× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জলবায়ু ক্ষতিপূরণে মামলা

বিশ্ব মোড়লদের নিয়ে সংশয়ে বাংলাদেশ

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:৪২ এএম

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ে এক দেশের বিরুদ্ধে এখন থেকে মামলা করতে পারবে অন্য দেশ। এই যুগান্তকারী রায় দিয়েছে জাতিসংঘের একটি শীর্ষ আদালত। কিন্তু জলবায়ুবিষয়ক রায়কে ঘিরে বাংলাদেশে আশার চেয়ে সংশয়ই বেশি। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতারা মনে করছেন, এই রায়ের বাস্তব প্রভাব বাংলাদেশের জন্য খুব একটা সুফল বয়ে আনবে না, বরং বড় দেশগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।

জলাবায়ু বিশেষজ্ঞরা জানান, জাতিসংঘের জলবায়ু তহবিল যে নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে তা হলো, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোর দায়িত্ব বেশি। কারণ শিল্প বিপ্লবের পর থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনের মাধ্যমে বিশ্বকে উষ্ণ করে তোলার ক্ষেত্রে তাদের বড় ভূমিকা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ঐতিহাসিক কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। কিন্তু এখন দূষণ সৃষ্টির নিরিখে বিশ্বের বৃহত্তম কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনকারী দেশ হলো চীন। এভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো আরও অনেক বিশ্ব মোড়ল বেশি মাত্রায় কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনকারী দেশের তালিকায় রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অপেক্ষাকৃত বেশি কার্বন নির্গমন করা পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই হিতে বিপরীত হতে পারে। ধনী দেশগুলোর এমন নিষ্পেষণমূলক আচরণের ক্ষেত্রে মামলা-মোকদ্দমা করে আন্তর্জাতিক আদালতে খুব একটা সুবিধা পাওয়া যাবে না। বড় লড়াইয়ে নামলে তারা অপেক্ষাকৃত ছোট ও অনুন্নত দেশগুলোর ওপর নানা ধরনের বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে পারে, যা ছোট দেশগুলোর পক্ষে বহন করা কঠিন। এর বদলে বিশ্বের সব দেশকে মিলিত হয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তিযুক্ত। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা ও পরিচালনা করা সময়সাপেক্ষ ও অর্থসাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া। বড় দেশগুলো এই প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত হলেও ছোট দেশগুলো এ ক্ষেত্রে খুব সুবিধা করতে পারে না।

এই ঐতিহাসিক রায়ে আসলে বাংলাদেশের কোনো সুবিধা হবে কিনা বা অসুবিধা হবে কিনা জানতে চাইলে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আইনুন নিশাত বলেন, এর ফলে বাংলাদেশের কোনো পরিবর্তন হবে না। এতে বাংলাদেশের কোনো সুফলও আসবে না। কারণ মামলার যে সিদ্ধান্ত তা বাস্তবায়ন করার পেছনে কোনো শক্তি নেই। ফলে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে কে? কেউ মামলা করলে অন্য দেশ যদি বলে আমরা এই সিদ্ধান্ত মানি না। তাহলে আর সেটি কার্যকর থাকে না। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এটি কোন শক্তি দিয়ে বাস্তবায়ন করা হবে তা আলোচনায় নেই।

তিন বলেন, দীর্ঘ দিন ধরেই এই বিষয়ে আলোচনা চলছে কিন্তু এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত এলেও উৎফুল্ল হওয়ার কিছু নেই।

ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়কারী শরীফ জামিল বলেন, কোনো সরকার যদি মামলা করতো তাহলে তো সে ফসিল-ফুয়েল দিয়ে জ্বালানি উৎপাদনের কাজই করতো না। কোনো দেশের সরকার নিজেই যদি ফসিল-ফুয়েল দিয়ে জ্বালানি উৎপাদনের কাজ করে তাহলে তার পক্ষে মামলা করা সম্ভাবনা কম।

তিনি বলেন, এটি একটি নৈতিক বিষয়। ভবিষ্যতে যারা ফসিল-ফুয়েলে বিনিয়োগ করতে চাইবে তাদের জন্য এটি একটি নিরুৎসাহিত করার মতো বিষয় হতে পারে। এটি একটি ভালো দিক।

তিনি আরও বলেন, এই মামলা করার সিদ্ধান্তের কারণে ফসিল-ফুয়েল নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদেরকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সরকারের পলিসির ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। সরকার যদি নিজেই ফসিল-ফুয়েল নিয়ে কাজ করতে শুরু করে তাহলে তার পক্ষে তো মামলা করা সম্ভব নয়।

