হজের ফ্লাইট শুরু মঙ্গলবার
পবিত্র হজ ফ্লাইট শুরু আগামী মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল)। এ বছর ৮৭ হাজার ১০০ জন বাংলাদেশি মুসল্লি সৌদি আরবে পবিত্র হজ পালন করতে যাচ্ছেন। প্রথম দিনে ৪১৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। হজের প্রথম ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
জানা যায়, প্রথম ফ্লাইট রাত সোয়া ২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে। সঠিকভাবে হজ ব্যবস্থাপনার জন্য এ বছর সরকারি ১১২ ও বেসরকারি গাইড থাকবেন ১ হাজার ৭৪৩ জন। ৭০ মোয়াল্লেম হজযাত্রীদের সার্বিক সহযোগিতায় রাখা হয়েছে। হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশসহ তিনটি এয়ারলাইনস প্রস্তুত। ৩১ মে হজের শেষ ফ্লাইট সৌদি আরব যাবে। ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুন শুরু হয়ে শেষ হবে ১০ জুলাই।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে ১১৮, সাউদিয়া ৮০ ও নাস এয়ারলাইনসের ৩৪ ফ্লাইটে যাত্রীরা সৌদি আরব যাবেন। বিমান ১০৯, সাউদিয়া ৭৯ ও নাস ৩৪টি ফিরতি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। প্রসঙ্গত, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন)।
এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে হজের খুতবা, এবং তাৎক্ষণিক অনুবাদ করা হবে ২০টি ভাষায়। যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে সেগুলো হলো- বাংলা, ফরাসি (ফ্রেঞ্চ), মালয়, উর্দু, ফারসি, চাইনিজ, তুর্কি, রাশিয়ান, হাউসা, ইংরেজি, সুইডিশ, স্প্যানিশ, সোয়াহিলি, আমহারিক, ইতালিয়ান, পর্তুগিজ, বসনিয়ান, মালায়লাম, ফিলিপিনো এবং জার্মান।
উল্লেখ্য, ১৪৪৬ হিজরির ৯ জিলহজ (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের ৫ জুন) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
সংশ্লিষ্ট
ইসলামের দৃষ্টিতে ‘মুনাফেকি’ একটি মারাত্মক কবিরা গোনাহ। কুফর, শিরক বা অহংকারের মতোই ভয়াবহ এ গুনাহ ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ইসলামের অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে এই মুনাফিকরা। তবে তারা যতই চাতুর্য দেখাক না কেন, আসলে নিজেরাই নিজেদের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে।❝ ধোঁকা দেয় নিজেরই ক্ষতি করে ❞মুনাফিকরা মনে করে, তারা ধোঁকা দিয়ে আল্লাহ ও মুমিনদের ক্ষতি করছে। কিন্তু আসলে তারা প্রতারণা করে নিজের সঙ্গেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন—"তারা আল্লাহ ও মুমিনদের সঙ্গে ধোঁকা দেয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেদের ছাড়া আর কাউকে ধোঁকা দেয় না, অথচ তারা তা বোঝে না।"(সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৯)এই আয়াতে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে—মুনাফিকদের ধোঁকাবাজি আসলে আত্মপ্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ, আল্লাহ তাআলা সর্বজ্ঞ, কারো প্রতারণা তাঁর অজানা নয়। তিনি হৃদয়ের গভীরতম কথাও জানেন।আল্লাহ ও মুমিনদের ক্ষতি হয় নাআসলে আল্লাহর কোনো ক্ষতি করাও সম্ভব নয়। একইভাবে ওহীপ্রাপ্ত রাসূল (সা.) ও সাহাবিরাও প্রতারণা থেকে নিরাপদ ছিলেন। সুতরাং, মুনাফিকদের প্রতারণা শুধুই আত্মধ্বংসের পথ।আখিরাতেও কঠিন শাস্তিমুনাফিকদের জন্য আখিরাতে কঠিন শাস্তি নির্ধারিত। আল্লাহ তাআলা বলেন—"নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সবচেয়ে নিচু স্তরে থাকবে।"(সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৪৫)উপসংহারমুনাফিকরা হয়তো ভাবে তারা চালাকি করছে, কিন্তু বাস্তবে নিজেরাই নিজের ধ্বংস ডেকে আনে। তাদের ভণ্ডামি ও আত্মপ্রবঞ্চনার পরিণতি দুনিয়া ও আখিরাত—উভয় জগতে ভয়াবহ। একজন মুসলিমের উচিত মুনাফেকির মতো গুনাহ থেকে দূরে থাকা এবং নিজের ঈমানকে দৃঢ় রাখা।ভোরের আকাশ//হ.র
পবিত্র হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ জন বাংলাদেশি হাজি। সোমবার (৩০ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।সরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরেছেন ৫ হাজার ৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরেছেন ৫৫ হাজার ৫০৬ জন হাজি।চলতি মৌসুমে হজযাত্রী পরিবহনে অংশ নিয়েছে তিনটি এয়ারলাইন্স—বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এয়ারলাইন্স এবং ফ্লাইনাস। এদের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ফিরিয়ে এনেছে সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ৭৬৭ জন হাজি। সৌদি এয়ারলাইন্স ফিরিয়েছে ২৪ হাজার ৯৭০ জন এবং ফ্লাইনাস ৮ হাজার ৭৭৬ জন।এ পর্যন্ত মোট ১৬০টি ফিরতি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ পরিচালনা করেছে ৭১টি, সৌদি এয়ারলাইন্স ৬৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ২৩টি ফ্লাইট। হজ অফিস জানিয়েছে, এই ফ্লাইট কার্যক্রম চলবে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত।চলতি বছর হজ পালন করতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জন বাংলাদেশি হজযাত্রীর। এদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। হজ অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ মৃত্যুর কারণ ছিল বার্ধক্যজনিত সমস্যা এবং শারীরিক অসুস্থতা।উল্লেখ্য, এবারের হজযাত্রা শুরু হয়েছিল ২৯ এপ্রিল থেকে। সর্বশেষ হজ ফ্লাইট সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ৩১ মে এবং মূল হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন।ভোরের আকাশ/আজাসা
