সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ৯ ঘন্টা আগে

আপডেট : ২ ঘন্টা আগে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পরামর্শের আড়ালে ভিডিও বক্তব্য ও ছবির মাধ্যমে যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি করায় ডা. জাহাঙ্গীর কবিরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে নোটিশে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, লাইকিসহ সব অনলাইন মাধ্যমে অশ্লীল ও পর্নোগ্রাফিক ভিডিও, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী বায়েজিদ হোসেন ও নাঈম সরদারের পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এই নোটিশ দিয়েছেন। 

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর ডাকযোগে নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। নোটিশে দায়িত্বশীলদের অবিলম্বে এবিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় হাইকোর্টে রিট আবদেন দাখিল করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব  শনিবার দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, লাইকিসহ সব অনলাইন মাধ্যমে অশ্লীল ও পর্নোগ্রাফিক ভিডিও এবং বিজ্ঞাপনে সয়লাব। বাংলাদেশের নামি-দামি সেলিব্রেটি এবং শোবিজ মডেল ও তারকা তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেজ এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিও ও বিজ্ঞাপন প্রমোট করছেন। অনেক ডাক্তার নিজেদের ভিউ বাড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ঔষধ এবং সামগ্রীর বিক্রয়ের জন্য অশ্লীল ভিডিও এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে। ওইসব ছবি এবং ভিডিও সমাজে ব্যাপকভাবে অশ্লীলতা ছড়িয়ে সামাজিক এবং পারিবারিক মূল্যবোধকে বিনষ্ট করছে।

তিনি বলেন, এখন সবধরনের মানুষের হাতে হাতে স্মার্টফোন। সবার ইন্টারনেট সুবিধা থাকায় প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি কোমলমতি শিশুরাও ওইসব অশ্লীল ভিডিও এবং বিজ্ঞাপনে আসক্ত হচ্ছে। এতে একদিকে কোমলমতি শিশু ও তরুণরা বিপদগামী হচ্ছে। আর এই সুযোগে বিদেশি কোম্পানিগুলো দেশীয় সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। যা জরুরিভিত্তিতে বন্ধ হওয়া দরকার। এমন পরিস্থিতিতে একজন সচেতন নাগরিক ও অভিভাবক হিসেবে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না। এজন্য জনস্বার্থে সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। 

তিনি আরও  বলেন, ডা. জাহাঙ্গীরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নোটিশ পাঠানো হলেও ডা. তাসনিম জারাকে কোনো নোটিশ করিনি। অথচ গণমাধ্যমে এসেছে যে তাকেও নোটিশ করা হয়েছে, যা দুঃখজনক।

নোটিশে বলা হয়েছে, ডা. জাহাঙ্গীর কবিরসহ অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পরামর্শের আড়ালে ভিডিও বক্তব্য ও ছবির মাধ্যমে যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি করে থাকেন। ওইসব ছবি এবং ভিডিও সমাজে ব্যাপকভাবে অশ্লীলতা ছড়িয়ে সামাজিক এবং পারিবারিক মূল্যবোধকে বিনষ্ট করছে। বিষয়গুলো খুবই উদ্বেগজনক এবং এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এজন্য ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, লাইকিসহ সব অনলাইন মাধ্যমে অশ্লীল ও পর্নোগ্রাফিক ভিডিও, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধ হওয়া দরকার। এ জাতীয় বিজ্ঞাপন যাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হতে না পারে সে জন্য সব ওয়েবসাইট, লিংক, গেটওয়ে অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন এবং সংবিধান অনুযায়ী যেকোনো ধরনের অশ্লীল ছবি বা ভিডিও তৈরি, প্রচার ও প্রকাশ করা বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু নোটিশ গ্রহীতাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে অনেকে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল এবং পর্নোগ্রাফিক ছবি, ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করে আসছে। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুক ইউটিউব এবং অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পারিবারিক এবং সামাজিক পরিমণ্ডলে এসবের অনাকাক্সিক্ষত প্রভাব পড়ছে। পারিবারিক এবং সামাজিক মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইন্টারনেট যেহেতু পাবলিক পরিসর সেহেতু এইসব মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও এবং পর্নোগ্রাফিক ছবি প্রচার একটি গণ উপদ্রব, যা দন্ডবিধির ২৬৮ ধারা অনুযায়ী অপরাধ। আবার ২৯২, ২৯৩ ও ২৯৪ ধারা অনুযায়ী কোনো ধরনের অশ্লীল ভিডিও বা ছবি তৈরি, প্রচার ও প্রকাশ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮ অনুযায়ী রাষ্ট্র জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করতে সাংবিধানিকভাবে দায়বদ্ধ। ২০০১ সালের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ২৯ এবং ৩০ ধারায় একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ ইন্টারনেটসেবা এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, এসব কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে আইনের প্রয়োগ না করায় ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা অশ্লীলতা, ক্ষতিকর ও বেআইনি অপরাধমূলক উপাদানে ভরপুর। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

ভোরের আকাশ/মি

  • শেয়ার করুন-

সংশ্লিষ্ট

নতুন ভোটার ৬৩ লাখ, বাদ গেল ২৩ লাখ মৃত ভোটার

নতুন ভোটার ৬৩ লাখ, বাদ গেল ২৩ লাখ মৃত ভোটার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

‘কেবল নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য ভাবতে হবে’

‘কেবল নিজের জন্য নয়, দেশের জন্য ভাবতে হবে’

‘শিক্ষা যেন কেবল উপার্জনের উপায় না হয়’

‘শিক্ষা যেন কেবল উপার্জনের উপায় না হয়’

মন্তব্য করুন