ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভিপি-জিএস, এজিএসসহ ২৮টি পদে ২৩টিতেই বিজয়ী হয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার পর ঢাবির সিনেট ভবনে আনুষ্ঠানিক ফলাফলে তাদের নাম ঘোষণা করেন ডাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
ভিপি পদে ছাত্রশিবির প্যানেলের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান ৫ হাজার ৭০৮ ভোট পেয়েছেন।
১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন এসএম ফরহাদ। তিনিও ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে লড়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
এজিএস পদেও বিজয়ী হন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মুহা. মহিউদ্দীন খান। তিনি ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়েছেন। ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।
এ ছাড়া আরও ২০ পদে বিজয় লাভ করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতেমা তাসনিম জুমা পেয়েছেন ১০ হাজার ৬৩১ ভোট। ৭ হাজার ৮৩৩ ভোট পেয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে জয়ী হন ইকবাল হায়দার। আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে খান জসিম পেয়েছেন ৯ হাজার ৭০৬ ভোট।
ছাত্র পরিবহন সম্পাদক হিসেবে লড়ে আসিফ আবদুল্লাহ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬১ ভোট। ৭ হাজার ২৫৫ ভোট পেয়ে ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন আরমান হোসাইন। কমন রুম, রিডিং রুম ও কাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে ছালমা পেয়েছেন ৯ হাজার ৯২০ ভোট। ১১ হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে মানবাধিকার ও আইন সম্পাদক হন সাখাওয়াত জাকারিয়া। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে এমএম আল মিনহাজ পেয়েছেন ৭ হাজার ৩৮ ভোট। এছাড়া ৯ হাজার ৩৪৪ ভোট পেয়ে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক বিজয় ছিনিয়ে আনেন মাজহারুল ইসলাম।
ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে সদস্য হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন সাবিকুন্নাহার তামান্না (১০ হাজার ৪৮ ভোট), সর্বমিত্র (৮ হাজার ৯৮৮ ভোট), আনাস ইবনে মুনির (৫ হাজার ১৫ ভোট), ইমরান হোসেন (৬ হাজার ২৫৬), তাজিনুর রহমান (৫ হাজার ৬৯০), মেফতাহুল হোসেন আল মারুফ (৫ হাজার ১৫), বেলাল হোসাইন অপু খান (৪ হাজার ৮৬৫), রাইসুল ইসলাম (৪ হাজার ৫৩৫), মো. শাহিনুর রহমান (৪ হাজার ৩৯০), মোছা. আফসানা আক্তার (৫ হাজার ৭৪৭) ও রায়হান উদ্দীন (৫ হাজার ৮২ ভোট)।
প্যানেলের বাইরে বাকি পাঁচ পদে জয়ী হয়েছেন অন্য প্রার্থীরা। তারা হলেন- সমাজসেবা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী যুবাইর বিন নেছারী। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী সানজিদা আহমেদ তন্বী। সদস্য পদে হেমা চাকমা ও উম্মু উসউয়াতুন রাফিয়া।
এর আগে, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীন বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। বড় কোনো ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে ডাকসুর ৩৮তম নির্বাচন। এবার ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হয়েছে ১৩টি পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন ১ হাজার ৩৫ জন।
ডাকসুতে এবার মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ আর ১৩টি ছাত্র হলে ভোটার ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার ছিলেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি ভোটকেন্দ্রে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও রয়েছে কঠোর অবস্থানে।বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬১টি ভোটকক্ষ। প্রতিটি ভোটকক্ষে সর্বোচ্চ ৫০০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়বেন ৪৯৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।ভোরের আকাশ/তা.কা
৩৫ বছর পর আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এবারের নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার ৫২১ জন শিক্ষার্থী।নির্বাচন ঘিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা শাটল ট্রেন, ঝুপড়ি, ক্যান্টিন, হল ও কটেজগুলোয় আলোচনা করছেন সম্ভাব্য বিজয়ী প্রার্থী ও ইশতেহার নিয়ে।৯০৮ জন প্রার্থী, ১৩টি প্যানেলকেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯০৮ জন প্রার্থী। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি পদে প্রার্থী ৪১৫ জন, হল সংসদে ৪৭৩ জন এবং হোস্টেল সংসদের জন্য ২০ জন।ভিপি পদে ২৪ জন, জিএস পদে ২২ জন এবং এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২১ জন। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে মোট ১৩টি প্যানেল।ইতিহাসের সপ্তম নির্বাচনচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এরপর ৩৫ বছর পেরিয়ে আজ সপ্তমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ নির্বাচন।নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ নিয়ে দেখা গেছে ব্যাপক আগ্রহ। দীর্ঘ বিরতির পর প্রত্যক্ষভাবে প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশ নিতে পেরে তারা রোমাঞ্চিত।ভোট ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাভোটগ্রহণ হবে নতুন কলা ভবন, বিজ্ঞান অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান ও বাণিজ্য অনুষদ ভবন এবং আইটি ভবনে। থাকছে ৬০টি কক্ষে ৭০০টির বেশি বুথ।