বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দুই ব্যক্তি–যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তকমা পাওয়া ইলন মাস্কের বিরোধ এখন প্রকাশ্য। অথচ কয়েকদিন আগেও তাদের 'বন্ধুত্ব' ছিল আলোচনার বিষয়। তাদের মধ্যে বাড়তে থাকা দূরত্বের গুঞ্জন মুহূর্তেই 'বাগযুদ্ধ' হিসেবে সবার সামনে আবির্ভূত হয়েছে। এরইমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে ইলন মাস্কের সঙ্গে তার সম্পর্ক শেষ হয়েছে। রোববার (৮ জুন) বিবিসির অনলাইন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চান কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ‘না’ বলে দেন। এই মন্তব্য সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে মাস্কের সঙ্গে তার প্রকাশ্য বিরোধের সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ। মূলত প্রেসিডেন্টের কর ও ব্যয় সংক্রান্ত একটি বিলের প্রকাশ্য সমালোচনার পর এই প্রযুক্তি বিষয়ক ধনকুবেরের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। রিপাবলিকানরা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে এই বিলটি পাস করানোর পর এটি এখন সেনেটে রয়েছে।এর আগে মাস্ক ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছিলেন এবং পরে হোয়াইট হাউসে কাজ করার সুযোগ পান। কিন্তু সম্প্রতি মাস্ক ওই বিলের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এটি জাতীয় বাজেটে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি যোগ করবে। তিনি ১২৯ দিন সরকারের দক্ষতা বিভাগে কাজ করার পর তা ছেড়ে দেন।ট্রাম্প সম্প্রতি মাস্কের আচরণে 'হতাশ' বলে মন্তব্য করেন। এর জবাবে মাস্ক তাঁর সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বলেন, তিনি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে হারতেন। একই সঙ্গে তিনি প্রয়াত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টাইন সম্পর্কিত অপ্রকাশিত ফাইলগুলোতে ট্রাম্পের নাম থাকার ইঙ্গিত দেন। যদিও পরে তিনি পোস্টগুলো মুছে ফেলেন এবং এপস্টাইনের আইনজীবীরাও অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।এরপর ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন যে মাস্ক 'পাগল' হয়ে গেছেন এবং ফেডারেল সরকারের সঙ্গে মাস্কের চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন। ট্রাম্প আরও বলেন, মাস্ক 'প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রতি অসম্মানজনক' আচরণ করেছেন।ইলন মাস্ক বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি এবং ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারে প্রায় আড়াইশো মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিলেন। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তিনি কয়েকজন ট্রাম্প বিরোধীকে সমর্থন জানাতে পারেন। ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, মাস্ক ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে সমর্থন দিলে 'মারাত্মক পরিণতির' মুখে পড়বেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
০৮ জুন ২০২৫ ১২:১৩ পিএম
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনের দাবিতে সমর্থন ইলনের
শীর্ষস্থানীয় ধনী প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনের দাবি সমর্থন করেছেন।এক সময়ের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের মধ্যে চলমান কথার যুদ্ধে এটিই সর্বশেষ আঘাত।‘প্রেসিডেন্ট বনাম ইলন। কে জিতবে? আমি বাজি ধরছি ইলনের পক্ষে। ট্রাম্পকে অভিশংসন করা উচিত এবং জেডি ভ্যান্সকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা উচিত,’ বৃহস্পতিবার দুপুরে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একটি পোস্টে মন্তব্য করেন মালয়েশিয়াভিত্তিক ডানপন্থী লেখক ইয়ান মাইলস চিওং। প্রায় ২০ মিনিট পর চিওংয়ের ওই পোস্টের জবাবে মাস্ক শুধু লেখেন, ‘হ্যাঁ’।বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও মাস্কের সম্পর্ক হঠাৎ করেই জনসমক্ষে চলে আসে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্জের সঙ্গে ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, মাস্কের আচরণে তিনি ‘খুবই বিস্মিত ও হতাশ।’জবাবে মাস্ক সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেন, প্রেসিডেন্টের ২০২৪ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ের পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল। পাশাপাশি তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে অভিযোগ করেন, যৌন অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ধনকুবের জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ট্রাম্পের।মাস্ক লিখেছেন, ‘এবার বড় বোমা ফেলার সময়। ট্রাম্প এপস্টাইনের নথিতে আছেন। এটাই আসল কারণ যে, এই নথিগুলো এখনও প্রকাশ করা হয়নি।’পরে এক্স পোস্টে মাস্ক আরও লেখেন, ‘এই পোস্টটি মনে রাখুন। সত্য একদিন প্রকাশ পাবে।’মাস্কের ‘এপস্টাইন ফাইল’ দাবি প্রসঙ্গে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথম প্রতিক্রিয়ায় হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ‘বড়, সুন্দর বিল’ এর প্রশংসা করেন এবং ইঙ্গিত দেন, মাস্কের আরও আগেই তার বিরোধিতা করা উচিত ছিল।‘ইলন যদি আমার বিরোধিতা করে, তাতে আমার আপত্তি নেই। তবে সেটা মাসখানেক আগেই করা উচিত ছিল। এটি কংগ্রেসে উত্থাপিত অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিল। এতে ব্যয় ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার কমানো হয়েছে এবং ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। যদি এই বিল পাস না হয়, কর ৬৮ শতাংশ বাড়বে এবং আরও খারাপ পরিস্থিতি হবে। আমি এই বিশৃঙ্খলা তৈরি করিনি, আমি এটি ঠিক করতে এসেছি। এই বিল আমাদের দেশকে মহত্মের পথে এগিয়ে নেবে। মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন।’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাস্ক ও চিওংয়ের পোস্টের জবাবে হোয়াইট হাউস একটি বিবৃতিতে এসব কথা বলে।‘এটি ইলনের দুঃখজনক এক আচরণ, যিনি একটি বড়, সুন্দর বিলে নিজের পছন্দমতো নীতি না থাকায় অসন্তুষ্ট। প্রেসিডেন্ট এখন এই ঐতিহাসিক আইন পাস করানো এবং দেশকে আবার মহৎ করে তোলার দিকেই মনোযোগী’ এক বিবৃতিতে বলেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট।ভোরের আকাশ/জাআ