বাবুল আহমেদ, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৫ ০২:৪০ পিএম
সাটুরিয়ায় আবাসন প্রকল্পে ঝুলছে তালা
মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের খলিশা ডহুরা গ্রামে আবাসন প্রকল্পে ১৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়।
জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে প্রতিটি ঘর ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা করে নির্মাণ ব্যয় ধরে ১৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের ১৫ দিনের মধ্যেই ঘরের মেঝে ও দেয়ালে ফাটল দেখা যায়। প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সহযোগিতায় তড়িঘড়ি করে আসল ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দ না দিয়ে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের নামে বরাদ্দ দিয়ে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে আবাসন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, একটি ঘর ছাড়া বাকি ১৬টি ঘরেই ঝুলছে তালা।
আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা বাস ড্রাইভার জাহাঙ্গীর আলম জানান, যাদের নামে জমি ও ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে ১৫ জনের বাড়ি বালিয়াটি ইউনিয়নে। প্রকল্পে বরাদ্ধ পেয়েছেন হাজিপুর গ্রামের ৩ জন, বালিয়াটি গ্রামের ১২ জন ও গোপালপুর গ্রামের দুই জন। তারা হলেন, জাহাঙ্গীর, পাপন, ইব্রাহিম, আয়নাল হক, মীর হোসেন, আন্না রানী কর্মকার, বেগম, দুলাল দাস, হানিফ আলী, সুফিয়া, সজীব, ভেলা, মোসলেম, শরীফ, আবুল হোসেন, রনী বালা ও করিম।
স্থানীয় আব্দুল বারেক (৮০) জানান, আবাসন প্রকল্পের ওই খাস জমিতে তার একটি চৌচালা ঘর ছিল। স্থানীয় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতারা জোর করে তার ঘরটি ভেঙে দেয়। আবাসন প্রকল্পটি করার সময় তার নামে একটি ঘর বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদর বালিয়াটি হতে ১৫ কি.মি দূরে এ আবাসন প্রকল্পটি অবস্থিত। এখানে আয় রোজগারের কোনো পথ না থাকায় বালিয়াটি ও সাটুরিয়া গিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। প্রতিদিন ৩০ কি. মি. যাতায়াত করে এই আবাসন প্রকল্পে বসবাস করা সম্ভব নয় বিধায় কেউ এখানে থাকে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, আওয়ামী সরকারের আমলে নেতাকর্মীগণ ৩০/৪০ হাজার করে টাকার বিনিময়ে প্রকৃত ভূমিহীন যাচাই বাছাই না করে ঘর বরাদ্দ দিয়েছে। প্রকৃত ভূমিহীনদের নামে ঘর বরাদ্দ হলে এ অবস্থা হতো না। সন্ধ্যার পর এখানে ভূতুড়ে অবস্থার সৃষ্টি হয়। সাটুরিয়া থানা থেকে অনেক দূরে হওয়ায় অপরাধীরা মাদকসেবন ও কেনা-বেচা থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম করে বেড়ায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রমজান আলী বলেন, স্থানীয় অনেক ভূমিহীন লোক থাকা সত্ত্বেও অন্য ইউনিয়নের লোকদের নামে রহস্যজনক কারণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অনেকেই বিত্তশালী তাই তারা এখানে থাকছেন না। বরাইদ ইউনিয়নের ভূমিহীনদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হলে এ অবস্থা হতো না।
ভোরের আকাশ/এসএইচ