আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৫১ পিএম
মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ৩৬০০, নিখোঁজ শতাধিক
ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রতিবেশী মিয়ানমারে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৬০০ জনে পৌঁছেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও মিলছে মরদেহ। তবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। এছাড়া হতাহতদের সন্ধানে দেশটিতে এখনও উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
জানা যায়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মান্দালয় অঞ্চলে এখনও চলছে উদ্ধার তৎপরতা। ধসে পড়া ভবনের নিচে থেকে এখনও উদ্ধার করা হচ্ছে মরদেহ। এর মধ্যে তীব্র বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের মধ্যে অনেকে এখনো খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন। কিছু এলাকায় অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করেছে চীনের উদ্ধারকর্মীরা। মান্দালয়ের দুইটি স্টেডিয়ামে বসবাস করছেন বহু মানুষ। চীন থেকে এসেছে তৃতীয় দফার মানবিক সহায়তা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চীনা বিশেষজ্ঞরা প্রায় ৯০০ ভবনের অবকাঠামো পর্যবেক্ষণ করেছেন।
দু'পক্ষ সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও ভূমিকম্প মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জান্তা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধের কারণে বহু এলাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে না ত্রাণ। গৃহযুদ্ধ, দুর্যোগ আর দারিদ্র্যের ত্রিমুখী সঙ্কটে বিপর্যস্ত মিয়ানমার এখন পুরোপুরি নির্ভরশীল আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর। সহিংসতা না থামলে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি অসম্ভব বলে মনে করছেন মানবিক সংস্থাগুলো।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, সোমবার রাজ্য প্রশাসন পরিষদের তথ্য দল জানিয়েছে। অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল আরও মৃতদেহ খুঁজে বের করার কাজ করছে বলেও জানিয়েছে তারা।
সিনহুয়া নিউজের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৫ হাজার ১৭ জন আহত হয়েছেন এবং এখনও আরও ১৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
গত ২৮ মার্চ দেশটিতে এক শতাব্দির বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে শত শত বছরের প্রাচীন গির্জা ও আধুনিক ভবনও ধসে যায়। ভূমিকম্পের পর সর্বপ্রথম চীন, রাশিয়া এবং ভারত সেখানে উদ্ধারকারী পাঠায়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দল মিয়ানমারে যায়। তারা ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও তাদের শনাক্ত করার কাজটি করছেন।
পৃথিবীতে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে উদ্ধার অভিযান ও ত্রাণ সহায়তায়য় যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন দাতব্য সংস্থা ইউএসএইডের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও মিয়ানমারকে ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন। একইসঙ্গে দেশটি জানিয়ে দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেবে এমন চিন্তা করা অযৌক্তিক।
ভোরের আকাশ/এসআই