চুল পড়া একটা সাধারণ অথচ ভীষণ দুশ্চিন্তার বিষয়। প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যদি দেখা যায়, চুলের গোছা পাতলা হয়ে যাচ্ছে, তখন নানা তেল, শ্যাম্পু, কিংবা ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করেও অনেক সময় ফল পাওয়া যায় না। আসলে, চুলের স্বাস্থ্য কেবল বাইরের যত্নে নয়—ভিতর থেকেও আসে। আর তাই দরকার সঠিক খাবার।বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি হলে চুলের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় এবং চুল পড়া বেড়ে যায়। তাই চুল সুস্থ রাখতে খাদ্যাভ্যাসে আনতে হবে কিছু পরিবর্তন। চলুন দেখে নেওয়া যাক কোন খাবারগুলো চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে—ডিম রাখুন প্রতিদিনের খাবারেচুলের পুষ্টির জন্য ডিমের জুড়ি নেই। এটি বায়োটিন ও প্রোটিনে সমৃদ্ধ, যা চুলের গোড়া মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে কুসুমে থাকা বায়োটিন চুলের গঠনকে শক্তিশালী করে তোলে। তাই প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খাওয়া উচিত।মিষ্টি আলুর জাদুখেতেও মজাদার, আবার চুলের জন্যও উপকারী—এমনই এক খাবার হলো মিষ্টি আলু। এতে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, যা শরীরে ভিটামিন-এ হিসেবে কাজ করে। এটি স্ক্যাল্পে প্রাকৃতিক তেল উৎপাদন বাড়ায়, ফলে চুল থাকে নরম, মজবুত ও উজ্জ্বল। নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে চুল পড়া উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।পালং শাকের পুষ্টিসবুজ শাকসবজির মধ্যে পালং শাক চুলের জন্য সবচেয়ে উপকারী একটি উপাদান। এতে থাকে আয়রন, ভিটামিন এ, সি এবং বায়োটিন, যা রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে চুলের গোড়া মজবুত করে। নিয়মিত পালং শাক খেলে অতিরিক্ত চুল পড়া কমে এবং চুল হয়ে ওঠে আরও ঘন ও প্রাণবন্ত।বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুনএক মুঠো বাদামই হতে পারে চুলের প্রাকৃতিক টনিক। এতে রয়েছে উপকারী ফ্যাট, প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা চুলের কোষকে পুষ্টি জোগায়। নিয়মিত বাদাম খেলে চুল পড়া কমে এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।সবশেষে মনে রাখবেন, চুলের যত্ন কেবল বাহ্যিক নয়, ভেতর থেকেও শুরু হয়। তাই সুষম খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং স্ট্রেস কমানোর চেষ্টা করুন। তাহলেই আপনার চুল ফিরে পাবে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ও ঘনত্ব।ভোরের আকাশ//হ.র
১৭ ঘন্টা আগে
লিভার আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীর ডিটক্সিফাই করে, চর্বি ভেঙে ফেলে, পুষ্টি প্রক্রিয়াজাত করে এবং হজমসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে সহায়তা করে। তবে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, দূষিত পরিবেশ ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন লিভারের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।প্রতিদিনের খাবারে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রাখলে লিভারকে কার্যকর ও সুস্থ রাখা সম্ভব। চলুন জেনে নিই এমনই পাঁচটি খাবার যা নিয়মিত খেলে লিভার সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকবেসংগৃহীত ছবি১.আঙ্গুর আঙ্গুর আপনার লিভারের জন্য উপকারী। আঙ্গুর লিভারের প্রদাহ কমাতে, শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বাড়াতে এবং লিভারের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে। আঙ্গুর খাওয়া লিভারের সুস্থ কার্যকারিতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে। আপনার লিভারের জন্য পছন্দসই স্বাস্থ্য সুবিধা পেতে আপনাকে অবশ্যই পুরো আঙ্গুর খেতে হবে।সংগৃহীত ছবি২. বাঁধাকপিক্রুসিফেরাস সবজির মধ্যে অন্যতম বাঁধাকপি লিভারের জন্য খুবই উপকারী। এতে রয়েছে গ্লুকোসিনোলেট, যা লিভারকে পরিশোধনকারী এনজাইমের নিঃসরণে সহায়তা করে। বাঁধাকপিতে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার হজম ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে সাহায্য করে।