পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১১:০৫ এএম
ছবি: ভোরের আকাশ
দীর্ঘদিন সংস্কার না থাকায় অযত্ন ও অবহেলায় বেহাল দশা নাজিরপুর মিনি স্টেডিয়ামের। উপজেলার ক্রিড়া অঙ্গন চলছে ধুকে ধুকে। সংস্কারের অভাবে স্টেডিয়ামের অবকাঠামো ও মাঠের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা, মাত্র ৫০ মিটারের মত থাকা গ্যালারিতে ফাঁটল, বসার বেঞ্চেগুলো ভেঙে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে যানা যায়, পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলায় ১৯৮৩ সালে স্টেডিয়াম টি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন যাবত কোন ধরণের উন্নয়ন বা সংস্কার বাবদ প্রকল্প গ্রহন কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। ২০১২ সালে মিনি স্টেডিয়াম নামকরণ করে একটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবন, একটি শৌচাগর ও স্টেডিয়ামের চারপাশে বসার জন্য কয়েকটি বেঞ্চ স্থাপন হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে।
সরেজমিন স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা যায়, সদর রোডের পাশেই দক্ষিণ দিকে তাকলেই নজরে পড়বে কয়েক একর জমির ওপর সুবিশাল মাঠ। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি আসলে একটি স্টেডিয়াম! নেই কোনো সাইনবোর্ড। মিনি স্টেডিয়াম দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার ও অবহেলায় গরু-ছাগলের চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ২০১২ সালে ভবন দুটি নির্মাণ করলেও এখন তা জরাজীর্ণ ও অরক্ষিত। ভবনের চারপাশে ও ভিতরে তৈরি হয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। শেওলা পড়েছে, ফাটল ধরেছে, ভবনের ভিতরে পরিবেশ দেখলে মনে হয় কয়েক বছর ধরে পরিত্যক্ত। অরক্ষিত শৌচাগার ব্যবহার করছেন পথচারী।
এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রীড়াপ্রেমী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি ভবন দুটি, গ্যালারী, মাঠ দ্রুত সংস্কার করে উপজেলার ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে গতিশীল করা হোক।
স্টেডিয়ামের নিয়মিত খেলোয়াড় মোঃ ইমাম হোসেন খান বলেন, আমাদের স্টেডিয়ামটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে মাঠের ঘাস অনেক বড় হয়ে গেছে যার জন্য খেলাধুলা করতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাই যার জন্য পানি জমে থাকে এবং সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। মাঠে খেলতে আসা খেলোয়াড়দের জন্য বিশুদ্ধ পানির কোন ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় স্টেডিয়ামের অবকাঠামো ও মাঠের অবস্থা নাজুক মিনি ষ্টেডিয়ামটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বিধায় দিন দিন এটা মাদকসেবীদের আস্তানায় পরিনত হয়েছে।
সন্ধ্যার পরে স্থানীয় আনসার ভিডিপি অফিসের পিছনে, স্টেডিয়ামের আশপাশে, বেড়িবাধের রাস্তায় আনাগোনা বাড়ে তাদের। দিন দুপুরে স্কুল-কলেজ পডুয়া তরুন-তরুণীদের বেহায়াপনা দেখা মিলে। উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠর নজরদারি দাবী জানান তারা।
সচেতন মহল বলছেন, নাজিরপুরে একটি মাত্রই স্টেডিয়াম রয়েছে। স্টেডিয়ামের বর্তমান যে পরিস্থিতি খেলাধুলার মতন পরিবেশ নেই। বড় বড় ঘাস, কাদা ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাচ্চারা এসে যে খেলবে কিংবা কোন খেলার আয়োজন হবে সেই পরিস্থিতি নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর দিলে স্টেডিয়ামটা আবার প্রাণ ফিরে পাবে।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া শাহনাজ তমা জানান, মিনি স্টেডিয়ামের ঝুকিপূর্ণ গ্যালারী, ড্রেসিং রুম, শৌচাগার, মাঠ সংস্কার করার জন্য বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠনো হয়েছে। এবং এ উপজেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম নির্মাণেরও প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশা করি দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।
ভোরের আকাশ/তা.কা