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো)-এর প্রধান নির্বাহী সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, আসলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে বাংলাদেশের মতো ছোট দেশগুলো তেমন কোনো সুবিধা পাবে না। এশিয়ার দেশগুলো যেমন- বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের মতো ছোট দেশগুলো বড় দেশগুলোর বিরুদ্ধে মামলা এমনিতেই করতে পারবে না অর্থনৈতিক কারণেই। তারপরও বড় রাষ্ট্রগুলো ফসিল-ফুয়েল নিয়েই বেশ কাজ করছে। এক্ষেত্রে এই মামলা করার সিদ্ধান্ত খুব বেশি কাজে লাগবে না। তবে মামলা তারা করতেই পারে, তবে সুফল পাবে না।  

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ইস্যু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করলেও নতুন কোনো উদ্যোগ বা পরিবর্তন হচ্ছিল না সে ক্ষেত্রে যে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে আমি মনে করি।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুলাই নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত পরামর্শমূলক রায়ে জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো আন্তর্জাতিক আইনে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবে। এই রায় বাধ্যতামূলক না হলেও জলবায়ু-ন্যায়ের ক্ষেত্রে এটি যুগান্তকারী নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই মামলার সূচনা হয়েছিল ভানুয়াতুসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের তরুণদের উদ্যোগে। তারা দাবি তুলেছিল, দূষণকারী বড় দেশগুলো ইতিহাসের দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। ভানুয়াতুর নেতৃত্বে ১৬টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ জাতিসংঘে এই আদেশের জন্য আবেদন করে এবং ১৩২টি দেশ, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে, এর পক্ষে ভোট দেয়। তবে বাস্তবায়নের কাঠামো না থাকায় এই রায়ের প্রভাব বাংলাদেশসহ ছোট দেশগুলোর জন্য সীমিতই থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

জলবায়ুকর্মী এবং আইনজীবীরা আশা করছেন, এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত সেই দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের পথ সহজ করবে যারা সবচেয়ে বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর মাধ্যমে বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য ঐতিহাসিকভাবে দায়ী। বাড়তে থাকা সমস্যা মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছিল তারা। যে হতাশা থেকে অনেক দরিদ্র দেশও এই মামলাটি সমর্থন করেছিল।

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৭ শহরের শীর্ষে কিনশাসা, ঢাকার অবস্থান কত?

বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৭ শহরের শীর্ষে কিনশাসা, ঢাকার অবস্থান কত?

বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৭ শহরের শীর্ষে কিনশাসা, ঢাকার অবস্থান কত?

বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৭ শহরের শীর্ষে কিনশাসা, ঢাকার অবস্থান কত?

তালতলীতে জলবায়ু অর্থায়নের দাবি

তালতলীতে জলবায়ু অর্থায়নের দাবি

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ঢাকা

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ঢাকা

 ভিপি-এজিএসে ভূমিধস জয়ের পথে শিবির, জিএসে আম্মার

ভিপি-এজিএসে ভূমিধস জয়ের পথে শিবির, জিএসে আম্মার

 ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করতে ইংল্যান্ডে মসজিদে ‘ওপেন ডে’ উদযাপন

ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা দূর করতে ইংল্যান্ডে মসজিদে ‘ওপেন ডে’ উদযাপন

 ফেসবুকে আসছে ইনস্টাগ্রামের নতুন ফিচার

ফেসবুকে আসছে ইনস্টাগ্রামের নতুন ফিচার

 পেট ও পায়ে ফোলাভাব: সতর্ক সংকেত হতে পারে লিভারের সমস্যা

পেট ও পায়ে ফোলাভাব: সতর্ক সংকেত হতে পারে লিভারের সমস্যা

 চুল পড়া থামাতে চান? নিয়মিত খেতে পারেন এই খাবারগুলো

চুল পড়া থামাতে চান? নিয়মিত খেতে পারেন এই খাবারগুলো

সংশ্লিষ্ট

জুলাই সনদ স্বাক্ষর উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ বার্তা

জুলাই সনদ স্বাক্ষর উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ বার্তা

জুলাই সনদ অনুষ্ঠান ঘিরে সরকারের বিশেষ নির্দেশনা

জুলাই সনদ অনুষ্ঠান ঘিরে সরকারের বিশেষ নির্দেশনা

জুলাই সনদ নিয়ে এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

জুলাই সনদ নিয়ে এনসিপির সিদ্ধান্ত দুঃখজনক: আলী রীয়াজ

সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ইউএনওদের প্রশিক্ষণ শুরু ২০ অক্টোবর

সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ইউএনওদের প্রশিক্ষণ শুরু ২০ অক্টোবর