× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার
সরকার হার্ডলাইনে

সরকার হার্ডলাইনে


পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েকদিন ও গতকাল বুধবার বেশকিছু নাশকতার ঘটনা ঘটায় রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একপ্রকার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। একের পর এক ককটেল বিস্ফোরণ এবং বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক বেড়েই চলেছে। সরকার থেকে নিরপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।গত ২৪ ঘন্টায় ৪৫ জন আলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে থাকার আহ্বান জানানো হয়। সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে বিএনপি, জামায়াতসহ ৮ ইসলামি দল, গণ অধিকার পরিষদ, এনসিপিসহ জুলাই অভ্যূান্থের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলো আলীগের কর্মসূচী ঠেকাতে নিজ নিজ কর্মসূচী দিয়েছে।শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রায়ের দিন নির্ধারণ নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। ওই দিন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শক্ত অবস্থানে থাকবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ১৩ নভেম্বর কোনো ধরনের শঙ্কা নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।এর আগে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার বিচারের রায়ের দিন নির্ধারণ ঘিরে কর্মসূচি দেওয়ায় ১৩ নভেম্বরের পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) দলগুলোকে মাঠে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। কাউকে সন্দেহ হলে, আইন হাতে তুলে না নিয়ে পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে।আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবার সহযোগিতা চেয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন।আপনারা অনেক সময় বলেন, সন্ত্রাসীরা খুব তাড়াতাড়ি জামিন পেয়ে যায়। সহজে যাতে জামিন না পায়, সেজন্য যারা জামিন দেন, আমরা তাদের কাছে অনুরোধ করব। সন্ত্রাসী যারা জেল থেকে জামিনে বের হচ্ছে, তারা অন্য ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হলে যেন আবার আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের শনাক্তে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর প্রবেশপথে বাড়ানো হয়েছে চেকপোস্ট ও তল্লাশি কার্যক্রম। বিমানবন্দর, আব্দুল্লাহপুর, ধানমন্ডি ৩২, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, কাকরাইল ও হাইকোর্ট এলাকায় গাড়ি থামিয়ে চালকদের পরিচয়পত্র ও কাগজপত্র যাচাই করছে পুলিশ। পাশাপাশি রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।বিজিবির কর্মকর্তারা জানান, নাশকতার আশঙ্কা মাথায় রেখে এই মোতায়েন করা হয়েছে। কেউ সহিংসতা বা ভাঙচুরের চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ৪৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। ডিএমপির আটটি অপরাধ বিভাগ পৃথক অভিযানে আরও বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে ফকিরাপুল, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, কাকরাইল, এলিফ্যান্ট রোডসহ রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অভিযান চালানো হয়। হোটেল অতিথিদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পেশা ও ঢাকায় আগমনের কারণ জানতে চাওয়া হয়। সন্দেহভাজনদের মোবাইল ফোনও পরীক্ষা করে দেখা হয়।রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্যেরভিত্তিতেই অভিযান চলছে। কলাবাগানের একটি মেস থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা নাশকতার পরিকল্পনায় ঢাকায় জড়ো হয়েছিল বলে ধারণা।’পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজনদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তথ্য যাচাই করা হয় সিডিএমএস (অপরাধীদের ডাটাবেজ) এ। অনেকের বিরুদ্ধেই পূর্বের মামলা পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, রায় ঘোষণার আগে ও পরে যেকোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত।গত সোমবার গভীর রাত থেকে গতকাল বুধবার ভোররাত পর্যন্ত যাত্রাবাড়ী, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেট, উত্তরা ও মিরপুর ১ নাম্বারে চারটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অগ্নিকাণ্ডের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরে সনি সিনেমা হলের সামনে ‘শতাব্দী’ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর রাত ২টা ৮ মিনিটের দিকে যাত্রাবাড়ীর ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে রাইদা পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন লাগে। রাত ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে ১০০ ফুট রোড-সংলগ্ন বসুন্ধরা গেট এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে আগুন লাগে।এরপর সর্বশেষ ভোর ৪টার দিকে উত্তরার সোনারগাঁও জনপদের খালপাড় এলাকায় রাইদা পরিবহনের আরেকটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রাজধানীর ধানমন্ডির ১১/এ এলাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) তদন্ত সংস্থা কার্যালয়ের সামনে গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।এছাড়াও সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর, বাংলামোটরসহ বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পেট্রোল বোমা : দুর্বৃত্তরা শুধু ককটেল বিস্ফোরণ বা বাসে আগুন দিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে। সর্বশেষ, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের গার্লস শাখায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। যদিও এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিম কোর্ট, সচিবালয়সহ প্রধান প্রধান সরকারি অফিসগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছেন।বিশেষ নজর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে : পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসব রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়াও রাজধানীর বনানী, উত্তরা, বাড্ডা, পল্টন ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সম্পূর্ণ ধানমন্ডি এলাকায়। ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা যায়, বিশেষ করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা যেন না ঘটতে পারে, সেজন্য গত দুই দিন ধরেই সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক যান চলাচল দেখলে পুলিশ ব্যারিকেডে আটকে তল্লাশি করছে। গত কয়েক দিনের ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘটনা ঘটেছে রাতের বেলায়। সেজন্য রাতে যেন কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা না ঘটতে পারে, সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কার্যক্রম গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও থানায় বাড়তি নজর: ঢাকার বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডিএমপি। এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতিটি থানার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সাম্প্রতিক যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নাশকতার শঙ্কায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে শুরু করে প্রতিটি থানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৮ থেকে ১০ জন করে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।রমনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় গত কয়েক দিন ধরে রমনা থানায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। শুধু থানায় নয়, রমনা থানার অধীনে যেসব এলাকা আছে, সেসব এলাকায়ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।ডিএমপির শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, থানার সামনে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েনের বিষয়টি স্বাভাবিক নিরাপত্তা কার্যক্রম।এছাড়া, শাহবাগ থানা এলাকায় প্রায়ই দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংঘটিত হয়। এসব বিষয় এবং বর্তমান পরিস্থিতি মাথায় রেখে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ

