বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৫ ০৩:৩০ পিএম
বাগেরহাটে রমরমা অবৈধ রেণু পোনার ব্যবসা, প্রতারণার শিকার মৎস্য চাষিরা
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের ফলতিতা বটতলা মাছ বাজারে দূতি ফিস নামক একটি প্রতিষ্ঠানে অভিনব পন্থায় অবৈধ রেণু পোনার ব্যবসা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় মৎস্য চাষিরা।
শুক্রবার (১৬ মে) সকাল ৫ টায় দেখা যায়, দূতি এন্টারপ্রাইজ নামের এই প্রতিষ্ঠানটি কুয়াকাটা জননী হ্যাচারি লিঃ-এর রেণু পোনা এনে বিক্রি করছে, তবে প্রচার করছে সেটি ‘কুয়াকাটা হ্যাচারি লিঃ’-এর পোনা হিসেবে। অথচ, কুয়াকাটা জননী গলদা চিংড়ি হ্যাচারী লিঃ কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা।
দূতি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ ওলিয়ুল আলম (ছোট হুজুর)- এর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি দাবি করেন, দুটি প্রতিষ্ঠান একই মালিকের। তবে এর বাইরে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, কুয়াকাটা জননী গলদা চিংড়ি হ্যাচারী লিঃ-এর স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ‘কুয়াকাটা হ্যাচারি লিঃ’ নামে তাদের একটি প্রতিষ্ঠান আছে, প্রায় ৭০ লক্ষ্য টাকা ক্ষতি হওয়ার কারনে কুয়াকাটা জননী গলদা চিংড়ি হ্যাচারী লিঃ এর বর্তমানে প্যাকেট না করার কারনে এই ভিন্ন নামের ব্যাগ ব্যাবহার করা হচ্ছে। তাদের এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে স্থানীয় মৎস্য চাষিদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তারা অভিযোগ করছেন, অধিক লাভের আশায় দূতি ফিস নিম্নমানের অথবা অন্য কোনো হ্যাচারির পোনা তাদের কাছে জননী হ্যাচারীর নাম ভাঙিয়ে বিক্রি করছে, যা তাদের চাষাবাদে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হচ্ছে।
এ বিষয়ে ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক মীর বলেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা যদি আমাকে বিষয়টি জানান এবং ফোর্স চান, তাহলে আমরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
ফকিরহাট সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, আমি এতো সকালে কাউকে পাচ্ছি না, আপনারা এমন বিষয় আমাদের কে আগে জানালে আমরা ব্যাবস্থা নিবো।
স্থানীয় মৎস্য চাষিরা অবিলম্বে এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
তারা বলছেন, একদিকে যেমন তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি অন্যদিকে ভেজাল পোনার কারণে তাদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টাও ভেস্তে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন কিনা, এখন সেটাই দেখার বিষয়। তবে ভুক্তভোগী মৎস্য চাষিরা প্রয়োজনে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এবং মৎস্য অধিদপ্তরেও অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
ভোরের আকাশ/এসআই