সংগৃহীত ছবি
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা ১২ দিনের ছুটি শেষে বুধবার (৮ অক্টোবর) থেকে সারা দেশের সরকারি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আগেই খুলেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক ছুটির তালিকা অনুযায়ী, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটি শুরু হয়েছিল এবং তা মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত চলে। এ ছুটির মধ্যে ছিল শারদীয় দুর্গাপূজা, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম, প্রবারণা পূর্ণিমা এবং লক্ষ্মীপূজার ছুটি। এর সঙ্গে সাপ্তাহিক দুই দিনের বন্ধও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আর গত ৬ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষ্যে ছিল ঐচ্ছিক ছুটি।
ছুটির সময় শিক্ষার্থীদের যেন পরীক্ষার চাপ না থাকে, সে জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগেই নির্দেশনা দিয়েছিল— ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ না করতে অফিস আদেশ জারি করে।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
কান্না ভেজা চোখে শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা মো. বরকত উল্লাহ স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমার ছেলের দোষ কী ছিল? সে শুধু আগ্রাসনবিরোধী লেখালেখি করেছিল।’ তিনি বলেন, আবরার বলেছিল— ‘আমার রুমের আশেপাশে সবাই ছাত্রলীগের ছেলে। কেউ এলে ওরা আমাকে মারতে দেবে না।’ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে একযোগে প্রামাণ্যচিত্র ‘ইউ ফেইলড টু কিল আবরার ফাহাদ’ প্রদর্শন করা হয়।আবেগঘন বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বলেন, সে শুধু আগ্রাসনবিরোধী লেখালেখি করেছিল। শুরুতে আমরাও জানতাম না সে এমন লিখে। পরে জানতে পেরে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তখন সে বলেছিল— ‘আমি খারাপ কিছু লিখি না, কেউ আমাকে কিছু বলবে না।’ সে আরও বলেছিল— ‘আমার রুমের আশেপাশে সবাই ছাত্রলীগের ছেলে। কেউ এলে ওরা আমাকে মারতে দেবে না।’ কিন্তু আমার ছেলে যেদিন ছুটি শেষে হলে ফিরে গেল, তার পরের দিনই ছাত্রলীগের ছেলেপেলে তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলে।তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের দোষ ছিল— সে দেশের পক্ষে লেখালেখি করেছে। দেশের ক্ষতি হচ্ছিল যেগুলোতে, সে সেগুলো তুলে ধরত। তার ফেসবুকে লিখেছিল— ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর কলকাতা বন্দর ব্যবহার না পেয়ে বাংলাদেশ গোলাপপোর্ট চালু করে, এরপর থেকেই ইলিশ কমে যায়। সে আরও লিখেছিল, পানি চুক্তিতে ভারত আমাদের সময়মতো পানি দেয় না, অথচ আমরা বিনা শর্তে দিয়েছিলাম ১ লাখ ৩৫ হাজার কিউসেক পানি। এই ধরনের স্ট্যাটাসের কারণেই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর ছেলেরা ও তার রুমমেট মিজান মিলে ওকে ‘শিবিরের ছেলে’ তকমা দেয়। এই মিথ্যা অভিযোগেই ছুটি শেষে হলে ফিরে আসার পরের দিন রাত ৮টা থেকে সারারাত নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।আবরারের বাবা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমার ছেলে খুব ভীত ছিল। যদি ওদের কেউ বলত ‘লিখবে না’— তাহলে সে কখনো হলে ফিরে যেত না। কিন্তু ওরা তার কোনো কথা শোনেনি। তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল কে কে শিবির করে, অথচ সে কোনো দলের ছিল না। যারা আমার ছেলের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল, আল্লাহ তাদের বিচার করেছেন।তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমার ছেলের মামলাটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন আছে। এ বিচার যেন দ্রুত শেষ হয়।আবরারের বাবা আরও বলেন, ২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ শহীদ হওয়ার পর থেকে প্রতি বছরই তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এ পালন করতে গিয়ে গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের কর্মীসহ সাধারণ মানুষ অনেকেই নির্যাতন, নিপীড়ন, এমনকি জেল খেটেছেন। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর এই প্রথম সারা দেশে সবাই একসঙ্গে এ মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে— এজন্য আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন— বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করা হবে। কিন্তু সেই তালিকা এখনো প্রকাশ হয়নি। আমি চাই, তালিকাটি দ্রুত তৈরি ও প্রকাশ করা হোক।শেষে তিনি বলেন, আবরার ফাহাদসহ জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছেন, আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহমেদ স্ট্যালিন, নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক দীপক কুমার গোস্বামীসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।অনুষ্ঠানে শহীদ আবরার ফাহাদের স্মরণে প্রামাণ্যচিত্র ‘ইউ ফেইলড টু কিল আবরার ফাহাদ’ প্রদর্শিত হয়।ভোরের আকাশ/মো.আ.