সংগৃহীত ছবি৩. বিটের রসলিভারের জন্য বিটের রস এক শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রতিকার। এতে থাকা বিটালাইন এবং নাইট্রেট রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। বিটের রস পিত্ত উৎপাদনেও সহায়তা করে, যা চর্বি হজম ও লিভারের কার্যকারিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।সংগৃহীত ছবি৪. গ্রিন টিগ্রিন টিতে রয়েছে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা লিভারে চর্বি জমা রোধ করে এবং লিভার এনজাইমের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন, তাদের নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। এটি বিপাকক্রিয়া বাড়িয়ে লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।সংগৃহীত ছবি৫. কুমড়াপুষ্টিগুণে ভরপুর কুমড়ায় রয়েছে বেটা-ক্যারোটিন, ফাইবার, এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা লিভার টিস্যুকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। এতে থাকা পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফোলেট লিভারের কার্যকারিতায় সহায়তা করে এবং চর্বি জমা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট কিনুনলিভারকে সুস্থ রাখতে খুব বেশি ওষুধ বা ব্যয়বহুল ডায়েটের প্রয়োজন নেই। শুধু প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় উপরোক্ত প্রাকৃতিক ও সহজলভ্য খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করলেই আপনি লিভারকে রাখতে পারেন সুস্থ, সক্রিয় ও কর্মক্ষম।ভোরের আকাশ/তা.কা
৩ দিন আগে
অনেকেই দিন শুরু করেন এক গ্লাস টাটকা কমলার রস দিয়ে। সকালের নাস্তায় এটি একপ্রকার ঐতিহ্যেই পরিণত হয়েছে। ভিটামিন ‘সি’-সমৃদ্ধ কমলার রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক সুন্দর রাখে, এমনকি হৃদযন্ত্রেরও সুরক্ষা দেয়—এমনটাই সাধারণ ধারণা। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সকালে খালি পেটে কমলার রস পান করা কি আসলেই নিরাপদ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উত্তরটা এতটা সরল নয়।কমলার রসে কী কী পুষ্টি থাকে?কমলার রস পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে আছে ভিটামিন ‘সি’, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাসিয়াম, ফোলেটসহ নানা প্রয়োজনীয় উপাদান। মার্কিন কৃষি বিভাগ (USDA)-এর তথ্য অনুযায়ী, এক কাপ (প্রায় ২৫০ গ্রাম) কমলার রসে থাকে প্রায় ১২২ ক্যালোরি, ২১ গ্রাম প্রাকৃতিক চিনি, ১.৭ গ্রাম প্রোটিন এবং ৪৪৩ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম।এই রস কোষের ক্ষতি রোধ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে, এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস বা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। তাছাড়া, যাদের কিডনিতে পাথর রয়েছে, তাদের জন্যও এটি উপকারী হতে পারে—কারণ এটি প্রস্রাবকে কম অ্যাসিডিক করে, যা কিডনির পাথর হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।খালি পেটে কমলার রস খাওয়া কতটা নিরাপদ?বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে খালি পেটে কমলার রস পান করলে অনেকের হজমে সমস্যা হতে পারে। কারণ এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটির মাত্রা বাড়ায়, বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিক বা অম্বলের সমস্যা আছে তাদের জন্য এটি ক্ষতিকর।‘Roczniki Państwowego Zakładu Higieny’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কমলা ও আঙুরের রস খালি পেটে পান করলে GERD (গ্যাস্ট্রো-ওইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এতে পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালিতে ফিরে আসে, যা বুক জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি তৈরি করে। ডায়াবেটিস রোগীরা কি সকালের নাস্তায় কমলার রস খেতে পারেন?