বিনামূল্যে ঢাকায় ফ্ল্যাট পাবেন জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুতর আহতরা
বিনামূল্যে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুরুতর আহতদের জন্য ঢাকায় ফ্ল্যাট দিতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আহতদের জন্য ১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা টাকা ব্যয়ে দেড় হাজারের বেশি ফ্ল্যাট তৈরি করা হবে।
জানা গেছে, মিরপুর ৯ নম্বরে সরকারি জমিতে এসব ফ্ল্যাট তৈরি করবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ফ্ল্যাটের নকশাও তৈরি করেছে সংস্থাটি। সরকারের কোষাগার থেকে ফ্ল্যাট নির্মাণের টাকা দেওয়া হবে।
নকশায় দেখা যাচ্ছে, এসব ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট। প্রতিটি ফ্ল্যাটে দুটি শয়নকক্ষ (বেডরুম), একটি ড্রয়িংরুম (বসার ঘর), একটি লিভিং রুম (বিশ্রাম ঘর), একটি খাবার কক্ষ, রান্নাঘর ও তিনটি শৌচাগার বা টয়লেট থাকবে। একটি কক্ষ থাকবে শুধু আহত ব্যক্তির জন্য, যিনি পঙ্গু বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। ওই কক্ষে তাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
এ বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির বুধবার (৯ জুলাই) গণমাধ্যমকে জানান, ভবন নির্মাণে সব মিলিয়ে চার বছর সময় লাগবে। ফ্ল্যাট কারা পাবেন সেটি পরে নির্ধারিত হবে। এখন অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণে। জুলাই অধিদপ্তর, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বসে এ তালিকা ঠিক করবে। আহত ব্যক্তিদের ভয়াবহতা অনুসারে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে।
গত ৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনে ‘ঢাকার মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কর্মক্ষমতা হারানো জুলাই যোদ্ধা পরিবারের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানে এক হাজার ৫৬০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শিরোনামে প্রকল্পের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মাসেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের জন্য আলাদা দুটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাবে। এ দুটি প্রকল্পই ২০২৯ সালে শেষ হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি দপ্তরগুলোতে নতুন করে গাড়ি কেনা ও বৈদেশিক সফরে অংশগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে এই আদেশ জারি করে অর্থ বিভাগ।নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চালান বাজেট থেকে কোনো ধরনের যানবাহন কেনা যাবে না। তবে ১০ বছরের বেশি পুরনো, টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমতি নিয়ে সেই ব্যয় করা যাবে।শুধু গাড়িই নয়, অবকাঠামো খাতে খরচেও থাকছে কড়াকড়ি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাত ছাড়া নতুন কোনো সরকারি ভবন—বাসা বা অফিস—নির্মাণে ব্যয় করা যাবে না। যেসব প্রকল্পে ৫০ শতাংশের বেশি কাজ হয়ে গেছে, কেবল সেগুলো অর্থ বিভাগের অনুমতি নিয়ে চালানো যাবে।উন্নয়ন বাজেট থেকেও যানবাহন কেনা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ বা থোক বরাদ্দের মতো খাতে ব্যয় করতে হলেও এখন থেকে অনুমতি নিতে হবে অর্থ বিভাগ থেকে।বিদেশ সফর নিয়েও থাকছে কঠোরতা। উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কোনো ধরনের বিদেশ সফর, সেমিনার, কর্মশালা বা সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করা যাবে না। তবে বিদেশি সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারের বৃত্তি ও ফেলোশিপের আওতায় মাস্টার্স ও পিএইচডি পড়ার সুযোগ থাকছে। পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও কিছু নির্দিষ্ট সফরে অনুমতি মিলবে।অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় সরকার অপচয় বন্ধ করে অগ্রাধিকার খাতে ব্যয় বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে। এই পদক্ষেপে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় ঠেকানো যাবে, অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানো সম্ভব হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ফের আলোচনায় ওঠে এসেছে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ ইস্যূ। বাংলাদেশ রপ্তানি পণ্যে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রকে। পহেলা অগাস্ট থেকে এই শুল্ক বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাতে সময় মাত্র ২২ দিন। এই সময়ের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে বাড়তি শুল্ক গুণতে হবে বাংলাদেশকে। শুল্ক কমানো একটা রফা করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া পণ্যসমূহ বিশেষ করে দেশের বৃহৎ রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক খাতে এর প্রভাব কতটা পড়বে তা নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ।গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের ওপর অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। দুই শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের জন্য এখন ৩৫ শতাংশ করায় সব মিলিয়ে ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল।সংশ্লিষ্টদের মতে, ১ আগস্ট আসতে বাকি মাত্র ২২ দিন। এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে ভালোভাবে দরকষাকষি করতে পারলে শুল্কহার কমতে পারে। অন্যথায় ঘোষিত হারই কার্যকর হবে। সেক্ষেত্রে বিপদের শেষ থাকবে না।মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার চিঠি দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শুল্ক আরোপের বিষয়টি জানিয়েছেন। যদিও প্রধান উপদেষ্টাকে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন চিঠি দেওয়ার পর গত মঙ্গলবার সরকারের নীতি-নির্ধারণী মহলসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়।এদিন সচিবালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি তুলনামূলক কম। এরপরও ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের ‘ন্যায্যতা’ থাকে না। বিষয়টির সুরাহা করতে দুদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। তাদের সঙ্গে আরেকটি মিটিং আছে। এখন বৈঠকটি মোটামুটি পজিটিভ হবে। ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছেন। এখন ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশন হবে।’এদিকে গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিঠি দিয়ে ঘোষণা করেছেন, ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে বাংলাদেশের একটি দল বেশ কয়েক দফা আলোচনা করেছে। গতকাল বুধবার আরেক দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনায় বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন শেখ বশিরউদ্দীন।’এদিকে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সামনে এক মাস রেখে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট হ্যান্ডওভার করেছে। নেগোসিয়েশনের ডেট দেওয়া হয়েছে। যেটা তাদের পক্ষ থেকেই দেওয়া হয়েছে। এর মানে, নেগোসিয়েশনের দরজা খোলা রয়েছে। আমরা আলোচনায় যুক্ত হচ্ছি। বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখানে আছেন। সেখানে অংশ নিতে আমি মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওয়ানা হব। আশা করি, কিছু একটা ফল আমরা পাব আলোচনার মাধ্যমে।’নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে শুল্ক কমাতে না পারলে আমদানি-রপ্তানির ওপর চাপ পড়বে কি না-প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, ‘প্রেশার হবে, সেটা সবাই বুঝতে পারছি। সেটা যাতে না হয়, সেজন্য আমরা যাচ্ছি আলোচনা করতে। আশা করছি ভালো কিছুই পাব।’জানা যায়, গত সোমবার থেকে ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধানদের চিঠি দিয়ে নতুন হারে শুল্ক আরোপের কথা জানাতে শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, বাংলাদেশ, সার্বিয়া, থাইল্যান্ড ও তিউনিসিয়ার মতো রপ্তানিকারক দেশসহ ১৪টি দেশকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৭ জুলাই লেখা চিঠিতে ট্রাম্প বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, আমাদের সম্পর্ক সমকক্ষ হওয়া থেকে অনেক দূরে। ২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো বাংলাদেশের যে কোনো পণ্যের ওপর আমরা মাত্র ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব।’তিনি বলেন, ‘এই শুল্ক সব খাতভিত্তিক শুল্কের অতিরিক্ত হিসাবে প্রযোজ্য হবে। উচ্চশুল্ক এড়াতে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে পণ্য পাঠানো হলে তার ওপরও সেই উচ্চশুল্ক আরোপ হবে। দয়া করে এটা অনুধাবন করুন, আপনার দেশের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য বৈষম্য দূর করতে যা প্রয়োজন, তার থেকে ওই ৩৫ শতাংশ সংখ্যাটি অনেক কম।’তিনি আরও লিখেছেন, ‘আপনি যদি কোনোভাবে শুল্ক বৃদ্ধি করেন, তাহলে আপনি যতটা বাড়াবেন, তা আমাদের আরোপিত ৩৫ শতাংশের ওপর যোগ হবে।’ট্রাম্প বলেছেন, ১ আগস্টের সময়সীমা একেবারে চূড়ান্ত নয়। যেসব দেশ আরও ছাড় দিতে রাজি, তাদের প্রতি সদয় হবেন জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘পরিস্থিতি বুঝে কিছুটা সমন্বয় করা যেতে পারে... আমরা অবিচার করব না।’