত্বকে সম্মানিত করে, সমাজে তাকে মর্যাদাশীল অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করে এবং তাকে হয়রানি, কু-প্রস্তাব ও লাঞ্ছনা থেকে নিরাপদ রাখে।রাসূলুল্লাহ (স.) এর জীবনে পর্দা প্রথার গুরুত্বরাসূলুল্লাহ (স.) নারীর মর্যাদা ও পর্দা প্রসঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই লজ্জাশীলতা ঈমানের একটি শাখা।” (বুখারি ও মুসলিম) নারীর লজ্জাশীলতা তার পর্দাশীলতার অন্যতম অভিব্যক্তি। ইসলামের দৃষ্টিতে লজ্জা একটি পূর্ণাঙ্গ নৈতিক গুণ, যা নারী ও পুরুষ উভয়ের চরিত্র গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু নারীর জন্য এটি তার নিজস্ব অস্তিত্বের অংশ। কারণ, নারীর দেহের গঠন এবং সৌন্দর্য সহজাতভাবে পুরুষকে আকর্ষণ করে, যা সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তাই ইসলাম নারীর জন্য পর্দাকে বাধ্যতামূলক করেছে।পর্দা প্রথার সামাজিক তাৎপর্যএকটি সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্দা প্রথা এক অপরিহার্য উপাদান। পর্দাহীনতা কেবল ব্যক্তিগত অবক্ষয়ই নয়, সামাজিক নৈতিকতাকেও ভেঙে দেয়। ইসলাম চায় একটি সুন্দর, নিরাপদ এবং সদাচারপূর্ণ সমাজ, যেখানে নারী-পুরুষ উভয়েই মর্যাদাশীল অবস্থায় বসবাস করবে। পর্দা সমাজে পবিত্রতা, সৌহার্দ্য এবং শালীনতার আবহ তৈরি করে।যদি একজন নারী নিজেকে পর্দার মধ্যে রাখেন, তবে তার প্রতি অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি সম্মানজনক হয়। একইভাবে, একজন পুরুষ যদি তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে, তাহলে সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। দুই পক্ষের সম্মিলিত পরিশ্রমে গড়ে ওঠে একটি সুস্থ, নৈতিক সমাজ ব্যবস্থা।পর্দার মানসিক ও আত্মিক গুরুত্বপর্দা শুধুমাত্র বাহ্যিক নয়, এটি মানসিক এবং আত্মিক পর্দাও বটে। একজন মুমিন নারী যখন নিজেকে শালীন পোশাকে ঢেকে রাখেন এবং বিনয় ও সংযমের আচরণ চর্চা করেন, তখন তার অন্তরের পর্দাও দৃঢ় হয়। এতে করে সে নিজেকে অহঙ্কার, অসততা, কামনা-বাসনা ইত্যাদি আত্মিক ব্যাধি থেকে রক্ষা করতে পারে।অপরদিকে, বাহ্যিক পর্দার অভাব ধীরে ধীরে আত্মিক দূষণ সৃষ্টি করে। কারণ, যখন দৃষ্টিশীলতা ও আচরণে শালীনতা লুপ্ত হয়, তখন মনও কলুষিত হয়ে পড়ে। আর এই অভ্যাসই একসময় সমাজে চরিত্রহীনতার প্রসার ঘটায়।পর্দা: নারী স্বাধীনতার প্রতিকূল নয়বর্তমানে অনেকে মনে করেন, পর্দা নারীর স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে। এটি একেবারে ভ্রান্ত ধারণা। বরং পর্দা নারীকে তার প্রকৃত মর্যাদা ও স্বাধীনতা দেয়। পর্দাশীল নারী নিজেকে বাজারের পণ্যের মতো উপস্থাপন করতে বাধ্য হয় না। সে নিজের ইচ্ছা ও মর্জি অনুযায়ী সম্মান বজায় রেখে সমাজে অবাধ চলাফেরা করতে পারে। পর্দা নারীর ব্যক্তিত্বের সম্মান রক্ষা করে এবং তাকে পুরুষতান্ত্রিক লোলুপতার শিকার হওয়া থেকে বাঁচায়। ইসলাম নারীর জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান, গবেষণা, ব্যবসা, সমাজসেবা সবকিছুর অনুমোদন দিয়েছে; তবে তা শালীনতা, সম্মান ও নিরাপত্তার শর্ত সাপেক্ষে। আর এই শালীনতার সবচেয়ে বড় প্রহরী হলো পর্দা।পর্দার সুফলপর্দার সুফল কেবল একজন নারী বা তার পরিবার পর্যন্ত সীমিত থাকে না; বরং একটি জাতি ও সমাজের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে নারীর পর্দাশীলতার উপর। একজন পর্দানশীন মা তার সন্তানকে শালীনতা, নৈতিকতা ও আদর্শের শিক্ষা দিতে পারেন। পর্দাশীল সমাজে লাম্পট্য, যৌন হয়রানি, ব্যভিচার, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের মতো সামাজিক ব্যাধি কমে আসে। এতে পরিবার হয় দৃঢ়, সমাজ হয় নিরাপদ এবং রাষ্ট্র হয় নৈতিকতাসম্পন্ন।ইসলাম নারীর জন্য পর্দা প্রথাকে বাধ্যতামূলক করে তাকে অসম্মান বা অবহেলার শিকার করেনি, বরং তার মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। পর্দা নারীর আত্মমর্যাদার ঢাল, তার আত্মবিশ্বাসের ভিত্তি এবং সমাজে তার সম্মানের বাহক। পর্দা শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক পবিত্রতার পরিচায়ক। এটি একদিকে যেমন নারীকে রক্ষা করে, তেমনি পুরুষকেও সংযত রাখে। ইসলামী সমাজব্যবস্থায় পর্দা প্রথা একটি অপরিহার্য অনুশীলন, যা ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের শান্তি, স্থিতি ও কল্যাণের জন্য অনন্য ভূমিকা পালন করে।আজকের বিশ্ব যখন পর্দাহীনতার নামে নারী স্বাধীনতার অপব্যাখ্যা করছে, তখন ইসলামের এই চিরন্তন পর্দা প্রথা মানব জাতির জন্য আদর্শ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পর্দা নারীকে যেমন আত্মিক শক্তি দেয়, তেমনি সমাজকেও করে নৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। তাই ইসলামী পর্দা প্রথার গুরুত্ব ও তাৎপর্য মানবজীবনে অপরিসীম।