সংগৃহীত ছবি
৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অধিকাংশ নেতাকর্মী আত্মগোপনে বা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। একই অবস্থা হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের হুইপ ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার ক্ষেত্রেও। তিনি দেশে থাকলেও জনসম্মুখে আসছেন না।
তবে এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানালেন, তার ধারণা মাশরাফি তার রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, তাকে (সাকিবকে) দেশে খেলতে দেওয়ার বিষয়ে সহায়তা করার সুযোগ এখন আর নেই। এখনো শেখ হাসিনাকে সমর্থনই তার মূল কারণ।
তিনি আরও বলেন, সাকিবের শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, ফিন্যানশিয়াল ফ্রডের মামলা, এমনকি তার পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে বিষয়গুলো সামনে এসেছে। আমরা কাউকে টার্গেট করে তুলি নাই বরং তার নিজস্ব কর্মকাণ্ডের কারণেই আলোচনা তৈরি হয়েছে।
সেই প্রসঙ্গেই উঠে আসে মাশরাফির নাম। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, মাশরাফি বিন মুর্তজার বিষয়ে এমন কিছু আমি জানি না। আমার জানামতে, উনি তার রাজনৈতিক অবস্থান থেকেও সরে এসেছেন। ফেসবুকে উনি বিষয়টা স্পষ্ট করেছিলেন বলে আমার মনে পড়ে।
তবে যাচাই করে দেখা গেছে, মাশরাফি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গত বছরের আগস্টে এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাজনীতি থেকে সরে আসার। তখন মাশরাফি বলেছিলেন, যখন রাজনীতিতে ছিলাম, ক্রিকেট বোর্ডে থাকার চেষ্টা করিনি। এখন রাজনীতিতে নেই, এখন যদি বোর্ডে থাকার চেষ্টা করি বা থাকতে চাই, তাহলে কেমন হয়ে যায় না!
এ বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয় রাজনীতি তার অতীত অধ্যায়। গত এক বছরে মাশরাফি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে বিভিন্ন বিষয়ে ১৪টি পোস্ট দিয়েছেন। কিন্তু কোনোটিই আওয়ামী লীগ বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত নয়। বিপরীতে সাকিব আল হাসান একাধিকবার আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে পোস্ট দিয়েছেন। পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্র্যান্ডিং নিয়েও সমালোচিত হয়েছেন।
তবে মাশরাফি যদি কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তার ভাষায়, এর বাইরে যদি উনি রাষ্ট্রীয় আইনে কিছু করে থাকেন, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতেই পারে। ওনার বিষয়টা আলোচনায় আসেনি। কারণ, উনি অনেক আগেই অবসর নিয়েছেন এবং খেলার সঙ্গে এখন আর সংশ্লিষ্ট নন।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
তীরে এসে বাংলাদেশের তরী ডুবেছে আবারও। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আশা জাগিয়েও পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের লিগ পর্বের ম্যাচে তারা দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে ৩ উইকেটে। এর আগে বাংলাদেশ চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও জিততে জিততে হেরে যায়।পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এবারের আসরে ৭ উইকেটে একমাত্র জয় পাওয়া বাংলাদেশ আজ বৃহস্পতিবার লড়বে বিশ্বের সেরা দল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ভারতের বিশাখাপত্তমে বিকেল সাড়ে তিনটায় মাঠে গড়াবে অসম শক্তির এ লড়াই।বাংলাদেশ আগের যে চার ওয়ানডেতে অজিদের কাছে হেরেছে, সেখানে শেষ তিনটি ম্যাচে সহজেই পরাজিত হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের ২৫ মার্চ ওয়েলিংটনে প্রথম দফায় মুখোমুখিতে; কিন্তু বাংলাদেশ বেশ ভালো লড়াই করেছিল। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে হারলেও জয় পেতে অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ পাঁচটি উইকেট হারাতে হয়। বর্তমান দলের রিতু মনি, নাহিদা আক্তার, শারমিন আখতার, ফারজানা হক, নিগার সুলতানা জ্যোতি, ফাহিমা খাতুন তিন বছর আগের ওই ম্যাচে বাংলাদেশ দলে ছিলেন। ফলে তারা অস্ট্রেলিয়ার শক্তিমত্তা কিংবা দুর্বলতা সম্পর্কে বেশ কিছুটা জানেন। সেটাও আজ কাজে লাগতে পারে, যদি সবাই নিজেদের সেরাটা দিতে পারেন। অসম শক্তির লড়াই হলেও এটা ক্রিকেট। যা অনিশ্চিত গৌরবের খেলা বলে পরিচিত। সেই সুবাদে বাংলাদেশ অলৌকিকভাবে জিততেও পারে। তবে সেখানে প্রয়োজন ভাগ্য। সেই ভাগ্য নিজেদের অনুকূলে আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকতে হবে বাংলাদেশ নারী দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কেই।