আজ চাঁদ উঠলে সৌদি আরবে কাল ঈদ
পবিত্র রমজান মাস শেষ হয়ে আসছে। এরপরই চাঁদ দেখা সাপেক্ষে মুসলিম বিশ্ব উদ্যাপন করবে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
শনিবার (২৯ মার্চ) পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ অনুসন্ধান করবেন সৌদির নাগরিকরা। এদিন দেশটিতে ১৪৪৬ হিজরি সনের ২৯ রমজান। খবর গালফ নিউজের। সন্ধ্যায় যদি আজ চাঁদ দেখা না যায়, তবে আরও একদিন রোজা রাখার সুযোগ পাবেন দেশটির মুসলমানরা।
সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট গত বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানান, যদি কেউ খালি চোখে বা দূরবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে চাঁদ দেখতে পান, তবে তা যেন নিকটস্থ আদালত বা রেজিস্ট্রারে অবগত করেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন হাজিরা। হজ পালন করতে গিয়ে সোমবার (১৬ জুন) পর্যন্ত ৩২ জন হাজির মৃত্যু হয়েছে।যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে মক্কায় মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের, মদিনায় ১০ জন ও আরাফায় ১ জন। এর মধ্যে সোমবার (১৬ জুন) বেগম সামছুন্নাহার (৭৬) ও মোজাহিদ আলী (৫১) নামে দুই হাজি মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের মৃত্যু সংবাদে এসব তথ্য জানা গেছে। হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের তথ্য মতে, এ বছর হজে গিয়ে গত ২৯ এপ্রিল প্রথম মারা যান রাজবাড়ীর পাংশার মো. খলিলুর রহমান (৭০)। এরপর ২ মে মারা যান কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মো. ফরিদুজ্জামান (৫৭), ৫ মে মারা যান পঞ্চগড় সদরের আল হামিদা বানু (৫৮), ৭ মে মারা যান ঢাকার মোহাম্মদপুরের মো. শাহজাহান কবির (৬০) এবং ৯ মে মারা যান জামালপুরের বকশিগঞ্জের হাফেজ উদ্দিন (৭৩), ১০ মে মারা যান নীলফামারী সদরের বয়েজ উদ্দিন (৭২), ১৪ মে মারা যান চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের মো. অহিদুর রহমান (৭২), ১৭ মে মারা যান গাজীপুর সদরের মো. জয়নাল হোসেন (৬১) এবং ১৯ মে মারা যান চাঁদপুরের মতলবের আ. হান্নান মোল্লা (৬৩) ও ২৪ মে রংপুরের পীরগঞ্জের মো. সাহেব উদ্দিন।এছাড়া ২৫ মে মারা গেছেন চাঁদপুরের কচুয়ার বশির হোসাইন (৭৪), ২৭ মে মারা যান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের শাহাদাত হোসেন, ২৯ মে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মো. মোস্তাফিজুর রহমান(৫৩), একই দিন মাদারীপুর সদরের মোজলেম হাওলাদার (৬৩), গাজীপুরের টঙ্গীর পূর্ব থানার আবুল কালাম আজাদ (৬২), গত ১ জুন মারা যান, গাজীপুরের পুবাইলের মো. মফিজ উদ্দিন দেওয়ান (৬০) ও নীলফামারীর সৈয়দপুরের মো. জাহিদুল ইসলাম (৫৯), ৫ জুন মারা যান ঢাকার কেরানীগঞ্জের মনোয়ারা বেগম মুনিয়া, ৬ জুন খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকার শেখ মো. ইমারুল ইসলাম, ৭ জুন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির মো. মুজিব উল্যা, ৯ জুন মারা যান গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের এ টি এম খায়রুল বাসার মন্ডল, ১০ জুন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার গোলাম মোস্তফা, ১২ জুন লালমনিরহাট পাটগ্রামের আমির হামজা, ময়মনসিংহের কোতয়ালি এলাকার মো. মনিরুজ্জামান (৬৬) ও নোয়াখালীর চাটখিল এলাকার খাতিজা বেগম (৪১)। ১৪ জুন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার রোকেয়া বেগম (৬২) ও যশোরের মনিরামপুর এলাকার মনজুয়ারা বেগম (৫৯)। ১৬ জুন ঢাকার রামপুরার মোজাহিদ আলী (৫১) ও কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বেগম সামছুন্নাহার (৭৬)।হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর শেষ ফ্লাইট ৩১ মে। প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় ১০ জুন এবং শেষ হবে ১০ জুলাই।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের কারণে সৌদি আরবে আটকা পড়েছেন ইরানের হাজিরা। উত্তেজনার ফলে ইরানের আকাশসীমায় বিমান চলাচল বন্ধ করেছে দেশটি। বিকল্প হিসেবে সড়ক পথে নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন ইরানের হাজিরা।রোববার (১৫ জুন) ইরানি হাজিদের প্রথম কাফেলা সৌদি আরব ত্যাগ করেছেন। তারা সৌদির উত্তরাঞ্চলের ‘জাদিদাত আরআর’ নামক স্থল সীমান্ত দিয়ে ইরানে ফিরতে শুরু করেছেন।ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার ফলে ইরানের আকাশসীমায় বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই বিকল্প সড়ক পথে দেশে ফিরছেন ইরানি হাজিরা।সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় ইরানি হাজিদের সৌদি ত্যাগের প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের ওপর নজরদারি করছে। প্রায় ৭৬ হাজার ইরানি হজযাত্রীর জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি বিশেষ পরিকল্পনা, যার আওতায় মক্কা ও মদিনা থেকে তাদের আঞ্চলিক বিমানবন্দর আরআর-এ নেওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে তারা সড়কপথে নিজ দেশে ফিরছেন।এই পুরো প্রক্রিয়া তদারকির জন্য সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ অপারেশন রুম গঠন করেছে। তারা হাজিদের সার্বক্ষণিক সেবা ও সহায়তা নিশ্চিত করছে যতক্ষণ না তারা নিরাপদে সৌদি ত্যাগ করছেন।এই পদক্ষেপ সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের নির্দেশনায় এবং যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের উপস্থাপনার ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে। ইরানে চলমান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে হাজিদের সুরক্ষা ও চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করতে সৌদি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।সূত্র : আল আরাবিয়াভোরের আকাশ//হ.র
হজ ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি। একজন মুসলমানের জীবনে হজের সফর কেবলমাত্র একটি ভ্রমণ নয়—বরং আত্মিক, নৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের এক মহাসুযোগ। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন, ‘আর মানুষের কাছে হজের ঘোষণা করে দিন, তারা আপনার কাছে আসবে... যাতে তারা তাদের জন্য নির্ধারিত কল্যাণ প্রত্যক্ষ করতে পারে।’ (সুরা হজ: ২৭-২৮)।হজ পালন শেষে হাজিদের জীবন কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়ে আলোচনায় ইসলামic পণ্ডিত ও ধর্মবিশারদরা তুলে ধরেছেন কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক। আসুন জেনে নিই হজ-পরবর্তী জীবন কীভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত:নবজাতকের মতো পাপমুক্ত জীবনবুখারি ও মুসলিম শরিফে বর্ণিত, হজের মাধ্যমে হাজিরা ফিরেন মা–এর গর্ভ থেকে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে। এ অর্জনকে ধরে রাখতে দরকার পাপ ও অপকর্ম থেকে দূরে থাকা।জান্নাতের আশ্বাসরাসুল (সা.) বলেছেন, “যে হজ মাকবুল হয়, তার একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত” (বুখারি: ১৭৭৩)। অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শুদ্ধ মনে হজ পালনকারী জান্নাতের উপযুক্ত হন।