জ্ঞান ফিরেছে সায়েমের, মামুনের মাথার খুলি এখনো ফ্রিজে
ছয় দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর জ্ঞান ফিরেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমদ সিয়ামের। তিনি হাত-পা নাড়াচ্ছেন; চিনতে পারছেন পরিবারের সদস্যদেরও। এর আগে গত ছয় দিন ধরে হাসপাতালে নিথর হয়ে পড়েছিলেন সায়েম। মাথায় রামদার কোপ লেগেছে তার মাথার খুলিতে।অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল। তবে তার মাথার খুলির একটি অংশ এখনো ফ্রিজে।পার্কভিউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সায়েমের বিষয়ে দ্বিতীয়বার মেডিকেল বোর্ড বসে। এতে ছিলেন নিউরোসার্জন কামাল উদ্দিন, মো. ইসমাইল, মো. মনজুরুল ইসলাম ও নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ হাসানুজ্জামান।বোর্ডের সিদ্ধান্তেই পরীক্ষামূলকভাবে সায়েমের লাইফ সাপোর্ট খোলা হয়েছে। এর আগে আজ দু’জন মেডিসিন বিশেষজ্ঞকে হাসপাতালে আনার সিদ্ধান্ত হয়। গত বুধবারও সায়েমের জন্য মেডিকেল বোর্ড বসেছিল।সায়েমের চেতনার মাত্রা (কনশাস লেভেল) এতদিন ৫ থেকে ৯-এর মধ্যে ওঠানামা করছে।একজন স্বাভাবিক মানুষের কনশাস লেভেল থাকে ১৫। এটি ১০–এর ওপরে ওঠার আগপর্যন্ত তাকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এখন সায়েমের এটি ১০ এর কাছাকাছি আছে।চিকিৎসাধীন সিয়ামের সঙ্গে হাসপাতালে রয়েছেন তার বাবা আমির হোসেন ও মা শাহনাজ বেগম। ছেলের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তারা।গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপ-উপাচার্য, শিক্ষার্থী, প্রোক্টরিয়াল বডির সদস্যসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী।এই সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন। রামদার কোপে তার খুলির (মাথার হাড়) একটি অংশ কেটে ফেলতে হয়েছে। ওই অংশ ফ্রিজে রেখে তার মাথা মোড়ানো হয়েছে সাদা ব্যান্ডেজে। কালো কালিতে সেখানে লেখা ‘হাড় নেই চাপ দেবেন না।’মামুনের বড় ভাই মাসুদ রানা বললেন, মামুন আমাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছে। তাকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিয়ে আমরা শঙ্কিত আছি। ডাক্তার বলেছেন, সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগবে তার। সুস্থ হলেও মেনে চলতে হবে অনেক বিধিনিষেধ।পার্কভিউ হাসপাতালের স্পেশালাইজড ইউনিটের ইনচার্জ ডা. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, সায়েমের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুলির ভেতরের অংশ ও রক্তনালী ছিঁড়ে গেছে। তবে তার জ্ঞান ফিরেছে। ব্লাড প্রেশারেও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ভোরের আকাশ/মো.আ.