লেখক: গণসংযোগ কর্মকর্তা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভোরের আকাশ/মি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার এক তরুণ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তার এক সহযোদ্ধা গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে পরিবারকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিলেন।নিহত মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫) উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। সংসারের হাল ধরতেই রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।জানা গেছে, আকরামের এক বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন তার বাবা মোরশেদ মিয়া। পরে ছেলে আকরাম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার আমতলীর একটি ট্রেনিং সেন্টারে ওয়েল্ডারের কাজ শেখেন। পরে ঋণ করে প্রায় আট মাস আগে তাকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। খরচ হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা। রাশিয়ায় যাওয়ার পর গত আট মাস সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করেন। প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ করে টাকা দেশে পাঠান তিনি। আড়াই মাস আগে রাশিয়াতেই দালালের খপ্পড়ে পড়ে আকরাম দেশটির সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যুক্ত হন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে অংশ নেন। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন আকরাম।নিহত আকরামের বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, ছেলে জানিয়েছিলেন- রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সদস্যরা কথা না শুনলে মারধর করতেন। গত কয়েক দিন আগে ছেলে জানিয়েছিলেন, রাশিয়ায় তার ব্যাংক হিসাবে ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছে। গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। পরিস্থিতি ভালো না বলে জানিয়েছিলেন।বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর রাশিয়া থেকে ফোন করে একজন জানান, ইউক্রেনের হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। লাশ দেশে ফেরত আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মোরশেদ মিয়া।আকরামের মা মোবিনা বেগম বলেন, ছেলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। ১৩ এপ্রিল থেকে পরিবারের সঙ্গে আকরামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাশিয়ায় পরিচিতজনেরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।আকরামের পরিবারের বরাত দিয়ে লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, রাশিয়ার সরকার তাকে নাগরিকত্ব দিয়েছিল। তাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে যুদ্ধে পাঠায়।রাশিয়া থেকে মুঠোফোনে তার এক সহযোদ্ধা জানিয়েছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা আকরামের লাশ দেশে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যোগাযোগ করতে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান অভিযানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৮৪ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬৮ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধ্বংস্তূপের নিচে এখনও চাপা পড়ে আছেন অনেকে। উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তাদের। নিহত ও আহতের হিসেব সংক্রান্ত গণনাতেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি।এতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর বাহিনীর হামলায় গত দেড় বছরে ৫১ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জনে। এই নিহত এবং আহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দখলদার ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে তারা। জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে আসে ২৫১ জনকে।হত্যার প্রতিশোধ ও জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল ইসরায়েল। কিন্তু বিরতির দুই মাস শেষ হওয়ার আগেই ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলিরা।জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। তাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাও বটে। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা খর্ব করতে তৈরি করা হয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। কাগজপত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন থাকলেও এতে ভাগ বসায় ২০১২ সালে তৈরি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগটি। ফলে একটি দেশের আর্থিক খাতের দুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা দাঁড়িয়ে যায়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত।বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আর্থিক খাতের দুটি বিশ্ব সংস্থা উদ্যোগ নিয়েছে। আর্থিক খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করার শর্ত জুড়ে দিয়েছে আইএমএফ। আইএমএফের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করতে বলেছে বিশ্ব ব্যাংক। নানামুখী চ্যালেঞ্জে জর্জরিত বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল ও টেকসই করতে ১০ দফা সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসনের কথা গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে।বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। এখানে লিজ দেওয়ার পদ্ধতিতে চলেছে লুটপাট ও অর্থপাচার। আর এই পথ সুগম করতে দিন দিন দুর্বল করা হয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংককে। এজন্য তৈরি করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। কাগজপত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন থাকলেও এতে ভাগ বসায় ২০১২ সালে তৈরি করা অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগটি। ফলে একটি দেশের আর্থিক খাতের দুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা দাঁড়িয়ে যায়। এর আগে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেও এমন একটি বিভাগ সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার যা পরে বিএনপি সরকার বাতিল করেছিল।অর্থ মন্ত্রণালয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সৃষ্টি করে সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া হয় এই বিভাগকে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা কার্যক্রমেও হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয় বিভাগটির মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংককে দুর্বল করার পর পরই আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় শুরু হয় ব্যাংক লুটপাট, যার শুরু হয়েছিল সোনালী ব্যাংকে হলমার্ক কেলেঙ্কারির মধ্য দিয়ে। লুটেরাদের বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও নতুন নতুন লুটেরাদের আকৃষ্ট করে এই খাতে। ক্রমে প্রতাপশালী সকল স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর চাপে কোনঠাসা হয়ে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে চাপে ও লোভে নৈতিক পদস্খলনও ঘটে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তার।শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির হিসাবে, গত সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে লুটপাট সবচেয়ে বেশি হয়েছে ব্যাংক খাতে। তাদের প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য ঋণ কেলেঙ্কারি, প্রতারণা, ভুয়া ঋণ ও ঋণের অপব্যবহারের বিভিন্ন ঘটনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক খাতের লুটপাটের টাকা দিয়ে ১৪টি মেট্রোরেল ও ২৪টি পদ্মা সেতু করা যেত। সেই হিসাবে দেশের আর্থিক খাতে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লুটের পরিমাণ ৭ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। ব্যাংক খাত থেকে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে যে অর্থ লুট করা হয়েছে, তার বড় অংশই পাচার হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এসব কারণে গত বছর ৫ আগস্ট রক্তক্ষয়ী গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবদিক থেকে জোর দাবি ওঠে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সত্যিকারের পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করার। একই সাথে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করে এটিকে একটি সেল হিসেবে রাখার পরামর্শ আসে।অন্তর্বর্তী সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব দেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মনসুরকে। তিনিও শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার কথা বার বার বলে আসছেন। একই কথা বলছে দুটি বিশ্ব সংস্থা, আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংক। বাংলাদেশের আর্থিক খাত সংস্কারের প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসনের বিষয়টি জোর দিয়ে তুলে ধরেছে বহুজাতিক ঋণদাতা সংস্থা দুটি।সম্প্রতি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশ সফর করে গেছে আইএমএফ প্রতিনিধিদল। ওই আলোচনাতেও আর্থিক খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন নিশ্চিত করার শর্ত জুড়ে দিয়েছে আইএমএফ। ব্যাংক খাতের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে আইনগত সংস্কার ও কার্যকর সম্পদ মান যাচাই এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা ও সুশাসন জোরদারের ওপরও গুরুত্বারোপ করে সংস্থাটি।