ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীসহ সারা দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে মাছের দামও ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। চাল-ডাল, শাক-সবজির দাম আগেই বাড়তি, তার ওপর চড়া দামে বিক্রি হওয়া মাছ-মাংসের দামে যেন আরও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কাঁচাবাজার আরও অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে।
এরমধ্যে ভরা মৌসুমেও ইলিশের সরবরাহ কম, দাম তাই আকাশচুম্বী। এরমধ্যে আরও বেড়েছে মুরগির দাম। চালের বাজারও যথারীতি চড়া।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু-পেঁপে ছাড়া ৮০ টাকার নিচে বাজারে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় সীমিত আয়ের মানুষ এখন আলু ও পেঁপের দিকেই ঝুঁকছেন। এ ছাড়াও পেঁয়াজের দাম এখনও কমছে না। পেঁয়াজ-রসুন, আদা-হলুদের মতো মসলাজাতীয় পণ্যের দামও ক্রমেই বাড়ছে।
সরেজমিনে শুক্রবার সকালে রাজধানীর মুগদা কাঁচাবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজার, শান্তিনগর, সেগুন বাগিচা কাঁচা বাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, সবজির দামে অস্থিরতা আরও বেড়েছে। আলু, পেঁপে ছাড়া ৮০ টাকার নিচে সবজি বাজারে খুঁজে পাওয়া কষ্টকর।
বাজারে নতুন গোলাকৃতির বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকা কেজি দরে। ঝিঙ্গা, পটল, ঢ্যাঁড়স ৮০-৮৫ টাকার আশেপাশে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়াও, বরবটি, করলা, চিচিঙ্গা, কচুর লতি বাজারভেদে দাম ১০০-১২০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি লাউ কিনতে হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি, রসুন কেজি প্রতি ১৬০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মুগদা বাজারে সবজি কিনতে আসা রিকশাচালক আবদুল হামিদ অভিযোগ করে বলেন, এক কেজি বেগুন কিনতে ১২০ টাকা লাগে। শাকপাতা নিতেও ৮০ টাকার নিচে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। আমরা গরিব মানুষ কীভাবে কী কিনে রান্না করে খাব? একমাত্র আলু আর পেঁপে ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নাই।
গত এক সপ্তাহে সামুদ্রিক ও খাল-নদীর বেশ কয়েকটি মাছের দাম কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। সুপারশপগুলোতেও চড়া দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, আজকের বাজারে কোরাল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়, আইড় ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। চিংড়ি (বাগদা ও গলদা) আকারভেদে ৭৫০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট চিংড়ির দাম কেজিপ্রতি প্রায় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা।
এ ছাড়া খাল-নদী ও চাষের মাছের মধ্যে রুই ও কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট আকারের পাবদা ৪০০ টাকা, মাঝারি সাইজের ৫০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৬০০-৭০০ টাকা, পুঁটি ২০০-২৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩০০-৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০-৩০০ টাকা, নাইলোটিকা ২২০-২৮০ টাকা, কৈ ২০০-২২০ টাকা এবং পাঙাস ও সিলভার কার্প ২৫০–২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম ১০-২০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৭০-১৮০ টাকা। এদিন রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
দেশের শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য বছরের সেরা ব্যবসায় উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের সম্মাননা পেল বাংলাদেশের সুপারব্র্যান্ড ও টেক জায়ান্ট ওয়ালটন। প্রতিষ্ঠানটি অর্জন করেছে ডিএইচএল-দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ডের ‘বেস্ট এন্টারপ্রাইজ অব দ্য ইয়ার ২০২৪’ সম্মাননা।মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে এক জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এ বছর পাঁচটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো-বর্ষসেরা ব্যবসায়ী, বর্ষসেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ষসেরা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় অসামান্য কৃতিত্ব অর্জনকারী নারী এবং আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।