ছবি: সংগৃহীত
চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় দুই প্রদেশ গানসু ও গুয়াংডংয়ে প্রবল বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট হড়পা বান ও ভূমিধসে ১৭ জন নিহত হয়েছেন এবং এখনও নিখোঁজ আছেন কমপক্ষে ৩৩ জন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া।
চীনের আবহাওয়া আবহাওয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গানসু এবং গুয়াংডংয়ে ১৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলের জেরে গানসুর চার জেলা ইউঝৌং, লানঝৌ, লিনজিয়া এবং বাইয়িন-এ ইতোমধ্যে বন্যা দেখা দিয়েছে। ইউঝৌং-য়ের জিংলং পার্বত্য এলাকার বন্যা কবলিত ৪টি গ্রাম থেকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে চার হাজারেরও বেশি মানুষকে।
বর্ষণ ও ঝোড়ো আবহাওয়ার কারণে গানসুর উত্তরপূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ অঞ্চল বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে।পাশাপাশি ভূমিধস এবং বন্যার কারণে বন্ধ আছে বেশিরভাগ সড়ক।
এদিকে প্রবল বৃষ্টির কারণে চীনের আরেক প্রদেশ গুয়াংডংয়ের একটি গ্রামে বড় ভূমিধসের ঘটেছে।কাদা-মাটি-জঞ্জালের স্তূপ থেকে থেকে এখন পর্যন্ত ৭ জনকে জীবিত এবং ১৪ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও অন্তত ৩৩ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্যরা। কয়েক ডজন বাড়িঘরও ধ্বংস হয়েছে ভূমিধসে।
জুনের মাঝামাঝি থেকে বর্ষাজনিত বিভিন্ন দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে চীনে।গত সপ্তাহে রাজধানী বেইজিংয়ে প্রবল বর্ষণ ও তার জেরে সৃষ্ট হড়কা বানে অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি হয়েছে।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বড় ধরনের বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল প্রায় ১ হাজার ৯৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। এর মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং বাকি ১ হাজার ৭০০ জন যুদ্ধ শুরুর পর আটক হয়েছে। এর বিনিময়ে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে।হামাস জানিয়েছে, চুক্তি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই বিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হবে। সৌদি টেলিভিশন আল-শার্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বন্দি ও জিম্মি বিনিময় আগামী সপ্তাহে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য চ্যানেল আল-হাদাথ জানায়, ৭২ ঘণ্টার সময় গণনা শুরু হবে তখনই, যখন ইসরায়েলি সেনারা গাজার নির্ধারিত সীমারেখায় সরে যাবে।এক ফিলিস্তিনি সূত্র আলজাজিরাকে জানায়, মধ্যস্থতাকারীরা ফিলিস্তিনিদের প্রস্তাবিত মানচিত্রে সম্মতি দিয়েছে, যাতে ইসরায়েলি সেনাদের ধীরে ধীরে গাজার শহরগুলো থেকে প্রত্যাহারের পরিকল্পনা রয়েছে। হামাসের মতে, চুক্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চয়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।চুক্তি কার্যকর হলে রাফাহ সীমান্ত দুদিকেই খুলে দেওয়া হবে, আহতদের মিশরে স্থানান্তরের অনুমতি মিলবে এবং প্রথম পাঁচ দিনে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ ট্রাক ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করবে। এ ছাড়া দক্ষিণ গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে।চুক্তি গাজার মানুষের জীবনে স্বস্তি আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও এর পূর্ণ বাস্তবায়ন ও স্থায়িত্ব নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
ইহুদিদের ধর্মীয় উৎসব সুক্কোট উপলক্ষে ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীরের হেবরনে অবস্থিত ঐতিহাসিক ইব্রাহিমি মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ইসরায়েলি সেনারা মসজিদে যাওয়ার সব প্রবেশপথ ও রাস্তা বন্ধ করে দেয়।ইব্রাহিমি মসজিদ মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই সমাধিস্থ আছেন হজরত ইব্রাহিম (আ.), ইসহাক (আ.), ইয়াকুব (আ.), ইউসুফ (আ.) ও তাদের স্ত্রীরা।ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, মসজিদটি বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। হেবরনের আল-আওকাফ বিভাগের পরিচালক আমজাদ কারাজেহ এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এটি পবিত্র স্থান অবমাননা ও মুসল্লিদের ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ।ইসরায়েলি সেনারা মসজিদে যাওয়ার সব চেকপয়েন্ট বন্ধ করে হেবরনের কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘর থেকে বের হতে পারছেন না, এমনকি শিক্ষার্থীরাও স্কুলে যেতে পারছে না।এর মধ্যেই ইসরায়েলের উগ্রপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গিভির নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করেন এবং বলেন, এখন আল-আকসার মালিক ইসরায়েল। এ ঘোষণার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।সূত্র : দ্য নিউ আরবভোরের আকাশ/মো.আ.