পবিত্র হজ পালন শেষে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ জন। সোমবার (৩০ জুন) হজ পোর্টালের সবশেষ আপডেটে এ তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়, দেশে ফেরা হজ যাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরেছেন ৫ হাজার ৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ফিরেছেন ৫৫ হাজার ৫০৬ জন।হজযাত্রী পরিবহনে তিনটি এয়ারলাইনস যুক্ত ছিল। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিবহন করেছে ২৬ হাজার ৭৬৭ জন, সৌদি এয়ারলাইনস পরিবহন করেছে ২৪ হাজার ৯৭০ জন এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস পরিবহন করেছে ৮ হাজার ৭৭৬ জন হাজিকে।এদিকে হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে গিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী।প্রসঙ্গত, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১৫৭ জন হজে গিয়েছেন। তাদের সৌদি আরবে যাত্রা শুরু হয়েছিল ২৯ এপ্রিল এবং শেষ ফ্লাইটটি গিয়েছিল ৩১ মে। হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন। ফিরতি হজ ফ্লাইট চলবে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত।ভোরের আকাশ/জাআ
ঈমান শুধু মুখে উচ্চারণের নাম নয়, বরং তা অন্তরের গভীর অনুভূতির নাম, যা একজন মুমিনকে আল্লাহর দিকে একান্তভাবে প্রবাহিত করে। আর এই ঈমানের এমন এক বিশেষ স্বাদ বা তৃপ্তি রয়েছে, যা শুধু কিছু গুণাবলীর অধিকারীরাই উপভোগ করতে পারেন বলে জানিয়ে গেছেন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—“তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকবে, সে ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে।”এই তিনটি গুণ হলো: আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তাঁর কাছে সবকিছুর চেয়ে বেশি প্রিয় হওয়া। কোনো মানুষকে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসা। কুফরিতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো ঘৃণিত মনে করা।(মুসলিম, হাদিস: ৪৩; আহমাদ, হাদিস: ১২০০২)ঈমান কী?ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায়, ঈমান হলো—মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর পক্ষ থেকে দ্বীন হিসেবে যা কিছু এনেছেন, তা মনেপ্রাণে স্বীকার করা, বিশ্বাস করা এবং মেনে নেওয়া। এই বিশ্বাস ও আত্মসমর্পণই একজন মুমিনকে চিরন্তন জাহান্নাম থেকে মুক্তি এনে দেয়। বিপরীতে, যারা ঈমান বর্জন করে, তারা পরিণত হন চিরজীবনের জন্য জাহান্নামের বাসিন্দায়।কোরআনে ঈমানের স্বাদ ও বৃদ্ধি প্রসঙ্গেআল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ঈমান বৃদ্ধি সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন:“যখন কোনো সূরা নাজিল হয়, তখন তাদের কেউ কেউ বলে—‘এ সূরা তোমাদের কার ঈমান কতটা বাড়াল?’ যারা ঈমান এনেছে, তাদের ঈমান এতে বাড়ে এবং তারা আনন্দিত হয়।”(সূরা তাওবা, আয়াত: ১২৪)অন্যত্র আল্লাহ বলেন:“যখন তাদের সামনে কোরআনের আয়াত তিলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায়।”(সূরা আনফাল, আয়াত: ২)এ থেকে বোঝা যায়, কোরআন পাঠ, অর্থ ও মর্মার্থ অনুধাবন এবং সে অনুযায়ী আমল করার মাধ্যমে ঈমান বৃদ্ধি পায়, ঈমান শক্তিশালী হয়। এতে অন্তর আলোকিত হয়ে ওঠে ঈমানের নূরে।সাহাবিদের দৃষ্টিভঙ্গিহজরত আলী (রা.) বলেছেন,“যখন ঈমান অন্তরে প্রবেশ করে, তখন তা শ্বেত বিন্দুর মতো দেখা যায়। যত ঈমান বাড়তে থাকে, সেই বিন্দু ততই প্রসারিত হতে থাকে, অবশেষে গোটা অন্তর নূর ও আলোয় পূর্ণ হয়ে যায়।”(তাফসিরে মাযহারী, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৩২৬; মা‘আরিফুল কুরআন, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৯৪)উপসংহারঈমানের স্বাদ এক অতুলনীয় আত্মিক প্রশান্তি, যা কেবল ঐসব হৃদয়েই স্থান পায়, যাঁরা ঈমানকে জীবনের প্রতিটি স্তরে ধারণ করেন। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে সর্বোচ্চ ভালোবাসা, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা শুধুই আল্লাহর জন্য, আর কুফরি থেকে ভয়াবহ পরিহার—এই গুণগুলো যার মধ্যে থাকবে, সেই সত্যিকারের মুমিনই ঈমানের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে।আল্লাহ যেন আমাদের সেই সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত করেন, যারা ঈমানের আসল মিষ্টতা অনুভব করতে পারে। আমিন।ভোরের আকাশ//হ.র