তবে ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, ‘বাণিজ্যিক অংশীদাররা কোনো প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করলে জবাবে সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হবে।’এর আগে বাংলাদেশের পক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে ৩ মাসের জন্য ২ এপ্রিলের ঘোষণা করা শুল্ক স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওই সময়ের মধ্যে মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়ে ভারসাম্য আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তাদের শীর্ষ পণ্যের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশ কমানোর কথা বলেছিল বাংলাদেশ।এদিকে বাংলাদেশ আশা করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হার ২০ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে। সরকারের যুক্তি ছিল, ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো ২০ শতাংশ শুল্ক সুবিধা পেলে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্ক আরও কম হওয়া উচিত। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে সেখানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানও আছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেষ মুহূর্তে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব না হলে ৩৫ শতাংশ শুল্কই বহাল থাকবে, যা দেশের রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির জন্য একটি বড় আঘাত হবে।জানা গেছে, দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ ভাগই আসে তৈরি পোশাক থেকে। আর একক দেশ হিসাবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। গত বছর মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশ ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটির বাজারে মোট রপ্তানি পণ্যের ৮৭ শতাংশ হচ্ছে তৈরি পোশাক। গত বছর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৭৩৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতবছর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই হিসাবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য-ঘাটতির পরিমাণ ৬১৫ কোটি ডলার।বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক কমানোর শর্ত হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে সেসব পণ্যে পর্যায়ক্রমে শুল্ক, ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি হ্রাস চেয়েছে। এরই অংশ হিসাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে সরকারি খাতে ফুড ড্রিংক, বোয়িং বিমান ও মিলিটারি ইক্যুইপমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত ও চীন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি সুবিধা পাবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পাকিস্তানও পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছে। ফলে এটা সুস্পষ্ট যে, তিনটি দেশের তুলনায় তৈরি পোশাকে বাংলাদেশকে বেশি প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে।সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি নন-ডিসক্লোজিং অ্যাগ্রিমেন্ট বা এনডিএ সই হয়। গোপনীয়তার প্রকৃতির কারণে এই চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি বলেও তিনি জানান।যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষি নিয়ে খুব একটা আশাবাদী নন অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তার মতে, আলোচনা চলতে পারে, তবে বাংলাদেশকে এখন ভবিষ্যতের জন্যও প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।তিনি বলেন, ‘৩৫ শতাংশ সামাল দেব কীভাবে এই চিন্তাও করা উচিত বাংলাদেশের’। পোশাক খাতের জন্য নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি বায়ারদের সাথে আলোচনা শুরু করার পরামর্শ তার।তিনি বলছেন, ‘ট্যারিফ নিয়ে বায়ারদের সাথে কতটা প্রাইস নেগোসিয়েশন করা যায় সেই চেষ্টাও সংগঠিতভাবে শুরু করা উচিত। পুরো চাপ বাংলাদেশকে নিতে হলে আমাদের ফ্যাক্টরিগুলো চলবে কীভাবে?’ট্যারিফ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রও চাপের মুখে পড়বে বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ বাংলাদেশের মতো স্বল্পখরচে পণ্য উৎপাদনের সুযোগ তারা খুব কম দেশেই পাবে।ড. জাহিদ হোসেন বলেন,‘বাংলাদেশ তো দ্বিতীয় বৃহৎ সরবরাহকারী আমেরিকান মার্কেটে, সেখানে বাংলাদেশ থেকে যদি বায়াররা না কিনতে চায় তারা বিকল্প যাবে কোথায়।’