রিফাতুন্নবী রিফাত, গাইবান্ধা
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০২:১১ পিএম
পোকা দমনে জনপ্রিয় হচ্ছে আলোক ফাঁদ
গাইবান্ধা সদর উপজেলায় চলতি বোরো (ইরি) মৌসুমে ধানে উপকারী ও অপকারী পোকার উপস্থিতি শনাক্ত করতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আলোক ফাঁদ পদ্ধতি। মাঠের পাশে স্থাপন করা এই ফাঁদে বাল্বের আলোতে আকৃষ্ট হয়ে পোকারা এসে ফাঁদে পড়ে যায়। এতে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে। সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের রোপা আমন ধানের জমিতে কৃষকদের সহায়তায় এবং কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে স্থাপন করা হয়েছে আলোক ফাঁদ। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এ কাজে কৃষকদের উৎসাহিত করছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ২৭২ হেক্টর, যা অর্জিত হয়েছে ২১ হাজার ২৯৬ হেক্টরে। এ মৌসুমে রোপণ করা ধানের জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রিধান-২৮, ২৯, ৫০, ৫৮, ৭৪, ৮১, ৮৪, ৮৮, ৮৯, ৯২, ১০০, ১০১, ১০২, ১০৫, ১০৮, এসএল-এইট এইচ, পারটেক্স-৬, নাফকো-২, এলপি-৭০, সুবর্ণ-৪, হারা-২, হীরা-১২, সাথী, শংকায়-৩, এসিআই-২, ছক্কা ও এরাইজ গোল্ড।
বল্লমঝাড় ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের কৃষক খালেক মিয়া (৫৫) বলেন, আমাদের এলাকায় আলোক ফাঁদ এখন খুব জনপ্রিয়। আগে আমরা ক্ষতিকর পোকা বুঝতাম না, এখন সহজে শনাক্ত করতে পারছি। এতে কীটনাশকের ব্যবহারও কমেছে।
একই গ্রামের কৃষক খোকন মিয়া (৪০) জানান, কৃষি অফিসারের সহায়তায় ফাঁদ বানিয়ে পোকা দমনে সফল হয়েছি। এখন কম পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহার করেই ভালো ফল পাচ্ছি।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী বলেন, আমার ব্লকের বেশ কয়েকটি জমিতে আলোক ফাঁদ বসানো হয়েছে। এতে ক্ষতিকর পোকা চিহ্নিত করে কৃষকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এটি পরিবেশবান্ধব ও কার্যকর পদ্ধতি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদৎ হোসেন বলেন, আলোক ফাঁদ মূলত একটি পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম। এটি ধানের ক্ষেতে উপকারী ও অপকারী পোকার উপস্থিতি শনাক্ত করতে সহায়ক এবং এটি পরিবেশবান্ধব। ফাঁদ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় বৈদ্যুতিক বা চার্জার বাল্ব। ধানক্ষেত থেকে কিছুটা দূরে বাল্ব জ্বালিয়ে নিচে ডিটারজেন্ট বা কেরোসিন মেশানো পানির পাত্র রাখলেই তৈরি হয় ফাঁদ। সন্ধ্যার আলোয় পোকারা এসে ওই পাত্রে পড়ে যায়। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং অতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার কমে আসে।
তিনি আরও জানান, গাইবান্ধা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে প্রতি মঙ্গলবার সব ব্লকগুলোতে একে একে এই প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