পাথরঘাটায় ডেঙ্গুতে মায়ের মৃত্যু, ছেলের অবস্থাও আশঙ্কাজনক
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ছোট পাথরঘাটা গ্রামের সাধনা রানী (৩৫) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) মধ্যরাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার স্কুলপড়ুয়া ছেলের অবস্থাও বর্তমানে আশঙ্কাজনক এবং তিনি একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, কিছুদিন আগে বরগুনা শহরে প্রয়োজনীয় কাজে গেলে সেখান থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন সাধনা রানী। অসুস্থ হলে তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়, পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি ঘটলে বরিশালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে পাথরঘাটায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২০ জনেরও বেশি মানুষ। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। ইতোমধ্যে বরগুনা জেলাকে ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ ঘোষণা করা হয়েছে, আর সচেতন নাগরিকদের মতে পাথরঘাটাও এখন সেই চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
সাধনা রানীর মৃত্যু যেন পাথরঘাটার ভঙ্গুর স্বাস্থ্যসেবার বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে। অধিকাংশ ডেঙ্গু রোগীর স্বজনদের অভিযোগ—পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা প্রায় নেই বললেই চলে। ২৭ জন চিকিৎসকের অনুমোদিত পদের বিপরীতে এখানে রয়েছেন মাত্র একজন চিকিৎসক, যিনি মূলত একজন দন্ত চিকিৎসক (ডেন্টিস্ট)।
যদিও ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে, তবু চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে সেখানে রোগীরা পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও সেবা। ফলে অধিকাংশ রোগীকেই বরিশাল পাঠাতে হচ্ছে বা বাড়িতে থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
পাথরঘাটা পৌর শহরের ইমান আলী সড়কের বাসিন্দা মাওলানা জাকির হোসেনের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে তাকওয়াও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক না থাকায় বাড়িতেই চিকিৎসা দিতে হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে বরিশালে রেফার করা হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, শুধু মশা মারার ফগিং করলেই চলবে না, চাই দ্রুত ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ। চিকিৎসক নিয়োগ, জরুরি ওয়ার্ডে সেবার মান উন্নয়ন, ওষুধ সরবরাহ এবং মশা নিধন অভিযান আরও জোরদার করতে হবে।
সাধনা রানীর মৃত্যুতে তার পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। একদিকে প্রিয়জন হারানোর বেদনা, অন্যদিকে ছেলের জীবন রক্ষার যুদ্ধ—দ্বিগুণ দুঃখে ভেঙে পড়েছেন স্বজনরা।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
নাটোরের বড়াইগ্রামে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মিনহাস হোসেন আবীর (৯)। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ৯টার দিকে বনপাড়া পৌর শহরের মহিষভাঙ্গা এলাকার একটি নির্মাণাধীন মসলা ফ্যাক্টরির পাশে ভুট্টাক্ষেত থেকে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।নিহত আবীর বনপাড়া আদিব ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষার্থী এবং মহিষভাঙ্গা মহল্লার মিলন হোসেন ও রুবিনা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান। তার বাবা সৌদি আরবে কর্মরত।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল ৪টার দিকে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় আবীর। তার কাছে একটি দামি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনও ছিল। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাত ৯টার দিকে মসলা ফ্যাক্টরির পাশে তার রক্তমাখা সাইকেল দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পরে ভুট্টাক্ষেতের পাশে রক্তের দাগ অনুসরণ করে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।শিশুটির মাথা ও মুখমণ্ডলে ইট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাস্থলেই বেশ কয়েকটি রক্তমাখা ইট পড়ে থাকতে দেখা যায়।বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম। যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত ও গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ দল মাঠে কাজ শুরু করেছে।”ছেলের লাশ দেখে ভেঙে পড়েন বাবা মিলন হোসেন। তিনি বলেন, “আমার ছেলের যারা এভাবে জীবন কেড়ে নিয়েছে, আমি তাদের ফাঁসি দেখতে চাই। আমি বিচার চাই।”ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠে।বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের নাটোর জেলা আহ্বায়ক ও বড়াল প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক অমর ডি কস্তা নিজের ফেসবুকে আবীরের স্কুল পোশাকে ছবি ও ঘটনাস্থলের ছবি পোস্ট করে লেখেন, “কিরে অমানুষরা, একটা ছোট ছেলের কী দোষ ছিল? তোরা কি আল্লাহকে ভয় করিস না?” এমন আরও অনেক সংবাদমাধ্যম ও ফেসবুক পেইজে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে হাজারো মানুষ খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান। ভোরের আকাশ/হ.র