পাশাপাশি অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন মোকাবিলায় জোরালো ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। আবার খেলাপি ঋণ কমানোর পাশাপাশি ব্যাংক খাতে দুর্বল তদারকি রোধ এবং নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতার ঘাটতি দূর করার কথাও বলেছে। দুই সপ্তাহের সফর শেষে গত ১৭ এপ্রিল আইএমএফ প্রতিনিধিদল সাংবাদিকদের সামনে যে ব্রিফিং করেছিল সেখানে এই বিষয়গুলো উঠে আসে। আইএমএফের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সায়ত্বশাসন নিশ্চিত করতে বলেছে বিশ্ব ব্যাংক। নানামুখী চ্যালেঞ্জে জর্জরিত বাংলাদেশের ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল ও টেকসই করতে ১০ দফা সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসনের কথা গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে।সংস্থাটির মতে, দীর্ঘদিনের কাঠামোগত দুর্বলতা, সুশাসনের অভাব ও রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে ব্যাংক খাত এখন গুরুতর ঝুঁকির মুখে রয়েছে। এসব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে দ্রুত সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। বুধবার প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সুপারিশগুলো তুলে ধরেছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি, পরিচালন অদক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রভাবে ঋণ বিতরণসহ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। এ অবস্থায় ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করতে সুসংগঠিত ও কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি।বিশ্বব্যাংকের ১০ দফা সুপারিশ হলো: ব্যাংক খাতের নীতি কাঠামো উন্নত করতে অগ্রাধিকার দেওয়া। আমানত সুরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করা। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন আনা। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক পুনর্গঠন করা। খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনায় শক্ত কাঠামো তৈরি। সমন্বিত দেউলিয়া আইন প্রণয়ন করা। ব্যাংকিং আইন ও নীতির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা। জরুরি তারল্য সহায়তার জন্য নীতি কাঠামো তৈরি করা। ব্যাংক তদারকিতে আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা অনুসরণ করা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের জুনের শেষে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের মোট সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার, যা দেশের আর্থিক খাতের ৮৮ শতাংশ এবং মোট জিডিপির প্রায় ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ রয়েছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের, ২৫ শতাংশ রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের এবং ৪ শতাংশ বিদেশি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে।বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে ঋণের নামে অর্থ আত্মসাৎ, পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ প্রদান এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার মতো ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চলমান। ২০২৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে এক পরিবারের সদস্যদের পর্ষদে থাকার মেয়াদ ১২ বছরে উন্নীত করায় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ আরও দৃঢ় হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির তথ্য উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে আটটি ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে পারস্পরিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭০ কোটি মার্কিন ডলার, যা প্রমাণ করে ব্যাংক খাতে কীভাবে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম ইনস্টিটিউশনালাইজড হয়ে উঠেছে।বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে বলেছে, ব্যাংক খাতের অস্থিরতা কেবল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করে না, বরং বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস করে এবং জিডিপির প্রায় ৭ শতাংশ পর্যন্ত বার্ষিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৭০ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বিশ্বের ১৫১টি ব্যাংকিং সংকট বিশ্লেষণ করে এমনটাই উঠে এসেছে। সংস্থাটি মনে করে, অন্তর্র্বতী সরকার গঠনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু দুর্বলতা চিহ্নিত করে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এই উদ্যোগকে কার্যকর করতে হলে বিশ্বব্যাংকের সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কার্যকর নীতিনির্ধারণ প্রয়োজন।বিশ্বব্যাংক জোর দিয়ে বলেছে, ব্যাংকিং খাতের সংকট মোকাবিলায় যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে, অর্থনৈতিক ক্ষতির মাত্রা ততই হ্রাস করা সম্ভব হবে। এ জন্যই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সহ দশ দফা সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।ভোরের আকাশ/এসএইচ