প্রতিটি বুথে ৪০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন। ব্যালট থাকবে চার পৃষ্ঠার। একজন ভোটার চাকসুর জন্য ২৬টি ও হল/হোস্টেল সংসদের জন্য ১৪টি—মোট ৪০টি ভোট দিতে পারবেন। এজন্য নির্ধারিত সময় রাখা হয়েছে ১০ মিনিট।ভোট গণনায় থাকছে ওএমআর প্রযুক্তি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও প্রতিটি ব্যালটে ২৪ ডিজিটের গোপন কোড। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ভোটকেন্দ্র।নিরাপত্তা চার স্তরেনির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। ক্যাম্পাসে মোতায়েন থাকবে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন এবং প্রয়োজনে সেনাবাহিনী।প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. মনির উদ্দিন বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে বারবার বৈঠক করা হয়েছে। কারচুপির সুযোগ নেই।”চবি প্রক্টর ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী জানান, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।আলোচনায় শীর্ষ পদে প্রার্থীরাভিপি পদে আলোচনায় আছেন:সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় (ছাত্রদল)ইব্রাহীম হোসেন রনি (ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতি’)মাহফুজুর রহমান (স্বতন্ত্র সম্মিলন)ধ্রুব বড়ুয়া (বাম ও পাহাড়ি জোট ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’)ফরহাদুল ইসলাম (‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’)জিএস পদে আলোচনায়:রশিদুল হক দিনার (স্বতন্ত্র, বাগছাসের বহিষ্কৃত নেতা)সাঈদ বিন হাবিব (সম্প্রীতি)শাফায়াত হোসেন (ছাত্রদল)সাকিব মাহমুদ (ছাত্র অধিকার ও ছাত্র মজলিস সমর্থিত)চৌধুরী তাসনীম জাহান শ্রাবণ (একমাত্র নারী জিএস প্রার্থী)এজিএস পদে আলোচনায়:আইয়ুবুর রহমান তৌফিক (ছাত্রদল)সাজ্জাত হোসেন মুন্না (ছাত্রশিবির)জান্নাতুল ফেরদৌস (স্বতন্ত্র)নারী প্রার্থীদের উপস্থিতিএবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ৪৭ জন নারী প্রার্থী। শীর্ষ তিন পদে রয়েছেন মাত্র তিনজন নারী। এজিএস পদে রয়েছেন ছাবেকুন নাহার ও জান্নাতুল ফেরদৌস।শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ানোস্বতন্ত্র এজিএস প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ভোটের আগমুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানিয়েছেন ছাত্রদল প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিককে।আনোয়ার বলেন, “তৌফিক সবার চেয়ে যোগ্য। আমি একাডেমিক ব্যস্ততা ও বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।”শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাশিক্ষার্থীরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে নেতৃত্ব নির্বাচনের পাশাপাশি তারা চাইছেন বাস্তব পরিবর্তন।আবাসনের সংকট, শাটল ট্রেনের ভিড়, হলের খাবারের মান, চিকিৎসা, নিরাপত্তা এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন—এসব ইস্যুতে এবার প্রার্থীরা বেশ সোচ্চার। ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়েও গুরুত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন অধিকাংশ প্রার্থী।চাকসু নির্বাচন ঘিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেন ফিরে পেয়েছে প্রাণ। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর নতুন নেতৃত্ব গড়ার এই সুযোগ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্দীপনার ঝড় তুলেছে।অনেকেই বলছেন, এটি কেবল একটি নির্বাচন নয়—এটি পরিবর্তনের সূচনা।ভোরের আকাশ // হ.র
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আগামীকাল বুধবার (১৫ অক্টোবর)। এখন শুধু ভোটের অপেক্ষা। দীর্ঘ তিন যুগ (৩৫ বছর) পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়।এছাড়া প্রার্থীও শিক্ষার্থীদের মাঝে রয়েছে বাড়তি উন্মাদনা । নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।এদিকে গতকাল সোমবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে চাকসু নির্বাচনের টানা ১৮ দিনের প্রচার-প্রচারণা। প্রচারণার শেষ দিনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল পুরো ক্যাম্পাস। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মন জয় করতে প্রার্থীদের ছিল নানা কৌশল। কেউ চার্লি চ্যাপলিন সেজেছেন আবার কেউ সেজেছেন ভূত। কেউ শুনিয়েছেন গান, কেউ নাটক, কেউ আবার রঙিন পোস্টার ও প্রতীকের লিফলেট বিলি করেছেন ভোটারদের হাতে হাতে। কারও হাতে পাখা, কারও গলায় গিটার, আবার কারও মুখে হাসি আর স্লোগান। জিরো পয়েন্ট, স্টেশন, কলার ঝুপড়ি থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন, অনুষদ ও হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কোণায় কোণায় চষে বেরিয়েছেন প্রার্থীরা। সবমিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পরিণত হয়েছিল এক মিলনমেলায়।চাকসুর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আয়োজিত এই নির্বাচনে ১৩টি প্যানেল থেকে সহ–সভাপতি পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ২১ জন, খেলাধুলা সম্পাদক পদে ১২ জন, সহ সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য–সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহ সম্পাদক পদে ১৫ জন, দপ্তর সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহ সম্পাদক পদে ১৪ জন, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদে ১৩ জন, সহ সম্পাদক পদে ১০ জন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক পদে ১১ জন, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ২০ জন, স্বাস্থ্য সম্পাদক পদে ১৫ জন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে ১৬ জন, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পদে ১৭ জন, সহ সম্পাদক পদে ১৪ জন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক পদে ৯ জন, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ২০ জন, আর নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন ৮৫ জন।