নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫ ০৮:৪২ পিএম
কুয়েটে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধের ঘোষণা
কুয়েটে সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্চিতের ঘটনায় দোষীদের বিচার দ্রুত শেষ না হলে ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি সকল প্রকার প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া আগামীকাল (সোমবার) দুপুর বারোটার মধ্যে প্রশাসন কোন সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত না নিলে ভিসির কার্যালয়ে অবস্থান ধর্মঘটের কর্মসূচীও ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
রোববার (১৮মে) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সভা কক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এরআগে শিক্ষকরা তাদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে বৈঠক করেন। দুপুর দেড়টায় কনফারেন্স রুমে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় শিক্ষকরা কুয়েট প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তোলেন।
এদিকে, কুয়েটে সংঘটিত সকল অপরাধের বিচার অতিদ্রুত সম্পন্ন করে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর আবেদন করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১২টার দিকে পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে এ দাবি জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কুয়েট শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বাইরে গিয়ে কুয়েট প্রশাসন দোষীদের বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছে। যার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সংকটের মধ্যে পড়েছে। মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্বার্থ রক্ষায় ও উপর মহল নামক অদৃশ্য শক্তিকে তুষ্ট করছে বর্তমান প্রশাসন। আগামীকাল (সোমবার) দুপুর বারোটার মধ্যে প্রশাসন কোন সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত না নিলে উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী এবং শিক্ষক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারসহ ৫দফা দাবীতে গত ০৫ মে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি।
লিখিত আবেদনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতি গভীর উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করছি। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা সকল অন্যায়ের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং তদন্তসাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি। আন্দোলনের সময় কিছু অতিউৎসাহী শিক্ষার্থীর দ্বারা আমাদের পিতৃতুল্য শিক্ষকদের প্রতি লাঞ্ছনা ও অসম্মানের যে ঘটনা ঘটেছে, তার ফলে শিক্ষকদের সাথে আমাদের ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। আমরা সকল শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী এবং তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্বারাই হোক।
শিক্ষার্থীদের ৫ দফার যৌক্তিক দাবির প্রতিও সমর্থন আমরা জানাচ্ছি। তবে কতিপয় শিক্ষার্থী দ্বারা বহিরাগত ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার যে দাবি করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান জানাচ্ছি। প্রস্তাবিত বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি দ্বারা তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া জটিল ও দীর্ঘায়িত হবে যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরও বাড়াবে ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে। ভোরের আকাশ/এসআই
আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখি এবং আমরা বিশ্বাস করি তাদের মাধ্যমেই ন্যায়বিচার কার্যকর হবে এবং কোনো নির্দোষীর শাস্তি হবে না এই ভরসা রাখি। গত তিন মাস যাবত কুয়েটে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। উদ্ধৃত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে আমরা যেন অতিদ্রুত একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরতে পারি এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
ভোরের আকাশ/এসআই