বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫ ০৫:১৯ এএম
“সোশ্যাল প্রতিযোগিতায় শিশুদের জড়াবেন না”—মাতৃত্ব নিয়ে হৃদয়ছোঁয়া বার্তা পরীমণির
ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণি এবার মুখ খুললেন মাতৃত্ব ও শিশুপালন নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি একটি দীর্ঘ পোস্টে নিজের মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন তিনি, যা ইতিমধ্যেই অনেক মা-বাবার হৃদয় স্পর্শ করেছে।
রিল ও রিয়েল লাইফে সমানভাবে আলোচিত এই অভিনেত্রী বরাবরই নিজের মত প্রকাশে স্পষ্টভাষী। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। মা হওয়ার পর সন্তান পালনে সমাজের নানা ধরনের উপদেশ, সমালোচনা ও 'প্যারেন্টিং লেকচার' নিয়ে নিজের অনুভব ব্যক্ত করেছেন তিনি।
পরীমণি লেখেন, “খেয়াল করে দেখবেন, চারপাশে এমন অনেক মানুষ থাকেন যারা ভালোবাসা দেখানোর নামে উপদেশ দিয়ে যান—তোমার বাচ্চার জন্য এটা করো, ওটা করো না। অথচ অনেক সময় তারা নিজেরাও জানেন না তারা কী বলছেন!”
তিনি জানান, তার পরিচিত এক নারী—যাকে তিনি ‘মায়ের সমতুল্য’ বলে উল্লেখ করেছেন—পরামর্শ দিয়েছিলেন, তিন মাস বয়স থেকেই সন্তানকে ডিমের কুসুম খাওয়ানো উচিত, বসা শিখলেই ওয়াকার ব্যবহার করতে হবে। যদিও পরীমণি সেইসব উপদেশ মানেননি। তিনি বলেন, “আমি দেইনি, কিন্তু তিনি নিজেই ওয়াকার কিনে এনে দিয়েছিলেন। অথচ এখন তো এটা নিষিদ্ধ, এটা শিশুর মেরুদণ্ডের ক্ষতি করে, এমনকি পঙ্গুত্ব পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।”
তবে শুধু ভুল নয়, কিছু ভালো দিকও শিখেছেন তিনি সেই অভিভাবকের কাছ থেকে—যেমন ব্রেস্টফিডিং, তেল মালিশ বা গ্যাস বের করার কৌশল। এসবের জন্য তিনি কৃতজ্ঞ বলেও জানান।
পোস্টটির মূল বার্তা ছিল সাম্প্রতিক এক ভিডিওকে ঘিরে, যেখানে এক মা ‘গুড প্যারেন্টিং’-এর ব্যাখ্যায় বলছিলেন, “সাধ্য থাকলেও সন্তানকে সব কিছু কিনে দেওয়া উচিত নয়।” সেই বক্তব্য নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পরীমণি।
তিনি লেখেন, “একটা তিন বছরের শিশুকে আপনি কী শেখাতে চাইছেন? অভাব? নাকি কৃপণতা? এ বয়সে তাকে শেখাতে হবে ভালোবাসা, উদারতা, অনুভব। অভাব শেখালে সে বড় হয়ে শিখবে শুধু বঞ্চনা, কিপটেমি আর ধোঁকা।”
নিজের ছেলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি জানান, “আমি বলি, বাজান, যা ভালো লাগে নিয়ে নাও। দেখি, সে ক্ষতিকর খেলনাগুলো যেমন বন্দুক, পিস্তল—ওগুলো নেয় না। আর যে খেলনা কিনি, সেগুলো সবাইকে ভাগ করে দেয়।”
সবশেষে আবেগঘনভাবে পরীমণি লেখেন, “আমি চাই না, আমার ছেলেকে কেউ অভাব শেখাক। আমি চাই, সে শিখুক মনুষ্যত্ব, উদারতা। আমি চাই না, সে কারো কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে শিখুক।”
তিনি সকল অভিভাবকদের উদ্দেশে আহ্বান জানান, “আমি জানি, প্রত্যেক মায়ের সন্তানের বড় হওয়ার জার্নি আলাদা। তবু একটাই অনুরোধ—আপনারা প্লিজ, সোশ্যাল কোনো কম্পিটিশনের মধ্যে বাচ্চাদের নিয়ে মাইতেন না।”
ভোরের আকাশ//হ.র