আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৫ ১২:১৩ এএম
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন আধিপত্য আর চলবে না : আল-খামেনি
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন আধিপত্য আর চলবে না- এমনই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এই অঞ্চল ছাড়তে হবে এবং এক সময় তারা যেতে বাধ্য হবে।’
শনিবার (১৭ মে) তেহরানে এক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে এই মন্তব্য করেন আল-খামেনি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া এই বক্তব্যে তিনি কড়া সমালোচনা করেন ওয়াশিংটনের আঞ্চলিক নীতি ও ভূরাজনৈতিক ভূমিকার।
খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল হচ্ছে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোকে তাদের সামরিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল করে রাখা। কিন্তু এই অঞ্চলের দেশগুলোর দৃঢ় প্রতিরোধই যুক্তরাষ্ট্রকে একদিন এখান থেকে বিতাড়িত করবে।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের সময় তিনি কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের সামরিক ও বাণিজ্যিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সফরকালেই ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেন এবং তেল রপ্তানি শূন্যে নামিয়ে আনার হুঁশিয়ারি দেন।
ট্রাম্পের কটাক্ষের জবাবে খামেনি বলেন, ‘এই সব মন্তব্য এতই নিচুস্তরের যে সেগুলো বক্তা ও আমেরিকান জনগণের জন্য লজ্জাজনক।’ তিনি ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘এসব কথার কোনো জবাব দেয়ার প্রয়োজন নেই।’
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ও গণহত্যার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের মদদ আছে বলেও অভিযোগ করেন আল-খামেনি। তার ভাষায়, ‘ট্রাম্প বলেন, তিনি শান্তি চান। কিন্তু বাস্তবে, তার প্রশাসন গাজায় রক্তপাত, সন্ত্রাস ও সংঘাত উসকে দিচ্ছে। যেখানে তারা চায়, সেখানে আগুন লাগায় এবং নিজেদের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করে।’
ইসরায়েল সম্পর্কে কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে খামেনি বলেন, ‘এই অঞ্চলেই যুদ্ধ, সংঘাত ও অস্থিরতার মূল উৎস হচ্ছে ইহুদিবাদী শাসন ব্যবস্থা। এটি এক ভয়াবহ ক্যান্সার- যাকে অবশ্যই উৎপাটন করতে হবে।’
ভাষণের এক পর্যায়ে তিনি শিক্ষা খাতে সরকারের মনোযোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘শিক্ষায় খরচ আসলে একটি বিনিয়োগ, ব্যয় নয়। এটি জাতির ভবিষ্যৎ গড়ার মজবুত ভিত্তি।’
আল-খামেনির বক্তব্যে একটাই বার্তা স্পষ্ট- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন আধিপত্যের সময় শেষ হয়ে আসছে। আঞ্চলিক জনসাধারণের প্রতিরোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা এবং ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে একসময় বাধ্য হয়েই এই অঞ্চল ছাড়তে হবে।
ভোরের আকাশ//হ.র