ছবি: ভোরের আকাশ
বাগেরহাটে ডেঙ্গু পরিস্থিতি দিন দিন জটিল আকার ধারণ করছে। জেলার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চাপ আগের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের রাখায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে অন্যান্য রোগী ও তাদের স্বজনদের মাঝে। ডেঙ্গু আক্রান্তরা মশারি ব্যবহার না করায় সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে বাগেরহাট পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ড্রেন, খোলা জায়গা ও বর্জ্য ফেলার স্থানে জমে থাকা পানিতে মশার প্রজনন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
মো. ইউনুস বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা না রেখে আমাদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তারা মশারি ব্যবহার করছেন না। এর ফলে আমরা সবাই আতঙ্কে রয়েছি। আমাদের স্বাভাবিকভাবে চিকিৎসা নেওয়া এবং নিরাপদে থাকা পর্যন্ত উদ্বিগ্ন থাকতে হচ্ছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যেন আমাদের এই ভয় ও ঝুঁকি কমে।
মো. আল আমিন, বর্তমানে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি বলেন, আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। শুরুতে অবস্থা খুব খারাপ ছিল, শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে নিয়মিত চিকিৎসা ও সেবার কারণে এখন অনেকটা সুস্থ বোধ করছি। ডাক্তার ও নার্সরা খুব মনোযোগ দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। আগের তুলনায় অনেক ভালো আছি, আশা করি শিগগিরই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারব।
পৌরসভার বাসিন্দা মো. জাহিদ হাসান পলাশ অভিযোগ করে বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত মশা নিধন ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি ও অপরিকল্পিত বর্জ্য মশার প্রজনন বাড়াচ্ছে, যার ফলে ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। আমরা দাবি করছি, জরুরি ভিত্তিতে মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করা হোক এবং হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের সাধারণ রোগীদের থেকে আলাদা রাখা হোক, যাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদে চিকিৎসা নিতে পারে।
২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমদ্দার বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। গত দুই-তিন দিনের মধ্যে রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। আমরা পরিস্থিতি মনিটরিং করছি এবং সতর্কতার সঙ্গে রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। হাসপাতালের মেডিকেল টিম সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে যেন রোগীরা সময়মতো সেবা পেতে পারেন এবং সুস্থ হয়ে ফিরে যেতে পারেন।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস ও বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে পাষণ্ড ছেলে ও পুত্রবধূর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণে বাঁচতে বাড়ি ছেড়ে থানায় অভিযোগ করেছেন এক অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি।নির্যাতনের শিকার পিতা-মাতা হলেন মো. শাহাদাৎ হোসেন (৬০) ও তার স্ত্রী মোছা. মমতাজ বেগম। অভিযোগে বলা হয়েছে, তাদের বড় ছেলে মো. মিলন কৌশলে তাদের অর্ধেকের বেশি জমি লিখে নিয়ে এখন কোনো ভরণপোষণ দিচ্ছে না। বরং সম্প্রতি ওই বৃদ্ধ মা-বাবাকে মেরে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানার মুসলিমপাড়া গ্রামে।এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে স্বরূপকাঠি থানায় ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। তবে এখনো তারা কোনো বিচার পাননি।অভিযোগে বৃদ্ধ শাহাদাৎ হোসেন জানান, তার তিন ছেলে। বড় ছেলের নাম মিলন। নিজের ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তিনি ছেলের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। বিনিময়ে ছেলে কৌশলে ২২ শতাংশ জমি নিজের নামে লিখে নেয়।তিনি বলেন, “আমরা বাড়ি থেকে বাগানের কিছু সুপারি পাড়তে গেলে ছেলে মিলন ও পুত্রবধূ রুবি বেগম মিলে আমাদের মারধর করে। তাদের বেদম প্রহারে আমার দুটি দাঁত পড়ে গেছে। এখন আবার আমার বাকি জমিও লিখে দিতে বলছে। আমরা রাজি না হওয়ায় প্রায়ই আমাদের মারধর করে, কোনো ভরণপোষণ দেয় না এবং কথার ছলে নানাভাবে নির্যাতন করে।”তিনি আরও বলেন, “গত ৬ অক্টোবর সকালে বাড়ির নারিকেল ও সুপারি পাড়াকে কেন্দ্র করে ছেলে মিলন আমাদের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে যায় ও জখম হয়। রাতে আবার আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।”বৃদ্ধার স্ত্রী মোছা. মমতাজ বেগম বলেন, “ছেলে মিলন কৌশলে জমি লিখে নেওয়ার পর এখন আবার টাকার দাবি করছে। অন্যথায় বাকি জমি লিখে দিতে বলছে। বাড়ির কোনো ফসল ধরতে দেয় না। গত ৬ অক্টোবর স্বামীকে বেদম মারধর করলে আমি রক্ষা করতে গেলে আমাকেও মেরেছে। পরে রাতে আবার আমাদের মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমরা বাধ্য হয়ে স্থানীয় মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। এখন পর্যন্ত বাড়িতে ফিরতে পারিনি। থানায় অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো বিচার পাইনি।”