যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদির ৬০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রেকর্ড পরিমাণ ৬০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে সৌদি আরব। মঙ্গলবার (১৩ মে) সৌদির রাজধানী রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এসব চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, চুক্তির প্রথম ধাপে জ্বালানি, নিরাপত্তা, প্রযুক্তি এবং কৌশলগত খাতগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
চুক্তির আওতায় ১৪২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিনবে সৌদি আরব, যা প্রতিরক্ষা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম বড় রপ্তানি চুক্তি। এর মধ্যে রয়েছে বিমানবাহিনীর আধুনিকীকরণ, মহাকাশ প্রযুক্তি, আকাশ-মিসাইল প্রতিরক্ষা, উপকূলীয় নিরাপত্তা, সীমান্ত রক্ষা এবং স্থল বাহিনীকে উন্নত করার ব্যবস্থা। সৌদি সামরিক একাডেমি এবং মিলিটারি মেডিকেল সেবাও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় উন্নত করা হবে।
প্রযুক্তি খাতে, সৌদি কোম্পানি ডেটাভোল্ট যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং জ্বালানি অবকাঠামোয় ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। গুগল, ওরাকল, সেলসফোর্স, এএমডি ও উবারসহ মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টরা সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথভাবে ৮০ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পে কাজ করবে।
বিমান ও জ্বালানি খাতে যুক্তরাষ্ট্র সৌদিতে গ্যাস টারবাইন (মূল্য ১৪.২ বিলিয়ন ডলার) এবং বোয়িং ৭৩৭-৮ যাত্রীবাহী বিমান (মূল্য ৪.৮ বিলিয়ন ডলার) সরবরাহ করবে। এছাড়া সৌদি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে স্যালাইন উৎপাদনের জন্য ৫.৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করছে।
চুক্তির অংশ হিসেবে তৈরি হচ্ছে বিশেষ বিনিয়োগ তহবিল—জ্বালানি উন্নয়নে ৫ বিলিয়ন, মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা শিল্পে ৫ বিলিয়ন এবং ক্রীড়া খাতে ৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
এই ঐতিহাসিক চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব আরও গভীর হলো।
সূত্র: বিবিসি
ভোরের আকাশ/হ.র
সংশ্লিষ্ট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের কাছে ৫১০ মিলিয়ন ডলারের গাইডেড বোমা কিট ও সংশ্লিষ্ট সহায়তার বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। এই অস্ত্র সরবরাহ ইসরায়েলের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ হুমকি মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।ডিফেন্স সিকিউরিটি কো-অপারেশন এজেন্সি (ডিএসসিএ) জানিয়েছে, ইসরায়েল ৩ হাজার ৮৪৫টি কেএমইউ-৫৫৮বি/বি জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিনিশন (জেডিএএম) গাইডেন্স কিট পাবে, যা বিএলইউ-১০৯ বোমায় ব্যবহার হয়। এর পাশাপাশি ৩ হাজার ২৮০টি কেএমইউ-৫৭২ এফ/বি জেডিএএম কিটও ইসরায়েলের হাতে থাকবে, যা এমকে-৮২ বোমায় ব্যবহৃত হবে। এছাড়াও থাকবে প্রকৌশল, সরবরাহ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা।মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলেছে, “এই বিক্রয় প্রস্তাব ইসরায়েলকে তাদের সীমান্ত, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং জনবসতি রক্ষায় আরও কার্যকর করতে সাহায্য করবে।”তবে এই অনুমোদন আসে এমন এক সময় যখন ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এপর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ৫৬ হাজার ৫০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।শুধু সোমবার দিনেই ইসরায়েলি বিমান ও কামান হামলায় কমপক্ষে ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এই হামলার লক্ষ্য ছিল বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থলসহ জনবহুল এলাকা।গাজার এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেও মার্কিন সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমালোচনা তীব্র হচ্ছে। অনেক সমালোচক এই পদক্ষেপকে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক সংশ্লিষ্টতার সমতুল্য বলছেন।২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়ু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একই সঙ্গে গাজার গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি মামলা চলছে।ভোরের আকাশ//হ.র
