আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৮:৩৮ এএম
রাশিয়া-ইউক্রেন পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলায় নিহত ৫, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি নেই
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাশিয়ায় দুজন এবং ইউক্রেনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই দিনে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে তৃতীয় দফার আলোচনা হলেও তাতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভে একটি বাড়িতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চেরকাসি ও জাপোরিঝঝিয়া শহরে হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঐতিহাসিক ওডেসা শহরের ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান প্রিভোজ বাজারেও হামলা চালানো হয়, যার ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সকালে খারকিভে আরেকটি হামলায় আহত হন আরও ৩৩ জন।
অন্যদিকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সোচি শহরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় দুইজন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।
এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ইস্তাম্বুলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে বসে দুই দেশের প্রতিনিধিদল। তবে এক ঘণ্টার সেই বৈঠক থেকে খুব একটা আশাব্যঞ্জক বার্তা মেলেনি। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান জানান, বড় কোনো অগ্রগতির আশা করেই তারা আলোচনা শুরু করেননি। রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি জানিয়েছেন, আলোচনায় উভয় পক্ষ ১,২০০ যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছে এবং রাশিয়া তিন হাজার ইউক্রেনীয় সেনার মরদেহ ফেরত পাঠাতে চেয়েছে।
তবে এই আলোচনা থেকে যুদ্ধ থামানোর মতো কোনো বাস্তব পদক্ষেপ আসেনি। বরং উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ তুলেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “আমরা কোনো বড় অগ্রগতির প্রত্যাশা করিনি। এই ধরনের অগ্রগতি অর্জন খুবই কঠিন।” তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন সরাসরি বৈঠকের যে প্রস্তাব দিয়েছে তা এখনো সময়ের আগেই উঠে এসেছে। “তারা ঘোড়ার আগেই গাড়ি টানতে চাইছে,”—উল্লেখ করেন পেসকভ।
ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি রুস্তেম উমেরভ জানিয়েছেন, আগস্টের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরাসরি বৈঠকের আয়োজন করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু এর আগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি বলে মনে করছে মস্কো।
এর আগে মে ও জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে প্রথম ও দ্বিতীয় দফার আলোচনা হয়। তিনি যুদ্ধ বন্ধে ৫০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন এবং সময়মতো সমাধান না হলে রাশিয়ার ওপর কঠোর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
রাশিয়ার অবস্থান এখনো অপরিবর্তিত। তারা চায় ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা, সামরিক সক্ষমতা হ্রাস এবং ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে। তবে কিয়েভ ও পশ্চিমা মিত্ররা এই শর্তগুলো মানতে নারাজ।
বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “আমরা কূটনৈতিক সমাধানে সবকিছু করব, কিন্তু যুদ্ধ শেষ করতে হবে রাশিয়াকেই—কারণ তারাই এটা শুরু করেছিল।”
ভোরের আকাশ//হ.র