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৩৪ এএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথ বাহিনী মোতায়েন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনায় যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।রোববার (৩১ আগস্ট) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।এর আগে, বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ নম্বর গেট বাজারের পূর্ব সীমা থেকে পূর্বদিকে রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে ১৪৪ ধারা জারি করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন।তবে যৌথ বাহিনী আসতে দেরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মিলন হোসেন সরকার বলেন, আজ সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের ওপর হামলা চালান। বাসায় বাসায় আক্রমণ করে। পরে দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সমাঝোতা করতে গেলে প্রক্টর ও উপউপাচার্য প্রশাসন আহত হন। শিক্ষার্থীদের পাশে কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল না। তারা ৪টার দিকে এসেছে। তারা যদি আরও আগে আসতো, তাহলে অনেক শিক্ষার্থী আহত হতো না। এর দায় সরকারকে নিতে হবে।এর আগে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সমোঝোতা করতে যায় উপউপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন, উপউপাচার্য প্রশাসন অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ। ওই সময়ই শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন স্থানীয় লোকজন এবং উভয় পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় ৩০ শিক্ষার্থী।ভোরের আকাশ/এসএইচ
৩১ আগস্ট ২০২৫ ০৭:৪১ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি
স্থানীয়দের সঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শতাধিক আহত হয়েছেন। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। আগামীকাল সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২নং গেট এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর এ সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন হাটহাজারী উপজেলার হাটহাজারী পৌর এলাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে আজ বিকেল ৩টা থেকে আগামীকাল সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।এ সময়ে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ, সমাবেশ, অস্ত্র বহন, পাঁচজনের বেশি লোকের সমাবেশ এবং যেকোনো ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জননিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
৩১ আগস্ট ২০২৫ ০৪:১৭ পিএম
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে বিভাগগুলোর ক্লাস চলমান থাকবে। শনিবার (৩০ আগস্ট) দিবাগত রাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।রোববার (৩১ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে রোববারের সব পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষার বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের মাধ্যম শাটল ট্রেন নিয়মিত সূচিতে চলবে।জানা গেছে, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ২ নম্বর গেটের কাছে শাহাবুদ্দীন ভবন নামের একটি বাসায় বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের নারী শিক্ষার্থীকে দারোয়ান কর্তৃক মারধরের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসজুড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে আসে ২ নম্বর গেটের দিকে।স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই মেয়ে শিক্ষার্থী রাত করে আসায় বাসার দরজা খুলতে অপারগতা জানান দারোয়ান। পরে ওই বাসার আরও কিছু মেয়ে শিক্ষার্থী এসে দরজা খোলার জন্য জোর করে। পরে গেট খোলার পর ওই দারোয়ান ও মেয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে ওই মেয়ে শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তুলে দারোয়ান।ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, আমি রাত ১১টা ২০ মিনিটে বাসায় আসি, তখন গেট লাগানো ছিল। এমনিতে রাত ১২টা পর্যন্ত বাসায় ঢোকা যায়। আমি অনেকক্ষণ ধরে ডাকছিলাম গেট খোলার জন্য কিন্তু দারোয়ান গেট খুলছিলেন না। একপর্যায়ে যখন আমার রুমমেটরা দরজা খুলতে তাকে বাধ্য করল তখন তিনি আমার ওপর চড়াও হন। আমাকে মারধর করেন আমার গায়ে হাত তোলেন। ঘাড়ে চড় মারেন।স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান বলেন, স্থানীয়রা আমার বুকের ওপরে লাথি মারে। আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না। আমার ভাইদের ওরা (স্থানীয়) ইচ্ছামতো পিটাইছে। লাঠি দিয়ে পিটাইছে, অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রক্টরদের গাড়ি এখানে উপস্থিত হওয়ার পর আমরা এগিয়ে আসি। কিন্তু এ সময় মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা আসে ‘জোবরাবাসী এক হও, বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালিয়েছে’। এ সময় বাছামিয়ার দোকানের ওখানে প্রাইমারি স্কুলের পাশ থেকে আমাদের ওপর আক্রমণ করা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা আলাদা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারা নিজেরাও জোবরার মানুষ। তারা আহত শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার জন্যও এগিয়ে আসেনি।সংঘর্ষে আহত অর্থনীতি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, কিছু লোকের জন্য আজকে আমাদের মার খেতে হয়েছে। রক্তাক্ত হয়েছে আমার ভাইয়েরা। আমি বারবার তাদের বলছিলাম রাতে ওইদিকে যাওয়া ঠিক হবে না। কিন্তু তারা (বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী) কথাগুলো শুনল না। রাতের অন্ধকারে স্থানীয়রা আমাদের মেরে রক্তাক্ত করল।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আজ যে ঘটনাটা আমাদের সঙ্গে ঘটল, এ ঘটনার পুরো দায় প্রশাসনের। এ ঘটনার আগেও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা জোবরার স্থানীয়দের হাতে রক্তাক্ত হয়েছে। কিন্তু কখনোই এদের শাস্তির আওতায় আনা হয় নাই। যার ফলে বারবার আমাদের এই স্থানীয়দের হাতে মার খেয়ে আসতে হচ্ছে। আগের প্রশাসনের কাছ থেকে আমরা কোনোরকম আশানুরূপ ফলাফল পাইনি। কিন্তু এখন তো জুলাইয়ের প্রশাসন। এখনো যদি এই স্থানীয়দের নিয়ে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হয় তাহলে ধিক্কার এ প্রশাসনকেও।সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, মেডিকেলে রাত দেড়টার পর থেকে আহত শিক্ষার্থীরা আসতে থাকেন। যেহেতু রেগুলারলি রাতে একজন ডাক্তারই থাকেন সেহেতু এ রকম ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনেও আমাকে একাই প্রায় ৬০ জনের মতো শিক্ষার্থীকে সামাল দিতে হয়েছে। আমার সঙ্গে আরেকজন সহযোগী ও কর্মচারীরা সহযোগিতা করেছেন।তিনি আরও বলেন, তবে এ রকম ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনে হ্যান্ডেল করার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ লোকবল ও সরঞ্জাম কিছুই ছিল না। এমনকি বেশকিছু শিক্ষার্থীকে আমরা ঠিকমতো অক্সিজেনও দিতে পারিনি। ফুরিয়ে গিয়েছিল। তাই আহত শিক্ষার্থীদের আমরা চমেকে পাঠিয়ে দিয়েছি। আর গুরুতর আহত হয়েছেন ৫-৭ জনের মতো। মাথা ফেটেছে কয়েকজনের।ভোরের আকাশ/মো.আ.