১১ ঘন্টা আগে

দৃষ্টি সবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে

দৃষ্টি সবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে


ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে একতাবদ্ধ থাকলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘সংস্কার কার্যক্রম’ এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ ও প্রস্তাবিত ‘গণভোটের’ বিষয়ে এখনও একমত হতে পারেনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। বিশেষ করে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আর এ বিষয়গুলো নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা অনিশ্চয়তা ও দোলাচল, জনমনেও এ বিষয়টি নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।এদিকে, জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে গণভোটে চারটির বেশি প্রশ্ন রাখা হতে পারে বলে সরকারি বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট অনুষ্ঠানের বিষয়টিও মাথায় রেখেছে সরকার। সরকার আশা করছে, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে দলগুলো বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী তা মেনে নেবে।এছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমলাতন্ত্রের বিরোধিতার মুখেও পড়েছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ  বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ, সংস্কার ও প্রস্তাবিত গণভোটের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেওয়া হতে পারে। আর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিষয়গুলোর ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আগামী ১৫ তারিখে এ বিষয়ে আদেশ জারি করবে সরকার।এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এখন আমরা জাতির জন্য এক ‘ঐতিহাসিক’ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, যা জাতির জন্য অবিস্মরণীয়  হয়ে থাকবে।প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জুলাই সনদ ও গণভোটের যে সব বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুওেলার মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে সেসব বিষয়ে বিএনপি-জামায়াত, এনসিপি’র সঙ্গে বিভিন্নভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।জানা গেছে,  উপদেষ্টা পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দলের প্রত্যাশা ও জনআকাক্সক্ষার  সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের এবং জনগণের স্বার্থে ‘কল্যাণকর’  ও ‘যুগান্তকারী’ পদক্ষেপ নিতেই কাজ করছে সরকার। আর গণভোট নিয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত হলেও গণভোট অনুষ্ঠানের সময়সূচি নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে। আর প্রস্তাবিত গণভোটে ৪টির বেশি প্রশ্ন না রাখার চিন্তা করছে সরকার। আর সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাসহ যেসব মৌলিক প্রস্তাবে বড় দল বিশেষ করে বিএনপির ভিন্নমত আছে, সেগুলো নিয়েই মূলত আলাদা কয়েকটি প্রশ্ন থাকবে। সব মিলিয়ে গণভোটে চার থেকে পাঁচটি প্রশ্ন রাখা হতে পারে। এসব বিষয় নিয়ে আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।  উল্লেখ্য, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, প্রথমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ’ জারি করা হবে। এরপর ওই আদেশ ও ৪৮টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে হবে গণভোট। গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।  কমিশনের সুপারিশে আরো বলা হয়েছে, এ সময়ের মধ্যে সংসদ সংবিধান সংস্কারে ব্যর্থ হলে প্রস্তাবগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে যুক্ত হবে।সূত্র জানায়, দেশের ৩০টি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ৬টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ। ৮৪টি প্রস্তাবের মধ্যে ৪৮টি সংবিধান-সম্পর্কিত। এর মধ্যে অন্তত ৩০টি প্রস্তাবে কোনো না কোনো দলের ভিন্নমত আছে। সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ভিন্নমতের বিষয়টি রাখা হয়।জানা গেছে, দেশের  সংবিধান-সংক্রান্ত ৪৮টি প্রস্তাব খসড়া আদেশের তফসিলে রাখা হয়েছে। একটি আদেশ জারি করে গণভোট করার সুপারিশ ছিল ঐকমত্য কমিশনের। সেখানে একটিই প্রশ্ন রাখার সুপারিশ ছিল। প্রশ্নটি হলো- জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেন কি না এবং এর তফসিলে থাকা সংস্কার প্রস্তাবগুলো সমর্থন করেন কি না। গণভোটের সময় নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে  ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) না রাখায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনের দিনই ‘গণভোট’ চায় দলটি। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী সুপারিশ নিয়ে ইতিবাচক হলেও জাতীয় নির্বাচনের আগেই ‘গণভোট’ চায়। এ দাবিতে তারা গত মঙ্গলবার রাজধানীতে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে গণভোটের তারিখ ঘোষণার দাবিতে সমাবেশও করেছে।আর এনসিপি বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তার জন্য গণভোট নির্বাচনের আগেই হওয়া উচিত। তবে নির্বাচেনের দিনেও গণভোট আয়োজন করা হলে এ বিষয়ে দলটির পক্ষ থেকে তার ‘জোরালো বিরোধীতা’ এখনও করা হয়নি। আর জটিল এ পরিস্থিতিতে সার্বিক পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে কিছু পরিবর্তন আনার চিন্তাও করছে সরকার।সূত্র জানায়, সংবিধান-সংক্রান্ত ৪৮টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে ৩০টি প্রস্তাবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশির ভাগ দল একমত। এগুলো নিয়ে গণভোটে একটি প্যাকেজ প্রশ্ন রাখার চিন্তাও করছে সরকার। সেখানে ভোটারদের কাছে জানতে চাওয়া হবে এই ৩০টি সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন চান কি না। এর বাইরে ১৮টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে বড় ধরনের মতবিরোধ আছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব। সবমিলিয়ে গণভোটে আলাদা তিন-চারটি প্রশ্ন করার চিন্তা করছে সরকার।এদিকে, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন,  সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে  সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, তা আগামী তিন-চার দিনের-মধ্যে পরিষ্কারভাবে জানানো হবে।  তিনি বলেন, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে পরিষ্কারভাবে জানা যাবে।  তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে আমাদের একটা ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে, আমরা এ ধরনের প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশা করেই আমরা বসে থাকিনি। আমরা নিজেদের মতো কাজ করেছি। সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, তা আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।  গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইনগত সহায়তা প্রদান অধ্যাদেশ সংশোধন বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথাগুলো বলেন।এছাড়া আইন উপদেষ্টা জানান, ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে সরকার আমলাতন্ত্রের বিরোধিতার মুখেও পড়েছে।পুলিশ সংস্কার কমিশন আইনের খসড়া তৈরির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই আইন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করার কথা ছিল, কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেওয়ার পর তারা এটি প্রস্তুত করেছে। আইনটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ছিল যে, কমিশন তিনজন আইজিপি’র নাম প্রস্তাব করবে এবং সরকার সেই তিনজনের মধ্য থেকে একজনকে আইজিপি পদে নিয়োগ দেবে। যখন আইনটি আন্তমন্ত্রণালয় কমিটিতে পাঠানো হয়, তখন আমলাতন্ত্রেও একটি অংশ প্রচণ্ডভাবে এ আইনের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ

১১ ঘন্টা আগে

জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, কী হবে আজ

জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, কী হবে আজ


জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের রায়ের তারিখ নির্ধারণ হবে আজ বৃহস্পতিবার। এই ঘটনাকে ঘিরে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পরিকল্পনা রয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ায়েছে গুজব এবং উসকানিমূলক পোস্টের পাশাপাশি লকডাউনের হুমকি দিয়েছে তারা। নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের একটি ভিডিও বার্তায় ঢাকায় ‘লকডাউন’ ঘোষণার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে।‘ঢাকা যেন আজ (১৩ নভেম্বর) জয় বাংলার দখলে থাকে’-এই নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে ওই ভিডিও বার্তায়। একইসময়ে ভারতের সংবাদপত্র ‘আনন্দবাজারের সংবাদ শিরোনাম’ ছিল ‘সোমবার থেকে রাস্তায় নামছে আওয়ামী লীগ’। ওই সব বার্তার পর পরই আজকের এই দিনটি ঘিরে যেমন জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে, তেমনি সরকারও অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে- এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ভাবছেন- কী হবে আজ? তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে এই বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এসব প্রচারকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী নেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় সার্বিক প্রস্তুতি। কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য সৃষ্টির যেকোনো অপচেষ্টা রুখতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে। সাম্প্রতিক ককটেল বিস্ফোরণ, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ এবং অনলাইনে প্ররোচণামূলক প্রচারণাকে মাথায় নিয়ে পুলিশ বলছে-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যেকোনো ব্যবস্থা নিতে তারা প্রস্তুত। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্যের কোনো অপচেষ্টা বরদাশত করা হবে না। সরকারি কড়াকড়ি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী এবং আশপাশ ঘিরে থাকা এলাকায় অতিরিক্ত চেকপোস্ট, নাম-ঠিকানা যাচাই, সিসিটিভি মনিটরিং এবং সন্দেহজনক যানবাহন-সমাগমে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।সম্ভাব্য নাশকতা ও অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীতে মোতায়েন করা হয়েছে ১৪ প্লাটুন বিজিবি। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে এক প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে থাকছে সেনাবাহিনীও।গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, বিচ্ছিন্নভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পরিচয় গোপন রেখে অবস্থান করছেন। তবে খুব বড়ভাবে একত্রিত হয়ে কোনো ধরনের নাশকতা করার সুযোগ পাবে না। কারণ সারা দেশেই পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা ও সেনা সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে ১৫টি ব্যাটালিয়নকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতিটি ব্যাটালিয়ন সর্বোচ্চ সংখ্যক লোকবল নিয়ে মাঠে রয়েছে।তিনি বলেন, মোটরসাইকেল, সিএনজি বা ইজিবাইকে করে কেউ যাতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যেতে না পারে, সেই লক্ষ্যে র‌্যাবের ৭০টি টহল টিম রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় টহল বৃদ্ধি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সক্রিয় রয়েছে র‌্যাব ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ইউনিট।তিনি আরও বলেন, কোন কোন সময় চোরাগোপ্তা হামলা ও বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়, সেই সময়ও আমরা নির্ধারণ করেছি। সেই আলোকে আমাদের টিম মাঠে তৎপর রয়েছে। যেকোনো ধরনের গুজব, প্রোপাগান্ডা রুখতে সাইবার মনিটরিং টিম তৎপর রয়েছে। যাতে তাৎক্ষণাৎ যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।সাধারণ মানুষকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সব ধরনের অপতৎপরতা রুখতে র‌্যাব প্রস্তুত রয়েছে। দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই র‌্যাবের গোয়েন্দা টিম ও সাইবার মনিটরিং টিম সবসময় তৎপর রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।গতকাল সকাল থেকে হাইকোর্ট এলাকা, বাংলা একাডেমি, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনায় বিজিবি সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। একইভাবে ভোর থেকে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সম্ভাব্য নাশকতা প্রতিরোধে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান, বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম।গতকাল বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর এয়ারপোর্ট, আব্দুল্লাহপুর, ধানমন্ডি ৩২, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, কাকরাইল ও হাইকোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকার প্রবেশপথ ও বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, যাচাই করা হচ্ছে কাগজপত্র।ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন পেজ ও আইডি থেকে এই ধরনের তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এগুলো দেশের বাইরে থেকে পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে তথ্য যাই হোক আমরা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবো। কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলটির কোনো কার্যক্রম করার সুযোগ নাই।ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী কোনো ধরনের কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। ১৩ নভেম্বর তারিখটি ঘিরে তারা মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে আলোচনায় আসতে যাচ্ছে।পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামী লীগকে কোনো ভাবে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। কোনো মিছিল ও সভা করতে চাইলেও প্রতিহত করা হবে। এ ছাড়া নিষিদ্ধ এই দলটির নেতাকর্মীর সন্ধান পেলে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। গত মঙ্গলবার রাতেই বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউ, ফকিরাপুল, কাকরাইল, এলিফ্যান্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকার আবাসিক হোটেলগুলোতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। অতিথিদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পেশা যাচাই করা হয়েছে, ঢাকায় আসার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত কি না তা যাচাই করতে মোবাইল ফোনও তল্লাশি করা হয়।এ বিষয়ে রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা হোটেল ও মেসে অভিযান চালিয়েছি। কলাবাগানের একটি মেস থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা নাশকতার পরিকল্পনায় ঢাকায় এসেছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পদক্ষেপের পরও রাজধানীর কমপক্ষে ১৩টি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। আগুন দেওয়া হয় ১১টি যানবাহনে। এমনকি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল ও সমাবেশ করছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে। রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।পুলিশ জানিয়েছে, তিনজন ব্যক্তি যাত্রী সেজে বাসে উঠে আগুন ধরিয়ে দেন। গতকাল বুধবার একটার দিকে শতাব্দী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।এ প্রসঙ্গে শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম আযম বলেন, মিরপুর-২ নম্বরের দিক থেকে সনি সিনেমা পেরিয়ে নিউমার্কেটের দিকে যাওয়ার পথে যাত্রীবেশে থাকা তিন ব্যক্তি বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যান। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভানো হয়।ওসি গোলাম আযম আরও বলেন, আগুনে বাসের সামনের দিকের কয়েকটি আসন পুড়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়াও মঙ্গলবার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় মাস্ক পরা তিন যুবক এসে পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে প্যাট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা চালক মো. জুলহাস মিয়া আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান।এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসটি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আসে। সোমবার রাত ২টা ৪৫ মিনিটে বাসটি তেল নেওয়ার জন্য প্যাট্রোল পাম্পের সামনে এলে সব যাত্রীরা নেমে যান। তবে রাত বেশি হওয়ায় একজন নারী ও তার ছেলে বাসের ভেতরেই থেকে যান। এ ছাড়া বাসের ভেতরে ছিলেন চালক অথবা হেলপার জুলহাস। এ সময় তিনজন দুর্বৃত্ত এসে বাসে আগুন দিয়ে তাৎক্ষণিক চলে যায়। এতে বাসটিতে আগুন জ্বলতে থাকা অবস্থায় ভেতরে থাকা ছেলেটি বের হতে পারলেও তার মা অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।এ সময় ভেতরে থাকা জুলহাস অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। ওসি বলেন, নারী ও তার ছেলে ফুলবাড়িয়ার বাসিন্দা। আহত নারীকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা চলছে।এ ছাড়া মঙ্গলবার রাত ৭টার দিকে রাজধানীর সূত্রাপুরে মালঞ্চ বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এর আগে সোমবার রাজধানীর ১০টি স্থানে ১৪টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুন দেওয়া হয় ৬টি বাস ও একটি প্রাইভেটকারে। গত শুক্রবারও রাজধানীতে একটি চার্চ এবং খ্রিস্টানদের একটি স্কুলে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। রেললাইনের ফিসপ্লেট খুলে ফেলা হয় ফেনীতে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজধানীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে, জনাকীর্ণ স্থানে, পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। এতে নগরবাসীর মধ্যে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। একের পর এক এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ঢাকা শহরকে।এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, ১৩ নভেম্বর ঘিরে টহল বাড়ানো হয়েছে। কেপিআইগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।উপদেষ্টা বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। উপদেষ্টা আরও বলেন, বাসে আগুন এবং কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে, এটা সত্য কথা। এগুলো যেন আর না করতে পারে এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা এগুলো করছে তারা দুষ্কৃতকারী। এদের প্রতিহত করার দায়িত্ব শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নয়, বরং রাজনৈতিক দল, সচেতন জনগণ এবং আপনাদেরও দায়িত্ব রয়েছে।ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শেখ সাজ্জাদ আলী বলেন, রাজধানীতে ইতোমধ্যে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আজ থাকবেন অন্তত ১৭ হাজার পুলিশ সদস্য। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, রাজনৈতিক কার্যালয় ও কৌশলগত মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাদা পোশাকেও বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।ডিএমপির সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবন, সুপ্রিম কোর্টের গেটসহ কয়েকটি এলাকায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল, মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছে ডিএমপি। রায়ের দিন নির্ধারণ ঘিরে ট্রাইব্যুনালেও কয়েক স্তরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার কিছু নেই।আওয়ামী লীগের ঘোষিত লকডাউন কর্মসূচি প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, এটা আইনশৃঙ্খলার বিষয়। বাহিনীগুলো কঠোর অবস্থানে থাকবে, সেটাই প্রত্যাশা। যেহেতু আওয়ামী লীগ নির্বাচনী রেসে নেই, তাদের নেত্রীও নেই-তাদের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার কিছুই নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে।তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ। তাই তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে পারবে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। আওয়ামী লীগ ছাড়াও কেউ সহিংসতা ঘটাতে পারে-তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সরকারকেও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা শিশু, কিশোর, তরুণসহ ১৪০০ মানুষ হত্যা করে এখন ভারত বসে অডিও বার্তা পাঠিয়ে নাশকতা করার নির্দেশনা দিচ্ছেন। তার নির্দেশেই কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এমনকি একজন পুড়ে মারাও গেছেন।রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে প্রচুর টাকা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা, পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের টাকা তাদের হাতে আছে। সব টাকা আটকানো যায়নি। সেই টাকা খরচ করে তারা নাশকতা করার চেষ্টা করছেন।ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হলে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হয় উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদ যেখানে জন্ম ও বিকাশ লাভ করে, সেখানে কোথাও ন্যূনতম গণতন্ত্রের জায়গা থাকে না। ফ্যাসিবাদের ছোবলে নির্বাচন কমিশন, গণতন্ত্র ও তার প্রতিষ্ঠান, সংবাদপত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যখন আক্রান্ত হয় তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও আক্রান্ত হয়। শেখ হাসিনা এই ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যাবস্থা কায়েম করেছিল। এ সময়ে ক্যাম্পাসগুলোতে কোনো রাজনৈতিক সহাবস্থান ছিল না। আমাদের ছাত্রদলের ছেলেরা চায়ের দোকান বা শ্রেণিকক্ষ কোথাও বসতে পারেনি। গত ১৫ বছর বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলকে এ বিষয়টি ভুগিয়েছে।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দিল্লির ষড়যন্ত্রে লকডাউনের নামে আওয়ামী লীগ নতুন নাশকতার পরিকল্পনা করছে।মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ টেনে গোলাম পরওয়ার বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধী খুনিদের বিচারের দাবি করেছিলাম, আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি, ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। যখন এই নভেম্বরে কিছু অপরাধীর রায়ের সম্ভাবনা, তখন ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশজুড়ে ককটেল, গাড়িতে আগুন দিয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে।সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা শুনছি, ঢাকার হোটেলে হোটেলে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছে। আপনারা অভিযান চালিয়ে ফ্যাসিস্টদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ

