আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫ ১২:৫৮ এএম
সীমান্ত উত্তেজনায় জড়াল থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া, বাড়ছে সংঘর্ষের আশঙ্কা
দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ আবারও সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে। সম্প্রতি সীমান্তে গোলাগুলি, ভূমি মাইন বিস্ফোরণ এবং কূটনৈতিক টানাপোড়েন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। উভয় দেশ সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে এবং পারস্পরিক বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে এই উত্তেজনা।
দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা মূলত ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের সময় চিহ্নিত করা হয়। তবে এখনো অনেক সীমান্ত অঞ্চল, বিশেষ করে ঐতিহাসিক মন্দিরঘেরা অংশগুলো, সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে এই সীমানা নিয়ে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। ২০১১ সালে প্রাচীন প্রেয়া বিহার মন্দির ঘিরে সংঘর্ষে প্রাণ হারান অন্তত ২০ জন এবং বাস্তুচ্যুত হন হাজার হাজার মানুষ। ওই মন্দিরটি ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত।
সর্বশেষ উত্তেজনার সূত্রপাত মে মাসে এমেরাল্ড ট্রায়াঙ্গেল নামক সীমান্ত এলাকায়। এখানে এক সংক্ষিপ্ত সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হন। ঘটনার জন্য উভয় দেশই একে অপরকে দায়ী করে এবং নিজেদের আত্মরক্ষার কথা বলে ব্যাখ্যা দেয়।
এরপর থেকেই দুই দেশই সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়ায়। থাইল্যান্ড কড়া নজরদারি আরোপ করে সীমান্ত চেকপয়েন্টে, এবং হুমকি দেয় যে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে। এর পাল্টা জবাবে কম্বোডিয়া থাই ফলমূল ও শাকসবজি আমদানি বন্ধ করে দেয় এবং থাই সিনেমা ও টিভি নাটক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
এ পরিস্থিতির মধ্যেই ভূমি মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ১৬ জুলাই প্রথম বিস্ফোরণে একজন থাই সেনার পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ২৩ জুলাই দ্বিতীয় বিস্ফোরণে আহত হয় আরও পাঁচ সেনা, যাদের মধ্যে একজনকে পা কেটে ফেলতে হয়। এরপরের দিন বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষ পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করে তোলে।
এই ক্রমাগত উত্তেজনার জেরে দুই দেশই তাদের রাজধানী থেকে কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে এবং সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই সীমানা বিরোধ যদি দ্রুত রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে সমাধান না করা যায়, তবে তা আরও বড় ধরনের সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।
সূত্র: সিএনএন
ভোরের আকাশ//হ.র