ছবি সংগ্রহীত
কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা এলাকার করাচিপাড়ার গহীন পাহাড়ে রুদ্ধশ্বাস চিরুনি অভিযান চালিয়ে মুক্তিপণ আদায় ও মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে অপহৃত ২২ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৫)।
সোমবার (২৭ অক্টোবর ২০২৫) রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১৫ এর সিপিসি-১ (টেকনাফ ক্যাম্প) এর একটি চৌকস আভিযানিক দল এ অভিযান পরিচালনা করে। প্রায় তিন ঘণ্টার টানা অভিযানে মানবপাচারকারীদের কবল থেকে ১ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ২১ জন রোহিঙ্গাসহ মোট ২২ জন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১০ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৭ জন শিশু রয়েছে।
অভিযানের সময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা কৌশলে পালিয়ে যায়। তবে ভিকটিমদের বর্ণনা, গোয়েন্দা তথ্য ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির আলোকে পাচারকারীদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।
পাচারকারী চক্রের সদস্যরা হলো, মোঃ খলিল (৪৫), রাশেদুল ইসলাম (২০), জাহানারা (৪১), আব্দুল্লাহ মেম্বার (৩৫), আব্দুল (২৬), আব্দুর রশিদ (২৮), শহিদুল্লাহ (২২), ওসমান গণি (২৬) ও ইয়াকুব (৩৫)। সবাই টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাতিয়ারঘোনা করাচিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
উদ্ধারকৃত ভিকটিম মোবারক (১৭) জানান, গত ১৩ অক্টোবর বিকেলে কক্সবাজারের কলাতলী এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে হাতিয়ারঘোনার পাহাড়ি এলাকায় আটকে রাখা হয়। অপহরণকারীরা তার পরিবারের নিকট ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে এবং অন্যদের নির্যাতন করা হয়—সিগারেটের আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং প্লার্স দিয়ে নখ তুলে নেওয়া হয়।
র্যাব-১৫ জানিয়েছে, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্থানীয় যুবকদের প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদেশে পাচারের চেষ্টা করে আসছিল।
ঘটনার পর টেকনাফ মডেল থানায় পেনাল কোডের ৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩৬৪(ক)/৩৪ ধারা এবং মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২-এর ৭/৮/১০ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
র্যাব-১৫ সূত্রে জানা যায়, মানবপাচার চক্রের মূল হোতাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ভোরের আকাশ//হর
সংশ্লিষ্ট
রাজবাড়ীর পাংশার মৌরাট ইউনিয়নের দত্তের বাজারে পাংশা নাদুড়িয়া রোডে নসিমনের ধাক্কায় ছিবারন (৭০) নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিহত ছিবারন উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের ভুরকুলিয়া গ্রামের আসমত মোল্লার স্ত্রী।মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে পাংশা-নাদুরিয়া সড়কের পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের দত্তের বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটেস্থানীয়রা জানিয়েছেন, দত্তের বাজারের পূর্ব পার্শ্বে একটি স্যানিটারী দোকান থেকে বের হয়ে সড়কে উঠলে পাট্টাগামী একটি নসিমন এসে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই ছিবারনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর নসিমনের ড্রাইভার পালিয়ে যায়।পাংশা মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে পাংশা থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সীমান্তজুড়ে মাদকের আগ্রাসন ঠেকাতে দিনরাত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সেই অভিযানের ধারাবাহিকতায় আবারও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)।সোমবার (২৭ অক্টোবর) সোমবার গভীর রাতে নাজিরপাড়া সীমান্তের ‘সাইফুলের ঘের’ এলাকায় চৌকস অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেছে তারা।বিজিবি জানায়, গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়—মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বিশাল চালান নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি’র তত্ত্বাবধানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে আনুমানিক রাত ২টার দিকে পাচারকারীদের গতিবিধি শনাক্ত করে টহল দল। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা বস্তা ফেলে পানিতে সাঁতরে পালিয়ে যায়।পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় তল্লাশিতে উদ্ধার হয় বিশেষভাবে মোড়ানো ১,৮০,০০০ (এক লক্ষ আশি হাজার) ইয়াবা ট্যাবলেট। উদ্ধারকৃত মাদকের প্যাকেটজাতকরণের ধরন এবং কোড দেখে এটি আন্তর্জাতিক মাদক নেটওয়ার্কের অংশ বলে নিশ্চিত হয়েছে বিজিবি।