বর্ষসেরা ব্যবসায়ী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, বর্ষসেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাসরুর আরেফিন, বর্ষসেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম, ব্যবসায় অসামান্য কৃতিত্ব অর্জনকারী নারী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন শেয়ারট্রিপ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া হক এবং আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এসিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলাকে।অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে এবারের আয়োজনের মূলমন্ত্র ছিল 'পাওয়ারিং দ্য প্রাইভেট সেক্টর'। দেশের ব্যবসা খাতের সফলদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিএইচএল ও দ্য ডেইলি স্টার ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতীয় সঞ্চয়পত্রের প্রধান স্কিমগুলোর মুনাফার হার কমিয়ে ইতোমধ্যে একটি পরিপত্র জারি করেছে সরকার। বাংলাদেশে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকেই সঞ্চয়পত্র কিনে থাকেন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারগুলোর আয়ের একটি অংশ আসে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে। চাকরিজীবীদের অনেকেই অবসরে যাওয়ার পর পেনশনের টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে থাকেন। এবার সঞ্চয়পত্র কেনাবেচার আলাদা বাজার তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, সঞ্চয়পত্র এখন বাজারের সঙ্গে আংশিক যুক্ত। কিন্তু এটিকে পুরোপুরি লেনদেনযোগ্য করতে হবে। এতে গ্রাহকেরাও উপকৃত হবেন এবং সেকেন্ডারি মার্কেট তৈরি হবে, বাড়বে তারল্য। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এটি সম্ভব।সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বন্ড ও সুকুক মার্কেটের সম্ভাবনা নিয়ে বিএসইসি ও ডিএসই আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন গভর্নর।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বেসরকারি বন্ডও কেনাবেচার আলাদা বাজার করার পরামর্শ দেন গভর্নর।তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ সরকারি বন্ড কিনতে পারছে; এই বিষয়টিও ইতিবাচক। এখন বেসরকারি বন্ডও লেনদেনযোগ্য করতে হবে ও সঠিক কাঠামোর আওতায় আনতে হবে। এতে রাতারাতি বন্ড মার্কেট দ্বিগুণ হয়ে যাবে এবং বাজার অনেক প্রাণবন্ত হবে।আহসান এইচ মনসুর বলেন, বন্ড কেনার ক্ষেত্রে সরকারের পেনশন ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের উৎস হতে পারে। এ ছাড়া করপোরেট পেনশন ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেনেভোলেন্ট ফান্ড—এসবকেও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব। সরকার চাইলে এসব বিষয়ে খুব দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। সে জন্য পেনশন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দরকার। সব প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে তহবিল গড়ে তুলছে, এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।সেমিনারে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক কাঠামো বৈশ্বিক অর্থনীতির তুলনায় আলাদা। এক অর্থে এটি উল্টো। বাংলাদেশে আর্থিক কাঠামো ব্যাংকনির্ভর; কিন্তু বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা মূলত বন্ডনির্ভর। বৈশ্বিকভাবে প্রায় ১৩০ ট্রিলিয়ন বা ১৩০ লাখ কোটি ডলারের বন্ড ইস্যু করা হয়েছে; এটি বৈশ্বিক জিডিপির ১৩০ শতাংশ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হলো স্টক মার্কেট; এই বাজারে বিনিয়োগ আছে প্রায় ৯০ ট্রিলিয়ন বা ৯০ লাখ কোটি ডলার। তৃতীয়ত, মানি মার্কেট (ব্যাংক ঋণসহ সবকিছু) মোট ৬০ ট্রিলিয়ন বা ৬০ লাখ কোটি ডলারের, অর্থাৎ এটি বন্ড বাজারের অর্ধেকেরও কম। ফলে আমাদের কাঠামোটি একেবারেই উল্টো। পেনশন বা বিমা খাতের কথা বলছি–ই না, সেগুলো এতই ছোট যে বাংলাদেশে জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থাৎ গণনায় ধরার মতোও নয়। এই হলো বাস্তব চিত্র।আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকমুখী। তারা বন্ড ইস্যু করতে চায় না, বরং অর্থায়নের জন্য ব্যাংকের কাছে যায়। কেন যায় তা সঠিক জানি না। এর পেছনে হয়তো কোনো প্রণোদনা কাজ করে। হয়তো ঋণ পরিশোধ না করার সুযোগ আছে, হয়তো রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো যায়; কিছু সুবিধা যে আছে, তা স্পষ্ট। তাই আমাদের ব্যাংকনির্ভর করপোরেট সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।অধিকাংশ দেশে যেমন চাহিদা ও সরবরাহ-দুটো দিকেই বন্ড মার্কেট গড়ে ওঠে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশেও সেটি করতে হবে। এখানে বাজারে সরকারি বন্ডের আধিপত্য আছে। কিন্তু করপোরেট বন্ড মার্কেট কার্যত হিসাবের মধ্যে নেই; এটি খুবই ছোট।সুকুকের বাজার খুবই ছোট উল্লেখ করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ হাজার কোটি টাকার ছয়টি সুকুক ইস্যু হয়েছে। অথচ আমাদের অনেক প্রকল্প থেকে আয় হচ্ছে। সেইসব সম্পদ সিকিউরিটাইজ করলে দ্রুত সুকুক বাজার বড় করা সম্ভব। যেমন যমুনা বা পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায়ের প্রবাহ ব্যবহার করে নতুন সেতু নির্মাণে বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে। একইভাবে মেট্রোরেল, টোল রোড, ফ্লাইওভার-এসব প্রকল্প থেকেও যে আয় হয়, তা সিকিউরিটাইজ করে নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের অর্থ জোগাড় করা সম্ভব। সে জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ কার্যকরী বিভাগ দরকার; এর কাজ হবে শুধু এই বিষয়গুলো দেখা।আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বিমার বাজার জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। ভারতে এটি ৪ শতাংশ-উন্নত দেশে ১২ শতাংশ। ফলে বিমা খাতের উন্নয়ন অপরিহার্য।অনুষ্ঠানের শেষে গভর্নর জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বন্ড মার্কেট উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। শিগগিরই সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ তা উপস্থাপন করা হবে। সুপারিশগুলোতে বন্ড মার্কেটের বিভিন্ন খাত-কনভেনশনাল ও সুকুক (ইসলামি বন্ড) দুটোই অন্তর্ভুক্ত আছে বলে জানান তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে সরকার নিয়মিত তালিকা প্রকাশ করলেও বাস্তব বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) নির্ধারিত দামে নিত্যপণ্যের তালিকা প্রকাশ করে, কিন্তু রাজধানীসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজারে সেই দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই। ফলে প্রতিদিন সাধারণ ক্রেতাদের পকেটে চাপ বাড়ছে এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।এদিকে বাজারে আগের তুলনায় কিছুটা কমলেও এখনও প্রায় বেশিরভাগ সবজি কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। যা আগে আরও বেশি ছিল। অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও নানা ধরনের মুদি পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। মাছ ও পেঁয়াজের দামও কিছুটা কমলেও স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে আসেনি। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বেগুন ৭০–৮০ টাকা, পটল ৬০–৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, শসা ৫০–৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কচুর চরা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ও জালি আকার ভেদে প্রতিপিচ ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।তবে বাজারে সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে আলু ও পেঁপে। এই দুটি সবজি প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারের পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও অন্তত ৫ টাকা বেশি।সবজির দাম বেশি হওয়ার কারণ জানিয়ে একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, আরও কিছুদিন সবজির দাম এমন বাড়তি থাকবে। কারণ এখন বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়েছে। বাজারে নতুন করে সবজি ওঠার আগ পর্যন্ত এমন বেশি দাম থাকবে। বাজারে নতুন সবজি ওঠা শুরু করলে ধীরে ধীরে সবকিছুর দাম কমে আসবে। বর্তমানে বাজারে সবজি চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। যে কারণে পাইকারি বাজারেই বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। এর প্রভাব খুচরা বাজারগুলোতেও পড়েছে।