৩১ আগস্ট ২০২৫ ১২:২৬ পিএম
চবিতে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৬০
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ জনে। এর মধ্যে গুরুতর আহত ২১ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।রোববার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এছাড়া আহতের কথা বিবেচনায় নিয়ে আজকের সব পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের পরীক্ষাও ছিল। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী ২ নম্বর গেটের মাছ বাজার সংলগ্ন শাহাবুদ্দিনের বাসায় ভাড়া থাকেন। তিনি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় ঢুকতে চাইলে দারোয়ানের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে দারোয়ান ওই ছাত্রীকে মারধর করেন। পরে ওই শিক্ষার্থী তার এক ছেলে বন্ধুকে মোবাইলে বিষয়টি জানান।খবর পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে ওই দারোয়ানকে ধরতে গেলে ওই এলাকায় উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। এসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়রা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরাও চবির সোহরাওয়ার্দী হলের মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়ে সংঘর্ষে জড়ান। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।আহতদের মধ্যে রয়েছেন- আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসান হাবিব, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আশ্রাফ রাতুল, গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী লাবিব, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান জুবায়ের হিমেল, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিন মুস্তফা, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আল-মাসনুন, ইসলামিক স্টাডিজের আশিক মিয়া, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহিন, সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী হুমায়ুন কবির, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী তামিম, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থী রিদুয়ান ব্যাংকিং, অ্যাকাউন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত ও রিপন, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইয়েন।চবি মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, বহু শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। যাদের অবস্থা খুবই গুরুতর আমরা তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, আমরা রাত ১২টার দিকেই আমাদের একাধিক নিরাপত্তা টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তবে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় তাদের এক জায়গায় এনে দিকনির্দেশনা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। সময়মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতিও ছিল না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
৩১ আগস্ট ২০২৫ ০৯:১৭ এএম
ড. ইউনূসকে ডি-লিট ডিগ্রি দিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।বুধবার (১৪ মে) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে আয়োজিত ৫ম সমাবর্তন থেকে তাকে এ সম্মাননা ডিগ্রি প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চবি উপাচার্য ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার অধ্যাপক ইউনূসের হাতে ডি লিট ডিগ্রির সনদ তুলে দেন।সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শিক্ষা শুধু চাকরির জন্য নয়, এটি জীবন বদলের জন্য। আমি আশা করি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু নিজের নয়, সমাজ ও দেশের পরিবর্তনের জন্য কাজ করবেন।উপাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শুধু উচ্চশিক্ষার কেন্দ্র নয়, এটি একটি জাতিগঠনের কারখানা। আমরা গর্বিত যে, এ প্রতিষ্ঠান থেকে এত সংখ্যক শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করছেন। বিশেষত, ড. ইউনূসের মতো একজন গুণী ব্যক্তিকে আজ ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করছি।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, বাংলাদেশ মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন, উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা।সমাবর্তনে অংশ নিয়েছেন ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৯টি অনুষদের ২২ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৪২ জনকে পিএইচডি ও ৩৩ জনকে এমফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