সংগৃহীত ছবি
পবিত্র হজ সম্পন্ন করে দেশে ফিরেছেন ৮২ হাজারের বেশি বাংলাদেশি। মোট ২১৫টি ফ্লাইটে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন তারা। অন্যদিকে চলতি বছর হজে গিয়ে এ পর্যন্ত ৪৪ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। হজ পালনকালে বিভিন্ন সময়ে মক্কা, মদিনা, জেদ্দা ও আরাফায় মারা যান তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এয়ারলাইন্স, সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা ও সৌদি আরবের সূত্রে হজ বুলেটিনের আইটি হেল্প ডেস্ক জানিয়েছে, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা নাগাদ দেশে প্রত্যাবর্তনকারী হাজির সংখ্যা ৮২ হাজার ৪১৬ জন। এরমধ্যে সরকারি মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন ৫ হাজার ৮৭ জন। এছাড়া বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও ৭৭ হাজার ৩২৯ জন হাজি দেশে ফিরেছেন।
অন্যদিকে দেশে ফেরা হজের ২১৫টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে ৩৬ হাজার ৮৩৩ জন, সৌদি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে ২৭ হাজার ৮১ এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন ১২ হাজার ১৬৯ জন বাংলাদেশি।
এদিকে, চলতি বছর হজ পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত মোট ৪৪ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৩৩ জন পুরুষ ও ১১ জন নারী। এরমধ্যে ২৬ জন মক্কায়, ১৪ জন মদিনায়, ৩ জন জেদ্দায় এবং একজন আরাফায় মারা যান।
উল্লেখ্য, হজযাত্রা শুরু হয় ২৯ এপ্রিল থেকে এবং শেষ ফ্লাইটটি সৌদি আরবের উদ্দেশে যায় ৩১ মে। এবারের হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন। ফিরতি হজ ফ্লাইট চলবে আজ ১০ জুলাই পর্যন্ত।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
নারীর সৃষ্টি নিয়ে অনেকেই একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দেন। যেখানে বলা হয়েছে, নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে বাঁকা পাঁজর থেকে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি নারীর প্রতি একধরনের অবমূল্যায়ন। কিন্তু আসলেই কি তাই? প্রকৃতপক্ষে এই হাদিসটি অবমাননা নয়, বরং দয়ার বার্তা। নবী করিম (সা.) নারী সম্পর্কে পুরুষদের উদ্দেশে এক চমৎকার শিক্ষা দিয়েছেন—নারীদের প্রতি সদয় আচরণ করো।আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন— আমি তোমাদের নারীদের বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি। তাদের প্রতি সদয় হও, কারণ নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজর থেকে। আর পাঁজরের সবচেয়ে বাঁকা অংশ হলো এর উপরের দিক। যদি সেটাকে সোজা করতে চাও, তবে তা ভেঙে যাবে। আর যেমন আছে তেমনি রাখলে তা বাঁকাই থাকবে। সুতরাং নারীদের প্রতি সদয় আচরণ করো। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)এই বাণীটি শুরু ও শেষ দুটোই একই উপদেশে— নারীদের প্রতি সদয় হও। এটি অপমান নয়, বরং করুণা ও সহানুভূতির নির্দেশনা।বাঁকা পাঁজরের উপমা কেন?নবী (সা.) নারীদের ‘বাঁকা পাঁজর থেকে সৃষ্টি’ বলে বোঝাতে চেয়েছেন—তাদের স্বভাব পুরুষের তুলনায় কোমল ও ভিন্ন। পাঁজর যেমন প্রাকৃতিকভাবে বাঁকা, সেটাই তার পূর্ণতা। কেউ যদি তা জোর করে সোজা করতে চায়, তবে সেটি ভেঙে যাবে। একইভাবে, নারীর স্বভাবকে জোর করে বদলাতে গেলে সম্পর্ক ভেঙে যায়।অর্থাৎ, নারীর কোমলতা ও ভিন্ন স্বভাবই তার সৌন্দর্য ও পূর্ণতা।মহানবীর দৃষ্টিতে নারীপবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘নিশ্চয় আমি তোমাদের কোন পুরুষ অথবা মহিলা আমলকারীর আমল নষ্ট করব না। তোমাদের একে অপরের অংশ। (সুরা আল ইমরান, আয়াত : ১৯৫) তিনি নারীদের দুর্বল নয়, বরং সংবেদনশীল ও আবেগপ্রবণ সত্তা হিসেবে বর্ণনা করেছেন—তাদের যত্ন ও কোমল ব্যবহারের প্রয়োজন।আরেক হাদিসে তিনি বলেছেন, নারীদের সঙ্গে কাঁচের পাত্রের মতো আচরণ করো। (সহিহ বুখারি) অর্থাৎ, নারীরা নাজুক, তাই তাদের সঙ্গে আচরণে সতর্কতা ও মমতা থাকা চাই।