ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ০১:২৮ এএম
ছবি সংগ্রহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বিজয়নগর উপজেলার ৩টি কলেজের একজন শিক্ষার্থীও এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি।
নবীনগর উপজেলার জিনদপুর ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী। বিজয়নগরের নিদারাবাদ ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অংশ নেয় ৬ জন এবং চান্দপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে অংশ নেয় ১১ জন পরীক্ষার্থী; ৩টি প্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষার্থীরা শতভাগ অকৃতকার্য হয়েছে।
এ নিয়ে পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে গভীর হতাশা বিরাজ করছে। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শিক্ষক সংকট, একাডেমিক দুর্বলতা, শিক্ষার্থীদের অনিয়মিত উপস্থিতি ও পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাবই এমন ফলাফলের জন্য দায়ী।
এদিকে জেলার বিভিন্ন কলেজে ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অনেক প্রতিষ্ঠানে পাসের হার ১০ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এমনকি সরকারি কলেজেও কিছুক্ষেত্রে পাশের হার ৫০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় স্পষ্টভাবে নিম্নমুখী।
জেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এ বছর জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সাধারণ, আলিম, কারিগরি ও ভোকেশনাল মিলে ১৪ হাজার ২০৩ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, তার মধ্যে ৭ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২৫ জন।
নবীনগরের জিনোদপুর ইউনিয়ন স্কুল এন্ড কলেজ, বিজয়নগর উপজেলার চানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ ও নিদারাবাদ ইউনিয়ন হাই স্কুল এন্ড কলেজে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কোনো শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। জেলার মাদ্রাসা ও কারিগরি কলেজগুলোর ফলাফল বিশ্লেষণেও উঠে আশা চিত্র আশাব্যঞ্জক নয়। জেলার অন্তত ৫-৮টি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফলাফলের অবনতি লক্ষ্য করা গেছে।
এই হতাশার মাঝে কিছুটা আশার আলো জেলা জুড়ে ছড়িয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জিপিএ-৫ এসেছে এই কলেজ থেকেই- ১৮৫টি। তবে অন্যান্য কলেজে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ থেকে ২০-এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। যদিও কয়েকটি ছোট কলেজ ১০০ শতাংশ পাসের তকমা অর্জন করেছে, তবে সেসব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার্থী ছিল মাত্র ২ থেকে ২০ জন। ফলে এই সফলতা সামগ্রিক দুরবস্থা ঢাকতে ব্যর্থ।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা জুলফিকার হোসেন ভোরের আকাশকে জানান, ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোর একাডেমিক তদারকি বাড়ানো হবে। ফলাফলে কেন এমন বিপর্যয় এই বিষয়টি খতিয়ে দেখে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।
ভোরের আকাশ//হ.র