মাদকাসক্ত নাতির হাতে দাদির মর্মান্তিক মৃত্যু
মাত্র ২০ হাজার টাকার একটি মোবাইল চাওয়াকে কেন্দ্র করে দাদির প্রাণ কেড়ে নিল তারই নাতি। পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ভৈরামপুর গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটেছে।
নিহত রোকেয়া বেগম (৭৫) ছিলেন এলাকায় শ্রদ্ধেয় একজন প্রবীণ নাগরিক। তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলাকেটে হত্যা করে তার নাতি মোরসালিন, যিনি মাদকাসক্ত এবং শহরের একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ২৪ জুলাই গভীর রাতে রেস্টুরেন্ট থেকে কাউকে না জানিয়ে গ্রামে চলে আসে মোরসালিন। রাতের আঁধারে জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে নিজের দাদিকে গলাকেটে হত্যা করে সে। এরপর দ্রুত ফিরে যায় শহরে, যেন কিছুই ঘটেনি।
রোকেয়া বেগমের ছেলে লিটন হালদার প্রথমে প্রতিবেশী এক পরিবারের সঙ্গে জমিজমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে হত্যার অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে তদন্তে বেরিয়ে আসে এক ভয়াবহ সত্য এই খুনের পেছনে কোনো শত্রু নয়, দায়ী ছিল রক্তের সম্পর্কেই লুকিয়ে থাকা এক বিকৃত মন।
গ্রেপ্তারের পর মোরসালিন স্বীকার করে ২০ হাজার টাকার একটি মোবাইল কেনার জন্য দাদির কাছে চেয়েছিল সে। দাদি রাজি না হওয়ায় আগেই সে হত্যার পরিকল্পনা করে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ তার কাছ থেকে গাঁজাও উদ্ধার করে।
পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো: রবিউল ইসলাম জানান, এটি অত্যন্ত ঠান্ডা মাথার, পরিকল্পিত এবং মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। মোরসালিনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে এবং তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে এক শিক্ষকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাতরা পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রের মুখে বাড়ির লোকজনকে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও একটি মোটরসাইকেল লুট করে পালিয়ে যায়।মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার ইদিলপুর গ্রামের শিক্ষক মানিক চন্দ্র সরকারের বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। স্থানীয় কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক মানিক চন্দ্র সরকার ওই গ্রামের মৃত রাখাল চন্দ্র সরকারের ছেলে।ভুক্তভোগীরা জানান, মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ৭-৮ জন ডাকাত মুখোশ পড়ে মানিকের শয়ন ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। পরে তাঁর (মানিক) মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ধরে এবং ধারালো অস্ত্রের মুখে ওই পরিবারের কয়েকজনকে হাত-পা বেঁধে রেখে ডাকাতরা কয়েকটি ঘরে প্রায় দুইঘন্টা তল্লাশি চালায়।এ সময় ঘরে থাকা আলমারি, বাক্স, ওয়ারড্রব, শোকেস তছনছ করে ১০ থেকে ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ অর্ধলক্ষাধিক টাকা ও একটি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী জুলাই পুনর্জাগরণ শীর্ষক অনুষ্ঠানমালার ধারাবাহিকতায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে শিববাড়ি মোড় থেকে বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে ছাত্র-জনতার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসের উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে শোভাযাত্রাটির উদ্বোধন করেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ও কেসিসি প্রশাসক মোঃ ফিরোজ সরকার। উদ্বোধনের শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার জুলাই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে যারা শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়ে চিকিৎসারত আছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা আমাদেরকে একটি নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। এই গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতা সবাইকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে। আমরা চাই একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে, যেখানে থাকবে না কোন ভেদাভেদ। সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এবং একে অপরের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখবে। তাহলেই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পাবো। প্রধান অতিথি বক্তব্য শেষে শোভাযাত্রাটির শুভ উদ্বোধন করেন।এর আগে, বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ রেজাউল হক, জুলাই আন্দোলনে নিহত শাকিব রায়হানের পিতা শেখ মোঃ আব্দুল আজিজ। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার জনগণ উপস্থিত থেকে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।এ সময় শোভাযাত্রাটি শিববাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে গিয়ে শেষ হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