পারস্পরিক পরিপূরক সম্পর্কইসলাম পুরুষ ও নারীকে প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং ‘পরিপূরক সত্তা’ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। পুরুষ রক্ষক, নারী রক্ষণশীল ও লালনকারী। একে অপরের দায়িত্ব ও মর্যাদা ভিন্ন হলেও, উভয়েই সমাজ গঠনের অপরিহার্য অংশ।যেমন পাঁজর বুকের ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সুরক্ষা দেয়, তেমনি নারী তার পরিবার ও সন্তানদের ভালোবাসা ও যত্নে আগলে রাখে।‘বাঁকা পাঁজর’ বলাটা নারীর অপমান নয়—বরং তার স্বাভাবিক কোমলতা ও সংবেদনশীলতার প্রতীক। নবী করিম (সা.) পুরুষদের শিখিয়েছেন, নারীর স্বভাব পরিবর্তন নয়, বরং তাকে বুঝে, শ্রদ্ধা করে ও মমতা দিয়ে পাশে রাখতে হবে।এটাই ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ ও মানবিক শিক্ষা—যেখানে করুণা, বোঝাপড়া ও সম্মানই নারী-পুরুষ সম্পর্কের মূল ভিত্তি।ভোরের আকাশ/তা.কা
গাজায় ইসরায়েলের টানা দুই বছরের আগ্রাসনে শুধু সাধারণ মানুষই নয়, নিশানা হয়েছেন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরাও। ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এ সময় ২৫০ জন ইমাম, খতিব ও ধর্মীয় নেতা নিহত হয়েছেন। ধ্বংস করা হয়েছে ৮৩৫টি মসজিদ, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১৮০টি মসজিদ। হামলার বাইরে থাকেনি খ্রিস্টান উপাসনালয়ও।গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের পরিচালক ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা জানান, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনি সমাজের আত্মিক ও নৈতিক কাঠামো ধ্বংসের চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য তারা ধর্মীয় নেতাদের টার্গেট করছে, মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস করছে এবং সাধারণ নাগরিক স্থাপনাগুলোতে নির্বিচারে বোমা ফেলছে।তিনি বলেন, “ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা জাতির নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শক্তির প্রতীক। ইসরায়েল তাদের হত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস করতে চাইছে।”তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ফিলিস্তিনের সাবেক ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ও আল-আকসা মসজিদের খতিব ইউসুফ সালামা। এছাড়া গাজার বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা ওয়ায়েল আজ-জারদ এবং কোরআন শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ওয়ালিদ আওয়াইদাও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।গাজার বিভিন্ন গির্জাতেও একাধিকবার বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত এসব গির্জায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ২০ জন খ্রিস্টান নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গির্জাগুলোর মধ্যে রয়েছে—ঐতিহাসিক সেন্ট পারফিরিয়াস (রোমান অর্থডক্স), হোলি ফ্যামিলি চার্চ (ক্যাথলিক) ও ব্যাপটিস্ট ইভানজেলিকাল চার্চ।ইসমাইল আস-সাওয়াবিতা বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও নেতাদের ওপর এই হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানবিক আইনের চরম লঙ্ঘন। এটি স্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধ ও ধর্মীয় নিপীড়নের শামিল।২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ এখন এক নির্মম গণহত্যায় পরিণত হয়েছে। গাজার সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজার ১৩৯ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন—যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। খাদ্য ও ওষুধ সংকটে প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৪৬০ জন, এদের মধ্যে ১৫৪ জন শিশু।ধ্বংসস্তূপের মাঝেও গাজার মানুষ থেমে নেই। বেঁচে থাকা ইমামরা এখনো ভাঙা মিনারে দাঁড়িয়ে আজান দিচ্ছেন, উচ্চারণ করছেন—“আল্লাহু আকবার”।সূত্র : আল জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সিভোরের আকাশ//হর