কমলা ফল হিসেবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাধারণত নিরাপদ, কারণ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স প্রায় ৪৩। কিন্তু কমলার রস খাওয়া একেবারে আলাদা বিষয়। রস বানানোর সময় ফাইবার বাদ পড়ে যায়, ফলে এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ) সরাসরি রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালি পেটে কমলার রস পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগী বা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকর।ফল না রস—কোনটি ভালো?পুষ্টিবিদদের মতে, পুরো কমলা খাওয়া সব সময়ই রসের চেয়ে বেশি উপকারী। পুরো ফলে ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হজমেও সাহায্য করে। এছাড়া আস্ত কমলা খেলে পেটও ভালোভাবে ভরে, ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের আশঙ্কা কমে যায়।অতিরিক্ত সেবনের ঝুঁকিকমলা বা কমলার রস—দুটিই উপকারী, তবে পরিমিত পরিমাণে। অতিরিক্ত সেবনে দেখা দিতে পারে বুক জ্বালাপোড়া, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, এমনকি দাঁতের এনামেল ক্ষয়ও। নিয়মিত অতিরিক্ত কমলার রস খেলে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি এবং হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।তাহলে কীভাবে খাবেন?বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন—খালি পেটে নয়, খাবারের পর বা মাঝেমধ্যে কমলার রস পান করা ভালো।চিনি ছাড়া টাটকা রসই সর্বোত্তম।দিনে এক গ্লাসের বেশি না খাওয়াই উত্তম।কমলার রস স্বাস্থ্যকর হলেও সময়, পরিমাণ ও অভ্যাসের ওপরই নির্ভর করে এটি উপকারী না ক্ষতিকর হবে। খালি পেটে নয়, বরং সঠিক সময়ে পরিমিত পরিমাণে কমলার রস পান করলেই পাওয়া যায় এর আসল উপকারিতা।ভোরের আকাশ//হর
১ সপ্তাহ আগে
বরিশালের চিংড়ি মাছের জলভরা বা জলটোবা তৈরি করতে, খোসা ছাড়ানো চিংড়িকে ডাল বাটা, মশলা ও বেসন দিয়ে মেখে বড়ার আকারে ভেজে নেওয়া হয়। এই ভাজা বড়াগুলো সুস্বাদু ঝোলে দেওয়া হয়, যা "জল" তৈরি করে। এই ঝোল বা গ্রেভি মূলত নারকেল দুধ ও অন্যান্য মশলার মিশ্রণে তৈরি করা হয়, যা বড়াগুলোকে নরম করে এবং একটি বিশেষ স্বাদ দেয়চিংড়ি দিয়ে সুস্বাদু সব খাবার তৈরি করা যায়। তার একটি হলো চিংড়ির জল বড়া। এটি তৈরি করা যেমন সহজ, খেতেও দারুণ স্বাদ। তবে সঠিক পদ্ধতি জানা না থাকলে চিংড়ি বড়া তৈরি করা যাবে না। কারণ এটি সতর্কতার সঙ্গে তৈরি না করলে বড়ার আকৃতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অতিথি আপ্যায়নে বা ঘরোয়া রান্নায় রাখতে পারেন চিংড়ির এই পদ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক চিংড়ির জল বড়া তৈরির রেসিপি-তৈরি করতে যা লাগবেছোট চিংড়ি- ১ কাপনারিকেলের দুধ- ১ কাপলবণ- স্বাদমতোকাঁচা মরিচ কুচি- ৪-৫টাসরিষার তেল- ৫ চা চামচতেজপাতা- ১টিজিরা- ১/২ চা চামচদারুচিনি- ১ টুকরাএলাচ- ২টিপেঁয়াজ কুচি- ১টিআদা রসুন বাটা- ২ চা চামচহলুদের গুঁড়া- ১ চা চামচমরিচের গুঁড়া- ১ চা চামচজিরা গুঁড়া- ১ চা চামচঘি- ১ চা চামচ।সংগৃহীত ছবিযেভাবে তৈরি করবেনপ্রথমে ছোট চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে বেটে বা ব্লেন্ড করে নিন। এবার তাতে লবণ ও ২-৩টি কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে ভালোভাবে মেখে ছোট ছোট বলের মতো তৈরি করে নিন। কড়াইতে তেল গরম করে তাতে তেজপাতা, জিরা, আস্ত গরম মসলা ও পেঁয়াজ কুচি ভাজুন। এবার একে একে আদা রসুন বাটা, লবণ, হলুদ, মরিচের গুঁড়া, জিরা গুঁড়া দিয়ে কষাতে হবে।মসলা কষানো হলে নারিকেলের দুধ দিয়ে নেড়ে আগে থেকে তৈরি করা চিংড়ির বলগুলো দিয়ে ঢেকে রান্না করতে হবে। ৫-৬ মিনিট পর বলগুলো শক্ত হয়ে ঝোল ঘন হলে, কাঁচা মরিচ কুচি ও ঘি দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার গরম গরম ভাত, পোলাও, খিচুড়ি, রুটি কিংবা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন সুস্বাদু চিংড়ির জল বড়া।ভোরের আকাশ/তা.কা
১ সপ্তাহ আগে