ব্যাটে স্বর্ণা আক্তার ফারজানা হক, শারমিন আখতার, অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি, সোবহানা মোস্তারি, রিতু মনিরা যদি সেরাটা দিতে পারে তাহলে বড় স্কোর গড়ার সম্ভাবনা থাকবে। বিশেষ করে গত ম্যাচে স্বর্ণা যে অসাধারণ বাটিং করেছেন চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে, তাতে বাংলাদেশ অজিদের বিপক্ষে ম্যাচে আশাবাদী হতেই পারে। সেই সঙ্গে স্বর্ণা, মারুফা আক্তার, নাহিদা আক্তার এবং রিতু মনি বল হাতে ভালো করলে অঘটন ঘটলেও ঘটতে পারে।ক্রিকেটে অসম্ভব বলে কিছু নেই। সেটার জন্য অবশ্যই কঠোর চেষ্টা করতে হবে। বিশেষ করে সহজ সহজ ক্যাচ মিস করা যাবে না। যে কারণে বাংলাদেশ ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জেতা ম্যাচে হেরেছে। ওই দুই ম্যাচ জিতলে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো থাকতো। অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ সাতবার বিশ^কাপ জিতেছে। আর রানার্সআপ হয়েছে দুই বার। অর্থাৎ আগের বারটি আসরের মধ্যে অজিরা ফাইনালে খেলেছে ৯ বার। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া ওয়ানডেতে পরস্পরের মোকাবিলা করেছে চার বার। প্রতিটি ম্যাচেই পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। তাই পূর্বের চার হারের লজ্জাজনক রেকর্ড নিয়ে বাংলাদেশ আজ তাদের বিপক্ষে মাঠে নামবে। নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৩৩ রানের টার্গেট দিয়েছিল টাইগ্রেসরা। ব্যাটের ধারের পাশাপাশি বোলিংয়েও তোপ দেগেছিলেন নাহিদা আখতার আর রাবেয়া খানরা। তবে শেষরক্ষা হলো না। ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাবি খাওয়া প্রোটিয়া মেয়েরা শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটিতে জয় তুলে নিয়েছে।এর আগে ইংল্যান্ডকে বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও তীরে এসে তরী ডুবল নিগা সুলতানাদের। ইংল্যান্ডের মতো দক্ষিণ আফ্রিকারও ৭৮ রানে ৫ উইকেট ফেলে দিয়েও ম্যাচ বের করতে পারলেন না তারা। বাংলাদেশের ৬ উইকেটে ২৩২ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৯.৩ ওভারে ৭ উইকেটে তুলল ২৩৫ রান। একাধিক সহজ ক্যাচ ফেলে ম্যাচ হাতছাড়া করে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল।এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪ ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে (গতকালের ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান ম্যাচের ফলাফল ছাড়া) রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ৪ ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পেয়ে ইংল্যান্ড রয়েছে পরের পজিশনে। দক্ষিণ আফ্রিকা ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ভারত ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়ে আছে চতুর্থ স্থানে। নিউজিল্যান্ড ৪ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট পেয়ে পঞ্চম, শ্রীলঙ্কা ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে এবং পাকিস্তান ৩ ম্যাচের সবগুলোতেই হেরে শেষ বা অষ্টম স্থানে রয়েছে।অলৌকিকভাবে হোক কিংবা অন্য কোনভাবে হোক আজ অজি নারীদের বিরুদ্ধে জিততে পারলে এক অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। সেইসঙ্গে পয়েন্ট তালিকায় পঞ্চম স্থানে উঠে আসবে টাইগ্রেসরা। আর সেটা হলে শেষচারে যাওয়ার পথ তৈরিও হবে বাংলাদেশের। ভোরের আকাশ/এসএইচ