এক্ষেত্রে শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে ব্যবসায়িদেরও উচিত বড় বায়ারদের সাথে আলোচনা শুরু করা। একক দেশের ওপর নির্ভর না করে ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশনের কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।তারা বলছেন, আপাতত আলোচনা করে কিছু একটা সমাধান করা গেলেও ভবিষ্যতে ইউরোপের বাজারেও এর প্রভাব বিদ্যমান থাকবে। তাই বন্দর ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি উপায়গুলো নিয়েও বাংলাদেশকে কাজ শুরুর কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন স্তরে দায়িত্বে রদবদল এনেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার (৯ জুলাই) জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে পাঁচজন অতিরিক্ত ডিআইজি, ১০ জন পুলিশ সুপার ও একজন অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনারসহ মোট ১৬ জন কর্মকর্তার কর্মস্থল পরিবর্তন করা হয়।পাঁচ অতিরিক্ত ডিআইজি যাঁরা বদলি হয়েছেন: রেবেকা সুলতানা – পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বদলি হয়ে গেছেন অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি),ফয়সল মাহমুদ – রাজশাহীর সারদা থেকে সিলেট রেঞ্জে,আশরাফুল ইসলাম – অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে,ফারুক আহমেদ – সদর দপ্তর থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদর দপ্তরে, মিজানুর রহমান – স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে ঢাকার ট্রাফিক ড্রাইভিং স্কুলে (টিডিএস) ।পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১০ কর্মকর্তা যাঁরা নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন: আ ক ম আকতারুজ্জামান বসুনিয়া – হাইওয়ে পুলিশ থেকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে, মো. সাখাওয়াত হোসেন – বরিশাল ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার থেকে রাজারবাগ পুলিশ টেলিকমে, মো. খাইরুল ইসলাম – হাইওয়ে পুলিশ থেকে ট্যুরিস্ট পুলিশে, খন্দকার নুর রেজওয়ানা পারভীন – পিবিআই থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে, মীর আবু তৌহিদ – নোয়াখালীর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার থেকে সিআইডিতে, মো. মিজানুর রহমান – ট্যুরিস্ট পুলিশ থেকে এপিবিএনে, আবুল বাশার মো. আতিকুর রহমান – খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে সিআইডিতে, সৈকত শাহীন – কুষ্টিয়া ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার থেকে শিল্পাঞ্চল পুলিশে, কাজী মো. আবদুর রহীম – এটিইউ থেকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে, মো. আব্দুল্লাহ আল ইয়াছিন – সিআইডি থেকে বরিশাল ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারেঅতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার যিনি বদলি হয়েছেন: মো. আমিনুর রহমান – সিলেট মহানগর পুলিশ থেকে স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) ।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই বদলি আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। ভোরের আকাশ/হ.র
সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার ফলে দেশের উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া এবং অতিভারি বর্ষণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল নাগাদ ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।বুধবার (৯ জুলাই) রাতে অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে দমকা হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে বৃষ্টিসহ বজ্রপাত হতে পারে। এসব অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।এছাড়া ভারি বর্ষণজনিত সতর্ক বার্তায় জানানো হয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে। এতে চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস এবং ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রামের কিছু নগর এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে।আন্তর্জাতিক পূর্বাভাসের সূত্র ধরে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, বুধবার বিকেল ৪টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশালের ভোলা ও পটুয়াখালী, চট্টগ্রামের নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।তিনি তার সামাজিক মাধ্যম পোস্টে জানান, এসব এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ভোরের আকাশ/হ.র