এছাড়া, হল সংসদ নির্বাচনে ৯টি ছাত্র হলে ৩৫০ জন এবং পাঁচটি ছাত্রী হলে ১২৩ জন বিভিন্ন পদে লড়বেন। শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলে ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, নির্বাচনের দিন পাঁচটি ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ভোটগ্রহণ হবে ওএমআর পদ্ধতিতে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিটি ভবনের ডিনকে রিটার্নিং অফিসার এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে ১০ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)।এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তি ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রার্থীদের। সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন প্যাণেলের প্রার্থীরা বিভিন্ন দাবিও তুলে ধরেছেন।ছাত্রদল প্যানেলের এজিএস প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এসে তাদের যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে এটাই আশা করি।ইসলামি ছাত্র শিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব বলেন, অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’ গঠনের দাবি জানিয়েছে। টিমে প্রশাসনের প্রতিনিধি ছাড়াও প্যানেলগুলোর মনোনীত সদস্য থাকতে হবে, যাতে অভিযোগের সমাধান হয় স্বচ্ছ ও দ্রুত।’স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের সহ–দপ্তর সম্পাদক পদপ্রার্থী মেহেদী হাসান সোহান বলেন, সুশৃঙ্খল ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে এটাই প্রত্যাশা করি। প্রার্থীরা যোগ্যদের হাতেই নেতৃত্ব তুলে দিবে।ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সায়মা আফরোজ বলেন, ‘আমরা চাই মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়ুক এবং তাদের নিত্য সমস্যাগুলো যেন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করেন।’‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম রাব্বি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। আশা করছি শিক্ষার্থীরা আমাদের প্যানেলকে হতাশ করবে না।’এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনির উদ্দিন বলেন, ‘সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যররা মোতায়েন রয়েছে। নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভবনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ বহুমুখী নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। নির্বাচন শেষে ভোটগণনা হবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই এবং কেন্দ্র থেকেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। হলের ফলাফলও একইভাবে প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অডিটোরিয়ামে।’নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘১৩ থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাহিরের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম যৌথভাবে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করবে। ৫টি ভবনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া কোনো নিরাপত্তাকর্মী কাউকে ভবনে প্রবেশ করতে দেবে না। নির্বাচনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দ্রুত ফলাফল নিশ্চিত করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই গণনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে ভোটের পর কোনো ধরণের অনিশ্চয়তা বা বিশৃঙ্খলার সুযোগ থাকবে না। আশা করি প্রার্থী ও ভোটারসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারব।’ভোরের আকাশ/মো.আ.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন তিন যুগ পর আবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্বাচনী আমেজ চলছে। সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিয়ে যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা।অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, চাকসুর ভোট গণনা হবে দুই লেয়ারে। ১৫ তারিখেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আমাদের ব্যালট পেপার আর রং পর্যন্ত এখনো কেউ জানে না, আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ভোটের আয়োজন করছি। উপ-উপাচার্য জানান, ফল গণনার সময়ও সব প্রার্থীর প্রতিনিধি থাকবেন। ভোটের সময় পরিদর্শক এবং গণমাধ্যমকর্মীদের থাকবে অবাধ চলাচল। ডাকসু এবং রাকসু নির্বাচন থেকেও আমরা শিখেছি। সেসব সীমাবদ্ধতা আমাদের এখানে হবে না বলেই বিশ্বাস করি। নির্বাচন ঘিরে নিয়োগ করা হয়েছে পর্যাপ্ত জনবল।এবার চাকসুর সপ্তম নির্বাচনে ভোটার ২৭ হাজার ৫১৬ জন। যাতে ভিপি-জিএসসহ কেন্দ্রীয় সংসদে পদ ২৬টি। ১৫ হল ও হোস্টেল সংসদে পদ ১৪টি করে। যার বিপরীতে প্রার্থী ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৩টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রার্থী ৪১৫। ৫টি অনুষদ ভবনে ১৫ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ৬০টি কক্ষে।ভোরের আকাশ/মো.আ.