নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৫:৪১ পিএম
নিষেধাজ্ঞা না মেনে চলছে আ.লীগ নেতার ইটভাটা
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে রামপুর ইউনিয়নের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেসার্স বামনী ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি নামে ইটভাটা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতা ছিদ্দিক উল্যাহ ভুট্রু। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।
অভিযোগ উঠেছে, খোদ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের যোগসাজশে চলছে এই ইটভাটা। নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ভাটায় নিয়মিত পোড়ানো হয় কাঠ। এতে চিমনি থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় আশপাশের বাসিন্দা, বিশেষ করে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এ অবৈধ ইটভাটা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য রামপুরে ঘনবসতিপূর্ণ বনজ ও কৃষিজমি, চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, একটি মসজিদ ও প্রায় ৩৫০টি পরিবারের মাঝে অবস্থিত এই ইটভাটা। প্রায় ২ একর জায়গার ওপর ২০১৭ সালে ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই, সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভুট্রু এই ইটভাটা নির্মাণ করেন।
তৎকালীন সময়ে স্থানীয় বাসিন্দারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করলেও কাদের মির্জার হুমকিতে তা তুলে নিতে বাধ্য হন। ২০২৫ সালে মো. সেলিম পুনরায় রিট দায়ের করলে হাইকোর্ট ১২৭৪/২০২৫ নম্বর রিটের আদেশে দুই মাসের মধ্যে ইটভাটার কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষিজমির মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট, বসতবাড়ির আশপাশেই ইটভাটার চিমনি বসানো হয়েছে। কাঠ পোড়ানোয় ব্যাপক দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, ভুট্রুর ইটভাটার কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। আমি ২০১৭ সালে রিট করেছিলাম, কিন্তু হুমকির মুখে তা তুলে নিতে হয়। এখন আবার রিট করেছি। এই ইটভাটার জন্য স্থানীয় রাস্তা-ঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ছিদ্দিক উল্যাহ ভুট্রু বলেন, আদালতের স্টে অর্ডারের বিষয়টি শুনেছি। প্রথমে ছাড়পত্র ছিল, পরে নবায়ন হয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তর তখন বলেছিল চালান, আমরা কিছু বলব না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিহির লাল সরদার বলেন, তাদের আবেদন প্রক্রিয়াধীন। কিছুদিন আগে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