ইউপি সদস্য মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, “ওই বৃদ্ধ দম্পতি খুবই অসহায়। তাদের ছেলে মিলন কারও কথা শোনে না। তাই আমি নিজেই তাদের থানায় যেতে বলেছি।”ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. রুহুল আমীন বলেন, “ওই ছেলে খুবই খারাপ। জমির জন্য বাবা-মাকে মারধর করেছে। কয়েক দিন আগে তাদের বেদম প্রহার করে রাতে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তারা আমার কাছেও এসেছিল। আমি তাদের থানায় যেতে বলেছি। ওই পাষণ্ড ছেলের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”স্বরূপকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বনি আমিন বলেন, “তারা যেন থানায় এসে আমার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। আমি বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেব।”ভোরের আকাশ/জাআ
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ২০ মামলার আসামি সাহেব আলীকে (৩৮) সুনামগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানায় র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন। গ্রেপ্তারকৃত আসামি সাহেব আলী (৩৮) সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ জানায়, সাহেব আলী সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী। সাহেব আলী তার বাহিনীর মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অস্ত্রসহ শোডাউন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাট, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল। এছাড়াও তার বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় মাদক বিক্রির কাজের সাথে জড়িত ছিল। তার অপকর্মে বাঁধা দেয়ায় অনেকের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে এই সাহেব আলী।সাহেব আলীকে এর আগেও কয়েকবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তাকে গ্রেপ্তার করা এত সহজ ছিল না। সাহেব আলীকে গ্রেপ্তার করতে গেলেই তার বাহিনী দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে পালিয়ে যেতেন তিনি। এই সংক্রান্ত ঘটনায় সাহেব আলীর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি দল সাহেব আলীকে সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ থানার মান্নান ঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। সাহেব আলীর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় সাতটি ডাকাতি, দুইটি মাদক, একটি নারী ও শিশু নির্যাতন, দুইটি নাশকতা, তিনটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার পাঁচটি মামলাসহ বিশটি মামলা রয়েছে।এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় র্যাব-১১।ভোরের আকাশ/এসএইচ
চট্টগ্রামে আল হামিদ টেক্সটাইল নামে একটি কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ভবনটিতে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক রয়েছেন বলে জানা গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে সিইপিজেডের ১ নম্বর সেক্টরের ৫ নম্বর সড়কের ‘অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড’ নামের ওই কারখানায় আগুন লাগে।চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে সিইপিজেডে তোয়ালে তৈরির একটি কারখানায় আগুন লাগার সংবাদ পৌঁছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। সাততলা ভবনটির পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় আগুন লাগার পর দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সিইপিজেড, বন্দর, কেইপিজেড, আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশন থেকে মোট ১৬টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করছেন।ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল মান্নান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। কারখানা চালু ছিল। তবে ভেতরে কোনো শ্রমিক-কর্মচারী আটকে আছেন কী না, এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভোরের আকাশে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে চাঁদপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ইলিশ চত্বর মোড়ে সংস্কার কাজ শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।সম্প্রতি ওই এলাকায় সংস্কার কাজের ধীরগতি ও খানাখন্দের কারণে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তির অভিযোগ উঠে।গত ৯ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ‘চাঁদপুরে ইলিশ চত্বর মোড়ে সংস্কার কাজের ধীরগতি, খানাখন্দে দেবে গেল ট্রাক’ শিরোনামে ভোরের আকাশে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিষয়টি তুলে ধরা হয়।সংবাদটি প্রচারের পর স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয় এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেও নজরে আসে। এরপর এর সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার সকাল ১০টায় পৌরসভার তত্ত্বাবধানে সংস্কার কাজ শুরু হয়।পৌর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইলিশ চত্বর এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে।স্থানীয় বাসিন্দারা পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং গণমাধ্যমের রিপোর্টের ইতিবাচক প্রভাবে অবশেষে কাজ শুরু হওয়ায় সাধুবাদ জানান।ভোরের আকাশ/তা.কা