পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প
ভোরের আকাশ প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৫ ১০:৫৫ এএম
সংগৃহীত ছবি
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা, যশোর, বেনাপোল ও মোংলা পর্যন্ত রেল সার্ভিস চালু করার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ রেলওয়ের তত্ত্বাবধানে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ০১.০১.২০১৬ থেকে ৩০.০৬.২০২৬ সাল পর্যন্ত নির্ধারিত আছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি), বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিআরটিসি, বুয়েট পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের (সিআরইসি) সঙ্গে ৩১৩৮.৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (সমমূল্য ২৪,৭৪৯.০৫ কোটি টাকা) ব্যয়ে নির্মাণ কাজের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বিগত ০৮.০৮.২০১৬ তারিখে।
প্রকল্প সাহায্য হিসেবে এক্সি ব্যাংক অব চায়না এর সঙ্গে ২৬৬৭.৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (সমমূল্য ২১,০৩৬.৭০ কোটি টাকা) ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২৭ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে। প্রকল্পের নির্মাণ কাজের গ্রাউন্ড ব্রেকিং করা হয় ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি)।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের তত্ত্বাবধান ও পরামর্শকের কাজে সিএসসিকে সহায়তা করছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যুরো অব রিসার্চ, টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেন্ট (বিআরটিসি)। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন কার্যে সহায়তা ও তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নির্মাণকাজের তদারকি ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে যথাসময়ে কাজ শেষ করতে সহায়তা করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। ঢাকা হতে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কি.মি. ব্রডগেজ লাইন নির্মাণের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
এ রেলপথটির মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ০৯টি জেলার মানুষ সরাসরি রেলে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২.৯৭৫ কি.মি. ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রেল যোগাযোগ উন্নয়ন করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। এ প্রকল্পের আওতায় ১৭২.৯৭৫ কি.মি. মেইন ও ৬৩.৩০ কি.মি. লুপ লাইনসহ মোট ২৩৬.২৮ কি.মি. রেল লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩.৩৭৭ কি.মি. ভায়াডাক্ট (উড়াল রেলপথ), ৬০টি মেজর ব্রিজ, ১৪৪টি মাইনর ব্রিজ ও ১২৮টি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় ১৪টি নতুন স্টেশন নির্মাণ এবং ৬টি বিদ্যমান স্টেশন রিমডেলিং করা হয়েছে। ২০টি স্টেশনের টেলিযোগাযোগসহ আধুনিক সিগনালিং ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হয়েছে, যা বর্তমানে রেলওয়েতে বিভিন্ন সেকশনে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রেল সংযোগ প্রকল্পের উদ্দেশ্য
* পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন;
* ঢাকা-যশোর করিডোরে অপারেশনাল সুবিধাসমূহের উন্নয়নসহ সংক্ষিপ্ত রুটে রেল যোগাযোগ স্থাপন;
* মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা নতুন করে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতাভুক্তকরণ;
* এই রুটে কন্টেইনার চলাচলের ক্ষেত্রে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফ্রেইট ও ব্রড গেজ কন্টেইনার ট্রেনসমূহ প্রয়োজনীয় গতি ও লোড ক্যাপাসিটিসহ চালুকরণ;
* সম্পদের সদ্বব্যবহার ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপারেশনাল দক্ষতা ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি;
* যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন এবং যাত্রী সুবিধা বৃদ্ধি;
* ভবিষ্যতে উক্ত রুটে দ্বিতীয় লাইন নির্মাণ এবং বরিশাল ও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরকে এই রুটের সঙ্গে সংযুক্তির সুযোগ সৃষ্টি;
* গণ-পরিবহন সুবিধা প্রবর্তনের মাধ্যমে আঞ্চলিক সমতা আনয়ন ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা;
