আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৫ ০৪:৫৫ পিএম
ভারতের হামলার জবাব দিতে সেনাবাহিনীকে অনুমতি দিলো পাকিস্তান
সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে ইতোমধ্যে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর এবার বাস্তবিকই পাকিস্তানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। প্রতিক্রিয়ায় হামলার জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও।
পাকিস্তান বলেছে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আওতায় তাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। দেশটি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন এবং বেসামরিক প্রাণহানির প্রতিশোধ নিতে ‘নিজস্ব সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে’ ভারতের হামলার জবাব দেওয়ার অধিকার তারা রাখে। এরই মধ্যে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নীতিগত অনুমতি দিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এনএসসি)।
পাকিস্তানের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পূর্ণ অনুমোদন’ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৭ মে) প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) এক বৈঠকের পর এই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারত ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক এলাকা, মসজিদ ও বাসস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল। কমিটি সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্পূর্ণ দায় ভারতের। পাকিস্তান বিশ্বসমাজকে ভারতের বিরুদ্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। এনএসসি শান্তির প্রতি পাকিস্তানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, আমরা কখনোই আমাদের জনগণের ক্ষতি বা ভূখণ্ডের অখণ্ডতা লঙ্ঘন মেনে নেব না।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের দাবি, পাকিস্তানি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে তারা ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল হামলা’ চালিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান এটিকে অজুহাত হিসেবে দেখছে এবং কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ দাবি করছে।
এর আগে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে হামলার পর ভারত সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
তবে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে এ অভিযানে নিশানা বানানো হয়নি উল্লেখ করে ভারত দাবি করছে, মূলত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং হিজবুল্লাহ মুজাহিদীন গোষ্ঠীর অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে তারা, যেখানে অন্তত ৭০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
পাকিস্তানে হামলা চালানোর পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিস্তারিত জানিয়েছে ভারত। আজ বুধবার সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম দ্যা হিন্দুর লাইভে এ কথা জানানো হয়েছে। লাইভে বলা হয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ –এ পাকিস্তানের কোনো সাধারণ মানুষ, অর্থনীতি ও সামরিক স্থাপনার ওপর হামলা চালানো হয়নি।
ভোরের আকাশ/এসআই