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় জমির আইল ভেঙে যাওয়াকে কেন্দ্র করে ভাতিজার কোপে চাচা আবু সামা (৬৫) নিহত হয়েছেন।শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরে উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের চর ঠ্যাংঝাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত আবু সামা ওই এলাকার মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে। অভিযুক্ত ভাতিজা হাশেম আলী, পিতা বছের আলী, একই এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার আবু সামা নিজ জমি চাষ করতে ট্রাক্টর নিয়ে যান। এ সময় ট্রাক্টরের চাকা লেগে ভাতিজা হাশেম আলীর জমির আইল ভেঙে যায়। বিষয়টি নিয়ে চাচা-ভাতিজার মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হলে স্থানীয়রা তা মীমাংসা করে দেন।পরদিন শুক্রবার দুপুরে আবু সামা তার ছেলেকে নিয়ে হাশেম আলীর বাড়িতে বিষয়টি আলোচনার জন্য গেলে আবারও বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে হাশেম আলী উত্তেজিত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আবু সামাকে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন।স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনারুল হক জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন্নবী বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”ভোরের আকাশ/হ.র
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২০ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের একজন যুবদলের নেতা বলে জানা গেছে।শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বামনজল এলাকার মৃত আইনুল হক ওরফে মোকছেদের ছেলে মো. মোনারুল ইসলাম মোনা (৩০) এবং একই এলাকার মো. আবুল কালাম আজাদের ছেলে মো. রায়হান মিয়া (৩৮)। গ্রেপ্তার মোনারুল ইসলাম মোনা যুবদলের সুন্দরগঞ্জ পৌর শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং পৌর বিএনপির সদস্য।পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারেন বামনডাঙ্গা থেকে একটি কালো রঙের মোটরসাইকেলে করে দুই মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা নিয়ে পৌরসভার দিকে আসছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে ব্র্যাক মোড় এলাকায় পুলিশ অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর সন্দেহভাজন একটি মোটরসাইকেল চেকপোস্ট অতিক্রমের চেষ্টা করলে পুলিশ থামার সংকেত দেয়। কিন্তু মোটরসাইকেলে থাকা ব্যক্তিরা পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া দিয়ে দুইজনকেই আটক করা হয়। তল্লাশির এক পর্যায়ে মোনারুল ইসলামের কোমরে গোজা পলিথিন ও কাগজে মোড়ানো অবস্থায় ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। এছাড়া মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ফ্যাসিবাদী নির্বাচনে বৈধতা দানকারীরা বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ। শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেল ৪ টায় দিকে বরিশালের চরকাউয়া ইউনিয়নে তালুকদার মার্কেটে ফুটবল টুর্ণামেন্টে প্রধান অতিথী হিসেবে এ কথা বলেন তিনি।ছবি-ভোরের আকাশএ সময় রহমাতুল্লাহ বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ এখন বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরাই মুলত সুবিধাবাদী রাজনীতিতে জড়িত। এমনকি ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়ে ভোটের রাজনীতিতে ফায়দা হাসিল করতে চায়। তাদের এসব প্রতারণামুলক কর্মকান্ডে জনগণ জবাব দেবে।তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ ভোট পিছিয়ে দেয়ার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। তাদের সঙ্গে জনগণ নেই বলে অপ-প্রচার চালাচ্ছে ঐ মহলটি।রহমাতুল্লাহ বলেন, আগামীতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করবে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সে লক্ষ্যে জনগণের পাশে থেকে দলের ভাবমূর্তি বজায় ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সব অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে বলেও জানান তিনি।একতা সামাজিক সংগঠনের সভাপতি বাদলের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন নগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ওবায়দুর ইসলাম উজ্জ্বল, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আল আমিন সিকদার, চরকাউয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক গণী সরদার, কর্ণকাঠি জি.আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি রহমাতুল্লাহ সাব্বির, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক রাহাত তালুকদার।অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক লিমন মোল্লা।ভোরের আকাশ/এসএইচ