বেসরকারি হাসপাতালের সেবার মান নিশ্চিতে ফেনীতে স্বাস্থ্য বিভাগের অভিযান
ফেনী শহরের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মান বজায় রাখতে ও লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে তিনটি প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে পরিদর্শন চালিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স নবায়ন আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার (১৭ নভেম্বর) দিনব্যাপী এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরিদর্শনের আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো শহরের মিশন হাসপাতাল, শেভরন ডায়াগনস্টিক এবং ফেনী ম্যাক্স ডায়াগনস্টিক।ফেনী জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিমের নির্দেশনায় এই পরিদর্শন টিমের নেতৃত্ব দেন ফেনী সদর উপজেলার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সাইফুল ইসলাম।টিমে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উপস্থিত ছিলেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ফেনী জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুল্লাহ আব্বাসী। তাদের সাথে পরিদর্শনে অংশ নেন সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রাশেদুল হাসান এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মাইনউদ্দিন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার গাইডলাইন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করে এই অভিযান পরিচালিত হয়। পরিদর্শক দলটি শুরুতেই প্রতিষ্ঠানগুলোর আইনি বৈধতার নথিপত্র যাচাই করেন। এর মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চুক্তি, নারকোটিকস বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ছাড়পত্র এবং আণবিক শক্তি কমিশনের লাইসেন্স বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা হয়।নথিপত্র যাচাইয়ের পাশাপাশি হাসপাতালের ভৌত অবকাঠামো ও সেবার পরিবেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন কর্মকর্তারা। তারা অভ্যর্থনা কক্ষ, নমুনা সংগ্রহ কক্ষ, এক্স-রে রুম, প্যাথলজি ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার (ওটি), লেবার রুম এবং পোস্ট অপারেটিভ কক্ষের অবস্থা সরেজমিনে দেখেন। প্রতিটি কক্ষে রোগীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিতের ব্যবস্থা আছে কি না, তা যাচাই করা হয়।পরিদর্শনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল জনবল এবং যন্ত্রপাতির মান নিয়ন্ত্রণ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকার নির্ধারিত প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার মূল্য তালিকা দৃশ্যমান স্থানে আছে কি না, তা নিশ্চিত করা হয়।হাসপাতালে কর্মরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার ও স্টাফ নার্সদের পেশাগত সনদ এবং নিয়োগের নথিপত্র পরীক্ষা করেন পরিদর্শকরা। ল্যাবের ক্ষেত্রে টেকনোলজিস্টদের যোগ্যতা, ব্যবহৃত রিএজেন্টের গুণগত মান, যন্ত্রপাতির সঠিক কার্যকারিতা এবং ল্যাবরেটরিতে সার্বিক জীবাণুমুক্ত পরিবেশ বজায় রাখা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে কঠোর তদারকি করা হয়। চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়টিতেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়।জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফেনীর সাধারণ জনগণ যাতে প্রতারিত না হয় এবং সুষ্ঠু ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়মিত এ ধরনের তদারকি অব্যাহত রেখেছে।ভোরের আকাশ/তা.কা বেসরকারি হাসপাতাল, ফেনী , স্বাস্থ্য বিভাগ, অভিযান