২০২৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের ম্যাচ বোস্টনে আয়োজন নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং মেয়র মিশেল উ’র সমালোচনা করে তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে বোস্টনের ম্যাচগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে মার্কিন রাজনীতি ও ক্রীড়াঙ্গনে।গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মাইলির সঙ্গে যৌথ উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা চাইলে ম্যাচগুলো সরিয়ে নিতে পারি। আমি বোস্টনের মানুষকে ভালোবাসি, জানি ম্যাচগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু তোমাদের মেয়র ভালো নয়। সে বুদ্ধিমতী, তবে চরমপন্থী ভাবধারায় বিশ্বাসী, এবং শহরের কিছু অংশ তারা দখল করে নিচ্ছে। ’তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাইলে মুহূর্তেই ম্যাচগুলো ফেরত নিতে পারি। মেয়র শুধু আমাদের ফোন করলেই আমরা এসে সেগুলো নিয়ে যাব, কিন্তু সে রাজনৈতিক কারণে ভয় পাচ্ছে। ’বোস্টন শহর থেকে প্রায় ৩০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ফক্সবোরোর জিলেট স্টেডিয়ামে ২০২৬ বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডা যৌথভাবে আয়োজন করবে এবারের বিশ্বকাপ, যেখানে ২০২২ সালে ফিফা ১৬টি আয়োজক শহর এবং ম্যাচ সূচি চূড়ান্ত করে।ট্রাম্প বলেন, প্রয়োজন হলে তিনি ম্যাচগুলো সরানোর বিষয়ে সরাসরি ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তার ভাষায়, ‘যদি দেখি কেউ দায়িত্বে ব্যর্থ হচ্ছে, বা নিরাপত্তা ঝুঁকি আছে, আমি ফিফা প্রধান জিয়ান্নিকে ফোন করব। আমি বলবো, আমরা অন্য কোথাও নিয়ে যাচ্ছি। আর তারা সঙ্গে সঙ্গে সেটাই করবে। হয়তো পছন্দ করবে না, কিন্তু সহজেই করে নেবে। ’তবে ফিফা আগেই স্পষ্ট জানিয়েছে, আয়োজক শহর ও ম্যাচ ভেন্যু নির্ধারণের পূর্ণ ক্ষমতা তাদের হাতেই। চলতি মাসের শুরুর দিকে ফিফার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক্টর মন্টাগলিয়ানিও বলেন, ‘এটা ফিফার টুর্নামেন্ট, ফিফার এখতিয়ার। সিদ্ধান্ত নেবে ফিফাই। ’ট্রাম্পের মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে, যখন বোস্টনে এক রাতে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় একাধিক গ্রেপ্তারের খবর দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। মেয়র মিশেল উ’র কার্যালয় ট্রাম্পের মন্তব্যের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে বোস্টনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ইতিমধ্যে বিপুল অর্থনৈতিক প্রভাবের পূর্বাভাস দিয়েছে আয়োজকরা। টিকিট বিক্রিতে দেখা যাচ্ছে উচ্চ চাহিদা, ফলে এত দেরিতে কোনো ভেন্যু পরিবর্তন হলে তা বড় ধরনের লজিস্টিক ও চুক্তিগত জটিলতা তৈরি করবে। টুর্নামেন্ট শুরু হতে এখনো বাকি প্রায় আট মাস, উদ্বোধনী ম্যাচ হবে আগামী ১১ জুন।বোস্টনের প্রথম ম্যাচ নির্ধারিত আছে আগামী ১৩ জুন, টুর্নামেন্টের তৃতীয় দিনে, গ্রুপ ‘সি’র দুটি দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
এশিয়া কাপে প্রত্যাশিত সাফল্য না পাওয়া এবং এর পরপরই ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার কারণে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে দেশে ফিরতেই বিমানবন্দরে দর্শকদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েন।আফগান সিরিজ শেষে গতকাল (বুধবার) রাতে দেশে ফিরতেই দর্শকদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। নিকট-অতীতে তাদের এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়নি। কেউ শুনেছেন দুয়ো, কেউ–বা পরিবারের সামনে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। তাওহীদ হৃদয় ও নাঈম শেখদের গাড়ি লক্ষ্য করে সেই তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলনামূলক বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়। স্বভাবতই তাতে মনক্ষুণ্ন হয়েছেন নাঈম। পরে এই বাঁ-হাতি ব্যাটার বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন।নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে নাঈম শেখ লিখেছেন, আমরা যারা মাঠে নামি, আমরা শুধু খেলি না। আমরা দেশের নামটা বুকে নিয়ে নামি। লাল-সবুজ পতাকাটা শুধু শরীরে নয়, রক্তে মিশে থাকে। প্রতিটা বল, প্রতিটা রান, প্রতিটা শ্বাসে চেষ্টা করি সেই পতাকাটাকে গর্বিত করতে। হ্যাঁ, কখনো পারি, কখনো পারি না। জয় আসে, পরাজয়ও আসে, এটাই খেলাধুলার বাস্তবতা। জানি, আমরা যখন হেরে যাই, তখন আপনাদের কষ্ট হয়, রাগ হয়। কারণ আপনারাও এই দেশটাকে আমাদের মতোই ভালোবাসেন।