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় নির্ধারিত সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিল করেছে জেরুজালেম জেলা আদালত। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, জালিয়াতি এবং আস্থাভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে, যা প্রমাণিত হলে তাকে কারাদণ্ড দেয়া হতে পারে।রোববার (২৯ জুন) ইসরায়েলি দৈনিক ইদিওথ আহারনোথের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানিয়েছে। আদালতের রুদ্ধদ্বার শুনানির পর নেতানিয়াহুর অনুরোধে সাক্ষ্যগ্রহণ আপাতত স্থগিত করা হয়। আদালত জানায়, “নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে পূর্বের তুলনায় নতুন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও পরিবর্তন এসেছে, তাই আমরা আংশিকভাবে তার আবেদন মঞ্জুর করছি।”শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা প্রধান শ্লোমি বিন্ডার এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিচালক ডেভিড বারনিয়া। নেতানিয়াহু তার ট্রায়ালের শুনানি দুই সপ্তাহ পিছানোর আবেদন করলেও, অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারাভ-মিয়ারা তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ পর্যাপ্ত কারণ উল্লেখ ছিল না।এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার নেতানিয়াহুর বিচার বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই বিচারকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে “ডাইনি শিকার” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।নেতানিয়াহু বর্তমানে তিনটি মামলায় অভিযুক্ত—কেস ১০০০, ২০০০ এবং ৪০০০—যেগুলো ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে জমা দেওয়া হয় এবং ২০২০ সালের মে থেকে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, যিনি ফৌজদারি মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।তবে শুধু দুর্নীতির অভিযোগ নয়, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ২০২৪ সালের নভেম্বরে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা অঞ্চল থেকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে অন্তত ৫৬,৫০০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর বিচার রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছে।ভোরের আকাশ//হ.র
উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় হাওয়াইদ মরুভূমিতে একটি স্বর্ণখনি ধসে অন্তত ৫০ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি রবিবার সকালের দিকে ঘটে।স্থানীয় দৈনিক আলরাকোবার প্রতিবেদনে জানা গেছে, খনির একটি অংশে বিপুল পরিমাণ পাথর ও বালি ধসে পড়ে শ্রমিকরা আটকা পড়েন। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ও অন্যান্য শ্রমিকেরা উদ্ধারকাজ শুরু করলে কয়েকজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে উদ্ধারকারী বাহিনীর কাছে প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি না থাকায় ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া অধিকাংশ শ্রমিককে উদ্ধার করা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা ধারণা করছেন, আটকা পড়াদের সবাই নিহত হয়েছে।প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, খনিতে শ্রমিকদের নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এছাড়া দুই মাস আগে একই স্থানে একটি ধস নেমেছিল, কিন্তু সে সময় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।সুদান বিশ্বের অন্যতম বড় স্বর্ণ রপ্তানিকারী দেশ হলেও বেশিরভাগ খনিতে শ্রমিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যা আন্তর্জাতিক মহলে সুদান সরকারের ব্যাপক সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।সূত্র: আনাদোলু এজেন্সিভোরের আকাশ//হ.র
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি টিকটক বিক্রির জন্য ‘অত্যন্ত ধনী’ এক ক্রেতার সন্ধান পেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।রোববার (৩০ জুন) ফক্স নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমাদের কাছে টিকটকের জন্য একজন সম্ভাব্য ক্রেতা রয়েছে, তবে বিক্রি করতে হলে চীনের অনুমতি প্রয়োজন হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং হয়তো সেই অনুমতি দেবেন।” তিনি আরও জানান, এই ক্রেতারা মূলত ধনী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল, তবে কোনো বড় প্রযুক্তি কোম্পানির নাম উল্লেখ করেননি।টিকটকের মার্কিন শাখার সম্ভাব্য বিক্রির পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ, যা যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ২০২৪ সালে দ্বিদলীয় সমর্থনে একটি আইন পাস করার মাধ্যমে জোরালো করেছে। আইন অনুযায়ী, যদি চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স টিকটকের মার্কিন অংশ বিক্রি না করে, তবে পুরো অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা হবে।মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে এই আইন বৈধ ঘোষণা করে। এরপর ট্রাম্প ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়ান। বর্তমানে টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৭ কোটি ব্যবহারকারীর সেবা প্রদান করছে।সূত্র: বার্তাসংস্থা আনাদোলুভোরের আকাশ//হ.র