১১ ঘন্টা আগে

চাপ বাড়ছে সরকারের ওপর

চাপ বাড়ছে সরকারের ওপর


জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণভোটের আয়োজনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতার পরিবর্তে আরো মতানৈক্য বাড়ছে- এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। তাদের দৃষ্টিতে, সরকারের দেওয়া এক সপ্তাহের সময়সীমা গত রোববার শেষ হলেও সংস্কার নিয়ে গণভোটের সময়সূচি, বাস্তবায়নের আদেশ ও নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে কোনো দলই অবস্থান বদলায়নি। উল্টো নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকা দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি আরও স্পষ্ট হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে- মনে করছেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।বিএনপি অভিযোগ, সংস্কার ও গণভোট চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট হতে পারবে না বলে সরকারকে দাবি জানিয়েছে দলটির শীর্ষ নেতারা। অন্যদিকে, নির্বাচনের আগেই গণভোট-এই দাবিতে কঠোর হুসিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামপন্থি আট দল। গণভোট ঘিরে তৈরি হওয়া বিরোধ নিরসনে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জোর দাবি করে আসছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। কাজেই জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। এই সংকট সমাধান এখন সরকারকেই করতে হবে- ভাবছেন রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।সদ্য বিলুপ্ত ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে বলা নেই, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ কে জারি করবে ও গণভোট কখন হবে। এই দুই সিদ্ধান্ত তারাও সরকারের ওপর দিয়েছে। যার ফলে শেষমেষ চাপটা সরকারকেই নিতে হচ্ছে।সুপারিশে বলা হয়েছে, গণভোট হবে আদেশের ওপর। গণভোটে তা অনুমোদিত হলে আগামী নির্বাচনে দ্বৈত ভূমিকার সংসদ গঠন হবে। সংসদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত কনস্টিটুয়েন্ট ক্ষমতার ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ সনদ বাস্তবায়ন করবে। এমন পরিস্থিতিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সরকার নিজ উদ্যোগে সিদ্ধান্ত নিতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার।সরকারের সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের তৈরি খসড়া আদেশ চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। সমঝোতা না হওয়ায় সরকারই ঠিক করবে আদেশে কী কী থাকবে। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তা উত্থাপন করা হতে পারে। গণভোট কখন হবেÑ এ সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন, গোপনীয়তায় আদেশ চূড়ান্ত করা হচ্ছে। উপদেষ্টারাও জানেন না, এতে কী কী থাকছে। জুলাই সনদের বাইরে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে ‘সনদে স্বাক্ষরকারী’ কোনো দলের জন্য তা মান্য করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বিএনপি।এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস সংস্কারের নামে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার পরও অমীমাংসিত বিষয়গুলো গায়ের জোরে চাপিয়ে দিতে চাইলে এর দায় বিএনপি নেবে না। এর দায় সরকারকে নিতে হবে।অনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি সাধারণ মানুষ বোঝেন না এবং বিএনপিও এটা গ্রহণ করবে না। পিআর হলো ‘বিভ্রান্ত করা’ এবং ‘ভোট পেছানো’ মনে করছেন দলটির মহাসচিব।তিনি বলেন, জোর করে হামাক পিআর চাপাই দিবা চাহাছে। পিআর বুঝেন? মুই বুঝিনা। আমরা এটা চিনি না আমরা দীর্ঘকাল শত বছর ধরে ভোট দিয়ে আসতেছি। মোর ক্যান্ডিডেট দাঁড়াবে তাকে তার মার্কা দেখে ভোট দিব। এটাই তো হয়ে আসছে।জামায়াতে ইসলামীর নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা পিআর আইন করতে চাইছে। তিনি মনে করেন, এগুলো হচ্ছে শুধু বিভ্রান্ত করা, ভোট পিছানো।মির্জা ফখরুল বলেন, এবার যদি নির্বাচনটা পিছিয়ে যায় তাহলে এই দেশটা একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। বিএনপি কেবল ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলোর পক্ষেই থাকবে বলে জানান তিনি।এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জুলাই জাতীয় সনদে উল্লিখিত বিষয়াদির বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো দলের জন্য তা মান্য করার বাধ্য বাধকতা থাকবে না। সেই ক্ষেত্রে সকল দায় দায়িত্ব সরকারের উপরই বর্তাবে। এ ব্যাপারে সতর্ক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।খন্দকার মোশাররফ বলেন, রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ প্রায় এক বছর যাবৎ আলোচনার ভিত্তিতে কতিপয় নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্যের ভিত্তিতে রচিত জুলাই জাতীয় সনদ বিগত ১৭ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হয় এবং দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে সকলে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়।বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ জুলাই জাতীয় সনদের বাইরে কোনো কোনো বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত ঘোষণার প্রসঙ্গে যে সব বক্তব্য দিচ্ছেন তা বিভ্রান্তিকর এবং ঐকমত্যেরভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত আগ্রাহ্য করার সামিল।এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো নিজেদের সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, যাদের যে কথা বলার এখতিয়ার নাই তারা সেই কাজ করছে, অসাংবিধানিক কাজ করছে, বেআইনি কাজ করছে। শেখ হাসিনা সংবিধান, আইন মানত না। এখনও কোনো কোনো রাজনৈতিক দল সংবিধান, আইন মানতে চায় না।তিনি বলেন, কেউ কেউ রাস্তায় নেমে জোর করে নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চান। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। যারা রাস্তায় নেমে নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে চায় তারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না।এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ঐকমত্যেরভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করলে সব দায়-দায়িত্ব সরকারের ওপরই বর্তাবে।সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সাংবিধানিক আদেশ জারির বিষয়ে তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিল না। তিনি বর্তমান সংবিধানের প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্টের আদেশ জারির ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।তিনি বলেন, সংবিধান গৃহীত হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির আর কোনো বিধান রইলো না, সেটা বিলুপ্ত হলো।তিনি আরও বলেন, এখন যদি কোনো প্রজ্ঞাপনকে আদেশ নামকরণ করা হয় এবং সেটার আইনি মর্যাদা না থাকে, তবে সেটা আইন হবে না।সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোটের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদের ওপরে জনগণের সম্মতি নেওয়ার জন্য তারা রাজি হয়েছিলেন। তবে সরকার আলোচনার জন্য আহ্বান জানালে, সে ক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকতে পারে- তবে রাজপথে নয়।জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জুলাই সনদের আইনিভিত্তির পাটাতন তৈরি হবে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।শফিকুর রহমান বলেন, জুলাই সনদের আইনিভিত্তি না হলে জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আর জাতীয় নির্বাচনের বৈধতার জন্য গণভোটের মাধ্যমে ফেব্রুয়ারির আগেই জুলাই সনদের বাস্তবায়ন করতে হবে।জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, জুলাই সনদে জনগণের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের দাবি পূরণ না করতে পারছি, ততক্ষণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, গণভোট না হলে জাতীয় নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে।আযাদ আরও বলেন, কেউ কেউ বলেন সংবিধানে গণভোটের বিধান নেই। তাদের বলতে চাই, আওয়ামী লীগ সরকারই সংবিধান সংশোধন করে গণভোটের ধারা বাতিল করেছে। এখন যারা বলেন সংবিধানে গণভোট নেই, তারা কি তাহলে হাসিনার সুরে কথা বলেন না?জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।