এদিকে, মাছের বাজারেও বেশ চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এতে নদীর কিছু মাছের দাম বেড়েছে।বাজারে ইলিশসহ চিংড়ি মাছের দাম চড়া। প্রতি ৭০০ গ্রামের একহালি ইলিশ ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি পিস দুই থেকে তিন হাজার টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। ৪০০-৫০০ গ্রামের মাছ প্রতি কেজি ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।অন্যদিকে, দাম বেড়ে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে।এ ছাড়া, কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩৫০-৪২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৬০ টাকা ও পাঙ্গাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।তবে, বাজারে এখন মুরগি ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি ১৭০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দামে।এদিকে চাল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে এখন সরু নাজিরশাইল ও মোটা কয়েক পদের চাল আমদানি হচ্ছে। ওসব চালের দাম কমেছে। তবে আগের মতোই রয়েছে জনপ্রিয় মিনিকেট চালের দাম।এখন বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায়, যা আগে ৯০-৯২ টাকা ছিল। অন্যদিকে, মোটা পায়জাম ও স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, যা কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট চাল আগের দামেই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।সেগুনবাগিচা বাজারে সজিব রাইস এজেন্সির কর্ণধার সালমান হোসেন বলেন, ভারত থেকে প্রচুর চাল আসছে, তাই দাম কমছে। তবে দেশি যেগুলো মিনিকেট আছে, সেগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি বাড়লে দাম আরও কমতে পারে।তালতলা বাজারে চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, মোকামে চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ১২০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা নাজিরের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।তবে বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই একই আছে। আবার পুরোনো কোনো চালের দামও এখনো কমেনি।বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর বাজারে চালের দাম কমছে। বছরের শুরুতে চালের দাম বেড়েছিল, এরপর প্রায় চড়া ছিল বাজার।অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, শুধু তালিকা প্রকাশ করলেই সমস্যার সমাধান হয় না। বাজারে যদি নজরদারি ও কার্যকর মনিটরিং না থাকে, তবে নির্ধারিত দাম কেবল কাগজে-কলমেই থেকে যায়। পাইকারি বাজারে দামের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে খুচরা বাজারেও স্থিতিশীলতা আসবে না।বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে স্বচ্ছ সরবরাহ ব্যবস্থা, নিয়মিত মনিটরিং এবং ব্যবসায়ীদের জবাবদিহিমূলক কাঠামোর আওতায় আনতে পারলেই এই অস্থিরতা কমানো সম্ভব।ভোরের আকাশ/মো.আ.
দুর্গাপূজার আগে বাংলাদেশের ইলিশ কলকাতার বাজারে পৌঁছেছে। বুধবার রাত থেকে ১০টি ট্রাকে ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ বনগাঁ সীমান্তের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করে। এর পর আরও ৫০ মেট্রিক টন কলকাতার পাইকারি বাজারে পাঠানো হয়।ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কলকাতা ও হাওড়ার পাইকারি বাজারে এসব ইলিশ নিলামে ওঠে। খুচরা বাজারে ইলিশের দাম ধরা হয়েছে কেজিপ্রতি ১৬০০–১৭০০ টাকা, তবে চাহিদা বেড়ে গেলে দাম আরও বাড়তে পারে।বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শারদোৎসবের আগে ধাপে ধাপে ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে পাঠানো হবে। সরকার এ বছর ৩৭টি প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। প্রতি কেজি ইলিশ ন্যূনতম সাড়ে ১২ ডলার (প্রায় ১,০৫৭ টাকা) দরে রপ্তানি করা হবে।মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহে কলকাতা ও পাশের জেলার বাজারগুলোতে বাংলাদেশি ইলিশের সরবরাহ শুরু হবে।ভোরের আকাশ // হ.র