ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যা: গ্রেপ্তার তিনজন ৬ দিনের রিমান্ডে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা এসএম শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামির ৬ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (১৭ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন, মাদারীপুর সদরের এরশাদ হাওলাদারের ছেলে মো. তামিম হাওলাদার (৩০), কালাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (৩০) ও ডাসার থানার যতিন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (২৮)।
এদিন কারাগার থেকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে এসময় আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।
এর আগে গত বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরদিন বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য শনিবার দিন ধার্য করেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণের পর বহুল আলোচিত ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী মিঠু হালদারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।শনিবার (১৭ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন।এর আগে, রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় গত ৬ মে অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত। তবে, আগের দিন মিল্টনের মা মারা যাওয়ায় আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর শনিবার স্ত্রীসহ মিল্টন আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী ওহিদুজ্জামান বিপ্লব বিষয়টি নিশ্চিত করে। রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গত বছরের ১ মে রাতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাল মৃত্যু সনদ তৈরি, টর্চার সেলে মানুষজনকে নির্যাতন ও মানবপাচারের অভিযোগে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। পরদিন জাল মৃত্যু সনদ তৈরির অভিযোগে মামলায় মিল্টন সমাদ্দারের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এরপর ৫ মে তাকে মানবপাচার আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে কারাগারে থাকা অবস্থায় মারধরের আরেক মামলায় মিল্টনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তিন মামলায় জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন তিনি। তদন্ত শেষে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আতাউর রহমান। এ মামলায় তার সঙ্গে তার স্ত্রী মিঠু হালদারকে অভিযুক্ত করা হয়। ভোরের আকাশ/জাআ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা এসএম শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামির ৬ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।শনিবার (১৭ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজার আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন, মাদারীপুর সদরের এরশাদ হাওলাদারের ছেলে মো. তামিম হাওলাদার (৩০), কালাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (৩০) ও ডাসার থানার যতিন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (২৮)।এদিন কারাগার থেকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে এসময় আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিল না।এর আগে গত বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।পরদিন বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান তাদের ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য শনিবার দিন ধার্য করেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন না থাকায় দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী নামে ভোট করা তথা নির্বাচন করার এখতিয়ার নেই দলটির। নির্বাচনি আইন গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ইসির নিবন্ধনহীন কোনো দল নিজ দলের ব্যানার ও প্রতীক নিয়ে নির্বাচন তথা ভোট করতে পারবে না। নিবন্ধন না থাকায় দল হিসেবে এই মুহূর্তে জামায়াত নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না। এমনকি দলটির যে নিজস্ব দলীয় প্রতীক ছিল দাঁড়িপাাল্লা, তাও এখন আর নেই। নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক ফিরে পেতে জামায়াতে ইসলামীর আপিল এখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে বিচারাধীন।আগামী ১ জুন এ বিষয়ে রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই রায়ের মাধ্যমে জানা যাবে, জামায়াত ইসিতে নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরে পাবে কিনা? ফলে দলটির নির্বাচনি ভাগ্য ঝুলে আছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের হাতে। শুধুই নির্বাচনি ভাগ্য নয়, প্রকারান্তরে জামায়াতের রাজনীতির ভাগ্যই এখন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের হাতে।বিশেষজ্ঞদের অভিমত, আপিল বিভাগের রায় দলটির অনুকূলে গেলে দেশে তাদের রাজনীতির পথ সুগম হবে। আর রায় বিপক্ষে গেলে জামায়াতে ইসলামী দলীয়ভাবে দেশের সকল নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়বে। আর দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না পারলে দলীয় রাজনীতি নিয়েই টান পড়বে।তবে দলটির পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আশা করছি, আমরা রায়ে নিবন্ধন ফিরে পাবো। আর ফুল কোর্ট সভার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লা নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনা চেয়েছি।