তিনি আরও বলেন, সংকট সমাধানের পথ জনগণ বন্ধ করেনি, সরকারই রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করে আলোচনা ও সমঝোতার দরজা বন্ধ করেছে।এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে, সংকট আরও গভীর হয়েছে।তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই সনদকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে তারা চাপ তৈরির রাজনীতি করছে এবং রাজনৈতিক কৌশলে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।তিনি আরও বলেন, কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটলে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন। দলগুলো ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখালে সেটা দেশের জন্য ভালো হবে। কিন্তু তা না হলে বাংলাদেশ নতুন সমস্যায় পড়বে। সেটার সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে নির্বাচনের ওপর মনে করছেন তিনি।সরকারের এমন ভূমিকার সমালোচনা করেছে সনদে সই না করা এনসিপি। দলটি বলছে, উপদেষ্টারা এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।এ প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণভোট ঘিরে বিরোধ নিরসনে সিদ্ধান্ত সরকারেরই নিতে হবে।’দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘যে ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার ক্ষমতায়, এর অন্যথা করা যাবে না। জনগণের পক্ষ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’এ প্রসঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সমঝোতায় আসেনি, ফলে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হচ্ছে।কী সেই পদক্ষেপ, তা দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে জানানোর আশা দিয়েছেন তিনি বলেন, সব দলের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করেছি। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, ভালো কিছু হবে।রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে প্রত্যাশা থাকলেও সরকারও প্রস্তুতি রেখেছিল জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে, এ ধরনের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু প্রত্যাশা করেই বসে থাকিনি। সরকার নিজেদের মতো কাজ করেছে। সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তা দুই-তিন দিনের মধ্যে পরিষ্কারভাবে জানা যাবে। একটি বইয়ের মধ্যে কতগুলো ভালো ভালো কথা লিখে রাখলেই সবকিছু ভালো হয়ে যাবে না। সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয়।আইন উপদেষ্টা বলেন, ঐকমত্য কমিশন এত আলোচনা করেছে, অথচ সংস্কার নেই, পণ্ডশ্রম হয়েছে, এমন দোষ দেওয়া হয়।তিনি বলেন, অপপ্রচারের মাত্রা এমন জায়গায় চলে গেছে যে ২৫ লাখ টাকা খাবারের বিল বানিয়েছে ৮৩ কোটি টাকা। সবকিছুতে সীমা থাকা উচিত।সংস্কার ভাবনার ক্ষেত্রে সবকিছু সংবিধানের মধ্যে আটকে গেছে মন্তব্য করে আসিফ নজরুল বলেন, একদল মানুষ পাগল হয়ে গেছে। মানে, সমস্ত সংস্কার শুধু সংবিধানে করলেই হবে। অন্য সংস্কার কোনো কিছুই ইম্পর্ট্যান্ট না। আমাদের এই দেখার মানসিকতার একটু পরিবর্তন প্রয়োজন আছে।রাজনৈতিক সংস্কৃতি, সবার মানসিকতার পরিবর্তন না হলে কোনো সংস্কারই কাজে আসে না, এমন মত দিয়ে তিনি বলেন, একটি বইয়ের মধ্যে কতগুলো ভালো ভালো কথা লিখে রাখলেই সবকিছু ভালো হয়ে যাবে না। সংবিধান কোনো ম্যাজিক নয়।আইন মন্ত্রণালয়ে ‘বড় বড় কাজ’ হয়েছে দাবি করে আসিফ নজরুল বলেন, চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনে যে প্রস্তাব দিয়েছে, আমারটা আমি খুব ভালো জানি। আমারটা বলছি, যেখানে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ সংস্কার ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। সমস্যাটা হচ্ছে, যে জিনিসটা হয়েছে, সেটা কেউ লক্ষ করে না। যেটা হয়নি, সেটা নিয়ে হাহাকার।ভোরের আকাশ/এসএইচ

১ দিন আগে

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে ‘উদ্বেগে’ ইসি কর্মকর্তারা

নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে ‘উদ্বেগে’ ইসি কর্মকর্তারা

১২ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১০ এএম

১৪ দলীয় জোটকে ডাকা হচ্ছে না

১৪ দলীয় জোটকে ডাকা হচ্ছে না

১০ নভেম্বর ২০২৫ ১২:২২ এএম

সমাধান কোন পথে

সমাধান কোন পথে

১০ নভেম্বর ২০২৫ ১২:১৭ এএম