অভিযানে জড়িত পাচারচক্রের স্থানীয় হোতা হিসেবে জয়নাল আবেদীন (৩৩), পিতা ইমান হোসেন, গ্রাম খানকার ডেইল, ওয়ার্ড ৯, টেকনাফ পৌরসভা–এর নাম পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান, পিএসসি বলেন, “বিজিবি সীমান্ত সুরক্ষা ও মাদক নির্মূলে শূন্য সহনশীলতার নীতি অনুসরণ করছে। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে জাতিকে রক্ষা করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”এই অভিযান বিজিবির অটুট মনোবল, নিখুঁত গোয়েন্দা দক্ষতা এবং সীমান্তে রাষ্ট্রীয় কর্তব্যের প্রতি অবিচল দায়িত্ববোধের আরেক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে।ভোরের আকাশ/জাআ
ঝালকাঠির রাজাপুরে বাসের ধাক্কায় বিএনপি নেতা ও ঠিকাদার নাসিম আকন (৪৮) নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজাপুর–ভান্ডারিয়া মহাসড়কের নলবুনিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঠিকাদারি কাজ পরিদর্শন শেষে মোটরসাইকেলে করে রাজাপুরের দিকে ফিরছিলেন নাসিম আকন। পথে পাথরঘাটাগামী হামিম পরিবহনের একটি দ্রুতগামী বাস পেছন দিক থেকে তার মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি ছিটকে সড়কের পাশে গাছের গোড়ায় আঘাত পেয়ে ডোবায় পড়ে গুরুতর আহত হন।স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পথেই তার মৃত্যু হয়।রাজাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল মালেক বলেন, “ঘাতক বাস ও চালককে আটক করার চেষ্টা চলছে।”এদিকে নাসিম আকনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। কান্নায় ভেঙে পড়েন দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় মানুষজন।রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেল জানান, “হাসপাতালে আনার সময় তার চেতনা ছিল। ব্যথায় তিনি ‘মা মা’ বলে ডাকছিলেন। নিজ হাতে চোখের ময়লা সরিয়েছিলেন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বরিশাল পাঠানো হয়, কিন্তু পথেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।ভোরের আকাশ/জাআ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে উৎকোচ, ভ্যাট ও আয়করের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেছেন উপজেলার ১১ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানরা এ অভিযোগ তুলে ধরেন।এর আগে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন উপজেলার ১১ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-কাবিটা) প্রকল্পে প্রতিটি কাজের বিপরীতে ভ্যাট, আয়কর ও উৎকোচের নামে প্রায় ২৫ শতাংশ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পিআইও রেজাউল করিম।এছাড়া বিল–ভাউচার ও মাস্টাররোল সমন্বয়ের নামে প্রতিটি প্রকল্প থেকে তিন হাজার টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগও তোলেন চেয়ারম্যানরা।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সরিষা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ভূঁইয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হানিফা, আঠারবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুবের আলম কবীর রুপক, মাইজবাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বাবুল, মগটুলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন আকন্দ, সোহাগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সম্রাট কবীর বিপুল এবং উচাখিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান সেলিম।এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে। সেখানে ইউএনও আমাকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানদের নিয়ে মিটিং করে প্রকল্প তৈরি করে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি স্বাক্ষর না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।”উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান বলেন, “প্রকল্পের ফাইলে ভ্যাট–আয়কর কর্তনের কোনো প্রমাণ পাইনি। চেয়ারম্যানদের অভিযোগের বিষয়ে পিআইও ভালো জানেন। নীতিমালা অনুযায়ী টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পের ৮০ শতাংশ বরাদ্দ ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে, বাকি ২০ শতাংশ উপজেলা পরিষদের রিজার্ভ ফান্ড হিসেবে থাকে। আমি ২০ শতাংশের প্রকল্প তৈরি করে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে পিআইওকে স্বাক্ষর দিতে বললে তিনি স্বাক্ষর দেননি। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারাও যাচাই-বাছাই করে প্রকল্পগুলো সঠিক পেয়েছেন।”ভোরের আকাশ/জাআ