ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৫ ০১:১৫ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের সিলোনিয়া নদীতে জমে থাকা গাছপালা, ঝোপঝাড় ও মাছ ধরার জালের কারণে নদীর পানি নিষ্কাশনে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে জামমুডা ব্রিজ থেকে বালুয়া গ্রাম পর্যন্ত নদীর তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙনের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আশপাশের কমুয়া, বালুয়া, তারালিয়া, নোয়াপুর ও মুন্সিরহাট বাজার এলাকার হাজারো মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন করছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে নদীর নাব্যতা রক্ষায় কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শুকনো মৌসুমে সমস্যা তেমন চোখে না পড়লেও বর্ষায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে প্রবল স্রোত নামলে সিলোনিয়া নদীতে পানি অত্যধিক হয়ে ওঠে। নদীর মাঝ ও তীরে জমে থাকা গাছপালা এবং স্থাপিত বড় জাল পানির প্রবাহকে আরও বাধাগ্রস্ত করে। ফলে বাঁধ ভেঙে জলাবদ্ধতা ও বন্যার ঝুঁকি প্রকট হয়ে ওঠে।
স্থানীয় বাসিন্দা হাজী আব্দুল মান্নান বলেন, “প্রতি বছর বর্ষায় এখানে আতঙ্কে থাকতে হয়। নদীর পানি উপচে পড়লে প্রথমে ডুবে যায় বাড়িঘর আর ফসলের জমি। আগেভাগে ব্যবস্থা না নিলে এবার বিপদ এড়ানো কঠিন হবে।”
কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, “আমাদের জীবিকা কৃষিনির্ভর। নদীর পানি ঠিকমতো না নামলে জমি ডুবে গিয়ে ফসল নষ্ট হয়। ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা অনেক কঠিন।”
মুন্সিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মুহাম্মদ হাসান জানান, “যাতায়াতের প্রধান ভরসা নদীর পাশের বাঁধ। যদি এর ফলে বাঁধ ভেঙে যায়, তাহলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বাজারও স্থবির হয়ে পড়বে।”
এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “নদীতে আগের মতো গভীরতা নেই। পানি কমে গেলে গাছপালা জমে থাকে, আর স্রোত বাড়লে সব ক্ষতি করে। নদী পরিষ্কার করা ছাড়া এর সমাধান নেই।”
স্থানীয়রা বলছেন, শুকনো মৌসুমই নদীর তীর সংরক্ষণ, গাছপালা অপসারণ এবং জাল প্রত্যাহারের উপযুক্ত সময়।
ফুলগাজী উপজেলা এসিল্যান্ড মাশিয়াত আক্তার বলেন, “আমরা বিষয়টি নজরে রেখেছি। নদীর তীর সংরক্ষণ, পানি প্রবাহ সচল এবং বাঁধ মজবুত করতে উপজেলা প্রশাসন সমন্বিতভাবে কাজ করবে।”
ভোরের আকাশ/জাআ