এন এস কাঞ্চন, জেলা প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম)
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৫ ০২:৫২ পিএম
হাতি সরাতে ফের কর্ণফুলীর সড়ক অবরোধ, সাড়ে ৫ ঘণ্টার ভোগান্তি
সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের আশ্বাসে অবশেষে সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর সড়ক ছেড়েছে হাতি সরানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ করা বিক্ষুবদ্ধ জনতা। এরপর যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। খোলা হয় কেইপিজেড। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ভোর ৬টা আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলার সাধারণ জনগণ-এর ব্যানারে পিএবি সড়কের কেইপিজেড ফটক, কেইপিজেডের আনোয়ারার জাইল্লা ঘাটাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে স্থানীয়রা। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
জানা যায়, আজ ভোর ৬টা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলা থেকে হাতি সরানোর দাবিতে কেইপিজেডের বিভিন্ন ফটকসহ ফের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। ফলে এসময় ভোগান্তিতে পড়েন শ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীরা। এসময় পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে পুলিশের দাবি, আওয়ামী লীগসহ স্থানীয় কিছু নেতার মদদে এ আন্দোলন আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এর আগে, গত শনিবার হাতির আক্রমণে কর্ণফুলী উপজেলায় শাহমীরপুরে তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে একইদিন ভোর থেকে প্রায় ছয় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। সমস্যা সমাধানে ওই দিন উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে চার দিনের সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল ৬টার সময় কেইপিজেডের বিভিন্ন ফটকে অবরোধ শুরু হয়। এ সময় শ্রমিকেরা আটকে পড়েন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন পিএবি সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। ওই সড়ক দিয়ে আনোয়ারা, কর্ণফুলী, চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার লোকজন চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত করেন। এ ছাড়া আজ কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হওয়া লোকজন ভোগান্তির শিকার হন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, গত শনিবার হাতির আক্রমণে শিশুটি মারা যাওয়ার পর আন্দোলন করা হয়েছিল। প্রশাসন চার দিন সময় নিয়েও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই বন বিভাগ, কেইপিজেড ও প্রশাসন যেন হাতি সরানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়, এ জন্য আবার আন্দোলন শুরু হয়েছে।
এদিকে আজ সকাল সাড়ে ৬টার সময় কেইপিজেডের দৌলতপুর, সিইউএফএল সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। ওই সময় কেইপিজেডের শ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীরা আটকা পড়েন। এর বাইরে পিএবি সড়কের প্রধান সড়ক আটকে দেওয়ায় যাত্রীরা আটকে পড়েন। সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কেইপিজেডের নিরাপত্তাকর্মীরা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন। আর পিএবি সড়কের চার কিলোমিটার জায়গাজুড়ে গাছের গুঁড়ি দিয়ে অবরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোরীয় রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) সহকারী মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা বুঝছি না কেইপিজেডকে কেন লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। আমরাও চাই হাতি সরিয়ে নেওয়া হোক। হাতির আক্রমণে কেইপিজেডের বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিনিয়ত ক্ষতি হচ্ছে।’
জানতে চাইলে কর্ণফুলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘বুধবার রাতে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া নেতৃস্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে আন্দোলন থেকে সরাতে পারিনি। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের কিছু মেম্বার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতা পরিস্থিতি খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা চাই, যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এ জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
ভোরের আকাশ/এসএইচ