নওগাঁয় আলুর ন্যায্য দাম নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় আলু চাষিরা।নওগাঁ, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এই মানববন্ধনে কৃষকরা সড়কে আলু ফেলে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, বর্তমানে বাজারে আলুর দাম উৎপাদন খরচের অর্ধেকেরও কম, যার কারণে প্রতি কেজিতে প্রায় ১৭-১৮ টাকা লোকসান হচ্ছে। অনেক কৃষক ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করলেও সঠিক দাম না পাওয়ায় ঋণ শোধ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।চকবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, “সার ও অন্যান্য খরচ বাড়লেও আলুর দাম বাড়েনি। ধান-চালের মতো আলুরও সরকারিভাবে দাম নির্ধারণ করা উচিত।”বক্তারপুর গ্রামের কৃষক বুলবুল ইসলাম বলেন, “এক মণ আলু চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১২০০-১৩০০ টাকা। অথচ এখন সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকায়। এতে আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি।”বালুডাঙ্গার কৃষক সাইফুল আলম জানান, “ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছি। হিমাগারে রাখার খরচও বেশি। প্রতি কেজিতে ২৫-২৬ টাকা খরচ হলেও পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১১-১২ টাকায়। এখন ঋণ শোধ নয়, খরচও ওঠানো কঠিন হয়ে গেছে।”এ বিষয়ে নওগাঁ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সোহাগ সরকার জানান, “এ বছর আলুর ফলন ভালো হওয়ায় উৎপাদন বেড়েছে। এ সময়ে অন্যান্য সবজির চাহিদা বেশি থাকায় আলুর চাহিদা কমে গেছে। সরকার ওএমএস বা টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রির বিষয়ে চিন্তা করছে।”কৃষকদের দাবি, দ্রুত আলুর ন্যায্য দাম নির্ধারণ করে তাদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। না হলে তারা আরও বড় ধরনের সমস্যায় পড়বেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ প্রদানের দাবিতে টঙ্গীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার দুই শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও সমমানের স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশ্বে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ (বিকপ) ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেব আজ বুধবার সকালে গাজীপুর প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশন টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। স্কুলগুলোর শত শত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কয়েক হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক বৃত্তির সুযোগ দানের দাবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে।এ সময় টঙ্গী প্রেসক্লাবের সামনে গাজীপুর প্রাইভেট স্কুল এসোসিয়েশন টঙ্গী পূর্ব থানার সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক বসির উদ্দিন, সংগঠনের পশ্চিম থানা সভাপতি মুহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম জনি, পূর্ব থানার সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন হাওলাদার, অর্থ সম্পাদক সোহেল ভূঁইয়া প্রমুখ।এ সময় বক্তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে চলছে। দেশের বেকার সমস্যা দূরীকরণে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু হঠাৎ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ১৭ জুলাই কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে শুধুমাত্র সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তির ঘোষণা দিয়ে একটি বিতর্কিত পরিপত্র প্রকাশ করে। যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চরম বৈষম্যমূলক আচরণের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।বক্তারা আরো বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক কৃতিত্ব অর্জন করেছে।বক্তারা বলেন, বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক অনুদানই নয় এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, মেধার স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে কিন্তু শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ে না পড়ার কারণে সে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছেনা তখন তার মনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং কোমলমতি শিশুদের মধ্যেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব তৈরি হবে। কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে তাহলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ মানষিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে। তার দায়-দায়িত্ব সরকারের উপরেই বর্তাবে। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী সরকার। সেই সরকারের আমলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার বৈষম্যের শিকার হবে এটি কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায়না।বক্তারা প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আমাদের অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের আশা ও ভরসার প্রতীক। দেশের জনগণ আপনার প্রতি আস্থাশীল। সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ বিশাল জনগোষ্ঠীকে যাতে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে না হয় সেই বিষয়ে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি এবং ১৭ জুলাই ২০২৫ ইং তারিখে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক অবহিতকরণ পত্রটি বাতিল করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেন পঞ্চম শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ -এ অংশ গ্রহণ করতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ঠাকুরগাঁও বরাবর একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