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস কে শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল শাখা থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেছেন সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম।ভিসিকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলেরর অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১০ (২) অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত ভাইস-চ্যান্সেলর পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৩-এর ধারা ১২ (২) অনুযায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইসচ্যান্সেলর পদে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে তার নিজ বিভাগে প্রত্যাবর্তনের নিমিত্ত প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর পদের আদেশ প্রত্যাহারপূর্বক তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপন দুটিতে উল্লেখ করা হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঝিনাইদহে ১৬০০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে আউশ ধানের বীজ ও সার বিতরণ শুরু হয়েছে।সোমবার (২৪ মার্চ) সকাল ১০টায় সদর উপজেলা কৃষি অফিসে দুইদিন ব্যাপী বীজ ও সার বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরী।সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূর এ নবী'র সভাপতিত্বে বীজ ও সার বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ জুনাইদ হাবীব ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মীর রাকিবুল ইসলাম।দুই দিনে প্রত্যেক কৃষককে ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার এবং ১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হবে। সদর উপজেলায় ১৬০০ কৃষকের মধ্যে মোট ৮ মেট্রিক টন বীজ ও ৩২ মেট্রিক টন সার বিতরণ করা হচ্ছে। সোমবার ও আগামীকাল মঙ্গলবার এসব বীজ ও সার বিতরণ করা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজ ইসলামকে পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন তাকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক এ কে এম মাইন উদ্দিন।আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড নামঞ্জুর ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নাকচ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।ঘটনায় শনিবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন– মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০), মো. মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজি (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এ ছাড়া অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ২৫/৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।গত ২১ এপ্রিল এ মামলায় গ্রেপ্তার আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানির (১৯) সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এদের মধ্যে ২৩ এপ্রিল কামাল আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। একইদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বনানী থানার কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মো. হৃদয় মিয়াজীর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এ মামলায় গ্রেপ্তার একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মাহাথির হাসান আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশে ইন্টারনেটের দাম আরও কমাতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।তিনি বলেন, এরইমধ্যে সাবমেরিন কেবলের ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে। মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতাদের নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যার মাধ্যমে উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব।সোমবার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিনের এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বিনিয়োগ সম্মেলনে স্পষ্ট করে বলতে চাই বর্তমান সরকার এক মুহূর্তের জন্যও ইন্টারনেট শাটডাউন করবে না। ভবিষ্যতে ইন্টারনেট যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়াতে দেশীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদকদের সরকার শুল্ক সুবিধা দিচ্ছে বলেও জানান আহমেদ তৈয়্যব।তিনি বলেন, ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে। আগামী মে মাসের মধ্যে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন চূড়ান্ত হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