অবশেষে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তিচুক্তি হয়েছে। উভয়পক্ষ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দিয়েছেন।ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, অবশেষে গাজায় শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। এই খবর সামনে আসতেই ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল উভয় পক্ষেই স্বস্তি ও উল্লাসের ঢেউ লেগেছে।বুধবার (৯ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, "ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে স্বাক্ষর করেছে। এর অর্থ হলো খুব শিগগিরই সব জিম্মির মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারিত একটি লাইনে সরিয়ে আনবে।"এই চুক্তিকে 'ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন' বলে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বৃহস্পতিবার এই চুক্তি অনুমোদনের জন্য তার সরকারের একটি বৈঠক আহ্বান করেছেন। অন্যদিকে, হামাসও গাজায় যুদ্ধ বন্ধে চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।শান্তি চুক্তি সই হওয়ার খবরে গাজাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ফিলিস্তিনিরা উল্লাস করছেন। সাংবাদিক সাঈদ মোহাম্মদের পোস্ট করা একটি ফুটেজে দেখা যায়, দেইর আল বালাহ-এর আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে পুরুষ ও নারীরা সঙ্গীতের তালে নেচে, শিস বাজিয়ে, হাততালি দিয়ে এবং 'আল্লাহু আকবর' রব তুলে উদযাপন করছেন। আরেক সাংবাদিক মোহাম্মদ আল-হাদ্দাদের ভিডিওতেও গাজার আরেকটি স্থানে তরুণদের নাচতে দেখা গেছে।বিশ্বনেতারা এই চুক্তির প্রথম ধাপকে স্বাগত জানিয়েছেন। জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তেনিও গুতেরেস সব পক্ষকে চুক্তির শর্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, "এই দুর্ভোগের অবসান হওয়া উচিত।"যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার এটিকে "গভীর স্বস্তিকর মুহূর্ত" বলে উল্লেখ করেছেন।অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেছেন, চুক্তিটি "শান্তির দিকে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ"। তিনি ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং সমঝোতা আলোচনায় মিশর, কাতার এবং তুরস্কের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান।ভোরের আকাশ/মো.আ.
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় টালমাটাল ফান্সে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নিয়োগ দেবেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এবং দপ্তর এলিসি প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বুধবার এ তথ্য রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন।ওই কর্মকর্তা বলেছেন, অধিকাংশ আইনপ্রণেতা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিপক্ষে। তারা স্থিতিশীলতা চান। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন একটি বাজেট গৃহীত হওয়ার কথা আছে। সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন পার্লামেন্টে স্থিতিশীলতা।তাই সবদিক বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হবে।গত ৬ অক্টোবর পদত্যাগ করেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান লেকোর্নো। ম্যাক্রোঁর বিশ্বস্ত অনুসারী হিসেবে পরিচিত এই রাজনীতিবিদ এখন দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকায় আছেন। নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ পেলে বিদায় নেবেন তিনি।সম্প্রতি জাতীয় বাজেট কাটছাঁট নিয়ে সরকারে প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ফ্রান্সের জনগণ ও বিরোধী দলগুলো। ঋণের দেনায় জর্জরিত ফ্রান্সের সরকারে স্বস্তি দিতে গত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে কল্যাণমূলক ও জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন খাত থেকে সরকারি বরাদ্দের অর্থ কাটছাঁট করার একটি প্রস্তাব পাস করে ফ্রান্সের মন্ত্রিসভা; পাস হওয়া সেই প্রস্তাব অনুযায়ী বাজেট সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন খাত থেকে রাষ্ট্রীয় বরাদ্দের মোট ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছেঁটে ফেলা হয়।এতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন ফ্রান্সের সাধারণ জনগণ। জনগণের ক্ষোভকে আমলে নিয়ে পার্লামেন্টে লেকোর্নোর পূর্বসূরী প্রধানমন্ত্রী ফাঙ্কোইস বায়রোকে আস্থাভোটের চ্যালেঞ্জ জানান বিরোধী দলীয় এমপিরা। সেই ভোটে হেরে গিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর বিদায় নেন বায়রো। তার বিদায়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লেকোর্নোকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন ম্যাক্রোঁ।কিন্তু লেকোর্নো আসার পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। ফ্রান্সের কট্টর বামপন্থি রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়নগুলো একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করে যাচ্ছিল। ফলে দায়িত্ব গ্রহণের ২৭ দিনের এবং মন্ত্রিসভা গঠনের ১৪ ঘণ্টার মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান লেকোর্নো।এলিসি প্রাসাদ থেকে বিবৃতি আসার আগের দিন মঙ্গলবার ফ্রান্সের সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম ফান্স ২ টিভিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন লেকোর্নো। সেখানে লেকোর্নো বলেছিলেন, যে সংকটের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, আমি মনে করি এ থেকে এখনও উত্তরণ সম্ভব। আমি আজ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং যত শিগগির সম্ভব নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছি।তার এই সাক্ষাৎকার প্রচারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা এসেছে এলিসি প্রাসাদ থেকে।ভোরের আকাশ/তা.কা