আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫ ০১:২১ এএম
যুদ্ধবিরতির পর প্রথম আলোচনায় বসছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র
মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো আলোচনায় বসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। আগামী সপ্তাহে ইউরোপের কোনো একটি দেশে, সম্ভাব্য নরওয়ের রাজধানী অসলোতে, এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি, যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এক্সিওজের বরাতে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচনায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি মূল এজেন্ডা হিসেবে থাকবে। এ বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দুটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে বৈঠকের সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র বা ইরান—দুটি দেশই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, “এই মুহূর্তে আমাদের কাছে এই বিষয়ে কোনো তথ্য নেই।” একইসঙ্গে জাতিসংঘে ইরানি মিশনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলের সরাসরি হামলার পর ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণায় জানান, এই সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে একটি আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে এবং একটি সম্ভাব্য চুক্তির দিকেও এগোনো যেতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে উসকানিমূলক হামলা চালায়, যাতে ইরানের সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক নিহত হন। এর এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। তেহরান এই হামলাগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT)-এর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে।
এর জবাবে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।
পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ২৪ জুন ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, “ইরান ও ইসরায়েল সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা স্থায়ী হবে এবং পরে উভয় পক্ষের সম্মতিতে তা চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে।”
ট্রাম্প আরও লেখেন, “যুদ্ধবিরতির সময় উভয় পক্ষ শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমি ইরান ও ইসরায়েল—দুই দেশকেই তাদের সাহস, ধৈর্য ও বিচক্ষণতার জন্য অভিনন্দন জানাই।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন আলোচনা যদি সফল হয়, তবে তা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ভোরের আকাশ//হ.র