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা ১২ দিনের ছুটি শেষে বুধবার (৮ অক্টোবর) থেকে সারা দেশের সরকারি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে যাচ্ছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আগেই খুলেছে।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক ছুটির তালিকা অনুযায়ী, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটি শুরু হয়েছিল এবং তা মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত চলে। এ ছুটির মধ্যে ছিল শারদীয় দুর্গাপূজা, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম, প্রবারণা পূর্ণিমা এবং লক্ষ্মীপূজার ছুটি। এর সঙ্গে সাপ্তাহিক দুই দিনের বন্ধও অন্তর্ভুক্ত ছিল।আর গত ৬ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষ্যে ছিল ঐচ্ছিক ছুটি।ছুটির সময় শিক্ষার্থীদের যেন পরীক্ষার চাপ না থাকে, সে জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগেই নির্দেশনা দিয়েছিল— ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ না করতে অফিস আদেশ জারি করে।ভোরের আকাশ/তা.কা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ায় কারেণ বুয়েটের শেরেবাংলা হলে নৃশংসভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) একদল নেতাকর্মী। ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১৬ মার্চ মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ জনের মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ের সময় থেকেই তিনজন পলাতক। তারা হলেন মোর্শেদ-উজ-জামান, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি মুনতাসির আল (জেমি) গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যান। এ মামলায় সব মিলিয়ে দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে চারজন পলাতক বলে রায় ঘোষণার দিন (গত ১৬ মার্চ) জানিয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ।এদিকে ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী ও ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর ম্যাসাকার দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতিবছর এই দুটি দিবস বিশেষভাবে পালিত হবে।সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকালে প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়, শহীদ আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকাসহ দেশের সব শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ইউ ফেইলড টু কিল আবরার ফাহাদ’ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। ঢাকার প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকবেন আবরার ফাহাদের বাবা।এছাড়া মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী চত্বরে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ উদ্বোধন হবে। উদ্বোধন করবেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ।ভোরের আকাশ/তা.কা
বিশ্ব শিক্ষক দিবসে চার দফা দাবি জানাল বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনবিশ্ব শিক্ষক দিবসে চার দফা দাবি জানাল বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন।শিক্ষকদের পেশাগত অবমূল্যায়ন, আর্থিক সংকট এবং ন্যূনতম ভাতা প্রদানের অভাবসহ নানা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।রোববার (৫ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মিসেস মনোয়ারা ভূঁইয়া, আর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহাসচিব মো. মিজানুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি ডা. আব্দুল মাজেদ, জেসমিন নাহার, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ হামিদুর রহমান, শিক্ষা সম্পাদক আব্দুল আলিম এবং অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম অনিকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।সংগঠনের চার দফা দাবিগুলো হলো—১️. শিক্ষক/শিক্ষিকাদের জন্য ন্যূনতম ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা।২️. বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি করা।৩️. জাতীয় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক পুরস্কারের আওতায় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা।৪️. শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কমিটিতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “শিক্ষকের ভূমিকা শুধু পাঠদান নয়; শিক্ষক সমাজগঠনের কারিগর, জাতির দিকনির্দেশক এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা।”তারা আরও বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষাই জাতীয় উন্নয়নের ভিত্তি। একজন শিশুর হৃদয়ে যখন ভালোবাসা, শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও জ্ঞানের বীজ বপন করা হয়, তখন সেই শিশুটি যোগ্য নাগরিক হিসেবে সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।”বক্তারা উল্লেখ করেন, সীমিত সুযোগ ও নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকরা প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাদের ত্যাগ, ভালোবাসা ও আন্তরিকতার মাধ্যমেই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হচ্ছে।সভাপতি মিসেস মনোয়ারা ভূঁইয়া বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা উন্নত কারিকুলাম—সব কিছুর প্রাণশক্তিই শিক্ষক। তাই তাদের মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব।”ভোরের আকাশ/জাআ