অফুরন্ত সওয়াবের ভাণ্ডারহজের প্রতিটি কাজ—তওয়াফ, সাঈ, আরাফাতে অবস্থান, হজরে আসওয়াদ স্পর্শ, এমনকি প্রতিটি কদমেও রয়েছে আলাদা সওয়াব। এমনকি জমজম পানির মধ্যেও রয়েছে শিফা।আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সংযমের প্রশিক্ষণইহরামের সময় অনেক বৈধ কাজ থেকেও বিরত থাকতে হয়, যা আত্মনিয়ন্ত্রণের বাস্তব অনুশীলন। এ অভ্যাস হজ-পরবর্তী জীবনেও সহায়ক হতে পারে দুনিয়ার মোহ কাটিয়ে পরকালমুখী হতে।মৃত্যুর প্রস্তুতির মানসিকতাহজের সময় কাফনের মতো সাদা ইহরাম পরিধান করা মানুষকে মনে করিয়ে দেয় মৃত্যু ও আল্লাহর দরবারে উপস্থিতির প্রস্তুতি নিতে।হজ-পরবর্তী জীবনে করণীয়🔸পাপ ও অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকাকোরআনে বলা হয়েছে, ‘হজের সময় ও পরে গালাগালি, পাপ ও কলহ থেকে বিরত থাকো।’ (বাকারা: ১৯৭)🔸আল্লাহর জিকির ও কৃতজ্ঞতাহজে ফিরে বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। কোরআন বলে, ‘হজ শেষে আল্লাহকে স্মরণ করো, যেমনিভাবে বাবা-দাদাকে স্মরণ করো—বরং আরও বেশি।’ (বাকারা: ২০০)🔸প্রদর্শনেচ্ছা পরিহারকেউ কেউ হজ করে ফেরার পর নামের সঙ্গে ‘হাজি’ যুক্ত করে তা ফলাও করে জানাতে চান। অথচ রাসুল (সা.) বলেন, “হে আল্লাহ! এ এমন হজ, যাতে নেই কোনো প্রদর্শনেচ্ছা।” (ইবন মাজাহ: ২৮৯০)🔸আখেরাতমুখী জীবনধারা গড়ে তোলাহজ কবুলের আলামত হলো, দুনিয়াবিমুখ হয়ে আখেরাতের প্রতি আগ্রহী হওয়া। আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা বুকে লালন করা।🔸পাপ থেকে ফিরে আসা ও জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনাইমাম গাজালি (রহ.) বলেন, হজের পর হাজি যদি তার আগের পাপপরায়ণ জীবন ত্যাগ করেন, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করে সৎ সঙ্গ গ্রহণ করেন, গানবাজনা ছাড়েন এবং দ্বিনি মজলিসে শরিক হতে শুরু করেন, তবে তা হজ কবুলের একটি লক্ষণ।উপসংহারহজ যেন কেবল স্মৃতি না হয়, বরং জীবনের গতিধারায় স্থায়ী প্রভাব ফেলে, সেটাই ইসলামের দাবি। যে হজ মানুষকে আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যায়, সে হজের প্রতিফলন হাজির জীবনেও ফুটে উঠা উচিত—ভাষা, আচার, পোশাক, বন্ধুবান্ধব, সমাজ ও আত্মিক আচরণে। শুধু তখনই হজ হবে বাস্তব অর্থে মাকবুল হজ।ভোরের আকাশ//হ.র
হজ শেষে দেশে আসা হাজির সংখ্যা ২০ হাজার ৫০০ জন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে আসা হাজির সংখ্যা ২ হাজার ৯২৪ জন। বেসরকারি মাধ্যমে আসা হাজির সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৭৬ জন। শনিবার (১৪ জুন) হজ বুলেটিন থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ফেরা হাজিদের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ৬ হাজার ২০৭ জন। এছাড়া সৌদি এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ৭ হাজার ৮৭৩ জন এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিবহন করেছে ৬ হাজার ৪২০ জন। এখন পর্যন্ত মোট ফিরতি ফ্লাইট সংখ্যা ৫২টি। এরমধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ১৬টি। আর সৌদি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করেছে ১৬টি।এদিকে বাংলাদেশ থেকে হজ করতে গিয়ে সৌদিতে এখন পর্যন্ত মারা ২৯ জন। গত শুক্রবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ২৭। শনিবার (১৪ জুন) আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে পুরুষ ২৫ এবং নারী ৪ জন।প্রসঙ্গত, এবছর হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ছিল ৩১ মে। ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে ফিরতি হজের ফ্লাইট। বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৮৭ হাজার ১৫৭ জন হজ পালন করেছেন।ভোরের আকাশ/জাআ