টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৩:৪৮ পিএম
মাসরুম চাষে স্বনির্ভর রাসেল
টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে পুষ্টি উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতায় মাসরুম চাষ করেছেন রাসেল আহমেদ নামের এক যুবক। তিনি পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজের বাড়িতে শুরু করেছেন মাসরুম চাষ। এ জন্য তিনি কৃষি বিভাগের মাধ্যমে জাতীয় মাসরুম ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিয়ে সময় অপচয় না করে তার বসতবাড়িতেই আয়োজন করেন এ চাষাবাদের। বাড়ির দুচালা টিনের ঘরেই শেড বানিয়ে মাসরুম চাষ শুরু করেন।
কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শে তিনি ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছেন। স্বপ্ন দেখছেন মাসরুমে নিজের পাশাপাশি অন্য আরো মানুষের কর্মসংস্থানের। এগিয়ে যাওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সকাল বিকেলে কাজ করে যাচ্ছেন তার খামারে। ভালো সফলতাও ধরা দিচ্ছে। মাসরুম চাষ প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়েছেন একটি ভ্যান। ভ্যানের পিছনেও লেখা মাসরুমের নানা উপকারিতার কথা। ক্রেতারা সহজেই বুঝতে পারবেন ও পড়তে নিতে পারবেন মাসরুমের প্রাথমিক উপকারিতার কথা। মাসরুম চাষে এগিয়ে আসা এ যুবকের বাড়ি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার মুশুদ্দি গ্রামে। তার পিতা জসিম উদ্দিন।
মাসরুম চাষি রাসেলের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ২০১২ সালে নিজ গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০১৪ সালে এইচএসসি ও ২০১৭ সালে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। পরে তিনি শারীরিক শিক্ষা কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। পড়াশোনা শেষ করে বসে না থেকে কৃষি অফিসের মাধ্যমে জাতীয় মাসরুম ইনস্টিটিউট সাভারে চাষে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। বাড়িতে এসে শুরু করে মাসরুম চাষ।
তিনি জানান, মাসরুম শুধু নিজের লাভই না। যারা খাবেন তাদেরও উপকারিতা অনেক। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাসরুমে আমিষ শর্করা চর্বি ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা ইমিউনিউন সিস্টেম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পটাসিয়ামের উপস্থিত থাকায় হৃদ রোগ বা হার্টের রোগ নিরাময় সহায়ক। প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইজম ও বিটাগ্লোক্যান আছে যা বহুমূত্র রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। ইরিটাডেনিন লোভাস্টাটিন এনটাডেনিন কিটিন এবং ভবটামিন বি সি ও ডি সমৃদ্ধ। যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। প্রচুর পরিমানে সালফার সরবরাহকারি এমাইনো এসিড থাকায় চুর পড়া ও পাকা রোদে সহায়তা করে থাকে। নিয়াসিন রিবোফ্লাভিন থাকায় মাসরুমে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
তিনি আরো জানান, তার খামারে দুই জাতের মাসরুম রয়েছে। ওয়েস্টার ও মিলকি জাতের মাসরুম। সিদ্ধ করা খড়ে বীজ বা স্পন দিয়ে দিতে হয়। মাসরুম পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে প্রায় ২৮-৩০ দিন। মাসে একবার করে আসে মাসরুম। তার ৫০০টি ব্যাগে চলছে এ চাষ। জাত ভেদে দামও কম বেশি হয়ে থাকে। ওয়েস্টার ২৫০ টাকা আর মিলকি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে বলে রাসেল জানান।
তারমতে, প্রতিব্যাগে হাফ কেজির মতো মাসরুম উৎপাদন হয়ে থাকে। মাস শেষে খরচ বাদে তার ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ আসে এমনটাই জানালেন তিনি। ভবিষ্যতে আরো বাড়াতে চান তার খামার।
মুশুদ্দি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ জানান, রাসেল একজন প্রশিক্ষিত যুবক। প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে সে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, উপজেলায় তিনজন যুবক মাসরুম চাষ করছে। মাসরুম চাষে যুবকরা এগিয়ে যাচ্ছে। বহুগুণে উপকারিতা সমৃদ্ধ মাসরুম। এরা জাতীয় মাসরুম ইনস্টিটিউট সাভার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাসরুম চাষ করছে। তারা আর্থিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩ দিন আগে
আপডেট : ৩ দিন আগে
মাসরুম চাষে স্বনির্ভর রাসেল
টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে পুষ্টি উন্নয়ন ও স্বনির্ভরতায় মাসরুম চাষ করেছেন রাসেল আহমেদ নামের এক যুবক। তিনি পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজের বাড়িতে শুরু করেছেন মাসরুম চাষ। এ জন্য তিনি কৃষি বিভাগের মাধ্যমে জাতীয় মাসরুম ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিয়ে সময় অপচয় না করে তার বসতবাড়িতেই আয়োজন করেন এ চাষাবাদের। বাড়ির দুচালা টিনের ঘরেই শেড বানিয়ে মাসরুম চাষ শুরু করেন।
কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শে তিনি ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছেন। স্বপ্ন দেখছেন মাসরুমে নিজের পাশাপাশি অন্য আরো মানুষের কর্মসংস্থানের। এগিয়ে যাওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সকাল বিকেলে কাজ করে যাচ্ছেন তার খামারে। ভালো সফলতাও ধরা দিচ্ছে। মাসরুম চাষ প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়েছেন একটি ভ্যান। ভ্যানের পিছনেও লেখা মাসরুমের নানা উপকারিতার কথা। ক্রেতারা সহজেই বুঝতে পারবেন ও পড়তে নিতে পারবেন মাসরুমের প্রাথমিক উপকারিতার কথা। মাসরুম চাষে এগিয়ে আসা এ যুবকের বাড়ি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার মুশুদ্দি গ্রামে। তার পিতা জসিম উদ্দিন।
মাসরুম চাষি রাসেলের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ২০১২ সালে নিজ গ্রামের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০১৪ সালে এইচএসসি ও ২০১৭ সালে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। পরে তিনি শারীরিক শিক্ষা কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। পড়াশোনা শেষ করে বসে না থেকে কৃষি অফিসের মাধ্যমে জাতীয় মাসরুম ইনস্টিটিউট সাভারে চাষে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। বাড়িতে এসে শুরু করে মাসরুম চাষ।
তিনি জানান, মাসরুম শুধু নিজের লাভই না। যারা খাবেন তাদেরও উপকারিতা অনেক। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাসরুমে আমিষ শর্করা চর্বি ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা ইমিউনিউন সিস্টেম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পটাসিয়ামের উপস্থিত থাকায় হৃদ রোগ বা হার্টের রোগ নিরাময় সহায়ক। প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট এনজাইজম ও বিটাগ্লোক্যান আছে যা বহুমূত্র রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। ইরিটাডেনিন লোভাস্টাটিন এনটাডেনিন কিটিন এবং ভবটামিন বি সি ও ডি সমৃদ্ধ। যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। প্রচুর পরিমানে সালফার সরবরাহকারি এমাইনো এসিড থাকায় চুর পড়া ও পাকা রোদে সহায়তা করে থাকে। নিয়াসিন রিবোফ্লাভিন থাকায় মাসরুমে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
তিনি আরো জানান, তার খামারে দুই জাতের মাসরুম রয়েছে। ওয়েস্টার ও মিলকি জাতের মাসরুম। সিদ্ধ করা খড়ে বীজ বা স্পন দিয়ে দিতে হয়। মাসরুম পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে প্রায় ২৮-৩০ দিন। মাসে একবার করে আসে মাসরুম। তার ৫০০টি ব্যাগে চলছে এ চাষ। জাত ভেদে দামও কম বেশি হয়ে থাকে। ওয়েস্টার ২৫০ টাকা আর মিলকি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে বলে রাসেল জানান।
তারমতে, প্রতিব্যাগে হাফ কেজির মতো মাসরুম উৎপাদন হয়ে থাকে। মাস শেষে খরচ বাদে তার ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ আসে এমনটাই জানালেন তিনি। ভবিষ্যতে আরো বাড়াতে চান তার খামার।
মুশুদ্দি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ জানান, রাসেল একজন প্রশিক্ষিত যুবক। প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে সে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
ধনবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, উপজেলায় তিনজন যুবক মাসরুম চাষ করছে। মাসরুম চাষে যুবকরা এগিয়ে যাচ্ছে। বহুগুণে উপকারিতা সমৃদ্ধ মাসরুম। এরা জাতীয় মাসরুম ইনস্টিটিউট সাভার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাসরুম চাষ করছে। তারা আর্থিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।
ভোরের আকাশ/এসএইচ