কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ০২:৩৫ পিএম
ছবি : ভোরের আকাশ
বয়স সাড়ে তিন বছর। বাবার কোলে চড়েই যায় মাঠে। বয়স কম হলেও মাঠ কাঁপায় ব্যাট ও বলে। কখনো ব্যাট হাতে মারছেন চার-ছক্কা আবার কখনো বল হাতে করছেন লেগ স্পিন বল।
কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট্ট ক্রিকেটার মোহাম্মদ ঈসা দুই বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলার প্রতি আগ্রহ দেখায়। এ আগ্রহ দেখে বাবা তাকে ক্রিকেট অনুশীলন করাতে থাকেন। এখন তার খেলা দেখে অবাক স্থানীয়রা।
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে ছোট্ট শিশু মোহাম্মদ ঈসা তার বাবার সঙ্গে ক্রিকেট অনুশীলন করে থাকে। বৃষ্টি বাদলের দিন পরিষদের বারান্দায় চলে অনুশীলন। সাড়ে তিন বছরের ঈসা ইতোমধ্যেই রপ্ত করেছে ব্যাটিংয়ের জটিল কৌশল। বল দেখে কখনো হাঁকান ছক্কা আবার কখনো মারে চার। শুধু ব্যাটিং নয় সমানতালে করে বলও। আয়ত্ত করছে লেগ স্পিন বল। তার খেলা দেখে অবাক পথচারী থেকে এলাকাবাসী। ঈসা মাঠে আসলেই ভিড় জমায় সবাই। এলাকাবাসীর ভাবনা ঈসা একদিন বড় ক্রিকেটার হবে।
ক্ষুদ্র কাঠ ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান নিজে ক্রিকেট না খেললেও ছেলের খেলার আগ্রহ দেখে নিজেই তাকে অনুশীলন করাচ্ছেন। সামান্য আয়ের মধ্য থেকেই ক্রিকেট সামগ্রী কিনেন তিনি। তার ইচ্ছা ছেলে বড় হয়ে নামকরা ক্রিকেটার হবে।
ঈসার বাবা আমিনুর রহমান বলেন, সন্তানের খেলার প্রতি আগ্রহ থেকেই ইউটিউব দেখে ব্যবসার ফাঁকে সকাল-বিকাল প্রশিক্ষণ দিচ্ছি ছেলেকে। আমার সন্তানকে জাতীয় দলের খেলোয়াড় বানানোর জন্য আমি পরিশ্রম করে যাচ্ছি। সে যেন দেশের হয়ে সুনাম বয়ে আনতে পারে। আর জেলা ক্রীড়া অফিসের সহযোগিতা পেয়েছি। এতে আমাকে আরও অনুপ্রেরণা জোগাবে।
স্থানীয় আলামিন মিয়া (৫০) বলেন, ঈসার খেলা দেখলাম। শিশুটি খুব ভালো খেলে। শিশুটি খেলার সুযোগ পেলে জাতীয় দলে খেলতে পারবে। এতে এলাকার সুনাম অর্জন করবে।
কেদার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াজিদুল কবির রাসেদ বলেন, ছোট্ট এই শিশুর ক্রীড়া নৈপুণ্যকে বাস্তবে রূপ দিতে তাকে ভবিষ্যতে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি ওই এলাকায় একটি মিনি স্টেডিয়াম গড়ে তুলতে পারলে ঘরে ঘরে প্রতিভাবান খেলোয়াড় তৈরি হবে।
জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মো. আকরাম হোসাইন জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিভাবান শিশু ঈসার খেলা আমার নজর কেড়েছে। সে একজন সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়। তাকে ক্রিকেট কোচের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিতে পারলে অনেক ভালো করবে বলে আশা করি। এসব তৃণমূল পর্যায়ের খেলোয়াড়দের পাশে জেলা ক্রীড়া অফিস সবসময় থাকবে।
তিনি আরও জানান, বিকেএসপিতে ঈসার ভর্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.