সেবা দিয়ে জনগণের মন জয় করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের পর ভেঙে পড়েছিল পুলিশ সদস্যদের মনোবল। পুলিশ ও জনগণের মধ্যে বেশ দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। গত ছয় মাস ধরে সেই অবস্থার উন্নতি ঘটছে। দায়িত্ব পালনে তারা আবার দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় জনগণকে কাঙ্ক্ষিত আইনি সেবা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মন জয় করার পরামর্শ দিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য ইতিবাচক কাজ করে পুলিশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে হবে।
রোববার (১৮ মে) সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে অনুষ্ঠিত গ্র্যান্ড মাস্টার প্যারেড পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার এসব কথা বলেন। প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ফোর্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার রওনক আলম।
প্যারেডে অংশ নেওয়া কর্মকর্তা ও ফোর্সদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মাস্টার প্যারেডের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো অফিসার ও ফোর্সদের মধ্যে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা। পুলিশ একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। এখানে শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং আইন ও বিধির বাইরে কোনো কাজ করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আপনারা সপ্তাহে একদিন আপনাদের কর্মস্থলগুলো পরিষ্কার করবেন। জনগণের কল্যাণে ও পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি আরও বাড়াতে যার যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে ডিএমপিকে আরও আধুনিক, গতিশীল এবং জনগণের আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, মানুষের সেবায় প্রতিটি কাজ পেশাদারত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে সম্পাদন করতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতি দৃঢ় মনোবল নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। নিজেদের মনোবল সবসময় চাঙা রাখতে হবে। নিরপেক্ষ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে জনসেবায় নিয়োজিত করতে হবে।
মাস্টার প্যারেডে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. সরওয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) ফারুক আহমেদসহ পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনার পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, "আজ অনেকের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এদের চিনে রাখাটা আগামীর রাজনীতির বোঝাপড়ার জন্য অত্যন্ত জরুরি।"তিনি বলেন, “দেখুন, কিভাবে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাকে ‘সাধারণ সমর্থকদের মানবাধিকার হরণ’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এটি মুজিববাদী সন্ত্রাসীদের পক্ষে বয়ান তৈরির কৌশল। আজ যেভাবে এই বয়ান রচিত হচ্ছে, তা তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে।”আসিফ মাহমুদ তার পোস্টে মুজিববাদী রাজনীতির দুটি ধারা চিহ্নিত করেন:১. রক্ষীবাহিনী ধারা — যারা সরাসরি সহিংসতায় লিপ্ত। গোপালগঞ্জে অস্ত্র, ককটেল নিয়ে যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তা এই ধারার পরিচায়ক।২. কালচারাল ও ইন্টেলেকচুয়াল ধারা — যারা এই সহিংস সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে ‘ভিক্টিম বয়ান’ তৈরি করছে। তিনি মন্তব্য করেন, এরা হয় অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেছে অথবা মুজিববাদী কালচারে বড় হয়ে এমন মানসিক গঠনে অভ্যস্ত।তিনি তার পোস্টে ইঙ্গিত দেন, রাজনীতিতে কারা প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির পক্ষে, আর কারা ছদ্মবেশে সহিংসতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, তা এখন পরিষ্কার হচ্ছে।উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনার পর বুধবার রাত ৮টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলার ওপর কারফিউ জারি করা হয়েছে, যা অন্তত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।ভোরের আকাশ//হ.র
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের অপসারণ দাবির আন্দোলনের মধ্যে জারি করা বদলি আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে তা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় আরো ৭ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ২১ জনকে বরখাস্ত করা হলো। বুধবার (১৬ জুলাই) এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (বোর্ড প্রশাসন-১) উম্মে আয়মান কাশমীর সই করা আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন কর অঞ্চল-২-এর কর পরিদর্শক লোকমান হোসেন, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কর পরিদর্শক নাজমুল হাসান, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কর পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ছালেহা খাতুন সাথি, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকার (উত্তর) সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রৌশনারা আক্তার, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকার (দক্ষিণ) সিপাই সালেক খান ও কর অঞ্চল-১৪ ঢাকার প্রধান সহকারী (নাজির) বি এম সবুজ।এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুই দফায় এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।প্রথম দফায় বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা মাসুমা খাতুন (যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-২), মুরাদ আহমেদ (যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-১৫), মো. মোরশেদ উদ্দীন খান (যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-কুষ্টিয়া), মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা (যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-নোয়াখালী), আশরাফুল আলম প্রধান (যুগ্ম কর কমিশনার, কর অঞ্চল-কক্সবাজার), মো. শিহাবুল ইসলাম (উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-খুলনা), মোসা. নুশরাত জাহান শমী (উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-রংপুর) ও ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল (উপ-কর কমিশনার, কর অঞ্চল-কুমিল্লা)।দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারামূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, কাস্টম বন্ড কমিশনারেট ঢাকার (উত্তর) রাজস্ব কর্মকর্তা সবুজ মিয়া; কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট খুলনার রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল বশর; ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প ঢাকার উপপরিচালক (অতিরিক্ত কমিশনার) সিফাত মরিয়ম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব শাহাদত জামিল এবং কর অঞ্চল-৮-এর অতিরিক্ত কমিশনার মির্জা আশিক রানা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ ও হামলা-পাল্টাহামলার ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রেস উইংয়ের পাঠানো বার্তায় এ কথা জানানো হয়।বার্তায় বলা হয়, আজ বুধবার রাত ৮টা থেকে পরবর্তী দিন (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।এর আগে, বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জ সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এদিন বিকেলে গোপালগঞ্জে সভা শেষে ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।এরপর এনসিপির শীর্ষ নেতারা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্কে করে নিরাপদে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতায় জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে কঠোর বার্তা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকার এই বিবৃতি দেয়।বিবৃতিতে সরকার বলছে, গোপালগঞ্জে আজ সহিংসতার ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য। বিপ্লবী আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে তরুণ নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে বাধা দেওয়া তাদের মৌলিক অধিকারের লজ্জাজনক লঙ্ঘন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যরা, পুলিশ এবং গণমাধ্যমের ওপর নৃশংস হামলা চালানো, তাদের গাড়ি ভাঙচুর করা এবং ব্যক্তিদের ওপর সহিংসভাবে আক্রমণ করা হয়েছে।নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের দ্বারা এই জঘন্য কাজটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে, যা শাস্তির বাইরে থাকবে না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ আছে।সরকার বলছে, অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের সম্পূর্ণ জবাবদিহি করতে হবে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে এই ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই।আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রশংসা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা সেনাবাহিনী এবং পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের জন্য তাদের প্রশংসা করি এবং এই বিদ্বেষপূর্ণ হুমকি সত্ত্বেও যারা তাদের সমাবেশ চালিয়ে গেছেন তাদের স্থিতিস্থাপকতা এবং সাহসের প্রশংসা করি। এই বর্বরতার জন্য দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