এ প্রকল্পের বাংলাদেশ রেলওয়ে ও পরামর্শক এবং ঠিকাদার চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি) প্রতিনিধিগণ কোভিড মহামারির প্রতিকুলতার মধ্যেও দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে প্রকল্পের কাজ প্রায় সমাপ্ত করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত সিএসসি (কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট) এবং প্রকল্প দপ্তরের কর্মকর্তারা কাজের গুণগত মান তদারকি এবং প্রকল্পের সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।
রাজধানী ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ গত সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে সম্পন্ন হয়। গত ১০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে উদ্বোধন হয়েছে এবং ১ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখ হতে বাণিজ্যিকভাবে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, খুলনা, বেনাপোল, রাজশাহী রুটে মোট ৬ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। গত ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে খুলনা হতে নড়াইল, কাশিয়ানী ভাঙ্গা হয়ে ঢাকা রুটে অনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
প্রকল্পটি সম্পন্নের ফলে ঢাকা-খুলনার দূরত্ব কমেছে প্রায় ২১২ কিলোমিটার এবং ঢাকা যশোরের মধ্যে দূরত্ব হ্রাস পেয়েছে ১৮৯ কি.মি.। বর্তমান বিশ্বে যোগাযোগ হলো উন্নয়নের পূর্বশর্ত। যে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা যত ভালো সে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তত ভালো, ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়, মালামাল পরিবহনে সুবিধা পায়, মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সেই দিক বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি সাধারণ মানুষ নিরাপদ ও সাশ্রয়ী একটা যোগাযোগ ব্যবস্থার নিশ্চয়তা পাচ্ছে।
সারা বিশ্বে রেল ভ্রমণ হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী পরিবহন ব্যবস্থা। এ দেশের রেল ভ্রমণে সবচেয়ে কম ভাড়া নেওয়া হয়। তাছাড়া সেতুর সঙ্গে রেল সংযোগ করার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে ২১টি জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় এনে সাধারণ মানুষের স্বল্প সময়ে যাতায়াত সুবিধা প্রদান করা। এই রেল সংযোগ বাস্তবায়নের ফলে সরাসরি ৯টি জেলা এর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে এমন ৪টি জেলা নতুন করে সংযুক্ত হয়েছে যেখানে আগে কখনো রেল লাইন ছিল না।
জেলাগুলো হলো- মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী আরো কিছু জেলা পরোক্ষভাবে ট্রেন ভ্রমণের সুবিধা পাচ্ছে। এই রেল লাইন প্রকল্পে একটি উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল লাইন বিস্তৃত হলে পায়রা বন্দর থেকে মালামাল পরিবহনে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে অন্যদিকে অর্থ সাশ্রয়ও হবে। ভবিষ্যতে ভাঙ্গা হতে বরিশাল ও পায়রা হয়ে কুয়াকাটা পর্যটন এলাকা পর্যন্ত রেল লাইন বিস্তৃত করার পরিকল্পনা আছে। ফলে কুয়াকাটা পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ায় যেসব সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে তা নিম্নরূপ : পদ্মা বহুমুখী সেতু হয়ে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ৯টি জেলার সঙ্গে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে তন্মধ্যে নতুন ৪টি জেলা যথা : মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা রেল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত হয়েছে । অতএব, ৬টি জেলার প্রায় ১.০৫ কোটি (২০২২ সালের জনশুমারি ) জনগণ রাজধানীর সঙ্গে পদ্মা সেতু হয়ে সরাসরি প্রথমবারের মতো ট্রেন যোগাযোগের সুফল ভোগ করছে।
ঢাকা হতে যশোরের বর্তমান রেলপথের দূরত্ব ৩৫৬.৪০ কি.মি.। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা হতে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত ১৬৫.৫৩ রেলপথ নির্মাণ করার ফলে বর্তমান দূরত্ব ১৭৪.৩০ কি.মি.।
সুতরাং পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ঢাকা হতে যশোরের দূরত্ব হ্রাস পেয়েছে ১৮২.১০ কি.মি.। রেলপথে ঢাকা হতে টাঙ্গাইল- যমুনা বহুমুখী সেতু-ঈশ্বরদী-পোড়াদহ-দর্শনা হয়ে যশোরে ভ্রমণ সময় ৮ ঘণ্টা। পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচলের ফলে যশোর যেতে সময় লাগছে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। সার্বিকভাবে ভ্রমণ সময় হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
