আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৩:২৫ পিএম
ছবি- সংগৃহীত
উত্তর কোরিয়ার সাবেক নামমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান তথা সংসদপ্রধান ও কিম পরিবারের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত অনুগত কিম ইয়ং ন্যাম মারা গেছেন। ক্যানসারজনিত জটিলতায় একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে সোমবার (৩ নভেম্বর) ৯৭ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিম পরিবারের ঘনিষ্ঠ ন্যামকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএর বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কিম ইয়ং ন্যাম ছিলেন শাসক কিম পরিবারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশটির প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সুং, তার ছেলে কিম জং ইল এবং নাতি কিম জং উনের অধীনে কাজ করেছেন ন্যাম। তাদের শাসনামলে বিভিন্ন কূটনৈতিক ভূমিকা পালন করেন তিনি। যদিও তিনি ওই পরিবারের সাথে সম্পর্কিত ছিলেন না।
কিম ইয়ং ন্যামের জন্ম হয় ১৯২৮ সালে, যখন কোরীয় উপদ্বীপ জাপানি ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল। ন্যাম পিয়ংইয়ংয়ের কিম ইল সুং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। পরে মস্কোতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৫০-এর দশকে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ধীরে ধীরে উঠে আসেন শীর্ষ পর্যায়ে। একসময় তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ক্ষমতাসীন দলের একজন নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে শুরু করেও, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন এবং তারপর কিম জং ইলের প্রায় পুরো রাজত্বকাল জুড়ে সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ক্ষমতাসীন কিম পরিবারের হাতে প্রকৃত ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও, আন্তর্জাতিক মঞ্চে কিম ইয়ং ন্যামকে প্রায়শই উত্তর কোরিয়ার মুখ হিসেবে দেখা হত।
২০১৮ সালে, তিনি শীতকালীন অলিম্পিকের সময় দক্ষিণ কোরিয়ায়, উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের সাথে দেখা করেছিলেন। কিম ইয়ং ন্যাম এর আগে আরও দুই সাবেক দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করেছিলেন। ২০১৯ সালে অবসর নেয়ার আগে কিম ইয়ং ন্যাম ছিলেন তিন প্রজন্মের নেতার অধীনে কাজ করা সবচেয়ে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। উত্তর কোরিয়ার রাজনীতিতে যেখানে অনেকেই হারিয়ে গেছেন, সেখানে তিনি বিশ্বস্ততা ও ধৈর্য্য সহকারে কাজ করেছেন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