লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৫ ১১:৩৬ পিএম
অতিরিক্ত মাংস খাওয়া নয়, ঈদের আনন্দে থাকুক স্বাস্থ্য সচেতনতা
পবিত্র ঈদুল আজহা মানেই কোরবানির তাৎপর্য ও ত্যাগের মহান উৎসব। এই উপলক্ষে দেশে প্রতিটি ঘরেই তৈরি হয় কোরবানির গোশতের নানা মুখরোচক পদ।
কিন্তু ঈদের আনন্দে মজে গিয়ে অনেকে পরিমিতিবোধ ভুলে গিয়ে অতিরিক্ত মাংস খেয়ে ফেলেন, যা পরবর্তীতে ডেকে আনতে পারে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা।
চিকিৎসকরা সতর্ক করে জানাচ্ছেন, উৎসবের দিনে মাংস খাওয়া অবশ্যই উপভোগ্য, তবে তা পরিমিত ও স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে হওয়া জরুরি।
অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি:
হজমের সমস্যা: চর্বিযুক্ত মাংস হজমে সময় নেয়। এতে হতে পারে গ্যাস, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া। যাদের পিত্তথলিতে সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য ঝুঁকি আরও বেশি।
হৃদরোগের ঝুঁকি: গরু ও খাসির মাংসে উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল থাকে, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বাড়িয়ে দেয়। এতে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি: অতিরিক্ত মাংস খাওয়ায় রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেঁটে বাত বা গাউট দেখা দিতে পারে। কিডনি রোগীদের জন্য এটি আরও বিপজ্জনক।
ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতা: অনিয়ন্ত্রিত মাংস খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমে, যা ওজন বৃদ্ধি এবং ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতা ডেকে আনতে পারে।
কিডনির ওপর চাপ: উচ্চমাত্রার প্রোটিন গ্রহণে কিডনির ওপর চাপ পড়ে। কিডনির সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য এটি মারাত্মক হতে পারে।
কোরবানির মাংস খাওয়ার স্বাস্থ্যকর টিপস:
পরিমিত খাওয়ার অভ্যাস: একবারে অনেক না খেয়ে দিনে কয়েকবারে সীমিত পরিমাণে মাংস খান।
চর্বি বাদ দিন: রান্নার আগে দৃশ্যমান চর্বি কেটে ফেলুন এবং চামড়া পরিহার করুন।
সঠিক রান্না পদ্ধতি: অতিরিক্ত তেল বা ডিপ ফ্রাই এড়িয়ে গ্রিল, সেদ্ধ বা কম তেলে রান্না করুন।
সবজি ও আঁশযুক্ত খাবার: প্রতিটি মাংসের খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে সালাদ ও সবজি খান, যা হজমে সহায়ক।
প্রচুর পানি পান করুন: খাবারের পর পর্যাপ্ত পানি পান কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক।
হালকা হাঁটাচলা: খাওয়ার পর হালকা হাঁটাচলা হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।
আদা ও লেবুর ব্যবহার: রান্নায় আদা এবং খাওয়ার পর লেবু পানি গ্রহণ হজমে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
লবণ সীমিত করুন: উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে লবণের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
চিকিৎসকদের মতে, ঈদের মাংস উপভোগ করুন ভালোভাবে, তবে শরীরের দিকেও নজর রাখুন। পরিমিত এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের মাধ্যমেই ঈদের আনন্দ আরও দীর্ঘস্থায়ী ও উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
ভোরের আকাশ।।হ.র