আমরা আশা করছি, নিবন্ধনের পাশাপাশি ওইদিন রায়ে আমরা রাজনৈতিক দল হিসেব জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লার বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন আদালত। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে জামায়াতে ইসলামী দেশের জনগণের মাঝে ফিরে আসবে। জামায়াত নতুন উদ্যোমে কার্যক্রম শুরু করবে। ইসিতে নিবন্ধন ফিরে পেতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিলের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি সম্পন্ন হয়েছে ১৪ মে। এ অবস্থায় আগামী ১ জুন রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই দিন ধার্য করেছেন।প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন ফিরে পেতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের আপিলটির ওপর গত বছর ৩ ডিসেম্বর আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল। সর্বশেষ মামলাটি গত ৬ মে’র আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৮ নম্বরে ছিল। কিন্তু ওইদিন তালিকার ২ নম্বরে থাকা জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিলের ওপর দিনের বিচারিক সময়ের পুরোটা সময় ধরেই শুনানি হয়। এ কারণে ওইদিন আর কোনো মামলার শুনানি করা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে পরদিন ৭ মে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানির সময় নির্ধারণ করতে আবেদন জানান। এ আবেদনে আদালত ১৩ মে দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় গত ১৩ ও ১৪ মে দুইদিন ধরে শুনানি হয়। শুনানি শেষে রায়ের দিন ঠিক করা হয়। সবমিলে এই মামলাটি আপিল বিভাগে চার কার্যদিবস শুনানি হয়েছে।বিএনপি নির্বাচনের জন্য তড়িঘড়ি করলেও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের ব্যাপারে গড়িমসি করছে। কার্যত নিবন্ধন না থাকায় দলটির অবস্থান নির্বাচন বিলম্বের পক্ষে। এমন প্রেক্ষাপটে জামায়াত দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দলটির নিবন্ধনের মামলা শুনানি সম্পন্ন হলো। এই মামলা নিষ্পত্তির ওপর তাদের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ভর করছে। আপিল বিভাগ থেকে দলটির অনুকূলে রায় হলেই কেবল ইসির নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে পারে। সে পর্যন্ত দলটিকে অপেক্ষা করতে হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত দলটির অনুকূলে হবে কিনা তা নির্ভর করছে পুরোপুরি আদালতের ওপর। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে জামায়াতকে। আদালত থেকে কি সিদ্ধান্ত আসবে তা কারো জানা নেই। অনিশ্চিত এই অবস্থায় নির্বাচন বিলম্বে হওয়ার পক্ষে দলটির অবস্থান বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। এমনকি এই মুহুর্তে দাঁড়িপাল্লা জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীক নেই। এটি নিয়েও দলটি আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইসি ২০১৬ সালে জামায়াতের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা বাতিল করে। কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।চিঠিতে বলা হয়, “সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের উপস্থিতিতে ১২ ডিসেম্বর (২০১৬ সাল) ফুল কোর্ট সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে। অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হোক।”চিঠিতে আরও বলা হয়, “এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভার ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বা কোনো নির্বাচনে প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বরাদ্দ প্রদান না করা এবং যদি বরাদ্দ করা হয়ে থাকে তাহলে ওই বরাদ্দ বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।” সুপ্রিম কোর্টের এই চিঠি পাবার পর ইসি জামায়াতের দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা বাতিল করে। এই প্রতীক ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে দলটি। এ বিষয়ে আইনজীবীরা শুনানিও করেন। আগামী ১ জুন নিবন্ধনের পাশাপাশি এ বিষয়েও সিদ্ধান্ত জানাবেন আপিল বিভাগ। দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে বাদানুবাদ চলছে। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি দ্রুত নির্বাচন দাবি করছে। আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বিষয়ে সংস্কারের পর নির্বাচন হবে বলে বলা হচ্ছে। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি বছরের ডিসেম্বও অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। দেশের রাজনৈতিক দল হিসেবে জনসমর্থনের দিক থেকে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির (জাপা) পর জামায়াতের অবস্থান। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ছিল আওয়ামী লীগ। আর জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের দোসর হওয়ায় জুলাই অভ্যুত্থানে যুক্ত ব্যক্তিরা জাপার বিরুদ্ধে।এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম স্থগিত করেছে সরকার। এমনকি দলটির পক্ষে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় দেশে এখন প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি ও জামায়াত। ফলে দল হিসেবে এখন দ্বিতীয় বৃহত্তম দল জামায়াতে ইসলামী। আর এই মুহূর্তে জাতীয় নির্বাচনের জন্য দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি সরকারের ওপর ক্রমশঃ চাপ বাড়াচ্ছে। এরইমধ্যে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের একটি অংশ নিয়ে গড়া হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।অথচ এই মুহূর্তে বিএনপির পর দেশের অন্যতম রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির কোনো নিবন্ধন নেই। এই দুই শক্তি যতদিন ইসিতে নিবন্ধন না পাচ্ছে ততদিন তারা স্বনামে ও স্বপ্রতীকে ভোটের মাঠে থাকতে পারছে না। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা পরবর্তী সময়ে আপিল হিসেবে রূপান্তরিত হয়। ওই বছরের ২ নভেম্বর হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এর পরই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকে জামায়াতের নাম বাদ দেয় ইসি। যদিও জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি।হাইকোর্টের রায় প্রকাশের পর ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে আপিল বিভাগে আপিল আবেদন দাখিল করে জামায়াত। একইসঙ্গে পৃথক লিভ টু আপিল আবেদন করা হয়। ওই দুটি আবেদন ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করেন আপিল বিভাগ। ওইদিন জামায়াতের পক্ষের আইনজীবীর অনুপস্থিতির কারণে আপিল বিভাগ আপিল খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে আপিলটি পুনরুজ্জীবনের জন্য জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। গত বছর ২২ অক্টোবর আদালত প্রায় এক বছরের বিলম্ব মার্জনা করে আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ (পুনরুজ্জীবিত) করেন আপিল বিভাগ। ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইসির নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খুলে। এরই ধারাবাহিকতায় ওই আপিলের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি হয়েছে।গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ওইসময়কার প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের অপরাপর বিচারপতিরা পদত্যাগ করেন। এমন অবস্থায় ২৮৬ দিন দেরি মার্জনা করে আপিল এবং ২৯৪ দিন দেরি মার্জনা করে লিভ টু আপিল আবদেন পুনরুজ্জীবিত করার জন্য দলটির পক্ষ থেকে পৃথক দুটি আবেদন করা হয়। আবেদন দুটি গতবছর ১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। আবেদন দুটি মঞ্জুর করার পর জামায়াতের আপিলটির ওপর আপিল বিভাগে শুনানির সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর শুনানি শুরু হয়। আর চার কার্যদিবস শুনানি শেষে আজ শুনানি সম্পন্ন হয়।রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেয় ইসি। এই নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন রিট আবেদন করেন। বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। এই রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দুইবার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দুইবার তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা পরবর্তী সময়ে আপিল হিসেবে রূপান্তরিত হয়।এর আগে রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে জামায়াত আবেদন করে, যা ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের তৎকালীন চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ওই বছরের ২ নভেম্বর হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এর পরই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকে জামায়াতের নাম বাদ দেয় ইসি। যদিও জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি। নিবন্ধন হারানোর কারণে নিজের দলের ব্যানারে আর নির্বাচন করতে পারেনি জামায়াত। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে দলটি। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে দলটির নেতারা। তবে দলটির কোনো কোনো নেতা ‘আপেল’ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে গত বছর ১ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তখনকার সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯-এর ১৮(১) ধারার ক্ষমতাবলে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর সব অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান। এরপর গত ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপর থেকে রাজনৈতিক মাঠে কর্মসূচি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে দলটির নেতাকর্মীরা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুনের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।আবেদনে বলা হয়েছে, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।অনুসন্ধানকালে জানা যায়, উবায়দুল মোকতদির চৌধুরী বর্তমানে ভিন্ন মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন। তিনি জামিনে বের হয়ে দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন।এছাড়া তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুনও যে কোনও সময় দেশের যেতে পারেন। অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদের বিদেশ গমন রহিতকরণের আদেশ প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।এর আগে, গত ৩১ অক্টোবর উবায়দুল মোকতাদিরকে রাজধানীর মিরপুর থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