জেলা প্রতিনিধি,চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ০১:৩৯ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনে মনোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন । সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ তিনটি রুটে মনোরেল নির্মাণ করতে অন্তত ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নগরীর চারটি রুটে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।
এর মধ্যে কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত (বহদ্দারহাট, চকবাজার, লালখানবাজার, দেওয়ানহাট ও পতেঙ্গা হয়ে) প্রায় ২৬.৫ কিলোমিটার, সিটি গেট থেকে শহীদ বশিরুজ্জামান চত্বর পর্যন্ত (এ কে খান, নিমতলী, সদরঘাট ও ফিরিঙ্গি বাজার হয়ে) প্রায় ১৩.৫ কিলোমিটার, অক্সিজেন থেকে ফিরিঙ্গি বাজার পর্যন্ত (মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, আন্দরকিল্লা ও কোতোয়ালি হয়ে) প্রায় ১৪.৫ কিলোমিটার এবং সিটি গেট থেকে পোর্ট কানেক্টিং রোড হয়ে আগ্রাবাদ এক্সেস ভায়া নিমতলা পর্যন্ত প্রায় ১০.৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টেবার) সকালে চসিকের রেস্টহাউসে মনোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা যাচাই বিষয়ক এক সমন্বয় সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।এতে সভাপতিত্ব করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

তিনি বলেন , ‘চট্টগ্রামের জনসংখ্যা ও যানজট বিবেচনায় গণপরিবহন ব্যবস্থায় আধুনিক সমাধান জরুরি। মনোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী পাবেন নিরাপদ, সময়সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক যাতায়াতের সুযোগ। এতে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, যানজট কমবে এবং নগর অর্থনীতি হবে আরও গতিশীল। চট্টগ্রামকে একটি স্মার্ট ও পরিবেশবান্ধব শহরে রূপান্তরে সিটি কর্পোরেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে।’
সভায় জানানো হয়, মনোরেল চালু হলে ওরাসকম যাত্রী প্রতি অন্তত ৫ টাকা হারে সিটি করপোরেশনকে মুনাফা প্রদান করবে। পিপিপি মডেলে বাস্তবায়নযোগ্য এই প্রকল্পে ব্যয় হবে আনুমানিক ৩০ হাজার কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি ২০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত নিজস্বভাবে পরিচালনা করবে। এরপর সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সেন্ট্রাল স্টেশন, স্টোরেজ ও রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধার জন্য প্রয়োজন হবে ৫০ একর জমি এবং প্রতিদিন পরিচালনায় লাগবে ৩০–৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
আরও জানানো হয়, ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন হতে সময় লাগবে ৭ থেকে ৮ মাস এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে লাগবে ৩ থেকে ৪ বছর। এর আগে চলতি বছরের ১ জুন আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার মিলনায়তনে চসিক এবং আরব কনট্রাক্টরস ওরাসকম পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের মধ্যে মনোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
জানা যায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম নগরে মনোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। বিনিয়োগ করা হবে এনএএস ইনভেস্টমেন্ট ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব ইজিপ্টের মাধ্যমে। প্রকল্পের আওতায় সম্ভাব্য চারটি রুট বিবেচনা করা হচ্ছে।
সড়ক বিশেষজ্ঞরা জানান, মনোরেল হলো এমন একটি রেলওয়ে, যেখানে ট্র্যাকটি একটি একক রেল বা বিম দিয়ে তৈরি। মনোরেল এক চাকার ট্রেন। এক চাকার ওপরই চলে। দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে মনোরেল স্থাপন ও চালু করা সম্ভব।
ভোরের আকাশ/তা.কা