মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:৪২ পিএম
মৌলভীবাজারে বোরো ধানের বাম্পার ফলন
মৌলভীবাজারের রাজনগরে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফসল ঘরে তুলবেন এমন আশা করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজনগর উপজেলার ফতেপুর, উত্তরভাগ, মুন্সিবাজার, পাঁচগাঁও, রাজনগর ও মনসুরনগর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন ধান কাটার ব্যস্ততা।
কাউয়াদীঘি হাওর এলাকায় গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষিকাজে যান্ত্রিকীকরণের কারণে শ্রমিক সংকট অনেকটাই কমেছে। বেশিরভাগ কৃষক এখন কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করে দ্রুত ধান কেটে ফেলছেন। প্রান্তিক কৃষকরা পরিবারের খাদ্যচাহিদা পূরণের জন্য ধান সংরক্ষণ করছেন। আর বাড়ির আঙিনা থেকেই ধান কিনে নিচ্ছেন ফড়িয়া ও দালালরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, চৈত্র মাসের খরা, পোকামাকড়ের আক্রমণ ও হালকা শিলাবৃষ্টির প্রভাব কিছুটা ছিল। তবে এখন বৃষ্টিসহ কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কায় দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে চেষ্টা করছেন তারা।
রাজনগর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে কাউয়াদীঘি হাওরের ১৪,৩৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। কৃষকরা এবার হাইব্রিড, হিরা-১/২/৩, এসইএলএইট, উপশী, বি-৮৯, বি-৯২, বিধান-৮৮সহ দেশীয় জাত ইরি, সাইল, নাজিরসাইল, লাখাই, চিনিগুড়া, বিরুইন ইত্যাদি জাতের ধান চাষ করেছেন। অনুকূল আবহাওয়া ও পরিচর্যার কারণে নির্ধারিত সময়েই ধান পাকতে শুরু করেছে। বর্তমানে মাত্র ১০ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষি বিভাগ আশা করছে, প্রতি হেক্টরে ৫-৫.৫ টন ধান উৎপাদিত হবে এবং আগামী ১৪-২৩ দিনের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হবে।
কাশিমপুর গ্রামের কৃষক মো. আনছার মিয়া বলেন, তিনি ২৫ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হলেও ধান কাটার যন্ত্র বরাদ্দে বৈষম্য নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের কৃষক আবুল ফতেহ ফাত্তাহ বলেন, সেচে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল, তবে ফলন খুব ভালো হয়েছে। তিনি আশা করছেন, ঝড়বৃষ্টি না হলে ৮-১০ দিনের মধ্যেই ধান ঘরে তুলতে পারবেন। ধানের বাজারমূল্য ভালো থাকলে লাভবান হওয়ার আশাবাদও ব্যক্ত করেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