ঢাকা হতে খুলনার বর্তমান রেলপথের দূরত্ব ৪১২.৪০ কি.মি.। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা হতে সিঙ্গিয়া পর্যন্ত ১৫৮.১০ রেলপথ নির্মাণ করার ফলে ঢাকা হতে খুলনার বর্তমান দূরত্ব ১৯৮.৯০ কি.মি.। সুতরাং পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে ঢাকা হতে খুলনার দূরত্ব হ্রাস পেয়েছে ২১৩.৫০ কি.মি.। রেলপথে ঢাকা হতে টাঙ্গাইল- যমুনা বহুমুখী সেতু -ঈশ্বরদী-পোড়াদহ-দর্শনা হয়ে খুলনার ভ্রমণ সময় ১০ ঘণ্টা। পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন খুলনা যেতে সময় লাগছে ৩ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট (স্টপেজসহ)। সার্বিকভাবে ভ্রমণ সময় হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৬ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
বর্তমানে খুলনা (ফুলতলা) হতে মোংলা পোর্ট পর্যন্ত ৬৪ কি.মি. রেললাইন নির্মাণ শেষ হয়েছে। ফলে মোংলা পোর্টে বিদেশ হতে আগত কন্টেইনারসহ অন্যান্য মালামাল রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা পোর্ট এবং পায়রা পোর্ট থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পায়রা পোর্ট থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে কন্টেইনার ও মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে। তাছাড়া ঢাকা থেকে সরাসরি কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল সর্ভিস চালু করা সম্ভব হবে। এতে কুয়াকাটায় পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে।
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-পদ্মা সেতু-যশোর-বেনাপোল উপরুট সৃষ্টি হয়েছে এবং ঢাকা-পদ্মা সেতু-খুলনা-মংলা পর্যন্ত আরেকটি উপ-রুট স্থাপিত হবে। ফলে এ রুটে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফ্রেইট ও ব্রডগেজ কন্টেনার ট্রেনসুমূহ কম সময়ে চলাচল করতে পারবে। ফলে মালামাল পরিবহন ব্যয় হ্রাস পাবে ও জ্বালানি খরচও কমে যাবে।
প্রকল্পের বিশেষ অর্জন
সময় সাশ্রয় : প্রকল্পটি নির্ধারিত সময় এর আগেই সমাপ্ত করা হয়েছে। প্রকল্প টি জুন ২০২৬ পর্যন্ত সময় পুনর্নির্র্ধারণ করা হলেও ডিসেম্বর, ২০২৫ এর মধ্যে সার্বিকভাবে সম্পন্ন হবে।
ব্যয় সাশ্রয় : প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারিত ছিল ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা, প্রকল্পের সুষ্টু বাস্তবায়নের ফলে ব্যয় কমে দাঁড়ায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন খতে ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে ৬২১ কোটি টাকা এবং পূর্তকাজে সম্ভাব্য ১২২৩ কোটি মোট ১৮৪৫ কোটি সাশ্রয় হচ্ছে। প্রকল্পে নিয়োজিত লোকবলের সফল প্রচেষ্টায় ঢাকা-মাওয়া-ঢাকা অংশটি নির্ধারিত সময়ের ৬ মাস পূর্বেই সমাপ্ত হয়। ভাঙ্গা-যশোর অংশের কাজ নভেম্বর, ২০২৪ এর মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সর্বোপরি এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণ একটি নিরাপদ, আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী রেল ভ্রমণের সুবিধা পাচ্ছে। খুলনা, যশোর ও বেনাপোল রুটে যাত্রীদের ব্যাপক টিকিটের চাহিদা ও নতুন ট্রেন দাবি করছে।
বিগত ৬ মাসে বাংলাদেশ রেলওয়ের উল্লেখ্য অর্জন
১. যমুনা রেল সেতুর কাজসম্পন্ন করে ব্রিজের ওপর ডাবল লাইন চালু করা হয়েছে। এতে ব্রিজের ওপর ট্রেনের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সময় সাশ্রয় হচ্ছে। তাছাড়া কোনো গতি নিয়ন্ত্রণ, লোড নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২. ঢাকা-জয়দেবপুর, ঢাকা-নরসিংদী এবং ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে নতুন কমিউটার ট্রেন চালু করা হয়েছে। এছাড়া খুলনা ঢাকা এর মধ্যে পদ্মা সেতু হয়ে নবনির্মিত রেলপথে জাহানাবাদ এবং ঢাকা বেনাপোলের মধ্যে রূপসী বাংলা ট্রেন চালু করা হয়েছে।
৩. সুষ্টু রেল ব্যবস্থাপনার ফলে বিগত দুইটি ঈদে ট্রেনের কোনো শিডিউল বিপর্যয় এবং দুর্ঘটনা ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনাও ঘটেনি।
৪. জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনে ডাবল লাইন নির্মাণের জন্য JICA এর সঙ্গে loan Agreement স্বাক্ষরিত হয়েছে। ফলে এই অংশে শিগগিরই ডাবল লাইন নির্মাণকাজ আরম্ভ হবে।
৫. চট্টগ্রাম-দোহাজারী সেকশনে মিটারগেজ লাইনকে ডুয়েল গেজ এ রূপান্তরি এর জন্য অউই এর সহায়তায় চট্টগ্রাম হতে দোহাজারী পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র অনুমোদিত হলে কাজটি আরম্ভ হবে।
৬. EDCF কোরিয়ান অর্থায়নে কালুরঘাট এলাকায় বিদ্যমান পুরাতন রেল ব্রিজের উজানে একটি রেল কাম রোড ব্রিজ নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
৭. টিকিটের কালোবাজারি রোধ এবং শৃঙ্খলা আনায়নের লক্ষ্যে সকল স্টেশনে টিকিট চেকিং ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অনলাইনে টিকিট কালোবাজারি রোধে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