ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ০৬:৩২ এএম
জিলহজ মাসে চুল ও নখ কাটা নিয়ে করণীয়—জানুন ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গি
কোরবানির সময় ঘনিয়ে এলে মুসলমানদের জন্য কিছু শরিয়তসম্মত নির্দেশনা মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রসঙ্গ হচ্ছে-জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনে চুল ও নখ না কাটা। অনেকেই এটিকে নিষিদ্ধ বা হারাম মনে করলেও, ইসলামি স্কলাররা স্পষ্ট করেছেন যে, এটি পুরোপুরি হারাম নয়; বরং এটি একটি সুন্নতি আমল, যা পালন করা প্রশংসনীয়।
কী বলেছেন হাদিসে?
সহিহ মুসলিম শরিফে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—
"তোমাদের কেউ যদি কোরবানি দেওয়ার ইচ্ছা করে, তবে সে যেন জিলহজ মাস শুরু হওয়ার পর চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।"
এই হাদিসের আলোকে ইসলামি ফিকাহবিদরা মত দিয়েছেন, যারা কোরবানি দেওয়ার নিয়ত করেছেন, তাদের জন্য জিলহজের প্রথম দশদিন চুল ও নখ না কাটা উত্তম।
মতভেদ থাকলেও, সুন্নতের গুরুত্ব অপরিসীম
ইমাম মালিক (রহ.), ইমাম আহমদ (রহ.) এবং ইমাম শাফি (রহ.)—তিন মাজহাবেই এই আমলকে গুরুত্ব সহকারে পালনীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে হানাফি মাজহাবের মতে, এটি ‘সুন্নতে মুয়াক্কাদা’, অর্থাৎ পালন করলে সওয়াব আছে, না করলেও গুনাহ হবে না।
কী করবেন এই সময়ে?
জিলহজের প্রথম দশ দিন বেশি বেশি নেক আমল করুন
রোজা রাখুন, বিশেষ করে আরাফাহ দিবসে
তাসবিহ, তাহলিল, তাহমিদ পাঠ করুন
কোরবানির প্রস্তুতি নিন
চুল ও নখ না কাটার সুন্নত মানার চেষ্টা করুন
গুনাহ ও অহেতুক কাজে সময় নষ্ট এড়িয়ে চলুন
কোরবানি সম্পন্ন হওয়ার পর আবার চুল ও নখ কাটা স্বাভাবিকভাবে করা যাবে, এতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
অনেকে বলেন, এই সময়ের চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকা আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের প্রকাশ, যা কোরবানির পশুর অঙ্গ বিসর্জনের মতোই একটি আত্মোৎসর্গের প্রতীক।
সারসংক্ষেপে, এটি এমন একটি আমল যা কোরবানির আত্মিক তাৎপর্যকে বাড়িয়ে তোলে। তাই ইচ্ছা থাকলে এই সুন্নত পালন করে আত্মিক প্রশান্তি অর্জন করাই উত্তম।
ভোরের আকাশ//হ.র