মানুষের জীবনে আল্লাহর রহমত লাভ করা এক মহাসৌভাগ্যের বিষয়। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে—যারা নামাজ কায়েম করে, যাকাত আদায় করে এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য করে, তাদের ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়।আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, “আর তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসুলের আনুগত্য কর, যাতে তোমাদের ওপর রহমত করা হয়।”(সুরা নূর, আয়াত: ৫৬)নামাজ কায়েমের গুরুত্ব:নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর একটি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “কেয়ামতের দিনে বান্দার যে আমলের হিসাব সবার আগে নেওয়া হবে, তা হলো নামাজ। যদি নামাজ সঠিক হয়, তাহলে সে সফল হবে; আর যদি ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ হবে।”(আবু দাউদ, হাদিস: ৮৬৪)অন্য এক হাদিসে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন জামাতে নামাজ আদায় করবে এবং প্রথম তাকবির পাবে, তার জন্য দুইটি মুক্তিপত্র লেখা হবে—একটি জাহান্নাম থেকে মুক্তির, অন্যটি নেফাক (কপটতা) থেকে মুক্তির।”(তিরমিজি, হাদিস: ২৪১)যাকাত প্রদানের ফজিলত:যাকাত শুধু আর্থিক লেনদেন নয়, বরং এটি সমাজে সাম্য ও সহানুভূতির প্রতীক। যাকাত আদায় না করলে এর কঠিন পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.), “যে ব্যক্তি সোনা-রুপার জাকাত আদায় করে না, কিয়ামতের দিন তার সম্পদ জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত হয়ে তাকে দগ্ধ করবে। যতক্ষণ না জান্নাত বা জাহান্নামের ফয়সালা হয়, ততক্ষণ এই শাস্তি চলতে থাকবে।(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯৮৭)রাসুল (সা.)-এর আনুগত্য:আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, “তোমরা আল্লাহ ও তাঁর উম্মী নবী রাসুলের প্রতি ঈমান আনো, যিনি আল্লাহ ও তাঁর বাণীতে বিশ্বাস রাখেন। আর তোমরা তাঁর অনুসরণ কর, যাতে তোমরা সঠিক পথপ্রাপ্ত হও।”(সুরা আল-আরাফ, আয়াত: ১৫৮)এই তিনটি আমল পালন করলে আল্লাহর রহমত ও সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব—এ কথা কোরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত।ভোরের আকাশ//হ.র
মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চরের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০২৬ সালে রমজান মাস শুরু হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে। সেই হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অথবা ২০ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) থেকে শুরু হতে পারে রোজা।আমিরাতের জ্যোতির্বিদ্যা সংস্থা এমিরেত অ্যাস্ট্রেনমি সোসাইটির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান গালফ নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ২০২৬ সালের রমজান মাসের চাঁদের জন্ম হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১ মিনিটে এবং সেটি আকাশে চোখে পড়বে ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়। তবে সূর্যাস্তের পর মাত্র এক মিনিট আকাশে দেখা যাবে সেই চাঁদ।আল জারওয়ান আরও বলেছেন, এবারের রমজানের প্রথম দিকে আমিরাতের বাসিন্দাদের জন্য সেহেরি থেকে ইফতার শুরু পর্যন্ত সময়ের ব্যপ্তি হবে ১২ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট এবং মাসের শেষের দিকে এই সময়সীমা পৌঁছাবে ১৩ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে। তিনি আরও বলেছেন, রমজানের শুরুর দিকে আমিরাতের তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করবে, আর শেষের দিকে তাপমাত্রা থাকবে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।প্রসঙ্গত, রোজা বা সিয়াম ইসলাম ধর্মের তৃতীয় স্থম্ভ। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রমজান মাসে প্রতিদিন সূর্যোদয়ের আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানি ও খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা; রাতে এশার নামাজের পড়ে পড়েন তারাবিহ নামাজ।এক মাস পর শাওয়াল মাসের এক তারিখ ঈদুল ফিতর উদযাপনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা।ভোরের আকাশ/তা.কা