কিন্তু আজ যেভাবে আমাদের প্রতি ঘৃণা, গাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে, তা সত্যিই কষ্ট দেয়। আমরা মানুষ, ভুল করি, কিন্তু কখনও দেশের প্রতি ভালোবাসা-চেষ্টার ঘাটতি রাখি না। প্রতিটা মুহূর্তে চেষ্টা করি দেশের জন্য, মানুষের জন্য, আপনাদের মুখে হাসি ফোটাতে।সমালোচনা যৌক্তিকভাবে করা হোক বলেও সমর্থকদের প্রতি আহবান করেছেন নাঈম, ভালোবাসা চাই, ঘৃণা নয়। সমালোচনা হোক যুক্তিতে, রাগে নয়। কারণ আমরা সবাই একই পতাকার সন্তান। জয় হোক, পরাজয় হোক, লাল-সবুজ যেন আমাদের সবার গর্ব থাকে, ক্ষোভের নয়। আমরা লড়ব, আবার উঠব, দেশের জন্য, আপনাদের জন্য, এই পতাকার জন্য।প্রসঙ্গত, তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানদের কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। বিশেষ করে শেষ দুই ম্যাচে যথাক্রমে ১০৯ এবং ৯৩ রানে অলআউট হয়ে বড় হারের লজ্জায় পড়েছে মিরাজ-নাঈম-হৃদয়রা। যা এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও হেলায় হারানোর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে ক্রিকেটভক্তদের মাঝে। কেবল শেষ ওয়ানডেতে খেলেছেন নাঈম শেখ, যেখানে বাঁ-হাতি এই ওপেনার ২৪ বলে করেন স্রেফ ৭ রান।ভোরের আকাশ/তা.কা
৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অধিকাংশ নেতাকর্মী আত্মগোপনে বা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। একই অবস্থা হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের হুইপ ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার ক্ষেত্রেও। তিনি দেশে থাকলেও জনসম্মুখে আসছেন না।তবে এবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানালেন, তার ধারণা মাশরাফি তার রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।সাকিব আল হাসানের প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, তাকে (সাকিবকে) দেশে খেলতে দেওয়ার বিষয়ে সহায়তা করার সুযোগ এখন আর নেই। এখনো শেখ হাসিনাকে সমর্থনই তার মূল কারণ।তিনি আরও বলেন, সাকিবের শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, ফিন্যানশিয়াল ফ্রডের মামলা, এমনকি তার পরিবারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে বিষয়গুলো সামনে এসেছে। আমরা কাউকে টার্গেট করে তুলি নাই বরং তার নিজস্ব কর্মকাণ্ডের কারণেই আলোচনা তৈরি হয়েছে।সেই প্রসঙ্গেই উঠে আসে মাশরাফির নাম। ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, মাশরাফি বিন মুর্তজার বিষয়ে এমন কিছু আমি জানি না। আমার জানামতে, উনি তার রাজনৈতিক অবস্থান থেকেও সরে এসেছেন। ফেসবুকে উনি বিষয়টা স্পষ্ট করেছিলেন বলে আমার মনে পড়ে।তবে যাচাই করে দেখা গেছে, মাশরাফি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি এমন কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গত বছরের আগস্টে এক সাক্ষাৎকারে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রাজনীতি থেকে সরে আসার। তখন মাশরাফি বলেছিলেন, যখন রাজনীতিতে ছিলাম, ক্রিকেট বোর্ডে থাকার চেষ্টা করিনি। এখন রাজনীতিতে নেই, এখন যদি বোর্ডে থাকার চেষ্টা করি বা থাকতে চাই, তাহলে কেমন হয়ে যায় না!এ বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয় রাজনীতি তার অতীত অধ্যায়। গত এক বছরে মাশরাফি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে বিভিন্ন বিষয়ে ১৪টি পোস্ট দিয়েছেন। কিন্তু কোনোটিই আওয়ামী লীগ বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত নয়। বিপরীতে সাকিব আল হাসান একাধিকবার আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে সমর্থন করে পোস্ট দিয়েছেন। পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্র্যান্ডিং নিয়েও সমালোচিত হয়েছেন।তবে মাশরাফি যদি কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তার ভাষায়, এর বাইরে যদি উনি রাষ্ট্রীয় আইনে কিছু করে থাকেন, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতেই পারে। ওনার বিষয়টা আলোচনায় আসেনি। কারণ, উনি অনেক আগেই অবসর নিয়েছেন এবং খেলার সঙ্গে এখন আর সংশ্লিষ্ট নন।ভোরের আকাশ/তা.কা